এলিয়টের আগের ছড়াগুলো বিল্লিনামা, গাম্বিড়াল, হালুমবা, রামটাম টাগ্গার, জেলকলিদের গান, মঙ্গনজেরি আর রামপালটাইগার
দাঁতেরেনমি
টি এস এলিয়ট-এর “ওল্ড ডিউটেরোনমি” অবলম্বনে।অনুবাদ আবু হোসেন
দাঁতেরেনমি ছিল প্রাচীন মার্জার (যদিও পায়নি সে অমর বর)
একের পরে এক নয়টি জিন্দেগি কাটিয়েছিল সুখে বহু বছর
তাহার নামে গান কাব্যগীতি গায় দেশে কি ভিনদেশে শত চারণ
প্রাচীন যুগ হতে! ভিক্টোরিয়া রানি তখনো জোটেনিকো সিংহাসন
দাঁতেরেনমি তারে দিয়েছে বারে বারে বিধাতা নয়খানি পত্নীশোক
না না না নয় নয়, নয়ের পিঠে নয় এ কথা বলে যত দুষ্ট লোক।
দাঁতেরেনমি তার শতেক পরিবার কত না সুখে থাকে শহরভর
বৃদ্ধ থাকি থাকি ওঠে সে ম্যাঁও ডাকি কপালে জোটে তার কত আদর
শান্তসমাহিত অর্ধনিদ্রিত বৃদ্ধ দেহখানি ছড়িয়ে রয়
গির্জাপ্রাচীরের রৌদ্রমাখা চুড়ে। তাহারে দেখে বুড়া হাসিয়া কয়
জগতে যাহা সেরা তাহারো চেয়ে সেরা দাঁতেরেনমি সেই প্রাচীন প্রাণ
অসার সংসারে আমি তো চিনি তারে যতই কানা হোক চোখ দু’খান।
যখন হাটবারে বাজারে ভিড় বাড়ে তখনি পথ জুড়ে শয্যা তার
বাজারি ষাঁড়গুলি আসিলে শিং তুলি তাদের পিঠে পড়ে ধুম প্রহার
বিড়াল অবিচল, গাড়ি ও লরিদল রাস্তা ছাড়ি চাপে ফুটপাথে
নোটিশ খাড়া হয়, “এ-পথ খোলা নয়।” বাজারে এসো সবে ঘুরপথে
দাঁতেরেনমি সুখে ঘুমায় হাসিমুখে নিঝুম পথে ভালো নিদ্রা হয়
ধুলায় দেহ পেতে। সে পথে যেতে যেতে তাহারে দেখে বুড়া হাসিয়া কয়
জগতে যাহা সেরা তাহারো চেয়ে সেরা দাঁতেরেনমি সেই প্রাচীন প্রাণ
অসার সংসারে আমি তো চিনি তারে যতই কালা হোক কান দু’খান।
“শৃগাল ও শিঙাধ্বনি” নামেতে যে বিপণী বিকালে সেথা তার নিদ্রাধাম
সুখেতে চোখ বুঁজি আরামে ঘাড় গুঁজি ঘুমেই কেটে দিন ঘনায় শাম
দোকানী বুড়ি এসে তখন হেসে হেসে বলেন সবে হাত করিয়া জোর
একটু থামো বাপ, খাও না চুপচাপ ঘুমাতে দাও তাঁরে কোরো না শোর।
যদিনা থামো বাপ, বন্ধ হবে ঝাঁপ ডাকিব পাহারোলা পাগড়ি লাল
শুনে সে ধমকানি ছাড়িয়া থালাখানি সকলে বলে, “যাই আসিব কাল।
আহা সে সুখে থাক আরামে পরিপাক করুক গুরুভোজ প্রাত্যহিক
আমরা ঘরে যাই, রুটি ও চানা খাই, দাঁতেরেনমি সুখে নিদ্রা দিক
দাঁতেরেনমি সুখে ঘুমায় হাসিমুখে নিঝুম ঘরে ভালো নিদ্রা হয়
পাথরে দেহ পেতে। বাহিরে যেতে যেতে তাহারে দেখে বুড়া হাসিয়া কয়
জগতে যাহা সেরা তাহারো চেয়ে সেরা দাঁতেরেনমি সেই প্রাচীন প্রাণ
অসার সংসারে আমি তো চিনি তারে যতই খোঁড়া হোক ঠ্যাং দু’খান।
জয়ঢাকের ছড়া লাইব্রেরি