নিলামের গল্প (পর্ব ১), পর্ব ২, পর্ব ৩, পর্ব ৪
গল্প হচ্ছিল অপেক্ষক নিয়ে। নিলামের দর হল দরদাতাদের মূল্যায়নের অপেক্ষক, সুতরাং এই অপেক্ষকের ধারণাটা আগে একটু পরিষ্কার করে বুঝে নেওয়া যাক। অপেক্ষক বস্তুটা ঠিক কেমন সেটা বুঝতে হলে প্রথমে আমাদের একটা অন্য গল্প বুঝতে হবে – সেট বা Set এর গল্প। প্রশ্ন হল এই সেট বস্তুটা ঠিক কী? অঙ্কের ভাষায় সেট হল ভালভাবে সংজ্ঞায়িত পৃথক পৃথক বস্তুর সমষ্টি (well defined collection of distinct objects)।
কী সব ভয়ানক কথাবার্তা! মানে কী এসবের? একটু ধৈর্য ধর বাছা, এত ভয়াবহও কিছু নয় – একটু ভেঙে বললেই দেখবে ব্যাপারটা জলের মত সোজা।
পৃথক পৃথক বস্তুর সমষ্টি মানে তো দেখেই বোঝা যাচ্ছে আলাদা আলাদা জিনিস, মানে একরই রকম জিনিস একের বেশি থাকা চলবে না। সুতরাং এমনটি সম্ভব নয় যে পাঁচটা মাছ নিয়ে একটা সেট হল, যদি তা হতেও হয়, তাহলে পাঁচটা মাছকে পাঁচ রকমের হতে হবে – অর্থাৎ পাঁচটা রুইমাছের একটা সেট হবে না, কিন্তু একটা রুই, একটা কাতলা, একটা ইলিশ, একটা মাগুর আর একটা কই মাছের সেট হতেই পারে। বেশ, তা না হয় হল, কিন্তু এই ভালোভাবে সংজ্ঞায়িত ব্যাপারটা কী? এ ব্যাপারটাও খুব সহজ, এর মানে কোনও সেটে কে আছে আর কে নেই সেটা আমরা সেটটা সম্পর্কে শুনলেই বুঝতে পারব। এই যে পাঁচটা পাঁচরকম মাছের যে সেটটার কথা এইমাত্র বলা হল, তার কথা শুনলে সকলেই বুঝতে পারবে যে সেই সেটে শিঙি, কালবোস বা মৌরলা নেই, কিন্তু কই আর মাগুর আছে। এককথায় বললে বলা যেতে পারে যে সেটের সংজ্ঞা শুনেই বোঝা যাবে যে এর সদস্য কারা আর কারা কখনই নয়। যেমন ধর তোমাকে যদি বলা হয় তোমার বাড়ির চারপাশে প্রতিদিন যে পাখিগুলো আসে তাদের সেট সম্পর্কে বল। তুমি সেই সেটে কাক, চড়াই, পায়রা, বুলবুলি, দোয়েল, কোকিল, টিয়া, পানকৌড়ি, টুনটুনি এদের সবাইকে রাখবে কিন্তু বাদুড়কে রাখবে না, কারণ বাদুড় যদিও এদের মতোই উড়ে বেড়ায়, তুমি এখন জেনে গেছ যে বাদুড় পাখি নয়, তাদের ছানারাও ঠিক তোমার পোষা বেড়ালগুলোর মত মায়ের দুধ খেয়ে বড় হয়, পাখির ছানাদের মত ডিম ফুটে বেরোয় না। তার মানে কোনও সেটের কথা বললেই সকলে এটা পরিষ্কার বুঝবে সেই সেটে কারা আছে আর কারা নেই। তাই জন্য যদি তোমাকে বলা হয়, তোমার ক্লাসে যারা পড়ে তাদের মধ্যে যতজনের জন্মদিন জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে হয় তাদের একটা সেট বানাও, তুমি খুব সহজেই নির্ভুল ভাবে সেই সেট বানিয়ে ফেলবে। কিন্তু তোমাকে যদি বলা হয় তোমার ক্লাসে যাদের বুদ্ধি বেশি তাদের সেট বানাও, তুমি কিন্তু পারবে না; এক একজনের বুদ্ধি এক এক বিষয়ে বেশি ভালো খোলে, তাহলে কী করে বলা সম্ভব কার বুদ্ধি কার চেয়ে বেশি? কোনও তুলনাই তো সম্ভব নয়! তাই এরকম কোনও সেট তুমি কেন, তোমার চেনা বা অচেনা অতি পণ্ডিত কোনও ব্যক্তিও বানাতে পারবে না।
