খিদে
কৌশিক ভট্টাচার্য
পেটে খিদে থাকলে মনে খাবার ছাড়া আর কি অন্যকিছুর ভাবনা আসে, বলুন তো মশাইরা? বিশ্বাস হচ্ছে না? তিনদিন না খেয়ে থাকুন আমার মতন! মায়ের নাম? ভাববেন, খাবার! বাপের নাম? ভাববেন, খাবার!
তিনদিন পেটে কিচ্ছুটি পড়েনি। খিদেতে পেট একেবারে দাউ দাউ করে জ্বলছে। তবুও জানতাম, বড়ো বাড়িটাতে ঢোকা একটু ঝুঁকির কাজ হয়ে যাবে। পাকাবাড়ি, ফ্যাতাড়ু গরিবের মাটির বাড়ি নয়। ঢুকব কি ঢুকবো না ভাবতে ভাবতে শেষে ঢুকেই পড়লাম বাড়িটাতে। কেউ দেখে ফেললে কী যে হবে ভালো করেই জানি। তবুও পিছনের ঘাসের লন দিয়ে বাড়িটাতে ঢুকে প্রথম যে গন্ধটা পেলাম তাতেই বুঝে গেলাম একটুও ভুল করিনি। এরা বড়োলোক। ভাঁড়ারঘর ভর্তি রসদে। আর কে না জানে বড়োলোকেদের বাড়ির খাবারের স্বাদই আলাদা।
দুটো ঘরে এখনও আলো জ্বলছে। আলো জ্বলছে রান্নাঘরেও। রান্নাঘরের পাশে একটা ছোটো ঘর। কোনও আলো নেই সে ঘরে। কিছু বস্তা মেঝেতে, আর সারি সারি বয়াম আর শিশিবোতল সাজানো দেয়ালের তাকগুলোতে। এটা বোধহয় ভাঁড়ারঘর। যতই খিদে পাক, চুপচাপ অপেক্ষা করতে হবে এখন দরজার আড়ালে। রাত হয়েছে, বাড়ির লোকজন সবাই শুয়ে পড়ুক, আলোটালো সব নিভুক আগে।
মাটি কাঁপছে অল্প অল্প। ভূমিকম্প নাকি? না! কেউ আসছে এ-ঘরে! ভুল করেছি! ভুল করেছি! একটামাত্র দরজা এই ঘরটায়, বেরোনোর অন্য রাস্তা নেই কোনও।
এ কী! এত দ্রুত কেন খুলে যাচ্ছে দরজাটা? দেখে ফেলেছে নাকি আমায়?
ঝাঁপিয়ে পড়ি আক্রমণে। তারপর দে ছুট, দে ছুট!
ঐ তো, হতভম্ব লোকটা দু’হাতে ছোবল খাওয়া পা-টা আঁকড়ে ধরে ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছে, “ওরে বাবা রে, সাপে কেটেছে! সাপ! সাপ!”
অলঙ্করণঃ অংশুমান
দারুন। দারুন।সাপের মতই গা শিরশির করা খিদের ভয়। “আজ জুটেছে, কাল কী হবে…
LikeLike
বাঃ দারুণ গল্প।
LikeLike
etato paramanu golpo’khub bhalo
LikeLike
etato paramanu golpo’khub bhalo
LikeLike