দেশ ও মানুষ-পাখিদের ভাষায় কথা বলে যারা-ইন্দ্রনাথ-শীত২০২০

দেশ ও মানুষ সব পর্ব একত্রে

অনেকদিন আগে, তা প্রায় নব্বই দশকের গোড়ার দিকের কথা। হিমালয়ের গাড়োয়ালের প্রত্যন্ত এক গ্রামে যাচ্ছি। জঙ্গলের পথ। দলে আমরা ছিলাম ছজন। তার মধ্যে স্থানীয় দুজন মানুষ ছিলেন। আমরা চারজন একটু পিছিয়ে পড়েছি। বাকি দুজন অনেকটা আগে, তাদের আর দেখা যাচ্ছে না। এমন ঘন জঙ্গল। একজন স্থানীয় লোক জগৎ সিং আমাদের সঙ্গেই ছিলেন, বাকি অন্যজন এগিয়ে গিয়েছিলেন আমাদের আরেক বন্ধুর সঙ্গে। পথ বুঝতে না পারায় আমরা দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো উত্তর আসছিল না। তখন জগৎ বললেন, দাঁড়াও ডাকাডাকি করে লাভ হবে না। এত ঘন জঙ্গলে ওদের কাছে আমাদের গলার স্বর পৌঁছবে না। এই বলে সে অদ্ভুত কায়দায় শিস দিল। বার দুয়েক শিস দেবার পর অনেক দূর থেকে একটা প্রত্যুত্তর ভেসে এল, শিসের আওয়াজে। জগৎ কান পেতে শুনে আবার শিস দিলেন, এবারে শিসের আওয়াজটা অন্যরকম। খানিক অপেক্ষার পর আবার উত্তর ভেসে এল। এবারে এই আওয়াজটা একটু বেশিক্ষণ ধরে চলল, আর আগের চেয়ে একেবারেই অন্যরকম। জগৎ মন দিয়ে শুনে হাসিমুখে বলল চলিয়ে দাদা রাস্তা মিল গয়া। আমরা একটু অবাক হলাম। জগৎ বলেছিল, পাহাড়ে এক দিক থেকে আরেকদিক, জঙ্গলের মধ্যে ওরা শিস দিয়েই কথা বলে থাকেন। তাতে সুবিধে হয়, নইলে আওয়াজ পৌঁছয় না। 

কখনো এমন কোনো এক গ্রামে পৌঁছে হয়ত শোনা গেল দুটি পাখি নিজেদের ভাষায় কথা বলছে। না না মোটেও কিচির মিচির নয় রীতিমতো সুরেলা আওয়াজে। একজন বলছে, থামছে, অন্যজন উত্তর দিচ্ছে, শিসের আওয়াজে। বসন্তকালে যেমন কোকিলের ডাক-প্রতিডাক শোনা যায় খানিকটা অমন। মনে হতে পারে আহা আমি যদি ওদের কথা বুঝতে পারতাম, অমন সুরেলা ভাষায় কথা বলতে পারতাম! ভাবতে না ভাবতেই দেখা যাবে, যাদের আসলে পাখি বলে ভাবা হচ্ছিল, তারা আসলে দুজন মানুষ!

