কন-টিকি অভিযান-আগের পর্বগুলো
আগের কথা
থর হেয়ারডেল এসে পৌঁছলেন আমেরিকায়, তার সাগর পাড়ি দেবার তত্ত্ব নিয়ে। এক বিখ্যাত নৃতাত্ব্বিকের সঙ্গে দেখা করে বললেন তার গবেষণাপত্র পড়ে দেখতে। তিনি পান্ডুলিপিটা তো ছুঁয়ে দেখলেনই না উলটে বললেন, এই তত্ত্ব ডাহা ফেল করবে কারণ পেরুর প্রাচীন ইন্ডিয়ানরা নৌকোর ব্যবহার জানতেনই না। তিনি কৌতূকভরে বললেন থর অমন একটা ভেলা বানিয়ে নিজেই সাগর পাড়ি দিন না কেন। প্রিয় বন্ধু নৃতত্ত্ববিদ কার্লকে এসে জানাতে সেও একপ্রকার হেয়ারডেলের তত্ত্বের বিপক্ষেই রায় দিল। থর কিন্তু নিজের বিশ্বাসে অটল ছিলেন। কার্লকে বললেন তার মনের কথাটা। এবারে সত্যিই ভেলায় চড়ে সাগর পাড়ি দেবেন।
(৪)
একটি অভিযানের শুরু
বাড়িভাড়া বাকি পড়েছিল এক সপ্তাহের। প্রায় একই সময়ে নরওয়ের ব্যাঙ্কও চিঠি দিয়ে জানাল যে আমি আর ডলার পাব না। মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের কারণে। লোটাকম্বল নিয়ে ব্রুকলিন চলে এলাম। এসে নরওয়ের এক নাবিকের বাড়িতে উঠলাম। খাবার দাবার ভাল, অন্তত আমার পকেটের সঙ্গে মানানসই। বাড়ির দোতলার একটা ছোটো ঘরে ঠাঁই হল। খেতে আসতে হত নিচের বড়ো হল ঘরটায়, সমুদ্রে যাওয়া লোকগুলো আসে যায়। তাদের সাথে খাওয়া। একদল চলে গেলে আরেকদল। একেকটা লোক একেকরকম, ভদ্রতার মাপও একেকজনের একেকরকম, কিন্তু একটা জিনিস সবার ক্ষেত্রেই এক। তারা যখন সমুদ্র নিয়ে কথা বলে, তারা জানে ঠিক কী নিয়ে কথা বলছে তারা! একথা সেকথা থেকেই আমি জেনে ফেললাম, ডাঙা থেকে দূরত্ব বাড়লেই বা সমুদ্রের গভীরতা বাড়লেই সমুদ্র অশান্ত বা উত্তাল হয় না বা তার ঢেউ বাড়তে থাকে না। উলটে তীরের কাছেই সামুদ্রিক ঝড়ঝঞ্ঝা ভয়াবহ, মাঝসমুদ্রে নয়। ডাঙার কাছাকাছি সামুদ্রিক স্রোতের বা পাড়ে আছড়ে পড়া ঢেউ প্রায়শই অনেক বেশি অশান্ত হতে পারে। সমুদ্রের গভীরে সাধারণত যেটা মোটেই এতটা বেশি হয় না। যে নৌকো তীরের কাছে টিঁকে থাকতে পারে সে মাঝসমুদ্রেও দিব্যি টিঁকে যেতে পারে। আরও জানলাম যে উঁচু ঢেউয়ের ধাক্কায় যখন বড়ো জাহাজের মোটা ইস্পাতের রড সরু তারের মতো বেঁকে তুবড়ে যায় সেখানে ছোট্টো নৌকো দুটো বড়ো ঢেউয়ের মাঝে দিব্যি ভাসতে থাকে, নাচতে নাচতে ঢেউয়ের মাথায় চড়ে বসে। যেন একটা সিগাল। আমি সেই সমস্ত নাবিকদের সঙ্গেও কথা বললাম, জাহাজডুবি অভিজ্ঞতার পরেও যারা আবার সমুদ্রে গেছে আর নিরাপদেই ছোটো লঞ্চ বা নৌকোয় মাঝসমুদ্রে ঘুরে এসেছে।
