লেখাছবির খেলা–সব স্টোরিকার্ড একসঙ্গে এইখানে
একজন খুদে ছবি আঁকবে । সে ছবি নিয়ে গল্প গড়বে একজন বড় আর একজন খুদে। অংশ নিলঃ ছবিতে অভিরাজ, গল্পে পুষ্পেন (বড়ো) আর অরণ্য (খুদে)
শিকড়- পুষ্পেন মণ্ডল
বাইরে পা রেখে বহু বছর পর আকাশ দেখল ঋক। উলটানো কড়াইয়ের মত পুরু কাচের বিশাল একটা গম্বুজ রুক্ষ মাটি থেকে আকাশকে আলাদা করে রেখেছে এখানে। একটি যান্ত্রিক পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে। পাশে অন্তরীক্ষ অভিযানের বড় অফিসটা দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচিয়ে। মহাকাশ যান প্রস্তুত। তিনশো তেত্রিশ নম্বর মিশন আর্থ শুরু হওয়ার প্রাক্বালে ঋকও সম্পূর্ণ তৈরি শারীরিক ও মানসিক ভাবে। মাটির নীচে ভারতের কলোনি থেকে সেই একমাত্র নির্বাচিত হয়েছিল এই অভিযানের জন্য। তখন থেকেই উত্তেজনা দানা বাঁধছে মনের গভীরে। আজকে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সে উঠে এসেছে মাটির উপরে। কয়েক শো বছর আগে মানুষ যখন পৃথিবীতে ছিল তখনই বিষিয়ে ওঠে ওখানকার জলবায়ু। তারপর মঙ্গলের মাটির নীচের কলোনিগুলিতে সামর্থওলা মানুষগুলি এসে বাসা বাঁধল। পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলি নিজেদের নামে এক একটা কলোনি বানিয়ে তাদের লোকেদের পুনর্বাসন দিয়েছে। অবশ্য এমন অনেক দেশ ছিল যারা মঙ্গল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। নিজেদের মধ্যে মারামারি করে, রোগে ভুগে শেষ হয়ে গিয়েছিল ওখানেই। তবু তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য মঙ্গল থেকে এখনও নিয়মিত অভিযান হয়। শিকড়কে এখনও ভুলতে পারিনি প্রথম শ্রেণীর মানুষগুলি।
আচার দাদু- অরণ্য মণ্ডল
নদীর ধারে বড় মাঠের পরে যে পুরানো বাড়িটা আছে, তাতে নাকি ভূত থাকে। একদিন নতুন ক্রিকেট বলটা হঠাৎ উড়ে গিয়ে পড়ল সেখানে। আমরা ভাঙা চোরা বড় লোহার গেট খুলে ঢুকলাম। ভিতরে জঙ্গল। সাপখোপ থাকতে পারে ভেবেও ভয় লাগছিল খুব। আগাছা সরিয়ে খুঁজছিলাম বলটা। নোনা ধরা সিমেন্টের সিঁড়ি বেয়ে বান্দায় উঠলাম। বলটা পড়েছিল সেখানেই। হাত বাড়িয়ে নিতে যেতেই একটা চিৎকার কানে এল। আমরা দৌড়লাম পড়িমরি করে। মিহিকা সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গেল গড়িয়ে। পিছন ফিরে দেখলাম একজন ময়লা ভূত বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল হেলে দুলে। তাকে তুলে ধুলো ঝেড়ে বলল, “চিনতে পারছ আমায়?” আরে এত সেই আচার দাদু! ভূত তো নয়! স্কুলের গেটে কতদিন আচার কিনে খেয়েছি আমরা। বললেন, “আমার শরীর খুব খারাপ। আচার বিক্রি করতে পারি না আর। তবে তোমরা আচার খেতে চাইলে এখানে আসতে পারো।” তারপর থেকে আমরা রোজ বিকালে স্কুল থেকে ফেরার পথে আচার দাদুর কাছে গিয়ে আচার খেতাম আর আমাদের টিফিন বাঁচিয়ে দিয়ে আসতাম ওনাকে।
সঙ্গে রইল ছাপার যোগ্য স্টোরিকার্ড
লিখিব খেলিব আঁকিব সুখে সমস্ত লেখা একত্রে