হাঁটছি
পর্ব এক পর্ব দুই
অর্ণব
দুয়ার তব রেখেছ খুলি…হে মৌন ঋষি
জীবনে প্রথমবার উত্তরাঞ্চলে যাব, বেশ একটা রোমাঞ্চ থরোথরো ব্যাপার। তার উপর সেই বছরই জানুয়ারির শেষে লাল টুকটুক বউটিকে নিয়ে গোয়া ঘুরে এসেছি। আর এখন সেপ্টেম্বর, প্রায় উনিশ দিনের প্রোগ্রাম, তায় সাথে থাকবে আমার লাল টুকটুক বউটি। উত্তেজনা তো হবেই। সেই উত্তেজনার আগুনে ঘি পড়ে যখন লাখনউ থেকে ন্যারো গেজের ট্রেনটা ছাড়তেই হাতে এসে পড়ে তুণ্ডে নবাবের বিরিয়ানির বাক্সটি।
সুহানাল্লা একেবারে। জয় হোক সৌরভদার [সৌরভ বিশ্বাস]। এরপর বেশ কিছু ধরনের পথ ও যানবাহনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে পৌঁছই সঙ গ্রামে। এবারের হাঁটা শুরু এখান থেকেই। খালিধার বাংলোর চৌকিদার আমাদের খুব অভয় দেন, বিশেষ করে রাজ্যশ্রীকে – দেখো, বিটি ঠিক ভালভাবে ঘুরে আসবে।
আমারাও জয় মা মাইকতোলি বলে নেমে পড়ি, সামনে যে ঢাকুরির চড়াই, জার্মানদের লড়াই। এরপর … সেই দুরতিক্রম্য ঢাকুরি পাস পেড়িয়ে ঠিক তার ওপারে এসে দাঁড়াই, সামনে খুলে যায় সেই দৃশ্য, যার জন্য আমার নিয়তির একটি স্থানাঙ্ক নির্ধারিত হয়ে যায় – হিমালয়, ঠিক যেভাবে বাবু জীবনানন্দ রক্তের মধ্যে কবিতার অসুখ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেভাবে ঢাকুরি আমার জীবনে জুড়ে দিয়ে গেল মগ্ন ঋষির মত হিমালয়কে, যার কাছে ছুটে যাওয়া ব্যাতিরেকে আমার শান্তি নেই।
ঢাকুরি পাসে দাঁড়িয়ে আছি, বেশ কিছুটা নীচে এক সবুজ গালচের উঠোন, ছোট ছোট দু চারটি ঘর, ঘরের পিছনে পাথরের তৈরি একটা ছোট পাঁচিল, উঠোনটির বাঁদিকে সবুজ পাহাড়ের ঢাল উঠে গেছে বুকে পাইন গাছের অলংকার নিয়ে, আর ওই পাঁচিলটার পরেই যেন উঠোনটা ঝাঁপ দিয়েছে এক অসীম খাদে, যার অন্য পারে নীলের ক্যানভাসে মাথা তুলে জেগে তুষারের বর্শা ফলার মত একে একে – মাইকতোলি , বালজউরি , পানোয়ালিদুয়ার।
এর পরের কয়েকদিনে পরিষ্কার হয়ে যায় এই পথের অমোঘ বৈশিষ্ট, উচ্চতর সবুজে ঢাকা পাহাড়ের গভীরে গভীরে এক পথ সুন্দরডুঙ্গা নালার হাত ধরে চলে গেছে সেই মাইকতোলি বেসিন পর্যন্ত। প্রথমদিকে একটু ঘাবড়ে গেছিলাম – একীরে বাবা, এ কীরকম ট্রেক, কোন সাদা বরফে ঢাকা শৃঙ্গ তো দেখাই যাচ্ছে না। কিন্তু দু’এক দিনের মধ্যেই প্রেমে পড়ে গেলাম সেই পাহাড়ি পথের। অগুন্তি জলপ্রপাত, গাঢ় সবুজের বুনট, সুন্দরডুঙ্গা নালার অবিরল নুপুর বাজিয়ে বয়ে চলা, কখনো খুব কাছে আবার কখনো অভিমানে যেন বেশ দূরে।