কিন্তু এই লোকগুলোও ভেলার ব্যাপারে কিছুই জানত না। একটা ভেলা, যেটা কখনই জাহাজ বা ওইরকম কিছু নয়, যাতে পেরেক ঠোকার বা জাহাজের মতো বুলওয়ার্ক এসবের বালাই নেই। চরম বিপদে ওতে চেপে ভেসে থাকা যায় কেবল, যতক্ষণ না একটা জাহাজ বা নৌকো এসে উদ্ধার করে। ব্যস এটুকু। একটাই লোককে দেখলাম খোলা সমুদ্রে ভেলায় ভেসে থাকার ব্যাপারে বেশ আস্থা। একবার জার্মান টর্পেডোর আঘাতে জাহাজ ডুবে গেলে সে মাঝ আটলান্টিকে তিন সপ্তাহ একটা ভেলায় ভেসে ছিল।
‘কিন্তু তুমি একটা ভেলাকে চালাতে তো পারবে না’, সে বলে উঠল, ‘বাতাসের টানে ভেলাটা সামনে, পেছনে, পাশাপাশি যেমন ইচ্ছে ভেসে যাবে শুধু।’
লাইব্রেরিতে গিয়ে খুঁজে পেতে বার করলাম প্রথম যারা দক্ষিণ আমেরিকার লাগোয়া প্রশান্ত মহাসাগরের কূলে এসে ভিড়েছিল সেইসব ইউরোপিয়ানদের লেখা-জোকা। সেখানে ইন্ডিয়ানদের বালসা কাঠের তৈরি বড়ো বড়ো ভেলার ছবি কিংবা বর্ণনার অভাব ছিল না। এতে চৌকো একটা পাল থাকত, মাঝখানে একটা হাল আর পেছনদিকে একটা দাঁড়। সুতরাং সেটাকে দিব্যি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব ছিল।
সপ্তাহের পর সপ্তাহ কেটে গেল নয়া আস্তানায়। যেখানে যেখানে আমার তত্ত্বের ব্যাপারটা লিখে পাঠিয়েছিলাম, শিকাগো বা অন্যান্য শহরে, কোনোখান থেকেই কোনো উত্তর এল না। তার মানে কেউই পড়েনি ওটা।
তো, এক শনিবার, আচমকাই ওয়াটার স্ট্রিটে এক জাহাজির দোকানে গিয়ে হাজির হলাম। আমায় খুব সসম্ভ্রমে ক্যাপ্টেন বলে সম্বোধন করা হচ্ছিল। কারণ কিছুই না, আমি একটা প্রশান্ত মহাসাগরের পাইলট চার্ট কিনেছিলাম। ওটা গুটিয়ে বগলদাবা করে ট্রেন ধরে সোজা অসিনিং। ওখানে আমি শনি রোববারে নরওয়ের এক নবদম্পতির কাছে প্রায়ই যেতাম। ওদের জায়গাটি চমৎকার। আমার বন্ধুটি জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিল, এখন নিউ ইয়র্কের ফ্রেড ওলসেন জাহাজ কম্পানির অফিস ম্যানেজার।
সুইমিং পুলে নামতেই শহুরে জীবন মাথা থেকে উবে গেল। ওসব কথা বেমালুম ভুলে রইলাম বাকি দুদিন। সাঁতারের পর অ্যামবোর্গ সুস্বাদু পানীয় নিয়ে এলে ওর লনে বসলাম দুজন।চমৎকার রোদ্দুর। আমার তর সইছিল না। ঘাসের ওপর চার্টটা বিছিয়ে উইলহেলমকে জিজ্ঞাসা করলাম, শোনো! তুমি কি মনে করো একটা ভেলায় চেপে পেরু থেকে দক্ষিণ সাগরের দ্বীপ অবধি মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব?
