পুরস্কার
সুদীপ চ্যাটার্জী
রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা যুবকের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে হেঁটে যাচ্ছে পথচলতি মানুষেরা। ট্রাকের ধাক্কা লেগে দুমড়ে মুচড়ে পড়া বাইকটা পড়ে আছে খানিকটা দূরে।
“হেল্প!”
মৃত্যুপথযাত্রী ছেলেটির ক্ষীণ কণ্ঠস্বর হয়তো কানে যায়নি পথিকদের। ব্যস্ত রাজপথ, অফিস টাইম, মানুষজন দৌড়োচ্ছে ঊর্ধ্বশ্বাসে। ওদের দোষ নেই। অনেকেই দৃশ্যটা দেখে কপালে হাত ছুঁইয়েছেন, জনাকয়েক লোক ব্যথিত চোখে সেইদিকে চেয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। দুর্ঘটনা মানে আইনি ব্যাপার। পুলিশ আসেনি এখনও, কেউ নিশ্চয়ই অ্যাম্বুলেন্সের জন্যে ফোন করেছে। তারা এগিয়ে যায়।
যুবকটির উঁচিয়ে রাখা নিস্তেজ আঙুলগুলো একসময় ধীরে ধীরে মাটির দিকে নেমে এল।
স্ক্রিন অন্ধকার হয়ে গেল। করতালিতে ফেটে পড়ল প্রেক্ষাগৃহ।
“মানুষ কতটা স্বার্থপর, কতটা হৃদয়হীন হতে পারে এই লাইভ ফুটেজ তার প্রমাণ। অসামান্য এই তথ্যচিত্রটি ধরা পড়েছে শোভন চট্টরাজের ক্যামেরায়। এই হৃদয়বিদারক ছবিটি তোলার জন্যে তাকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করছে…”
মঞ্চের দিকে এগিয়ে গেল শোভন। পুরস্কারটা নিয়ে সামনের দিকে তাকাতেই দর্শকবৃন্দের মধ্যে রক্তাক্ত সেই যুবককে বসে থাকতে দেখল সে। একদৃষ্টে সে তাকিয়ে আছে শোভনের দিকে। শোভনের হাত কেঁপে পুরস্কারটা মাটিতে পড়ে গেল।
অলঙ্করণঃ অংশুমান