সেই পথের মাঝে এক নিবিড় পাহাড়ি গ্রাম জাতোলি, বড় অদ্ভুত ব্যাপার হল সেই গ্রামের বাইরে এসে দাঁড়ালে শোনা যায় সুন্দরডুঙ্গার প্রবল পরাক্রান্ত ভাবে বয়ে চলার শব্দ, কিন্তু গ্রামের ভিতরে তার ছিটেফোঁটা শোনা যায় না। এই গ্রাম ছেড়ে আরও এগিয়ে পাই এক ধ্বসে ফুটিফাটা হয়ে থাকা অঞ্চল, কমবেশি দুশো ফুট নিচে ভয়ঙ্কর জলধারা গিলতে আসছে যেন। প্রায় এক কিলোমিটার এই প্রায় পড়ে গেলাম পড়ে গেলাম করতে করতে পেরিয়ে এসে হাঁফ ছেড়ে ভাবি ধন্য নাম এই জায়গার – ঢুনিয়াঢঙ।
শুধু কি এই, এরপর পেরোতে হল প্রায় ষাট ডিগ্রি হেলে থাকা এক পাথরের চট্টান, যার উপর দিয়ে ক্ষীণ কটিদেশ নিয়ে বয়ে যাচ্ছে চপলা এক ধারা, আর তাকে টপকাতে গিয়ে সারা শরীরের ভারসাম্য প্রায় শূন্য। হাতে হাতে ধরি ধরি করে কোনক্রমে পেরিয়ে গিয়ে জানতে পারি – বাবা মা তাদের ছোট নালাটিকে আদর করে নাম রেখেছেন ভৈরব নালা। কী উপযুক্ত আর মানানসই নামকরণ। যাইহোক, এই পথে বৈচিত্রের যা সমারোহ তা সম্পূর্ণ এই পরিসরে বলা কঠিন। এই অভিমুখে যাত্রার শেষ রাত আমরা কাটাই সুখরাম গুহা নামক জায়গায়। তাঁবু জীবন। এক বিশাল হেলে থাকা পাথরের এক গুহা যেখানে অনায়াসে কুড়িজন রাতে থেকে যেতে পারে, তারই নাম সুখরাম গুহা। নিশ্চয়ই কোন সরল পরিশ্রমী মেষপালকের নামে এই গুহা নামাঙ্কিত। ‘রাম’ পদবি এই অঞ্চলের নিম্নবর্গের হয়ে থাকে।
কিন্তু কে নিম্নবর্গ আর কে উচ্চ সে কি আর পদবি ধরে হয়! যেমন একটি ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে, সুখরাম গুহায় যেদিন পৌঁছেছিলাম তার পরদিন ছিল বিশ্রাম। আমরা রুকস্যাকহীন ভারমুক্ত এগোলাম উত্তর পশ্চিমে, ক্রমশ ভানোটি, থারকোট, টেন্ট শৃঙ্গ চোখের সামনে উন্মুক্ত হচ্ছে, কিন্তু রাস্তাহীন ধূসর ঘাসের টানা চড়াই আমাদের দমের কড়া পরীক্ষা নেয়া শুরু করে। দু’একজন পিছিয়ে পড়ে ক্রমাগত। হঠাৎ পিছনে ফিরে দেখি পরম যত্নে আমাদের দলের গোপালদা, ভারারির বাসিন্দা, আমাদের দলের সাহায্যকারী স্থানীয় মানুষ গোপাল রাম, রাজ্যশ্রীর হাত ধরে ধীরে ধীরে তাকে নিয়ে উঠে আসছেন। প্রথমত লজ্জা লাগল আমার, সেই বেদম চড়াই পথে রাজ্যশ্রীর পাশে না থেকে নিজের ছন্দে উঠে আসায়, দ্বিতীয়ত মনে হল ভানোটি, থারকোট, টেন্ট প্রভৃতি শৃঙ্গের মধ্যে আরেকটি শৃঙ্গ যেন চোখের সামনে বৃহৎ হয়ে উঠছে – গোপাল রাম। এইসব নাম না জানা অপরিচিত শৃঙ্গের সাক্ষী থাকতেইতো বারবার ফিরে আসা হিমালয়ের গহনে।