সত্যি সত্যিই আমাদের পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষজন আছেন, অনেক জনগোষ্ঠী আছেন যারা নিজেদের মধ্যে অমন পাখির শিসের আওয়াজেই কথা বলে থাকেন। যেমন দক্ষিণ চীনের মঙ (Hmong) গোষ্ঠীর লোক। যদিও এই মানুষেরা এখন শুধু আর চীনে নয়, ১৬০০ খ্রীষ্টাব্দের পর থেকেই লাওস কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন, এমনকী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। প্রধানত চাষের কাজে যুক্ত মানুষজন, এমাঠের লোক ওমাঠের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য, অথবা জঙ্গলের মধ্যে শিকারী মানুষেরা একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই ভাবে শিস দিয়ে যোগাযোগ শুরু করেন। মজার কথা হল, এই গোষ্ঠীর কোনো অবিবাহিত ছেলে হয়তো সন্ধেবেলায় গ্রামের পথে যেতে যেতে শিস দিয়ে কবিতা বলতে বলতে যাচ্ছে, এবারে কোনো বাড়ির মেয়ে যদি অনুরূপ কবিতায় শিস দিয়ে সাড়া দেয়, তাহলেই তাদের দুই বাড়ির মধ্যে বিয়ের কথাবার্তা চালাচালি শুরু হবে। ওদিকে আবার মেঘালয়ের খাসিপাহাড়ের কঙথঙ গ্রামে বিয়ের জন্য যৌথসভায় আয়োজন হয়। কোনো অবিবাহিত ছেলের শিস দেয়া গান যে মেয়ের সবচেয়ে পছন্দ হবে তাকেই সে বরণ করবে। অনেকটা স্বয়ম্বর সভার মতো।

কথ্যভাষার চেয়ে বেশ আলাদা ধরণের এই ভাষায় শব্দের মানে শিসের ধ্বনির প্রকারভেদে বদলে বদলে যায়। আবার দুজন মানুষ তাদের নিজেদের মধ্যে গোপন কথা চালাচালি করার জন্য তাতে নিজেদের মতো নানান অপরিচিত ধ্বনিও মিশিয়ে নিতে পারেন। এই শতাব্দীর গোড়ার দিকে জুলিয়েন মায়ের নামে এক ফরাসি ভাষাবিজ্ঞানী গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন এমন এক গ্রামে যেখানে সকলে শিসের ভাষায় কথা বলেন। মায়ের এতটাই চমৎকৃত আর আকৃষ্ট হন যে এইই তার গবেষণার প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে। জুলিয়েন খেয়াল করেন কেবল ডাকাডাকিতেই সীমাবদ্ধ নয় এই ভাষা, এর ব্যাপ্তি আরও বেশি। এটি পুরোদস্তুর পরিণত এক ভাষাপদ্ধতি। নয় নয় করে সারা পৃথিবীতে এমন ভাষাভাষী মোট ৭০ টি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করেন মায়ের। মঙ গোষ্ঠী ছাড়াও তুরস্ক দেশের কুসকো গ্রামের লোকেরা, ক্যানারি দ্বীপের লা  গোমেরোর মানুষেরা, ফ্রান্সের অক্সিতান, ভারতে মেঘালয়ের কঙথঙ, নেপালের ছেপাং গ্রামে এইরকম শিস ধ্বনিতে কথা বলে মানুষ। মেক্সিকোর চিনানটেক, পশ্চিম আফ্রিকার ইয়োরুবা, ইউই, দক্ষিণ আফ্রিকার জেজুরু, পূর্ব আফ্রিকার সোংগা এমন শিস দেওয়া ভাষার আরো উদাহরণ। অবশ্য মেক্সিকোর শিস-ভাষা বলবার অধিকার কেবল পুরুষদের, মহিলারা বুঝলেও তাদের বলবার অধিকার নেই।

মেক্সিকোর শিসভাষা

আবার মেঘালয়ের সদ্যোজাত বাচ্চার জন্য তার মা শিস ভাষায় শুধুমাত্র তার জন্যই একটা ঘুমপাড়ানি গান বানায়। ফলে গ্রামের প্রতিটা বাচ্চার জন্য আলাদা আলাদা ঘুমপাড়ানি গান, শুধুমাত্র তার জন্যই; একে অন্যের থেকে একেবারেই আলাদা।

স্প্যানিশ ভাষায় সিলবো গোমেরো মানে “শিস দেয়া ভাষা”। ক্যানারি দ্বীপের ‘লা গোমেরো’য় ভেড়া চরিয়ে দিন কাটানো মানুষেরা পাহাড়ি উপত্যকার গভীরে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের উপায় হিসেবে এই ভাষা ব্যবহার শুরু করেন (যারা এই ভাষা বলতে পারেন তাদের বলা হয় সিলভাদোর)।

