টাইম মেশিন ইতিহাসের খন্ডচিত্র জীবন যোদ্ধা ক্যাপ্টেন সতীন্দ্র সাঙ্গোয়ান অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ষা ২০১৬

আগের পর্বে ইতিহাসের খন্ডচিত্র-জিন্না ও সিনেমাজগত

timemachinekhandochitro (Medium)

১৯৯৯ এর ২৯ এ জুন। কার্গিল যুদ্ধ চলছে। কাশ্মীরের দ্রাস ও বাটালিক সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সতীন্দ্র সাঙ্গোয়ান ও তাঁর সামরিক বাহিনী ধ্বংস করে দিল বেশ কিছু পাকিস্তানি বাঙ্কার। সেদিন প্রতিটি জওয়ান তীব্রভাবে অনুপ্রাণীত এই সাফল্যে। ক্যাপ্টেন সাঙ্গোয়ানের মুখে তখন বীরের হাসি, মনে তীব্র উল্লাস।

কিন্তু এখানেই তো থেমে থাকা নয়। শত্রুপক্ষকে সমুচিত জবাব দিয়ে অনভিপ্রেত এই হামলার হাত থেকে দেশকে রক্ষা করাটাই যে জীবনভর ব্রত এই বীরের। বেরিয়ে গেলেন একটি টহলদারি অপারেশন-এ। সেখান থেকে ফেরার পথে শেষে হঠাৎই ক্যাপ্টেনের পা গিয়ে চাপ দিল একটি ল্যান্ডমাইন এর ওপরে! ব্যস। ডান পা’টি উড়ে গেল নিমেষের মধ্যেই। আটত্রিশ বছর বয়েসি এই  টগবগে সেনা অফিসার হয়ে গেলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী এক মানুষ।

কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই বীর দলপতি হাল ছেড়ে দেবার পাত্র ছিলেন না মোটেই। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাডমিন্টনের কোর্টে যোগ দিলেন এবং টানা তিন বছর তীব্র মানসিক শক্তিকে সম্বল করে শারীরিক বাধা পেরিয়ে তিনি হয়ে উঠলেন শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জাতীয় স্তরের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতার  ‘চাম্পিয়ন’। বিশ্বের দরবারে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের খেলাধূলোয় উনি হয়ে উঠলেন এক জ্বলজ্বলে উদাহরণ।

শুধু তাই নয়, পেশাগতভাবেও উনি হয়ে উঠেছেন এক ‘আইকন’। ক্যাপ্টেন সাঙ্গোয়ান হিউম্যান রিসোর্স ডেভলপমেন্ট বিভাগে কাজ করেন এক প্রখ্যাত ভারতীয় সংস্থায় এবং ২০০৯ সালে উনি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ‘রোল মডেল’ কর্মী হিসেবে। সত্যি, মানুষ মন থেকে চাইলে কী না পারে! কোন বাধাই তার সামনে দাঁড়াতে পারে না। ক্যাপ্টেন সাঙ্গোয়ানের জীবন তার জ্বলজ্বলে প্রমাণ।