সে যাত্রায় ফেরার পথে আমরা তিনজন হঠাৎ ঠিক করি এত কাছে যখন এসেছি, দেবীকুণ্ড নামক লেকটি দেখে ফিরব। দলের বাকিদের শরীরের ক্লান্তি তাদের কাঁঠালিয়া ক্যাম্পিং গ্রাউন্ডের মেষপালকের ঘরের দিকে হাতছানি দেয়। অতএব আমরা তিনমূর্তি বড় পাথরের খাঁজে আমাদের স্যাকগুলো রেখে প্লাস্টিক ঢাকা দিয়ে উপরের দিকে মাটি আর পাথর বেয়ে টানা চড়াই উঠতে শুরু করি। বেশ কিছু পথ পেরিয়ে দেখা মেলে ব্রহ্মকমল, আরও কিছু পথ পেরিয়ে সেই পবিত্র হ্রদ – দেবীকুণ্ড। ষাট সত্তর মিটার ব্যাসার্ধের একটা জলাশয়, চারদিকে গুঁড়িগুঁড়ি পাথরে পূর্ণ পাহাড়ের ঢাল উঠে
গেছে, গায়ে তার গুঁড়ো বরফের আস্তরণ। হ্রদের ধারে বিস্কিট দিয়ে আমরা সামান্য পুজোর আয়োজন সমাপ্ত করে পিছনে ফিরতেই দেখি, সাদা ধুসর মেঘের একাংশ মুছে দিয়ে জেগে আছে বালজউরি শিখরের ছুরির ফলার মত গা। কিছুক্ষণ মোহিত হয়ে চেয়ে থাকা আর তারপর গতি বাড়িয়ে নেমে চলা। বন্ধুরা যে আমাদের জন্য দুশিন্তায় থাকবে!
দিনের শেষে নেমে আসি কাঁঠালিয়া – একখণ্ড সবুজে ছাওয়া মাঠ, যার আঙিনায় এসে মিশেছে মাইকতোলি আর সুখরাম নালা, আর রংবেরঙের পাথরের অলঙ্কারে সেজে সুন্দরডুঙ্গা নাম নিয়ে নুপুর পায়ে চলেছে পিণ্ডারি নালার সাথে চির আলিঙ্গনে ব্যাপৃত হওয়ার জন্য।
আমরাও নেমে আসি সুন্দরডুঙ্গাকে অনুসরণ করে, আর দু’দিনের মাথায় প্রবেশ করি পিণ্ডারি উপত্যকায়। এবার আমাদের সঙ্গী মায়াময় এক উৎস অঞ্চল থেকে ধেয়ে আসা পিন্ডার নালা। উপত্যকার প্রথম গ্রাম খাতি, বেশ বর্ধিষ্ণু, স্কুল আছে, দোকান আছে আর আছে বনবাংলো, যার হাতায় আমরা বিছিয়ে নিই রাতের আস্তানা। এর ঠিক দু’দিনের মাথায় আমরা পৌছই কাঙ্ক্ষিত পিণ্ডারি জিরো পয়েন্টে, যার অনতিদূরের গ্লেসিয়ার থেকে জন্ম নিয়েছে এই চির-চঞ্চলা কিশোরী পিন্ডার।