সিলভাদোরদের শিসের ভাষা

এই শব্দ এতটাই শ্রুতিমধুর আর পাখির ডাকের এতটাই কাছাকাছি যে ব্ল্যাকবার্ড অবধি এই ঢং নকল করে থাকে। গুণমুগ্ধ জুলিয়েন ক্রমশ পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চলে এই ধরণের ভাষার অনুসন্ধান শুরু করেন। এভাবে আমরা বহু অজানা তথ্য তার কাছ থেকেই জানতে পারি। যেমন, গ্রীক ঐতিহাসিক হেরোডটাসের লেখায় এমন ভাষার উল্লেখ রয়েছে। হেরোডটাস লিখেছেন, খ্রীষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে ইথিওপিয়ার কিছু গুহাবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন ভাষা প্রচলিত ছিল যা পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষার সঙ্গে তুলনীয় নয়। ভাষার ধ্বনি কতকটা বাদুরের ডাকের মতো। অবশ্য হেরোডটাসের লেখা থেকে বোঝা সম্ভব হয়নি যে ঠিক কোন গোষ্ঠীর মানুষদের কথা উনি বলতে চেয়েছেন। তবে জুলিয়েন ইথিওপিয়ার ওমো উপত্যকায় একাধিক এমন গোষ্ঠী খুঁজে পেয়েছেন যারা শিস-ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত।

চওড়া ছড়ানো উপত্যকায় শিসের ধ্বনি বহুদূর অবধি ছড়িয়ে যায়। সাধারণ কথ্য ভাষায় শব্দ বা বাক্য গলা তুলেও ততদূর অবধি পৌঁছয় না। সময় সময় ৮ কিলোমিটার অবধি শিসের ধ্বনি পৌঁছে যেতে পারে। লা গোমেরোর চওড়া উপত্যকায় এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গেছে। পাহাড়ি এলাকায়, বলা বাহুল্য, এমন যোগাযোগ খুবই সাধারণ ঘটনা। তবে আমাজনের গভীর জঙ্গলেও শিকারীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য সমান দক্ষতায় একে ব্যবহার করে থাকেন। ধ্বনির মাধ্যমেই একে অন্যের অবস্থান নির্দিষ্ট করে নিতে পারেন শিকারীরা। কথা বললে শিকার সতর্ক হয়ে যেতে পারে কিন্তু শিসের ধ্বনিতে তা হয় না কখনো। সমুদ্র অভিযানে ইনুইটরাও অবিকল এইরকম ধ্বনির মাধ্যমে যোগাযোগ ও বার্তা বিনিময় করে। তিমি শিকারের সময় খুব কাজে দেয় এটা। কাজে কাজেই আশ্চর্য কি যে শত্রুপক্ষের শ্রুতি এড়িয়ে যুদ্ধের সময়ও এর ব্যবহার হবে!  অ্যাটলাস পাহাড়ের ‘আমাজিগ’রা ফরাসিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এভাবেই সংকেত আদানপ্রদান করত। এমনকী অস্ট্রেলিয়ার সৈন্যবাহিনীতে পাপুয়া নিউগিনির ওয়াম ভাষাভাষী লোকেদের নিয়োগ করা হয়েছিল একই উদ্দেশ্যে। বেতারে যোগাযোগের জন্য এই গোষ্ঠীর লোকেদের ব্যবহার করা হত যাতে বেচারা জাপানিরা আড়ি পেতে শুনলেও কিছুই বুঝতে না পারে। ২০০৩ সালের এক গণনা অনুযায়ী ওয়াম ভাষা ব্যবহারকারীদের সংখ্যাটা মাত্রই ৪২০৪।

