ভ্রমণ বিপাশার বুকে র‍্যাফটের দোলায় ঊর্মী মুখার্জি শরৎ ২০১৬

ভ্রমণ

bhromonraftingurmi03 (Medium)

বিপাশার বুকে র‍্যাফটের দোলায়

ঊর্মী মুখার্জি

অ্যাডভেঞ্চার আর দেশ দেখার শখটা আমার ছোটোবেলা থেকেই ছিল। তা, কারই বা না হয়! যখন ফেলুদা, তোপসে আর লালমোহনবাবুর গরম গরম অ্যাডভেঞ্চারগুলো পড়তাম, মনে মনে ভাবতাম, ইশ! আমিও যদি এইসব জায়গায় যেতে পারতাম! যদি ওদের মতই রহস্যে-টহস্যে জড়িয়ে পড়তাম! আর ‘চাঁদের পাহাড়’ পড়ে তো আজও মনে হয়, একদিন অ্যাফ্রিকার সেই রিখটার্সভেল্ড পাহাড় দেখে আসতেই হবে! না-ই বা পেলাম শঙ্করের মত হিরের খনি!

তা যাই হোক, দেশ দেখা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। টিকিট কেটে ট্রেনে কিংবা প্লেনে চড়ে বসলেই হল। কিংবা নিদেনপক্ষে দূরগামী বাসেও। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার করাটা আর একটু কঠিন। লেখকরা তো তাঁদের বইয়ের চরিত্রদের জন্যে অ্যাডভেঞ্চার প্লেটে সাজিয়ে রাখেন। বেড়াতে বেরোলেই কিছু না কিছু ঘটবে! আমাদের তো আর তা হবার জো নেই। সুতরাং অ্যাডভেঞ্চারটা আমাদের একটু খুঁজে পেতে নিতে হয় আর কি। তবে অতটা রহস্যময় সবসময় হয় না।

এই অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজেই বছর তিনেক আগে শুরু করলাম পাহাড়ে পাহাড়ে ‘ট্রেকিং’ বা ‘হাইকিং’। অর্থাৎ পায়ে হেঁটে ঘোরা। প্রথমবার সিকিমে গেলাম ট্রেক করতে। অ্যাডভেঞ্চারের নেশাটা গেল আরো বেড়ে। পরের বছর ঠিক করলাম হিমাচল প্রদেশে ট্রেক করতে যাব।

মানালি শহর পৌঁছতে হবে। অনেকভাবেই যাওয়া যায়। দিল্লী বা চণ্ডিগড় গিয়ে সেখান থেকে বাসে যান অনেকেই। কিন্তু আমি কী ঠিক করলাম বলো তো? কালকা মেলে যাব! কারণ? আরে ওই ট্রেনেই যে ফেলুদারা শিমলা গিয়েছিল! সে-ই যে ‘বাক্স রহস্যের’ সমাধান করতে!

মে মাসের এক সন্ধেবেলা আমরা তিন বান্ধবী কালকা মেলে চড়ে বসলাম। তার পরের পরের দিন খুব ভোরবেলা কালকা পৌঁছলাম। গাড়ি ঠিক করা ছিল। ড্রাইভারের নাম আবার ‘কাকু’! বেশ মজার না নামটা? কাকু যদি বাঙালি হত, তাহলে ওর ভাইপো-ভাইঝিরা ওকে কী বলে ডাকত এটা নিয়ে আমরা বেশ মজা করেছিলাম।

যাই হোক, কাকু তো ভোর সাড়ে চারটের সময় গাড়ি নিয়ে কালকায় হাজির। কালকা হরিয়ানার মধ্যে পড়ে। তবে হিমাচল-এ ঢুকতে বেশি সময় লাগে না। নিজের রাজ্যে ঢুকে হাসি-খুসি কাকু বেশ নিশ্চিন্ত হয়ে গুছিয়ে খোশগম্প করতে শুরু করলো। আমরা তিনজন তখন ঢুলছি। রাত আড়াইটে থেকে জেগে!

