টার্কি রোষ্ট
তন্নিষ্ঠা মজুমদার
অনেকদিন আগে লন্ডনে বেলা বার্লো নামে এক ছবি আঁকিয়ে থাকত। সে শুধু নানা সিনেমার পোস্টার আর বিজ্ঞাপন বানিয়ে পেট চালাত। তার অফিসের বসের নাম ছিল মেরি স্মিথ। মেরির দারুণ বদমেজাজ। কিছুতেই তার মন পাওয়া যেত না। কোনোদিন কারও প্রশংসা করেনি। একদিন বেলা মেরিকে বললে, “ম্যাডাম, একটা পোস্টার ডিজাইন করেছি। দেখুন কেমন হয়েছে।”
“কীসের পোস্টার?” খেঁকিয়ে উঠল মেরি।
“ওই যে নতুন সিনেমাটা আসছে, ড্রিম বার্ড, তার পোস্টার বানালাম।”
দেখেই মেরি মুখ ভ্যাটকাল, “ছিঃ! কী কুৎসিত ছবি! দেখলেই ঘেন্না হয়। তুই কি আঁকতেও শিখিসনি এতদিনে?” বলেই একটানে ছবিটা মাটিতে ছুঁড়ে ফেলে দিল মেরি।
বেলা কাঁদোকাঁদো স্বরে বলল, “তাহলে কি আবার এঁকে নিয়ে আসব ম্যাডাম?”
মেরি বেলাকে প্রায় ভেঙিয়েই বলল, “আবার এঁকে আনব ম্যাডাম? তা না হলে কি বসে বসে আঙুল চুষবি? মাইনা দিই কীসের জন্য? যা, ভালো করে এঁকে নিয়ে আয়। আর হ্যাঁ, যা করবি, ঝটপট করবি।”
বেলা মনখারাপ করে আগের ছবিটা হাতে নিজের কাজের জায়গায় ফিরে গেল। বেশ খানিক সময় নিয়ে নতুন করে আঁকল গোটা পোস্টারটা। সেটা আবার মেরির কাছে নিয়ে গিয়ে বেলা বললে, “ম্যাডাম, এবারে ভালো হয়েছে?”
মেরির তখন মাথা গরম। প্রায় না দেখেই হাত নেড়ে বলল, “কিচ্ছু হয়নি। দেখে মনে হচ্ছে একবছরের বাচ্চাও এর থেকে ভালো আঁকতে পারবে।”
বেলার মুখ শুকনো। গলায় কান্নার আভাস, “সরি ম্যাম। ভুল হয়ে গেছে।”
মেরি তাকে প্রায় ভাগিয়েই দিল, “যা এখন এখান থেকে। তোর কাজ আমার একদম পছন্দ হচ্ছে না। কাল থেকে আর আসিস না। আর এই কুমিরের কান্না আমার পছন্দ নয়।”
বেলা আর একটাও কথা না বলে চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল। বুঝল, তার চাকরিটাও গেল এইবার।
সন্ধেবেলা সবাই চলে গেলে বাড়ি ফেরার আগে বেলা এসে মেরির হাতে পায়ে ধরল। মেরি কিছুতেই রাজি নয়। শেষে বেলা বলল, “ঠিক আছে ম্যাডাম। শুধু একটা কথা রাখুন। আমি বাড়িতে একলা থাকি। বাবা-মা মারা গেছে। আজ রাত ন’টায় আমার বাড়ি ডিনারে আসবেন? আর কোনোদিন দেখা হবে কি না জানি না।”
মেরি খেতে ভালোবাসত খুব। তাই মুখের উপর না বলতে পারল না। রাজি হল।
রাত ন’টা বাজার পাঁচ মিনিট আগেই মেরি উপস্থিত। বেলা সেদিন নানারকম খাবারের আয়োজন করেছিল। টার্কির রোস্ট, ভেজিটেবল স্যালাড, ওয়াইন আর মিষ্টি।
খাওয়া শেষ হলে মেরি বলল, “আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে।”
বেলা বলল, “আজ রাতে এখানেই কাটিয়ে দিন।”
বেলা বিছানা করে দিলে মেরি তাতে ঘুমিয়ে পড়ল।
হঠাৎ মেরির ঘুম ভেঙে গেল। সে দেখল তাঁর সারা গা অবশ। হাত-পা ইলেক্ট্রিক তারে জড়ানো। মুখে রুমাল চাপা দেওয়া। ঘড়িতে রাত তিনটে বাজে। সামনে বেলা দাঁড়িয়ে। বেলার মুখে পাগলের হাসি। বেলা বলে উঠল, “মেরি, জানতে চাস একবছরের বাচ্চা কেমন ছবি আঁকে?”
‘এসব কী হচ্ছে?’ বলতে চাইল মেরি। কিন্তু মুখ দিয়ে আওয়াজ বেরোল না।
বেলা মুচকি হেসে হাতের তার দুটো সুইচ বোর্ডে গুঁজে সুইচ অন করে দিল। মেরি ছটফট করে কাঁপতে লাগল। তার শরীর পুড়ে যেতে থাকল। বেলা তখনও হেসে যাচ্ছে।
খুদে অলঙ্করণশিল্পী- প্রেম বিশ্বাস
Oh, my DIDISONA, it is more than excellent . I shall advice you CHARAIBATI, CHARAIBATI CHARAIBATI (a sanskrit word, the meaning of which ADVANCE, ADVANCE, ADVANCE).
May God helps you for whole life.
LikeLike
অসাধারণ হয়েছে তিন্নি। আরও বড় হও। আরও ভালো ভালো লেখ। অনেক আশীর্বাদ রইল।
LikeLike