প্রাচীন চিনা সাহিত্যে উল্লেখ আছে যে সেকালে মানুষ শিসের ধ্বনির সাহায্যে টাও-মন্ত্রোচ্চারণ করত এবং এই পদ্ধতিতে সমাধি বা নির্বাণলাভ বিশেষ উপযোগী বলে মনে করা হত। দক্ষিণ চীনে মঙ গোষ্ঠী ছাড়াও শিস-ভাষা ব্যবহারকারী এমন আরো বহু জনগোষ্ঠীকে খুঁজে পেয়েছেন জুলিয়েন মায়ের।  

কেবল ধ্বনির রকমফেরে শব্দের মানে পৌঁছে দেওয়া আশ্চর্য বৈ কি! আরো আশ্চর্যের ছোটো ছোটো বহু জনগোষ্ঠী মিলিয়ে, এমন ভাষা ব্যবহারকারীদের মোট সংখ্যাটা লক্ষাধিক হলেও ক্রমশ অন্য কথ্য ভাষার আধিপত্যে নতুন প্রজন্ম শিস-ভাষার অনেক শব্দই ভুলতে বসেছে। ব্যবহারের অভাবে ছোটো ছোটো জনগোষ্ঠী থেকে তাদের নিজস্ব এই ভাষা হয়ত লুপ্ত হয়ে যাবে অচিরেই।

অঞ্চলভেদে শিস-ভাষা আলাদা আলাদা। এশিয়া অঞ্চলের শিস-ভাষা অনেক বেশি সুর নির্ভর কেননা এ অঞ্চলের কথ্যভাষা সুরপ্রধান। অন্যদিকে স্প্যানিশ বা তুর্কি ভাষা সুরপ্রধান নয়, সেখানে শিসের ধ্বনি ওই ভাষার স্বরবর্ণের ধ্বনিকে নকল করে। মূল ভাষাটা জানা থাকলে শিস-ভাষা বোঝা অপেক্ষাকৃত সহজ হয় বটে, কিন্তু জানা না থাকলেও শুনতে শুনতে বোঝা যায় কোন শব্দের জন্য কোন ধ্বনি ব্যবহৃত হচ্ছে। ধ্বনি ও সুরের তারতম্যে শব্দের মানে কীভাবে বদলে যাচ্ছে। তাতে অবশ্য একটু বেশি সময় লাগে শিখতে। কিন্তু প্রশ্ন হল মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে এই ধ্বনি-ভাষার সংশ্লেষ করে? ধ্বনির মানে বোঝে কীভাবে? যেমনভাবে উচ্চারিত কথ্যভাষার শব্দের বা বাক্যের মানে বোঝে সেভাবেই? না অন্যরকম ভাবে? মানব-মস্তিষ্ক কীভাবে ব্যবহার করে থাকে এক্ষেত্রে?

আগে ধারণা ছিল মানুষের মস্তিষ্কের বাঁদিকের অংশই মূলত কথা বলা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ফলে শিস-ভাষার ক্ষেত্রেও তাইই হবার কথা। এই ভেবে এক জার্মান ভাষা বিজ্ঞানী ওনর গন্টারকেন গিয়ে পৌঁছলেন কৃষ্ণসাগরের তীরে একটি ছোট্ট গ্রাম ‘কুসকো’য়। তুর্কি ভাষায় যার অর্থ “পাখিদের গ্রাম”।