হঠাত কাকু বলে উঠলো, “আপনারা যখন ট্রেকার তখন নিশ্চয়ই অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। বিয়াস (বিপাশা) নদীতে র‌্যাফটিং করবেন?” র‌্যাফটিং বলতে এক বিশেষ ধরনের নৌকা, যাকে র‌্যাফ্‌ট্‌ বলা হয়, তাতে চড়ে খরস্রোতা নদীতে পাড়ি দেওয়া।

আমি তো শুনেই কান খাড়া করে উঠে বসেছি! পেছন ফিরে দেখি আমার বান্ধবী ইতির-ও চোখ চকচক করছে। কিন্তু কোথায় করবো র‌্যাফটিং? আর আমাদের মানালি পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে না? কাকু বললে র‌্যাফটিং হয় কুলুতে। এবং আমদের কুলু হয়েই মানালি যেতে হবে। সুতরাং রাস্তায় এক-আধ ঘন্টা দেরি করলে মহাভারতটা অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।

“ঠিক আছে,” আমি বললাম। “আমরা দুজন নিশ্চই করব র‌্যাফটিং,” বলে ইতির আর আমার দিকে দেখালাম। আমার দ্বিতীয় বান্ধবী ঋতা এতক্ষণ চুপচাপ ছিলো এবার বলে উঠল, “আর আমি কি বসে বসে দেখব নাকি?”

bhromonraftingurmi07 (Medium)নেচার পার্ক, ঝিরি

ব্যাস, ঠিক হয়ে গেল প্ল্যান। বেলা একটা নাগাদ কুলু পৌঁছলাম। কাকু গাড়িটা সোজা ঢুকিয়ে দিল একটা রিসর্ট-এ যার নাম দেখলাম লেখা আছে ‘নেচার পার্ক, ঝিরি’। টিকিট বিক্রি করছিল যে লোকটি সে প্রথমেই এক বিরাট দর হেঁকে বসল। আমরা তার সঙ্গে অনেক তর্কাতর্কি করে খানিকটা নামালাম। পরে শুনলাম লোকটির নামে নাকি খুনের আভিযোগ আছে! সবে জামিনে ছাড়া পেয়েছে! জানলে দরাদরি করার বদলে বরং কিছু বেশিই দিয়ে আসতাম!

তিন কি.মি. আর ছ’ কি.মি. র‌্যাফটিং হয়। আমরা ভাবলাম, ধুস! তিন কি.মি. করে আর কী মজা হবে! ছ’ কি.মি.-ই করা উচিত। তাই ঠিক হল। রিসর্ট থেকে একটা গাড়িতে করে আমাদের ছ’ কি.মি. নদীর উজানে নিয়ে যাওয়া হল। সেখান থেকে আমরা র‌্যাফটিং করে রিসর্ট-এ ফিরবো। সঙ্গে আমাদের গাইড টোনি আর অন্য একটি ছেলে। গাড়ির মাথায় দুটো র‌্যাফ্‌ট্‌।

গাড়ি থেকে নেমে বালি আর কাঁকর-মেশানো জমি দিয়ে একটু হেঁটে আমরা নদীর ধারে পৌঁছলাম। এই সেই বহুবার গল্পে পড়া বিপাশা নদী! সিন্ধু নদের পাঁচটি উপনদী, যার থেকে ‘পাঞ্জাব’ নামটি এসছে, তার মধ্যে অন্যতম একটি। ‘পাঞ্জাব’ অর্থাৎ ‘প’ অব’। ‘অব’ মানে ‘জল’। এখানে নদী অর্থে ব্যবহৃত। সুতরাং ‘পাঞ্জাব’ মানে ‘পাঁচটি নদীর দেশ’। 

বিপাশা ছাড়া বাকিরা হল শতদ্রু (সাতলেজ), ইরাবতী (রাভি), চন্দ্রভাগা (চেনাব) এবং বিতস্তা (ঝিলম)। পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর বা হিমাচল-এর বিভিন্ন অ’লে গেলেই সিন্ধু ও তার উপনদীদের দেখা পাবে। ভাবছ নিশ্চই যে পাঞ্জাব গেলেই বা সবার দেখা পাব না কেন? তার কারন ‘পাঞ্জাব’ নামকরণটি যখন হয় তখন হিমাচল পাঞ্জাব-এর মধ্যেই ছিল। তাছাড়া দেশভাগের পর পাঞ্জাব-এর অনেকটাই চলে গেছে পাকিস্তানে। সেই সঙ্গে অনেকগুলো নদ-নদীর বড় অংশ-ও পাকিস্তানেই চলে গেছে। যেমন ভারতবর্ষে সিন্ধু নদের দেখা এখন শুধু লাদাখ অঞ্চলেই পাবে। এবং তাতেও র‌্যাফটিং হয়।

bhromonraftingurmi04 (Medium)শান্ত বিয়াস

যাই হোক, বিপাশা নদী দেখে বেশ দমেই গেলাম। নদীর রূপ নিতান্তই শান্ত। কটকটে দুপুর রোদে ধূসর-বর্ণ জল কিছু কিছু জায়গায় সাদা-সাদা দেখাচ্ছে। মনে হচ্ছে অল্প অল্প ঢেউ উঠছে সেই জায়গাগুলোতে। মনে মনে ভাবছি এই জলে আবার কী র‌্যাফটিং হবে রে বাবা!