ও থমকে গেল; চার্টের দিকে না তাকিয়ে আমার মুখের দিকেই তাকাল বটে, থমকালও, কিন্তু উত্তর দিল তৎক্ষণাৎ, হ্যাঁ সম্ভব। অমনি খুব হালকা মনে হল নিজেকে, যেন শার্টের মধ্যে বেলুন ছেড়ে দিয়েছি একটা। আমি জানতাম উইলহেলমের কাছে নৌবিদ্যা বা নেভিগেশন ব্যাপারটা, কাজ তো বটেই, বেজায় শখেরও জিনিস। আমার পরিকল্পনাটা ধরে নিল একমুহূর্তেই। তারপরেই আমায় অবাক করে দিয়ে বলল, ভাবনাটা অবশ্য পাগলামি ছাড়া কিছু নয়।
আমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, তবে যে এই একটু আগে তুমি বললে, এটা সম্ভব!
“ঠিকই,” সে স্বীকার করল, “কিন্তু এর ব্যর্থতার সম্ভাবনাও কিছু কম নয়। তুমি জীবনে বালসা-ভেলায় চড়োনি, আর আজকে হঠাৎ ভাবছ তাতে চড়ে প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দেবে! হয়তো ভেঙেই যাবে, সম্ভবত পারবেই না। পেরুর পুরোনো ইন্ডিয়ানরা কয়েক পুরুষ ধরে এটা বানাত, তাদের অভিজ্ঞতা ছিল। হয়তো দশটার মধ্যে একখানা সাগর পাড়ি দিতে পারত, নাহয় একশটাই ধরো, সারা শতাব্দি জুড়ে। তোমার কথা অনুযায়ী, ইনকারা দলে দলে বালসা-ভেলায় চড়ে একসাথে খোলা সমুদ্রে যাত্রা করত। বেশ, তার মানে একটাতে কোনো সমস্যা হলে কাছাকাছি ভেলায় সেই লোকেদের তুলে নেওয়া হত। কিন্তু মাঝসমুদ্রে তোমায় কে বাঁচাবে! ধরা যাক, একটা রেডিও নিয়েই গেলে, বিপদ আপদের জন্য, কিন্তু ওই অনন্ত জলরাশির মধ্যে এই এত্তটুকু ভেলা, ডাঙা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে খুঁজে পাওয়া কি মুখের কথা? তোমার কাছে পৌঁছনোর বহু আগেই ঝড় এসে ভেলা থেকে তোমায় ভাসিয়ে নেবে, তোমায় ডুবিয়ে ছাড়বে কয়েকশবার। বরং ধৈর্য ধরে অপেক্ষা কর, যতক্ষণ না তোমার পান্ডুলিপিটা কেউ পড়ে। বার বার চিঠি লেখো ওদের, খোঁচাও, না খোঁচালে কিছুই হবে না।”
“আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। আমার পয়সাকড়িও প্রায় শেষ।”
“তাহলে আমাদের সাথে এসে থাকো। আর হ্যাঁ, ভালো কথা, তোমার পয়সা নেই, তো দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অভিযানের কথা ভাবছ কী করে?”
“লোকজনকে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব পড়ানোর চেয়ে অভিযানে উৎসাহিত করা অনেক সোজা।”
“কিন্তু কী লাভ হবে তোমার?”
“আমার তত্ত্বের বিপরীতে সবচেয়ে গুরুতর বিরোধী স্বরকে নিকেশ করা যাবে; আর, তাছাড়া, সত্যি বলতে গেলে, বিজ্ঞানজগতও খানিকটা এদিকে নজর দেবে।”
“কিন্তু খারাপ কিছু ঘটে গেলে?”
“তাহলে আমি কিছুই প্রমাণ করতে পারলাম না।”
“সেক্ষেত্রে তুমি তোমার তত্ত্বটাকেই সবার সামনে ধ্বংস করবে, তাই না?”
