কৌশিক ভট্টাচার্য র সমস্ত ছড়া একত্রে
টেবিল আর চেয়ারের গপ্প
(Edward Lear এর The Table and the Chair অবলম্বনে। “নাচলো সবাই উঠলো গেয়ে” — মূল লেখাটিতে সবাই মিলে শীর্ষাসনে নেচেছিলো ! এই লেখার শেষ প্যারাগ্রাফ-টি আমার সংযোজন।)
কৌশিক ভট্টাচার্য
টেবিল বলে, “চেয়ার ভায়া,
চল না আসি ঘুরে!
আর পারি না, গরম কি এ!
গা উঠেছে চিড়বিড়িয়ে
থাকবো ভুলে, আড্ডা দিয়ে,
একটু গেলে দূরে!”
চেয়ার বলে, “টেবিল দাদা,
তাও কি বল হয়?
বোকার মত বলছ যা তা
নেই কোন-ই মুন্ডু-মাথা
দেখছো না এ’ পায়ের পাতা
হাঁটার জন্য নয়!”
টেবিল বলে শ্বাসটি ফেলে,
“একটু তো আন জোশ!
দুজন মিলে কোথাও যাওয়া
লাগবে গায়ে নতুন হাওয়া
তাই তো এত ঘুরতে চাওয়া
চেষ্টাতে কি দোষ!”
মনের সুখে হাঁটল ওরা
চলল হাওয়া খেতে।
দুলকি চালে, রাস্তা ধরে
ঠকঠকাঠক আওয়াজ করে
দেখল কত দু চোখ ভরে
মজায় যেতে যেতে।
টেবিল হাঁটে, চেয়ার হাঁটে
অবাক যত লোকে
সবাই বলে রাস্তা ছেড়ে,
“কামড়াবে কি? আসবে তেড়ে?”
সবাই ভাবে মুন্ডু নেড়ে
বিগড়োলো কি চোখে!
ঘুরতে গিয়ে দেখলো দুয়ে
এমনি গলিঘুঁজি!
আনকোরা লোক সদাই থামে
কোথায় যাবে? ডাইনে? বামে?
চুলকে মাথা সবাই ঘামে
সবাই মরে খুঁজি।
পথ হারিয়ে যখন ওরা
বেদম ভ্যাবাচ্যাকা,
কোথার থেকে রাস্তা জানা
গুবরে পোকা, ইঁদুরছানা
প্যাঁকপ্যাঁকে হাঁস বাগিয়ে ডানা
ওদের দিল দেখা।
ফিরলো বাড়ি দুজন ওরা
আর এলো তিনমূর্তি।
মনের মত বন্ধু পেয়ে
নাচলো সবাই, উঠলো গেয়ে,
পোলাও, কাবাব, মাংস খেয়ে
জোর চালালো ফুর্তি!
চেয়ার নিয়ে, টেবিল নিয়ে,
শেষ কথাটা এই
খাবার খেল কেমনি তারা
কোথাও কোনো মুন্ডু ছাড়া
বুঝিয়ে দেবে তোমায় কারা
আমার জানা নেই।