গাড়ি থেকে র‌্যাফ্‌ট্‌ দুটো নামানো হল আর আমাদের পরিয়ে দেওয়া হল লাইফজ্যাকেট। যাতে জলে পড়ে গেলেও কেউ ডুবে না যাই। মাথায় চাপানো হল হেলমেট। এমন শক্ত করে লাইফজ্যাকেট বাঁধা হল যে প্রায় দমবন্ধ হয়ে আসে। সব মিলিয়ে নিজেকে সেই হাত-পা-ছাড়া মাথা-নাড়া কাঠের পুতুলগুলোর মত মনে হচ্ছিল। এমনকি মাথাটাও নাড়তে পারছি না হেলমেট-এর জন্যে!

bhromonraftingurmi05 (Medium)রেডি, স্টেডি—-

আমরা তিনজন ছিলাম বলেই বোধহয় টোনি কাকুকেও ডাকল আমাদের সঙ্গে র‌্যাফটিং করতে। কাকু শিমলার লোক কিন্তু কোনদিন র‌্যাফটিং-ট্যাফটিং করেনি। তার তো মুখ শুকিয়ে আমসি! আমরা সবাই জোরাজুরি করতে শেষপর্যন্ত নিতান্তই ব্যাজার মুখে উঠে এল। র‌্যাফ্‌ট্‌-এর ধারটা একটু পাশবালিশের মতো গোল। তারই ওপর বসা। একদিকে ঋতা আর ইতি, অন্যদিকে কাকু আর আমি। প্যাড্‌ল্‌ (দাঁড়) হাতে মাঝখানে টোনি।

টোনি দেখাল র‌্যাফ্‌ট্‌-এর মেঝে আর আমাদের সিট-এর মাঝখানের ফাঁকে আমাদের পা কী ক’রে আটকে রাখতে হবে। কাজটা মোটেও সহজ না। পা-দুটো বেশ বাজেভাবে বেঁকিয়ে ঢোকাতে হল। একটু পরেই দেখি টনটন করছে।

আমি আর ঋতা সামনের দিকে বসে। র‌্যাফ্‌ট্‌-এর চারপাশ ঘিরে একটা শক্ত দড়ি বাঁধা। সেটা ঠিক আমার সামনে এসে শেষ হয়েছে। আমাকে বলা হল সেটা শক্ত করে ধরতে। ঋতাও টোনির সঙ্গে প্যাড্‌ল্‌ করবে, কিন্তু দরকার হলে ওকেও দড়িটা ধরতে হবে। ঋতাকে টোনি প্যাড্‌ল্‌ করা সম্পর্কে কিছু উপদেশ দিল। প্রায় আধঘন্টা তৈরি হয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত রওনা দিলাম।

bhromonraftingurmi02 (Medium)টোনি সোজা নদীর মাঝখানের দিকে এগোতে লাগল। বেশ খানিকটা গিয়েও দেখি জলের কোন তোড় নেই। মনে মনে ভাবছি, দুর ছাই! কেনই বা এলাম!

মাঝনদীতে পৌঁছে টোনি স্রোতের দিকে র‌্যাফটের মুখটা ঘোরাল। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গতি হয়ে গেল দ্বিগুণ! আর সেই সঙ্গেই আমি দেখতে পেলাম ‘র‌্যাপিড’ গুলো! সেই যেগুলো নদীর ধার থেকে ছোট-ছোট ঢেউ মনে হয়েছিল। কাছ থেকে সেগুলোই উন্মত্ত ঘুর্ণির মত দেখাচ্ছে। যেন বিশাল একটা বাটিতে দুধের ফেনার ঘুর্ণি! তার মাঝে মাঝে জলের মধ্যে গর্তের মত। আর তার দিকেই উন্মাদের মতো টলমল করতে করতে ধেয়ে চলেছে আমাদের ছোট্ট র‌্যাফ্‌ট্‌!

‘র‌্যাপিড’ মানে জানো কি? নদীর যে সব জায়গায় জলের নিচে বড়-বড় পাথর থাকে, সেখানে জলটা পাথরগুলো টপকে লাফিয়ে-লাফিয়ে যায়। সেইগুলোকেই ‘র‌্যাপিড’ বলে। দুর থেকে দেখতে খুব সুুন্দর লাগে, কিন্তু কাছ থেকে দেখে গলা শুকিয়ে গেল। তবে ‘র‌্যাপিড’-এ আমাদের র‌্যাফ্‌ট-টা পড়ার পর যা হল তার জন্যে আদৌ তৈরি ছিলাম না। একটা বিশাল ঢেউ বয়ে গেল মাথার ওপর দিয়ে। মুহূর্তের মধ্যে সবাই ভিজে চান!

