বমাল
অনুষ্টুপ শেঠ
গাড়ির ডিকিটা খুলে চমকে গেলাম।
মিহি বৃষ্টি পড়ছে। খোয়াইয়ের এইদিকটা নির্জন। কেউ আসে না জানি। তাই এসেছি। হেডলাইট না জ্বালিয়ে টিমটিমে রাস্তার আলোয় গাড়ি চালিয়ে এসে পৌঁছেছি নিরুপদ্রবেই। গাড়ি থামিয়ে, ইঞ্জিন বন্ধ করে সিটেই পাক্কা দশ মিনিট বসে ছিলাম নিয়মমতো। নামার আগে ঝোলা বর্ষাতি গায়ে চাপিয়ে নিয়েছি, তার পকেটে জিনিসপত্রগুলো ঠিক আছে কি না তাও দেখে নিয়েছি। দু’হাতে রবারের গ্লাভসও পরে নিয়েছি মনে করে।
এদিকটায় রাস্তার আলো আসে না। মরা চাঁদের আলোয় ডিকিতে প্রায় মাথা গলিয়ে আবার ভালো করে দেখলাম চোখের ভুল হচ্ছে কি না। হয়নি।
আমার গুছিয়ে তোলা শাবল, পাকানো মোটা দড়িটা যেমন রেখেছিলাম তেমনই আছে। তার ওপরে আরও একটা জিনিস আছে। একটা শুকনো, দড়ি পাকানো, সাদা শাড়ি পরা বুড়ির দেহ। মুখ ফাঁক হয়ে দাঁত বের হয়ে আছে, আধখোলা চোখদুটো চেয়ে আছে সরাসরি, আমার দিকেই যেন।
কিচ্ছু বুঝতে পারছিলাম না। ডিকি বন্ধ করে নিজে হাতে লক করেছিলাম সেখান থেকে রওনা দেবার সময়ে। রাস্তায় কোথাও দাঁড়াইনি এটাও নিশ্চিত। তবুও…
দুই বোনকেই তো খুন করে ডিকিতে তুলেছিলাম। আরেকটা কোথায় গেল!
পিছনে খোয়াইয়ের উপর খস খস করে কারও এগিয়ে আসার শব্দটা ঠিক তখনই খেয়াল হল।
অলঙ্করণঃ অংশুমান