টয়ঢাক-কুমির বধ-অভিরাজ দেবনাথ-ভাষানুবাদ: অরিন্দম দেবনাথ-শরৎ ২০২২

toydhakobhirajkumir

একটা চিড়িয়াখানা ভর্তি ছিল কুমিরে। একদিন সকালে চিড়িয়াখানার এক গার্ড অ্যালিগেটরদের খাবার দিয়ে দরজা বন্ধ করতে ভুলে গেছিল আর সব কুমির খোলা দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসে সামনে যা পাচ্ছিল তাই লেজের ঝাপটা মেরে ভেঙে দিচ্ছিল। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ভেবে পাচ্ছিল না কী করে ভয়ংকর কুমিরগুলোকে খাঁচায় ফেরত আনা যায়।  চিড়িয়াখানার গার্ডরা বন্দুক আর জাল নিয়ে কুমিরগুলোকে ধরতে চেষ্টা করেও কিচ্ছু করতে পারছিল না। কুমিরগুলো ভীষণ শক্তিশালী ছিল। বন্ধুক আর জাল দিয়ে কুমিরগুলোকে কাবু করতে না পেরে চিন্তায় পড়ে গেছিল সবাই। তখন চিড়িয়াখানার ডাক্তার বললেন, “আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে, কিন্তু সেটা খুব বিপদজনক।”

আমি বললাম, “যত বিপদই আসুক, আমাদের কাজটা করতে হবে।”

ডাক্তারের প্ল্যান শুনে সবার ভয় ধরে গেছিল। উনি বলেছিলেন, কুমিরগুলোর সামনে একজনকে দৌড়তে হবে। আর কুমিরগুলো ওকে খেতে ওর পেছন পেছন ছুটতে শুরু করবে, আর এভাবেই দৌড়ে ওদেরকে নিয়ে ফেলতে হবে চিড়িয়াখানার পুকুরে।

আমি বললাম, “কিন্তু দৌড়বেটা কে?”

ডাক্তার বললেন, “তুমি বলেছিলে কাজটা আমাদের করতেই হবে, তাই তোমাকেই দৌড়তে হবে।”

আমি বললাম, “ঠিক আছে, আমিই দৌড়ব। আমি কুমিরগুলোর আগে আগে দৌড়ে ওদেরকে নিয়ে পুকুরে ফেলব। এতে করে শহরের মানুষজন বেঁচে যাবে।”

আমি কুমিরগুলোর আগে দৌড়তে লাগলাম। ওরা আমাকে খাওয়ার জন্য আমার পেছনে দৌড়তে শুরু করেছিল। কুমিরগুলোর টোপ হয়ে দৌড়তে দৌড়তে ওদেরকে পুকুরে নিয়ে ফেলেছিলাম। আর শহরটাও বেঁচে গেছিল। কিন্তু আসল সমস্যটা দেখা দিয়েছিল ঠিক এর পরেই। ডাক্তারের ল্যাব থেকে একটা মিউট্যান্ট হয়ে যাওয়া কুমির বেরিয়ে এসেছিল। কুমিরটা ছিল বিশাল বড়ো আর সারা গা ভর্তি ছিল শজারুর মতো কাঁটায়। আর সেই কাঁটাগুলো ছিল এক-একটা ক্রিকেটের উইকেটের মতো বড়ো বড়ো। দৈত্যের মতো দেখতে ছিল কুমিরটা। কুমিরটাকে মারার একটা আইডিয়া আমার মাথায় আসার আগেই কুমিরটা শহরের মল, হাসপাতাল, দোকান ওর লেজ দিয়ে মেরে ভাঙতে শুরু করে দিয়েছিল। শহরের অর্ধেক লোককেও মেরে ফেলেছিল কুমিরটা।

আমি ভেবে নিয়েছিলাম, ওকে যে করেই হোক সামনের পাহাড়ের মাথায় তুলতে হবে। তারপর ওপর থেকে মিসাইল ছুড়ে পাহাড়ের ওপর থেকে ফেলে দিতে হবে। দৈত্য কুমিরটা একা ছিল না, ওর সঙ্গে আরও কিছু কুমির সাঙ্গোপাঙ্গ ছিল।

আমি আবার কুমিরগুলোর টোপ হয়েছিলাম। এবার একটা বাইক নিয়ে ওদের সামনে ছুটতে শুরু করেছিলাম। কুমিরগুলো আমাকে খাবে বলে ভীষণ জোরে ছুটতে ছুটতে পাহাড়ের মাথায় পৌঁছেছিল। পরিকল্পনামতো মিসাইল নিয়ে আর্মি টিম আগে থেকেই সেখানে ছিল। দৈত্য কুমির আর তার দলবলকে মিসাইল ছুড়ে পাহাড়ের ওপর থেকে ফেলে মেরে শহরটাকে বাঁচানো হয়েছিল।

খুদে স্রষ্টাদের সমস্ত কাজের লাইব্রেরি

 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s