কুসকোর শিসের ভাষা

জার্মানি থেকে ভারী ভারী স্ক্যানিং মেশিন নিয়ে যাওয়া বেশ ঝকমারী, ফলে গন্টারকেন একটা কৌশল করলেন। উনি ঠিক করলেন শিস-ভাষায় পারদর্শী মানুষদের দু-কানে দুরকম আলাদা আলাদা উচ্চারণের শিস দেয়া শব্দ ফিসফিস করে বলবেন। ডান কানে বলা শব্দ মস্তিষ্কের বাঁদিকে আর বা-কানে বলা শব্দ মস্তিষ্কের ডান দিকে বিশ্লেষিত হবে। এখন ভাষা বুঝে ফেলার কাজটা যে দিকে দ্রুত সম্পন্ন হবে তা থেকেই বোঝা যাবে কোনদিককার স্নায়ু কোষ শিস-ভাষা বুঝে ফেলার কাজে বেশি সংবেদনশীল। ধরে নেওয়া হয়েছিল মস্তিষ্কের ডানদিকই বিজয়ী হবে। কিন্তু বাস্তবের ফলাফল দেখা গেল ভিন্ন। দুপাশের মস্তিষ্কই এক্ষেত্রে সমান রকম পারদর্শী। ২০১৫ সালের এক গবেষণাপত্রে ফলাফল বিস্তারিত প্রকাশিত হল যে মানবমস্তিষ্কের দুটি ভাগই সমান দক্ষতায় ও সমানভাবে এ কাজের ভাগাভাগি করে নিতে সক্ষম। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অন্য দিগন্ত খুলে গেল এই গবেষণায়। আকস্মিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের বাঁদিকের কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে মূক হয়ে যাওয়া মানুষ মস্তিষ্কের ডান পাশের নিয়ন্ত্রণে তার বাকশক্তি আবার ফিরে পেতে পারবেন।

মানুষের মস্তিষ্কে ভাষা ও সঙ্গীত উভয়ই আলাদা আলাদা সংশ্লেষিত হয়। ফলে কথা বলা বা শোনায় সমস্যা থাকলে সঙ্গীতের সাহায্যে তার উন্নতিসাধন করা সম্ভব। ২০১৪ সালে শিকাগোর একদল গবেষক দেখিয়েছেন সঙ্গীতশিক্ষা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ভাষা ও অক্ষরজ্ঞানের উন্নতি ঘটায়। আবার উল্টোটাও সত্যি। শিস দিয়ে কথা বলার দক্ষতার রহস্যটা মস্তিষ্কের এই গুণাবলীর মধ্যেই লুকিয়ে আছে। চার্লস ডারউইন বলেছিলেন মানুষ আগে জেনেছে সঙ্গীত তারপর আবিষ্কার করেছে ভাষা, কথা। সুরেলা ধ্বনি ব্যবহার করতে করতে ক্রমশ স্বরস্থলীর ওপর তার নিয়ন্ত্রণ বেড়েছে এবং নানান অর্থবহ ধ্বনিকে সে অক্ষরের রূপ দিতে পেরেছে। আর তা থেকেই শব্দ, বাক্য। কথ্যভাষায় তবুও সেই আদিম সুরটা কোনো কোনো জায়গায় রয়েই গেছে।

কে জানে শিস-ভাষার মধ্যেই হয়তো মানবসভ্যতার প্রথম তৈরি শব্দগুলি রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা অবশ্য এই বিষয়ে এখনও একমত নন। তবে একথা সত্যি মঙ জনগোষ্ঠীর মতো শিস দেওয়া ভাষায় যারা আজও কথা বলেন, তাদের ভাষার সংরক্ষণ এখুনি শুরু করে দেওয়া দরকার। সভ্যতার ক্রমোন্নতি পৃথিবীর সমস্ত গোপন ও আশ্চর্য রহস্য দুহাট করে মেলে তার বিলুপ্তি ঘটিয়ে দেওয়ার আগেই সংরক্ষণের কাজের কাজটা করে ফেলা প্রয়োজন। আশার কথা ২০১৭ সালে ইউনেস্কো তুরস্কের শিস-ভাষাকে “ইন্ট্যাঞ্জিবল কালচারাল হেরিটেজ” এর মর্যাদা দিয়েছেন।

সূত্রঃ https://www.bbc.com/future/article/20170525-the-people-who-speak-in-whistles 

1 thought on “দেশ ও মানুষ-পাখিদের ভাষায় কথা বলে যারা-ইন্দ্রনাথ-শীত২০২০

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s