রান্নামাসীর কাছে
তন্ময় চট্টোপাধ্যায়
বীরেনবাবুর ছোট্টছেলের বছরতিনেক হবে
বাবা-মায়ের আদর ছেড়ে স্কুলে যাচ্ছে সবে
বীরেনবাবু টাঁকশালেতে বিরাট অফিসার
গিন্নিবাড়ির, কোন্নগরে ব্যাংকে ক্যাশিয়ার
প্রতিদিনই অফিসে যান দশটা বাজার পরে
ছোট্ট খোকা মাসীর কোলে ঘুমিয়ে থাকে ঘরে
দিদিমণির চিন্তা খুবই পয়সা সোনাদানা
বিভিন্ন উৎসবের দিনে লকার থেকে আনা
আনা-নেয়ার সমস্যাতে অফিসে হয় দেরি
বড়বাবুর মেজাজ তখন চড়েই থাকে ভারী
এসব নিয়ে স্বামীর সাথে চলছিল জল্পনা
ছোট্ট খোকা আড়াল থেকে শুনছে আলোচনা
বলল, মা গো, যখন তুমি থাকবে না কো ঘরে
মাসীর কাছেই সোনাদানা রেখো চুপটি করে
কমবে তোমার কাজের ধকল কমবে তোমার কষ্ট
ঠিক সময়ে অফিস হাজির নয়কো সময় নষ্ট
মা বললে, না রে বাবু, গয়নাহাতে পেলে
সুযোগ পেলেই সটকে যাবে গয়না যাবে জলে
এলোকগুলো নয় সুবিধের বাধ্য হয়েই রাখি
অনেক কিছু দেখেও তো চোখ বন্ধ করেই থাকি
বলল খোকা,গয়না তোমার দামি আমার থেকেও?
চিন্তা তুমি করেছ কি, বলছে তোমায় কী কে?
মাসীই আমায় করল বড়ো মায়ের স্নেহ দিয়ে
চিন্তা করার সময় কোথায় তোমার এ’সব নিয়ে?
গয়না দিয়ে লকার ভরো যায় চুরি সব পাছে
কিন্তু আমায় যাও রেখে রোজ রান্নামাসীর কাছে।
জয়ঢাকের ছড়া লাইব্রেরি