তাহলে অঙ্কের ভাষায় সেটের একটা সংজ্ঞা আমরা পেলাম। বেশ কিছুকাল যাবত গণিতজ্ঞরা সেটকে এইভাবেই সংজ্ঞায়িত করতেন এবং এই সংজ্ঞা নিয়ে সবাই বেশ খুশিই ছিলেন। কিন্তু গোল বাধল ১৯০১ সালে। হঠাৎ করে বার্ট্রাণ্ড রাসেল নামের একজন ইংরেজ গণিতজ্ঞ ও দার্শনিক এক অদ্ভুত সমস্যার কথা তুললেন। এই সমস্যাটি রাসেলের প্রহেলিকা (Russell’s Paradox বা Russell’s Antinomy) নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে ব্যপারটা বোঝার চেষ্টা করা যাক। মনে কর কয়েকটা লাইব্রেরি আছে। এখন প্রত্যেক লাইব্রেরিতেই তো ক্যাটালগ থাকে, এদেরও আছে। কিন্তু কিছু লাইব্রেরিতে ক্যাটালগকেও বই হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, তাই ক্যাটালগে সেই ক্যাটালগ নিজেও জায়গা পেয়েছে আর কিছু কিছুতে তা হয়নি। এবার মনে কর ন্যাশানাল লাইব্রেরি এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ক্যাটালগ চেয়ে পাঠাল। ক্যাটালগগুলো ন্যাশানাল লাইব্রেরিতে পৌঁছোবার পর সেখানকার লাইব্রেরিয়ান দেখলেন যে ক্যাটালগগুলো দুরকমের, তাই তিনি তাঁর এক কর্মচারীকে দায়িত্ব দিলেন এই দুরকম ক্যাটালগের আর একটা ক্যাটালগ বানাতে যাতে দুই ধরণের ক্যাটালগেরই সম্পূর্ণ তালিকা থাকবে। কর্মচারী ভাবলেন, এ আর এমন কী, সামান্য সময়ের ব্যাপার। কিন্তু কাজটা করতে বসে তিনি টের পেলেন ব্যাপারটা তত সহজ নয়। এই নতুন ক্যাটালগটাকে যদি তিনি নিজেকেও তালিকাভুক্ত করতে দেন তাহলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যদি তা না দেন, তাহলে? যে ক্যাটালগগুলো ক্যাটালগকে বই হিসেবে মানে না, হিসেবমত এই নতুন ক্যাটালগে তাদের তালিকায় এই ক্যাটালগেরও নাম থাকা উচিৎ। কিন্তু তাই যদি হয়, তাহলে তো এই নতুন ক্যাটালগটা আর দ্বিতীয় ধরণের ক্যাটালগের মধ্যে থাকে না, কারণ সে তো নিজেকে বই হিসেবে নিজের মধ্যেই তালিকাভুক্ত করে ফেলেছে! সমস্যাটা এখানেই – যদি এই নতুন ক্যাটালগটা নিজেকে বই হিসেবে না মানে, তাহলে তার নিজের তালিকায় ঢোকার কথা নয়; কিন্তু সে নিজে সেই তালিকায় না ঢুকলে তালিকাটা অসম্পূর্ণ, অথচ সে এই তালিকায় ঢুকলে তার ধরণটাই পালটে গেল!
