টয়ঢাক- ময়নার ফিরে আসা-সমৃদ্ধি ব্যানার্জি-শরৎ ২০২২

ষষ্ঠ শ্রেণি

 toydhakSamriddhi story pic

আমি ময়না। মা আমায় আদর করে মানু বলে ডাকে। আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি।  ফাইভের  পর সিক্সে উঠেই হঠাৎ পড়ার এত চাপ বেড়ে গেল যে জীবনটাই কেমন পালটে গেল।

একদিন বিজ্ঞান এর একটা  সংজ্ঞা মুখস্থ না করতে পারায় মা বকুনি দিয়েছিল। তাতে আমি খুব রেগে গেছিলাম। এত পড়াশুনা করা কি সম্ভব! বালিশে মাথা রেখে আমি ছোটোবেলার কথা ভাবছিলাম। কই তখন তো মা-ও কত ভালবাসত, পড়াশোনার নামে এমন বিপদও ছিল না। খালি দুধ খেতাম, মা এর কোলে চড়ে থাকতাম আর ঘুমোতাম। খুব ইচ্ছা করল যে ওই সময়ে আবার যদি ফিরে  যেতে পারতাম।

কখন ঘুমিয়ে গেছিলাম নেই। চোখ খুলতে দেখলাম আমার ঘরটা যেন কেমন নতুন লাগছে। বিছানা থেকে উঠতে গিয়ে বুঝতে পারলাম যে আমি বেবি কটে শুয়ে আছি আর আমি উঠতে পারছি না। মা কে  ডাকতে গিয়ে মুখ দিয়ে কথা বেরলো না। অ্যাঁ করে একটা শব্দ বের বেরলো শুধু। বুঝতে বেশিক্ষণ লাগল না যে আমি আবার ছোটোবেলায় ফিরে গেছি। এখন আমি আর ১১ বছর এর মেয়ে নই, এখন আমি ৫-৬ মাসের একটা বাচ্চা। দেখলাম কেউ একটা ঘরে ঢুকল। বুঝতে একটু দেরি হল যে ওটাই মা। মা এসেই আমায় কোলে নিল। তারপর দুধ খাইয়ে, তেল মাখিয়ে রোদে শুইয়ে দিল। এরকম জীবন আমার খুব পছন্দ হল।

কিন্তু কিছুদিন পর আর ভালো লাগল না। আমি বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যেতে পারছি না, স্কুল যেতে পারছি না, বাবা-মায়ের সঙ্গে গল্প করতে পারছি না আর পিৎজা, ফ্রায়েড রাইস এসব খেতেও পারছি না।  এবার বিরক্তি আসতে লাগল। ইচ্ছে করল যদি আবার আগের মতো বড়ো হয়ে  যেতাম তো খুব ভালো হত। আর চাই না বাচ্চার জীবন। রাতে এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।

“ময়না, ও ময়না; ওঠ মা,স্কুল  যেতে হবে তো!” মা-এর  ডাকে ঘুম ভাঙল। এবার কিন্তু ঘরটা আগের মত লাগছিল। আমি উঠে বসলাম আর মা কে জড়িয়ে ধরলাম। মা বলল যে আমি যেন তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে বাস  স্ট্যান্ডে চলে যাই। আমি খুব নিশ্চিন্ত  হলাম। এইতো, আমি আবার ১১ বছর বয়সে ফিরে এসেছি। এবার পড়াশোনা করতে আমার আর কোনো আপত্তি নেই। আমার এই জীবনটাই খুব সুন্দর।

  

খুদে স্রষ্টাদের সমস্ত কাজের লাইব্রেরি

 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s