প্যারডি আবীরপুরুষ প্রকল্প ভট্টাচার্য বর্ষা ২০১৮

আগের সব  প্যারডি একত্রে

আবীরপুরুষ
প্রকল্প ভট্টাচার্য

মনে করো, লং উইকেণ্ড ট্যুরে
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে।
তুমি যাচ্ছ অল্টোতে, মা, চ’ড়ে
জানলা দুটো একটুকু ফাঁক ক’রে,
আমি যাচ্ছি কালো বুলেট ‘পরে
ভটভটিয়ে তোমার পাশে পাশে।
রাস্তা থেকে চাকায় ঘুরে ঘুরে
রাঙা ধূলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে।

সকাল হল, সূয্যিমামা ওঠে,
রাস্তা দিয়ে হু-হু গাড়ি ছোটে ।
ধূ ধূ করে যে দিক-পানে চাই,
কোনোখানে জনমানব নাই,
তুমিও যেন ভয়ে ভয়েই তাই
‘এলেম কোথা’ ভাবছ মনে মনে,
আমি বলছি, ‘ভয় কোরো না মা গো,
এই জিপিএস চলছে দেখ ফোনে।’

খানাখন্দে মাঠ রয়েছে ভরে
তারই মাঝে ছুটছে গাড়ি জোরে ।
দোকানপাট নেইকো কোনোখানে
এটাই বুঝি তেপান্তর মানে!
আমরা কোথা যাচ্ছি কে তা জানে-
ভোরবেলাতে দেখা যায় না ভালো।
তুমি যেন বললে আমায় ডেকে,
‘সামনে দেখ, কিসের যেন আলো!’

এমন সময় ‘হা-রে রে রে রে রে’
ওই যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে!
তুমি ভয়ে অল্টোতে এক কোণে
ঠাকুর-দেবতা স্মরণ করছ মনে,
ড্রাইভারটা পাশের কাঁটাবনে
হুইল ছেড়ে কাঁপছে থরোথরো
আমি যেন তোমায় বলছি ডেকে,
‘আমি আছি, ভয় কেন মা করো!’

হাতে বালতি, পিচকারিতে রঙ,
চেহারাগুলো এক একখানা সং!
আমি বলি, “দাঁড়া খবরদার!
এক পা আগে আসিস যদি আর-
এই চেয়ে দ্যাখ, পিচকিরি আমার,
ভিজিয়ে দেব তোদের এক্কেরে!’
শুনে তারা লম্ফ দিয়ে উঠে
চেঁচিয়ে উঠল, ‘হা-রে-রে-রে-রে-রে!’
তুমি বললে, ‘যাস নে খোকা ওরে,’
আমি বলি, ‘দেখো-না চুপ করে।’

বাইক নিয়ে গেলেম তাদের মাঝে,
কী নিদারুন রঙ্ মাখালুম্ মা যে
শুনে তোমার গায়ে দেবে কাঁটা।
কত লোক যে পালিয়ে গেল ভয়ে,
কত রঙের বেলুন হলো ফাটা।।
হোলি খেলে এত লোকের সনে
ভাবছ খোকা গেলই ঢেকে রঙে!
আমি তখন আবীর মেখে ঘেমে
বলছি এসে, ‘খেলাই গেছে থেমে,’
তুমি শুনে অল্টো থেকে নেমে
চুমো খেয়ে নিচ্ছ আমায় কোলে
বলছ, ‘ভাগ্যে খোকা সঙ্গে ছিল’
কী দুর্দশাই হত তা না হলে!’
 দোলে কত কী ঘটে যাহা তাহা
এমন কেন সত্যি হয় না আহা!

জয়ঢাকের ছড়া সংগ্রহ

 

2 thoughts on “প্যারডি আবীরপুরুষ প্রকল্প ভট্টাচার্য বর্ষা ২০১৮

Leave a comment