তার মানে ব্যাপারটা দাঁড়াল এই নতুন ক্যাটালগটা যদি দ্বিতীয় ধরণের হয় তাহলে সে যদি নিজেকে নিজের তালিকার মধ্যে না রেখে থাকে তাহলে রাখা উচিৎ আর যদি রেখে থাকে তাহলে না রাখা উচিৎ!
এর মানে কী?
এক্ষেত্রে যে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে তা হল স্ববিরোধ (contradiction)। এই সমস্যাটা ১৮৯৯ সালে আরেকজন গণিতজ্ঞ আলাদা করেই আবিষ্কার করেছিলেন, তাঁর নাম এর্নেস্ট জারমেলো। কিন্তু জারমেলো এই নিয়ে কোথাও কিছু ছাপাননি, কেবল গটিংগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষাবিদ এ ব্যাপারে জানতেন, যাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন ডেভিড হিলবার্ট। এদিকে জর্জ ক্যান্টর, যাকে আধুনিক সেট থিওরির জনক মানা হয়, ১৮৯০ এর দশকের শেষের দিকে ডেভিড হিলবার্ট আর আরেকজন বিখ্যাত গণিতজ্ঞ রিচার্ড ডেডেকিণ্ডকে চিঠি দিয়ে জানালেন যে সেটের তত্ত্বকে যেভাবে ভাবা হয়েছে তাতে স্ববিরোধ থাকতে বাধ্য।
এর ঠিক আগে আগেই জার্মান দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ গটলব ফ্রেগে একটা বই লিখেছিলেন যেটাতে তিনি কিভাবে পুরো গণিত শাস্ত্রটাকেই সেট থিওরির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় তা দেখিয়েছিলেন। এদিকে তার ঠিক পরপরই রাসেলের প্রহেলিকা প্রকাশিত হল যার মূল বক্তব্যটাই হল যে সেটকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে সেভাবেই করে চললে তাতে সব সময়ই এমন কিছু পরিস্থিতি আসবে যাতে স্ববিরোধ থাকতে বাধ্য। যেসব সেট সেই সব সেটের সেট যারা নিজেদের সদস্য নয়, তাদের ক্ষেত্রে সেটের সংজ্ঞা অনুযায়ী সব সময়ই ব্যাপারটা এমন হবে যে, তারা যদি নিজেরাই নিজেদের সদস্য না হয়, তাহলে তারা নিজেরাই নিজেদের সদস্য; আবার যদি তারা নিজেরাই নিজেদের সদস্য হয় তাহলে তারা নিজেরা নিজেদের সদস্য নয়! ঠিক যেমন ঐ ন্যাশানাল লাইব্রেরির নতুন ক্যটালগটার ক্ষেত্রে হল। সুতরাং দেখা যাচ্ছে সেটকে সংজ্ঞায়িত করতে গেলে কোন না কোন সময় অবশ্যই কিছু স্ববিরোধ উঠে আসবে, তাই গণিতজ্ঞ এবং সেই সব দার্শনিক, যাঁরা গণিতের তত্ত্ব বিশ্লেষণ করেন, তাঁরা এই সিদ্ধান্তে এলেন যে সেটের ধারণাকে অসংজ্ঞায়িত আদি ধারণা (undefined primitive) বলে মেনে নেওয়া হোক। সংজ্ঞাই যদি না দেওয়া হয় তাহলে তো সংজ্ঞার কারণে যে স্ববিরোধ তৈরি হচ্ছিল সেটাও আর থাকবে না।
