জ্যোতির্ময় দালালের আরো ছড়া আষাঢ়ে গল্প, চোর-পুলিশ, দূরদর্শী, পেরাইভেট, দুটি ছড়া, পরবাসে, জয়ঢাক প্রকাশন থেকে জ্যোতির্ময় দালালের ছড়ার বই অর্ডার দিতে এইখানে ক্লিক করুন।
দুই ছড়া
জ্যোতির্ময় দালাল
য: পলায়তি
পলিউশনে ঢাকলো গোটা দিল্লি
বন্ধ শহর, খাপ্পা হুলো বিল্লি !
হাঁচি কাশি, চক্ষু জ্বালা
প্রাণটা নিয়ে এবার পালা
হিমালয়ে – নেইকো চিল্লামিল্লি!
বাঘু-বৃত্তান্ত
এক ছিল বাঘ মস্ত – সোঁদরবনে,
একলা ভীষণ, দুঃখু বেজায় মনে !
ভাবলো শেষে, ধুত্তেরি ছাই
এ বন ছেড়ে বেড়াতে যাই
ব্যাগ গুছিয়ে চলল ইস্টিশনে |
ইস্টিশানে পৌঁছালে ‘পর লাগল বাঘুর তাক
লাফায়-ঝাঁপায় হাজার লোকে, লাগায় কী হাঁকডাক !
পাত্তাই কেউ দেয় না তাকে,
যে যার তালে ছুটতে থাকে !
ব্যাজার বাঘু ভাবল, টিকিট-ঘরেই যাওয়া যাক !
টিকিট কাটার লাইন দেখে টেরিয়ে গেল চোখ
(তবু) ঘাবড়ে যাবার বান্দা সে নয়, বাঘু কী ডরপোক?
দাঁড়িয়ে গোটা টাইম টেবিল
পড়ার পরে খুশ হল দিল –
‘শিয়ালদা’-দার ডেরায় গিয়েই সেলিব্রেশন হোক !
ট্রেন আসতেই হাজারটা লোক পিলপিলিয়ে ছোটে
জুতো-ছাতা-কিল-ঘুসি-চড় চালিয়ে সবাই ওঠে
ভাবল বাঘু – এ কী কান্ড !
এরাই তবে “ডেলি-পাষণ্ড” ?
হালুম হালুম, হচ্ছে মালুম রাম-গুঁতোনির চোটে !
তিল-ধারণের জায়গা তো নেই ট্রেনের অন্তঃপুরে
গরমাগরম তাসের আসর উইন্ডো সিট জুড়ে !
সবখানেতেই লাগেজ ঠাসা,
বসতে পাওয়ার নেইকো আশা –
তার মাঝেতেই “চায়না মলম” হাঁকছে বিকট সুরে !
‘পাঁজি দেখে না বেরোনোর
রেজাল্ট হাতে-নাতে’ –
মাড়িয়েছে ল্যাজ, বাপরে –
আবার খোঁচাচ্ছে পাঁজরাতে!’
প্রাইম অফিস-টাইম ভিড়ে
হচ্ছে বাঘু চ্যাপ্টা চিড়ে !
শেষকালে প্রাণ ফিরল ধড়ে – পৌঁছে শিয়ালদাতে !
বাইরে এসে অবশেষে ছাড়লো বাঘু হাঁফ
ধরল হলুদ ট্যাক্সি – ‘বাবা,
খুব গিয়েছে চাপ !
‘জলদি চলো’ – লাগায় তাড়া
‘সটান শিয়ালদাদার ডেরা
খিদের চোটে শূন্য পেটে
ছুঁচোতে দেয় লাফ’!