ভয়
প্রমনা চট্টোপাধ্যায়
ধড়মড়় করে বিছানায় উঠে বসল ঋদ্ধি। স্বপ্নটা কী ভয়ানক ছিল! ওফ্! এখনও ঘাম হচ্ছে ভাবলেই। এখনও মনে হচ্ছে, দরজার ওপারে যেন সত্যিই কেউ দাঁড়িয়ে আছে, একটু পরেই হয়তো সে ছুরি হাতে ঘরে ঢুকবে। ঢুকেই ঋদ্ধির দিকে এগিয়ে আসবে, তারপর ছুরি ধরা হাতটা মাথার উপরে তুলে… আর ভাবতে পারল না ঋদ্ধি। আচ্ছা, ঐ আততায়ী ছুরিটা ঋদ্ধির বুকে বসানোর ঠিক আগে কী যেন বলছিল না? ‘তোর… মেরে ফেলবে…’ এরকম কী একটা বলছিল। ভেবেই গা শিরশির করে উঠল ওর। কী ভয়ংকর জীবন্ত স্বপ্ন!
ইতিমধ্যে ঋদ্ধির ঘুমের ঘোর বেশ কিছুটা কেটে গেছে। ঘড়ির দিকে তাকাল, ঘণ্টার কাঁটা প্রায় চারটে ছুঁই ছুঁই। ভোর হচ্ছে, পাখি ডাকছে। ভয়টাও তাই আর লাগছে না তেমন। কিন্তু শরীরটা একটু যেন হালকা মনে হচ্ছে না? যাক গে। আবার শুয়ে পড়ল ঋদ্ধি, যদি আরও একটু ঘুমোনো যায়।
“এখন বিকেল। আমরা আছি ঋদ্ধিবাবুর বাড়ির সামনে। এখানেই আজ সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এ-বাড়ির একমাত্র বাসিন্দা ঋদ্ধিবাবুকে। তাঁর গলায় গভীর ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে, যা ধারালো কোনও অস্ত্রের আঘাতে হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঋদ্ধিবাবু সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন, কারণ বাড়িতে দ্বিতীয় কারোর উপস্থিতি বা আগমনের কোনও চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু রহস্যজনকভাবে ধারালো কোনও অস্ত্র মৃতের চারপাশে কোথাও পাওয়া যায়নি। তাহলে আসল ঘটনা কী? তদন্ত চলছে। ক্যামেরায় সুশান্তর সাথে আমি আবীর দত্ত, ডেইলি নিউজ।”
ঋদ্ধির এবার মনে পড়েছে, আততায়ী যেন বলছিল, “তোর ভয়ই তোকে মেরে ফেলবে, তোর ভয়ই…”