যাই হোক, কিন্তু কথা তো হচ্ছিল অপেক্ষকের, হঠাৎ মাথায় সেটের ভূত চাপল কেন? দাঁড়াও বাপু, গল্পটা আরেকটু ধৈর্য ধরে শুনলেই বুঝতে পারবে কেন অপেক্ষকের গল্প বুঝতে সেট বোঝা দরকার। আসলে সেট তো জগতে কেবল একটাই নেই, অগুনতি রকমের সেটের কথা আমরা ভাবতে পারি আর এই যে নানা ধরণের সেট রয়েছে এদের নিজেদের মধ্যে অনেক সময় বেশ গভীর সংযোগ থাকে। একটা উদাহরণ দিই – ধর তোমার ক্লাসের সব ছেলেমেয়েদের একটা সেট আছে আর তাদের মা-বাবাদের আরেকটা সেট আছে। এটা তো সকলে এক ঝলক দেখেই বলে দেবে যে হ্যাঁ এই সেট দুটোর মধ্যে অবশ্যই সংযোগ বা association আছে। প্রশ্ন হল এই সংযোগটা কেমন? উত্তরটা নির্ভর করছে কোনদিক থেকে দেখছি তার ওপর। ধর ছেলেমেয়েদের সেটটাকে আমরা C বলে ডাকছি আর মা-বাবাদের সেটটাকে ডাকছি P বলে। C সেটে মনে কর পাঁচজন আছে – তুতান, বোবো, পিপাই, টিনটিন আর সোনু। P সেটে সেক্ষেত্রে এদের প্রত্যেকের একজোড়া করে মা-বাবা থাকবে – অর্থাৎ প্রত্যেক বাচ্চার একজন করে মা আর একজন করে বাবা, সব মিলিয়ে মোট দশজন। কে কার মা বা বাবা সেটা চিত্র ১ দেখলে সবাই বুঝতে পারবে।
এখন সংযোগটা যদি C থেকে P এর দিকে দেখি তাহলে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ায় – তুতানের মা কাকলী আর বাবা চঞ্চল, বোবোর মা চিত্রা আর বাবা প্রমিত, পিপাইয়ের মা নূর আর বাবা তৌসিফ, টিনটিনের মা রূপান আর বাবা ঈশান, আর সোনুর মা শ্বেতা আর বাবা ঋতেশ। তাহলে এখানে আমরা C সেটের প্রত্যেক জনের জন্য P সেট থেকে দুজনকে পাচ্ছি। উল্টোদিক থেকে যদি দেখি, মানে P থেকে C-তে, তাহলে চঞ্চল, প্রমিত, তৌসিফ, ঈশান আর ঋতেশ এদের প্রত্যেকের জন্য একটি করে বাচ্চা পাচ্ছি, আবার কাকলী, চিত্রা, নূর, রূপান আর শ্বেতা এদেরও প্রত্যেকের জন্য একটি করে বাচ্চা পাচ্ছি। তাহলে সংযোগটা কোনদিক থেকে কোনদিকে সেই অনুযায়ী সংযোগের চরিত্রটা তৈরি হচ্ছে। C থেকে P এর দিকে যখন দেখছি তখন C এর প্রত্যেক সদস্যের P তে যাদের যাদের সঙ্গে সংযোগ তারা যেন C এর ঐ সদস্যদের প্রতিচ্ছবি অর্থাৎ যেন P তে C এর সদস্যদের এক একটা প্রতিচ্ছবি রয়েছে, সুতরাং যে সেটের দিক থেকে সংযোগটাকে দেখানো হচ্ছে অন্য সেটটাতে যেন আমরা তার সদস্যদের এক একটা প্রতিচ্ছবি বা image পাচ্ছি। যে সেটের সদস্যদের প্রতিচ্ছবি তৈরি হচ্ছে সেটাকে অঙ্কের ভাষায় বলা হয় domain আর যে সেটে domain-এর সদস্যদের প্রতিচ্ছবি তৈরি হল তাকে বলা হয় co-domain। সুতরাং যখন C থেকে P-এর দিকে দেখছি তখন C হল domain আর P হল co-domain। একই ভাবে যখন P থেকে C-এর দিকে দেখছি তখন P হয়ে যাচ্ছে domain আর C, co-domain। এই যে দুটো সেটের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ, একে সম্পর্কও বলা হয়ে থাকে। প্রত্যেক সম্পর্ক কোনও একটা বিশেষ নিয়ম মেনে চলে। যেমন আমাদের এই উদাহরণে C আর