কপালগুণে যথারীতি একটি পরিত্যক্ত মেষপালকের ঘর জুটে যায়, আর আমরা নামিয়ে রাখি লম্বা দিনের ক্লান্তি। একটু ধাতস্থ হতেই চোখে পড়ে একটি মন্দির আর তার লাগোয়া একটি ঘর। গুটিগুটি এগিয়ে গিয়ে আলাপ হয় বাবা ধর্মানন্দের সাথে, কঠোর কোমল এই হিমালয়ের অন্দরে যিনি ঈশ্বরীর সাধনায় মেতে আছেন – সঁপে দিয়েছেন মা নন্দাদেবীর আরাধনায়। অবাক হই তাঁর কুড়ির কোঠার বয়সের নিষ্ঠা দেখে, আরও অবাক করে তার হেঁশেলের কলেবর। কুণ্ঠিতভাবে বাবা জানান, জনাচল্লিশ দর্শনার্থীকে তিনি একবেলার সেবা করাতে সক্ষম। আমরাও ভাগ্যবান, বাবার কাছে গরম খিচুরির সেবা গ্রহণ করি, চূড়ান্ত নাস্তিকের দল যেন সাময়িক আধ্যাত্মিকতার স্রোতে সাঁতার দিয়ে উঠি।
অবাক হওয়ার আরও বাকি ছিল। আগামি দিন বিশ্রাম, তাই রাতের খাওয়া সেরে আমরা অলসভাবে গরম জামাকাপড় মাফলার গ্লাভস ইত্যাদি চাপিয়ে ছানের বাইরে এসে দাঁড়াতেই এক স্তব্ধতার গান যেন আমাদের বিদ্ধ করে। হাতের নাগালের মধ্যে বাঁদিক থেকে ডানদিক জুড়ে জেগে আছে একে একে নন্দাখাত, নন্দাভানার, ট্রেলস পাস, ছাঙ্গোছ, নন্দাকোট। তাদের সারা শরীরে চাঁদের রুপোলী মায়ার স্রোত, মাথার উপর এক অনন্য রাতের নক্ষত্র-খচিত শামিয়ানা। কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম জানি না, শুধু অনুভব করছিলাম – সমস্ত গ্লানি, নীচতা, দ্বেষ, অভিমান যেন ধুয়েমুছে সবুজ গালচে বেয়ে পিন্ডারের তুমুল হর্ষে মিশে যাচ্ছে।
প্রায় ষোল বছর হয়ে গেল – লালকুয়া হয়ে এপথে পা বাড়িয়েছিলাম। কিন্তু আজো সব ছোটোবড়ো ঘটনা চোখের সামনে ভাসে। মাঝে মাঝেই মনে হয় কাঁঠালিয়ায় সেই বিশাল পাথরটা, যেটা সুন্দরডুঙ্গার উপরে এক প্রাকৃতিক সেতু তৈরি করেছে, যেটা পেরিয়ে অপর পাড়ে গিয়ে মাইকতোলি বেসিনের দিকে এগোতে হয়, সেটা সেই আগের মতোই আছে তো? কেমন আছে কমল, ওয়াছাম গ্রামের কমল রাম, কাজের খোঁজে ভারারি এসে আমাদের হোটেলের আসে পাশে যে ঘুরঘুর করতে থাকে। অবশেষে তাকেও দলভুক্ত করে নেয়া হয়। তারপর ঝড়ে, বৃষ্টিতে, পিছল পথে, ভোর রাতের চায়ে, কমল হয়ে ওঠে আমাদের ঢক্কন – আমাদের সর্বক্ষণের সঙ্গী। মনে পড়ে দলনেতার খুড়োর কলের টোপ, পিন্ডারি জিরো পয়েন্ট থেকে সেদিন আমাদের সরাসরি খাতি গ্রামে নেমে যাওয়ার পালা, দলনেতা বলে দিলেন, খাতি পৌঁছে সক্কলকে ডবল ডিমের অমলেট খাওয়াবেন। আর যায় কোথা, সেই ডবল ডিমের অমলেটের টানে আমরা প্রায় উড়তে উড়তে পৌঁছলাম খাতি, সন্ধ্যা নামার কিছু আগে। ডবল ডিমের