ভারতবর্ষে ডাকঘরের (পোস্টঅফিস) সংখ্যা জান? ১,৩৯,২২২ ! পৃথিবীর আর কোন দেশে এত ডাকঘর নেই। পৃথিবীর উচ্চতম ডাকঘরটিও ভারতবর্ষে। হিমাচল প্রদেশের লাহুলস্পিতি জেলার হিকিম গ্রামে এই ডাকঘরটি। ১৪৫৬৭ ফুট উচ্চতায় অবস্তিত এই ডাকঘরটি বছরে মাত্র ছয় মাস খোলা থাকে। আর বছরের বাকি সময় বরফের চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে থাকে এটি।
ভারতবর্ষের পাহাড়ে আরও অনেক ডাকঘর থাকলেও শুধু মাত্র একটিই ভাসমান পোস্টঅফিস আছে এই বিশাল দেশে। ২০১১ সালের অগাস্ট মাসে কাশ্মিরের ডাল লেকে চালু হয় দেশের প্রথম ভাসমান ডাকঘরটি। শুধু নামেই ডাকঘর নয়। রীতিমত অন্যান্য সব ডাকঘরের মতো কাজ হয় এখানে । টাকা জমা ও টাকা তোলা যায় এই ডাকঘর থেকে। এমনকি চিঠিও পোস্ট করা যায়।
মূলত পর্যটক, ডাললেকের হাউসবোটে বসবাসকারী কয়েকশো পরিবার ও ডাল লেককে ঘিরে থাকা প্রায় হাজার পঞ্চাশেক মানুষকে পরিষেবা দিতে এই ভাসমান ডাকঘরের সূচনা।
এই ডাল লেকের জলেই ছোট নৌকো শিকারায় চলে কেনাবেচা। ফল, সব্জি থেকে জামা কাপড় সবই পাওয়া যায় এই ভাসমান বাজারে। মূলত এই ছোট ব্যবসায়ীরাই নৌকো করে এসে এই ভাসমান ডাকঘরে টাকা জমা রাখেন। প্রতিমাসে গড়ে প্রায় দুই কোটি টাকার লেনেদেন হয় এই ডাকঘরে।
দুটি বিশাল কামরা বিশিষ্ট বিশাল এক হাউসবোটে এই ডাকঘরটি। একটি ঘরে চলে অন্যান্য ডাকঘরের মতো স্বাভাবিক কাজকর্ম। আর একটি ঘরে ডাকবিভাগের একটি ছোট মিউজিয়াম আছে। এখান থেকে স্মারক কিনতেও পাওয়া যায়। এই ডাকঘরে চিঠি পোস্ট করলে সেটি ডাল লেকের বিশেষ ছবিওয়ালা খামে ভরে বিশেষ ছাপ লাগিয়ে প্রাপকের কাছে পাঠানো হয়। এই বিশেষ ছাপ রাজ্যের পর্যটন প্রচারের কাজও করে। রীতিমত লেকের জলে চলে বেড়ায় এই ডাকঘরটি।
ব্রিটিশ আমলে এই ডাকঘরটির নাম ছিল ‘নেহেরু পার্ক পোস্টঅফিস’। অযত্নে লেকের এক কোণায় পড়ে থাকা সেই ডাকঘরটিকে পোস্টমাস্টার জেনারেল জন স্যামুয়াল নতুন করে তৈরি করে পুরোদস্তুর কার্যকরী ডাকঘরে পরিনত করে ডাল লেকের জলে ভাসিয়ে নামকরণ করেন “ফ্লোটিং পোস্টঅফিস।”