P এর মধ্যে সম্পর্ক হল মা-বাবা ও সন্তানের। C এর সদস্যরা হল P এর সদস্যদের সন্তান আর P এর সদস্যরা C এর সদস্যদের মা অথবা বাবা। এবার মনে কর P সেটটাকে একটু পাল্টে দেওয়া হল, মনে কর ঋতেশ আর শ্বেতা এখানে নেই, তাহলে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়াচ্ছে যে C সেটের সদস্যদের মধ্যে কোনও দুজন একই মা-বাবার সন্তান। ধরে নিলাম টিনটিন আর সোনু দুজনেই রূপান আর ঈশানের সন্তান। তাহলে আগের ছবিটা পাল্টে হয়ে যাবে চিত্র ২ এর মত।
যখন domain-এর একজন সদস্যের মাত্র একটিই প্রতিচ্ছবি থাকে co-domain-এ তখন আমরা সেই সম্পর্ককে বলি mapping, যার অভিমুখ domain থেকে co-domain-এ। এরই আরেক নাম function বা অপেক্ষক। এই সংজ্ঞা মেনে যদি আমরা এগোই তাহলে দেখছি চিত্র ১-এ যদি P হয় domain আর C হয় co-domain, তাহলে P থেকে C-তে সম্পর্কটা একটা অপেক্ষক, কারণ এখানে P-এর প্রত্যেক সদস্যের C-তে মাত্র একটাই প্রতিচ্ছবি রয়েছে। কিন্তু যদি C আর P-কে যথাক্রমে domain ও co-domain ভাবা হয়, তাহলে কিন্তু তাদের সম্পর্কটা আর অপেক্ষক রইল না, যেহেতু এখন C-এর প্রত্যেক সদস্যের এখন একাধিক প্রতিচ্ছবি রয়েছে।
এরকম যে কোন দুটো সেটের মধ্যে আমরা নানা রকম সম্পর্ক দেখতে পাই। প্রতিটি সম্পর্ককে এক একটা বিশেষ নিয়মে প্রকাশ করা যায়, আর সেটগুলো যদি সংখ্যার হয়, তাহলে তো গাণিতিক ফর্মুলা দিয়েই আমরা সেই সম্পর্কগুলকে প্রকাশ করতে পারি। দুটো সংখ্যার সেটের উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা আরেকটু তলিয়ে দেখা যাক। ধর একটা সেট হল A যার সদস্যরা হল ১,২,৩,৪,৫ আর আরেকটা সেট হল B যার সদস্যরা হল ২,৪,৬,৮,১০। খুব সহজেই লক্ষ করে দেখা যাচ্ছে যে B সেটের সংখ্যারা হল A সেটের সংখ্যাদের দ্বিগুণ। সুতরাং A-কে domain আর B-কে co-domain ধরলে আমরা বলতে পারি যে এক্ষেত্রে সম্পর্কটা এমন যে B-এর সদস্যদের যদি আমরা y বলে ডাকি, আর A-এর সদস্যদের x বলি, তাহলে এক্ষেত্রে আমরা y = 2x এইভাবে এদের সম্পর্কটা প্রকাশ করতে পারি। এবার উল্টোদিক থেকে দেখি, B কে domain আর A কে co-domain ভাবলে আমরা এদের মধ্যে সম্পর্কটাকে x = y/2 হিসেবে প্রকাশ করতে পারি। লক্ষ করে দেখ A থেকে B তে এবং B থেকে A তে, এই দু দিক থেকেই কিন্তু যে সম্পর্কগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি তারা দু জনেই অপেক্ষক, কারণ দুই ক্ষেত্রেই domain এর সদস্যদের co-domain এ মাত্র একটিই প্রতিচ্ছবি বর্তমান।
এই অপেক্ষক বা map -এর নানা ধরণ হয়। সে গল্প আরেকদিন হবে।
ক্রমশ
অলঙ্করণ- লেখক
জয়ঢাকের বৈজ্ঞানিকের দপ্তর