আজও খুঁজি
উপাসনা পুরকায়স্থ
ভূতের নামটি শুনলে আমার আসছে শরীরে জ্বর,
ভাবি বসে, বাবা কি বুঝে কে জানে বানাল এখানে ঘর!
পাশেই শ্মশান, বেলগাছে তার দোল খায় চামচিকে
মাঝরাতে এক জটাধারীবাবা কলকেতে জ্বালে টিকে।
বাতাস বইলে কী এক গন্ধ, আঙুলে চাপি নাক
আধপোড়া দেহ, মাংস খাচ্ছে শকুন পেঁচা ও কাক!
ঘুম ভেঙে যায়, শুনি ওইখানে ফিসফিস করে কারা
বাতাসে ভাসছে কান্নার স্বর, কাঁদছে স্বজনহারা!
হাঁটে চলে ক’টা কঙ্কালদেহ, খিক খিক খিক হাসে
আলো-আঁধারীতে ছাই মেখে গায়ে, গড়াগড়ি খায় ঘাসে।
ওই পথে আমি ইশকুলে যাই, রোজ কত চোখে পড়ে
কাটামুণ্ডু ও হাত-পা ঝুলছে, দোল খায়, নড়েচড়ে।
সেদিন কী হল, হিসেব কিছুই মেলাতে পারিনি আর
পেছনে শুনছি চেনা গলা এক চেনো তোমরাও কার!
ডাকলে আমায়, “দাঁড়া রে হরিশ, কথা আছে তোর সাথে
ইচ্ছে করছে মাছপোড়া খাব, ঘি দিয়ে গরম ভাতে।”
মাথায় ঘোমটা সিঁদুরের টিপ লালপেড়ে সাদাশাড়ি
পেছনে তাকিয়ে ঘাম ঝরে গায়ে, কী করে ফিরব বাড়ি!
ফসলের সুখে আনন্দে মেতে গিয়েছিল কাকি খেতে,
সন্ধের মুখে বিষধর আলে বসেছিল ওঁত পেতে।
সব হল শেষ গেল আশ্বিনে, দেখছি এখানে কাকে
চোখদুটো যেন আগুনের গোলা, হাতটা বাড়িয়ে ডাকে।
কোথা থেকে এল পুতুলকাকিমা! মূর্ছা গেলাম বুঝি
তারপর আর মনে নেই কিছু, প্রশ্নটা আজও খুঁজি!
ছবি মৌসুমী