“হয়ত। কিন্তু তুমিই বললে কিনা যে দশটায় একটা হয়তো পাড়ি দিয়েছিল, আর সেটা আমাদের অনেক আগেই!”
বাচ্চারা খেলবে বলে বেরিয়ে এসেছিল। তাই সেদিন আর কথা এগোল না।
যথারীতি পরের সপ্তাহে চার্ট বগলে অসিমিং-এ হাজির হলাম। আর যখন ফিরে আসছি, আমার মানচিত্রে একটা পেন্সিলের দাগ, পেরুর তটভূমি থেকে টুয়ামাটো দ্বীপ অবধি। আমার বন্ধু, ক্যাপ্টেন, আমাকে বোঝানোর বহু চেষ্টা চরিত্তির করে আশা ছেড়ে দিয়েছিল। শেষকালে দুজনে মিলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে স্থির করলাম ভেলার গতিবিধি ও গতিবেগ সংক্রান্ত বিষয়।
“সাতানব্বই দিন,” উইলহেলম বলল, “কিন্তু মনে রেখ এ কেবল কাগজে কলমে, আদর্শ পরিবেশে, দরকারী হাওয়ার অনুকূলে। আর হ্যাঁ তুমি যেমনটি চাইছ ভেলা যদি ঠিক তেমনটিই চলে, তবেই! তুমি চার মাসের জন্য প্রস্তুতি নাও, চাই কী খানিক বেশিও লাগতে পারে।”
“বেশ বেশ।” আমি সোৎসাহে বলি, “চার মাসেরই প্রস্তুতি থাকবে কিন্তু সাতানব্বই দিনেই করা যাক।”
সে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আমার ছোটো ঘরটাকে দ্বিগুণ আরামের লাগছিল। বিছানার একপাশে বসে মানচিত্রটা মেলে ধরলাম। ঘরের মধ্যে বিছানা আর আলমারি ছেড়ে বাকি অংশটুকুতেই তো দিব্যি হেঁটে চলে কাটাই। ওহ, ভেলাটা তো এর চেয়ে বড়োই হবে। জানলা দিয়ে ঝুঁকে শহরের আকাশে তাকালাম, চারপাশের পাঁচিলের মাঝে মাথার ওপরে তারায় ভরা আকাশ। ভেলার ওপরে এমনি একটা ছোট্টো ঘর থাকলে নিশ্চই মাথার ওপরেই আকাশ আর অগণিত তারারাও থাকবে।
নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের কাছে ওয়েস্ট সেভেন্টি সেকেন্ড স্ট্রিটে সবচেয়ে অভিজাত ক্লাবগুলোর মধ্যে একটা ক্লাব আছে। বাইরে ঝকঝকে পেতলের পাতে লেখা ‘এক্সপ্লোরার্স ক্লাব।’ ব্যস। বাইরে থেকে দেখে কিছুই বোঝার জো নেই যে ভেতরে অসাধারণ ব্যাপারস্যাপার ঘটে থাকে। কিন্তু ঢুকে পড়লেই দেখবে এক অদ্ভুত দুনিয়ায় সে প্যারাসুটে করে লাফ দিয়েছে। নিউ ইয়র্কের হাজার হাজার গাড়ি আর বহুতল বাড়ি থেকে অনেক দূরে। যেই পেছনে দরজা বন্ধ হল, নিউ ইয়র্ক শহর নেই, অমনি চারপাশে সিংহশিকারের গল্প, পর্বতাভিযানের কাহিনী, মেরুজীবনের কথা। যখনই নৈশভোজে দূরদেশের কারো বক্তৃতা শোনার আয়োজন হত অমনি চারপাশে জলহস্তি আর হরিণের ট্রফি, বড়ো শিকারের রাইফেল, হাতির দাঁত, যুদ্ধের দামামা, বর্শা, ভারতীয় কার্পেট, পুতুল, খেলনা জাহাজ, পতাকা, ছবি আর মানচিত্র সব মিলে ভিড় করে আসত।