অমলেটের অর্ডার গেল দোকানে, সেই মুহূর্তে রাজ্যশ্রী গম্ভীর মুখে জানালো, সে দুটি ডিমই খাবে, কিন্তু সিঙ্গল সিঙ্গল অমলেট করে। কারণ জানতে চাইলে মুচকি হেসে বলে – তোমাদের ডবল ডিমের অমলেট তাড়াতাড়ি শেষ হবে আর আমি তারিয়ে তারিয়ে অনেকক্ষণ ধরে দুটি অমলেট খাবো। বোঝো তাহলে, পাহাড় যাদের ডাকে, তাদের গভীরের ছেলেমানুষিটাকে নিংড়ে বের করে নেয়ার দায়িত্বও সে তুলে নেয় হাতে। বেশ মনে পড়ে হিন্দোলের সেই বিস্ফারিত চোখ, যখন কাঁঠালিয়া নেমে এসে সে বলছিল তার একা হয়ে যাওয়ার গল্প, চারিদিক সাদা মেঘে ক্রমশ ঢেকে যাচ্ছে, বন্ধুরা এগিয়ে গেছে অনেকটা, হিন্দোল একটু জিরিয়ে নেওয়ার আছিলায় মখমলি ঘাসে শরীরটা এলিয়ে দিতেই মেঘের একচিলতে ফাঁক দিয়ে দেখে, কিছু শকুন ঘুরে
বেড়াচ্ছে তার ঠিক মাথার উপর, যেন ওত পেতে আছে কখন মনুষ্যজীবটি গত হবে আর তারা ধেয়ে এসে গিলে নেবে তাকে।
এই আমরা যারা পাহাড়ে যাই, যেতে থাকি বা যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাই অবিরত, তাদের এই নগণ্যতার, নিশ্চিহ্নতার অনুভুতিও ঘুরেফিরে আসে বৈকি। আর ঘুরেফিরে আসে খালিধার বাংলোর সেই রাতটা। রাতের খাওয়া সেরে বাংলোর প্রশস্ত বারান্দায় বসে আছি আমি আর শান্তনুদা, রাতের চরাচর জুড়ে বিস্তৃত নিকষ অন্ধকার আর নিস্তব্ধতার সাথে সমপ্রাণে সমাহিত হতে হতে হঠাৎ চমকে উঠে দেখি, কমল বাংলোর হেঁশেল থেকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ভালু ভালু বলে ছুটে আসছে। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে পড়িমরি করে আমরাও ছুটে বাংলোর মধ্যে ঢুকে দরজার খিল তুলে দি। তারপর এর ওর মুখ চেয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করি। অবশেষে যথারীতি সৌরভদার নেতৃত্বে একটা লাঠির ডগায় কাপড় জড়িয়ে তাতে কেরোসিন ঢেলে মশাল বানানো এবং ভালুর সন্ধানে বা বলা ভাল, ভালু তাড়াতে বেরিয়ে পড়া। বাংলোর চারদিকে আমরা চক্রাকারে ঘুরতে থাকি ভালুর সন্ধানে। সেই চক্রবৃত্ত দলের শেষতম সদস্য হিসেবে আমি দুরুদুরু বুকে যেন পরিখা কাটতে থাকি সমস্ত মনের কোনে লুকিয়ে থাকা দীনতা আর ভয়ের বিপ্রতীপে। যে ভয়ের ঊর্ধে ওঠার বাসনা আমায় আজো তাড়িয়ে বেড়ায়, ডাক দিয়ে যায় সকালের রৌদ্র-আলেখ্যে এলিয়ে থাকা অলস লালকুয়া স্টেশন।