একটা লোকের বাড়িতে ঘুলঘুলির মধ্যে চড়ুই পাখি নিজের বাসা বেঁধেছিল। মা চড়ুই পাখি আর বাবা চড়ুই পাখি আর পাঁচটা বাচ্চা চড়ুই পাখিরা ওই বাসার মধ্যে থাকত। যখন বাবা বাচ্চাগুলোকে দেখত তখন মা খাবার আনতে যেত। আবার যখন মা বাসায় থাকত তখন বাবা খাবার আনতে যেত।
একদিন বাবা ওই বাচ্চাগুলোকে দেখছিল আর মা খাবার আনতে গিয়েছিল। সেই সময়টায় রাজা কাক এল। তখন রাজা কাক ভাবল যে, ‘কী করে ঢুকব?’ দেখল ঘুলঘুলিটার দুটো সাইড ভীষণ মোটা। কিন্তু ওপর আর নীচটা ভীষণ ছোটো। তখন কাক মাথাটাকে নীচু করে আর একটু বসার মতো করে সড়াৎ করে বাসায় চলে এল।
বাবা চড়ুই তখন বলল, “নমস্কার কাক রাজা।”
কাক বলল, “এখন আমরা গল্প করি।”
বাবা চড়ুই বাচ্চাগুলোকে কাককে একদম দেখতে দিচ্ছিল না। ডানার তলায় ঢেকে রেখেছিল বাচ্চাগুলোকে।
বাবা চড়ুই দূর থেকে দেখল, মা চড়ুই আসছে। তখন কাক রাজাকে ফিসফিস করে বলল, “এখন তোমায় যেতে হবে। বাচ্চাগুলোকে এখন খাওয়াতে হবে।”
কাক রাজা বলল, “ওই বাচ্চাগুলোকে একটা তো কিসি করে যাই।”
তখন বাবা চড়ুই ভয় পেয়ে বলল, “না না, তোমার ঠোঁটটা অনেক ধারালো!”
কাক রাজা বলল, “আচ্ছা, ঠিক আছে। বাই রাজা চড়ুই।”
চড়ুইদের মধ্যে বাবা চড়ুই রাজা ছিল। কাকেদের মধ্যে কাকটা রাজা ছিল।
মা চড়ুই গলার মধ্যে করে খাবার নিয়ে এসেছে। বলল, “এবার তো ডানা সরাও, দেখি বাচ্চাগুলোকে।”
মা দেখল বাচ্চাগুলো ঘুমোচ্ছে খাঁপুস খাঁপুস করে। মা বলল, “একটু পরে খাওয়াই ওদেরকে, ঘুমিয়ে নিক।”
কিছুক্ষণ পর রাজা কাক ভাবল, এখন তো খাওয়া শেষ হয়ে গেছে। তখন ও উড়তে উড়তে এসে বাসায় বসল। মা চড়ুই তখন খাওয়াতে শুরু করেছিল। কাক বলল, “আমায় খাওয়াতে দাও।”
মা চড়ুই ভয় পেল। গলা থেকে খাবার কাককে দিয়ে দিল। বাচ্চাগুলোর গলার মধ্যে কাক ওর ঠোঁটটা ঢুকিয়ে দিল। বাচ্চাগুলোর ভীষণ লাগল। তারপর কাকটা সব বাচ্চাগুলোকে একটা একটা কিসি দিল। ওদের আবার ব্যথা লাগল।
বাবা-মা চড়ুই বলল, “তুমি এখন চলে যাও।”
কিছুতেই রাজা কাক গেল না। তখন ওই বাচ্চাগুলো অনেক জোরে চিঁ চিঁ চিঁ চিঁ করতে থাকল। কাকটা সড়াৎ করে উড়ে চলে গেল।