মার্কুইসাস দ্বীপে ঘুরে আসার পর আমি ওই সংঘের একজন নির্বাচিত ও সক্রিয় সদস্য ছিলাম আর কনিষ্ঠতম সভ্য হবার সুবাদে শহরে থাকাকালীন প্রায় কোনো বক্তৃতাই আমার বাদ যেত না। ফলে নভেম্বরের বর্ষার সন্ধ্যায় আমি যখন ক্লাবে ঢুকলাম ভেতরের দক্ষযজ্ঞ অবস্থা দেখে ঘাবড়ালাম না। মেঝের মাঝখানে একটা রাবারের তৈরি চোপসানো ভেলা। তার সাথে জাহাজি রেশনপত্র আর কলকব্জা। আর অন্যদিকে প্যারাসুট, রাবারের পোশাক, নিরাপত্তা-পোশাক আর মেরু অঞ্চলের দরকারি জিনিসপত্র টেবিল জুড়ে আর দেয়ালেও ঝুলছে; এর সাথে জল শোধন করার বেলুন এবং আরো নানান আশ্চর্য আবিষ্কার রয়েছে এদিক সেদিক। নতুন একজন নির্বাচিত সদস্য, এয়ার মার্শাল কমান্ডের যন্ত্রপাতির দায়িত্বে থাকা কর্নেল হাসকিনের ওপর দায়িত্ব ছিল বক্তৃতা দেওয়ার, এবং একাধিক সামরিক আবিষ্কারের কথা জানানো। তিনি মনে করতেন ভবিষ্যতে উত্তর দক্ষিণ গোলার্ধে সর্বত্রই বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে এই সামরিক আবিষ্কারগুলি কাজে লাগানো যাবে।
বক্তৃতার পর তুমুল আলোচনা চলল। নামকরা ড্যানিশ মেরু অভিযাত্রী, লম্বা আর ভারী চেহারার পিটার ফ্রাউসেন, লম্বা দাড়ি নেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। ওঁর এই নয়া নয়া আবিষ্কারগুলোর ওপর মোটেও কোনো ভরসা ছিল না। তিনি নিজে একবার গ্রিনল্যান্ডে একটা অভিযানে এস্কিমোদের কায়াক আর ইগলুর বদলে এরকম রাবারের নৌকো আর তাঁবু ব্যবহার করে প্রায় মরতে বসেছিলেন। প্রথমত তুষারঝড়ে প্রায় জমে যাবার জোগাড় হয়েছিল কেননা তাঁবুর চেন ঠান্ডায় এমন জমে গেছিল যে খুলে ভেতরেই ঢুকতে পারেননি। তারপর আরেকবার মাছ ধরবার সময় বঁড়শির হুক লেগে রাবারের ভেলা ফুটো হয়ে স্রেফ ন্যাতানো কাপড়ের মত ডুবে গিয়েছিল। তিনি আর তার এস্কিমো বন্ধু কোনোক্রমে কাছাকাছি একটা কায়াকে উঠে তীরে পৌঁছতে পেরেছিলেন। তার বিশ্বাস ছিল হাজার হাজার বছরের অভিজ্ঞতা এস্কিমোদের যেসব উপযোগী জিনিস তৈরি করতে শিখিয়েছে, কোনো বুদ্ধিমান মানুষই তার গবেষণাগারে বসে তার থেকে ভালো কোনো জিনিস বানাতে পারবে না।
বক্তৃতার শেষে কর্নেল হাসকিন অবাক করে দেবার মতো একটা প্রস্তাব দিলেন। সক্রিয় সদস্যরা তাদের পরবর্তী অভিযানে সেদিনের প্রদর্শিত জিনিসের যেকোনো একটি নিয়ে যেতে পারেন; শুধু একটাই শর্ত, অভিযান শেষে ফিরে এসে তার গবেষণাগারে জিনিসটা সম্বন্ধে বিস্তারে মতামত জানাতে হবে।
ক্রমশ