জয়তী অধিকারীর আরো ছড়া তিন তাল, এক ছুটে, ছেলেবেলার ফলগুলি, পাহাড়ি স্বপ্ন
নন্দীখুড়োর বাগান
জয়তী অধিকারী
রোজ দুপুরে তালপুকুরে ব্যাঙনাচুনি খেলা
পিঁপড়েগুলো উড়িয়ে ধুলো বুঝছে এখন ঠেলা।
মায়ের বারণ ভুলে গিয়ে হিরোগিরির ফিকির
কপালে আজ বাসায় ফিরে জুটবেই কানমলা!
আমড়া গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে দেদার ফল
ফড়িংরা সব আসছে উড়ে, আনন্দে উচ্ছল
ফড়িংদাদু ভাবছে এবার দাঁত যদি যায় খুলে?
বুড়ো মালী হাসছে খালি, ডেকেছে দমকল।
কাঠবেড়ালি পুটুর পুটুর ছুটছে এদিক সেদিক
ফলসাতলায় ছড়িয়ে পড়া ফলসাতে মারছে কিক
নন্দীখুড়োর বাগানে আজ ফলের মহোৎসব
খাওয়ার শেষে পালিয়ে বেঁচে, হাসছে সে ফিক ফিক।
সবুজ টিঁয়ার দুঃখ ভারী, লংকা অমিলান
ফলের বনে করছে খেলা দস্যি পোলাপান
লাল ঠোঁট তার উঠছে ফুলে, চোখের কোণে জল
দূর আকাশে দেয় সে পাড়ি, গভীর অভিমান।
ঝিঁঝিঁর ডাকে জাগল পেঁচা, রাতের চৌকিদার
জোনাক-আলোয় রাতপোকাদের খুঁজে পাওয়াই ভার
কোটর থেকে বেরিয়ে এসে বসল গাছের ডালে
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল বনে জ্যোৎস্না চমৎকার।
রোজ সন্ধ্যায় নন্দীখুড়ো বসেন বারান্দায়
ফোকলা দাঁতে হাসতে হাসতে চুমুকটি দেন চায়ে
ফলের বাগান, পাখি, ফড়িং, পোকামাকড় নিয়ে
জীবন কাটান হেসেখেলে, এসরাজ বাজিয়ে।