কিন্তু বসে ভয় পাওয়ারও যে সময় নেই! এক মিনিটের মধ্যেই আবার একটা ‘র‌্যাপিড’। আবার একটা। আবার। প্রথমে তো আমি ভয়ে পুরো কাঁটা। শক্ত হাতে দড়িটা ধরে জড়ভরতের মত বসে আছি। খালি ভাবছি হাত ফসকে ছিটকে জলে পড়ে যাব। তারপর আস্তে  আস্তে ভয়টা কেটে গেল। তখন দেখলাম ব্যাপারটা বেশ মজার।

bhromonraftingurmi01 (Medium)

ঋতা তো আনন্দের আতিশয্যে প্যাড্‌ল্‌ করতে করতে অনর্গল বকবক করছে। কোনো কথারই বিশেষ মানে নেই। দেখি ইতিও ওর সঙ্গ নিয়েছে। হঠাৎ আমাদের পুরো পাগলামির মাত্রাটা আমার কাছে বেশ পরিষ্কার হয়ে গেল। দুদিন আগে আমরা কোলকাতায় ছিলাম। তারপর একুশ ঘন্টা ট্রেনে, ন’ ঘন্টা গাড়িতে, আর এখন মাঝনদীতে বসে আপাদমস্তক ভিজছি। পরদিন থেকে লোকালয়ের বাইরে চলে যাব। অনেক হাঁটা আছে, সুতরাং সবারই বিশ্রাম দরকার। কিন্তু কখন মানালি পৌঁছব কেউই জানি না!

কাকুর দিকে চেয়ে দেখি বেচারি প্রায় কেঁদেই ফেলে আর কি। হঠাৎ টোনিকে বলে বসলো, “এই, পাড়ে লাগাও, আমি নামব। টোনি অনেকটা মগনলাল মেঘরাজের মতই খ্যাঁকখ্যাঁক করে হাসল। ভাবটা যেন, হুঁহুঁ বাবা, এখান থেকে আর পালানোর জো-টি নেই। কাকু বেচারি আরো মুষড়ে পড়লো। আমিও মনে মনে ভাবছি, তিন কি.মি.-টা নিলেই ভালো হোত বোধহয়!

অন্য র‌্যাফ্‌ট্‌-টি আমাদের আগে আগে চলেছে। যদি কেউ জলে পড়ে-টড়ে যাই বাঁচাবে। একটা র‌্যাপিড-এ লেগে তো ছেলেটির হাত থেকে দাঁড়টাই গেল ছিটকে। কোনমতে সেটা জল থেকে উদ্ধার হল। আমরা ভাবলাম, এ দাঁড়টাই সামলাতে পারছে না, আমাদের আর কী সামলাবে!

অনেকটা রাস্তা ঠিকঠাক গেলাম। তারপর একটু শান্ত একটা জায়গায় পৌঁছে টোনি জিগ্যেস করলো কেউ জলে নামতে চাই কিনা। আমি আর ইতি সাঁতার জানি না, তাই আগেই না বললাম। ঋতা কিন্তু তৎক্ষণাৎ রাজি। টোনি বললো ওকে দড়িটা ধরে ঝুলে পড়তে হবে। ঋতা তাই করলো। যতক্ষন জলে ছিল বেশ মজাতেই ছিল। তারপর সামনে ক’য়েকটা র‌্যাপিড দেখে টোনি ওকে উঠে আসতে বলল। আর তখনই হল বিপত্তিটা।

টোনি বললো তিন গোনার সঙ্গে সঙ্গে ও ঋতাকে টানবে আর ঋতাকেও একটা ছোট্ট লাফ দিতে হবে। সেইমতই হল। কিন্তু ঋতা ঠিকমত জল থেকে ওঠার আগেই টোনি ওর জায়গায় ফিরে গিয়ে দাঁড়টা হাতে নিলো। ভাবলো বাকিটা ঋতা নিজেই পারবে। কিন্তু সেটা হল না। আমি তাকিয়ে দেখি ঋতা আবার জলে পড়ে যাচ্ছে। ভয়ের চোটে আমি তো কাঠ। আমার গলা দিয়ে আওয়াজই বেরোলো না। র‌্যাপিডগুলো তখন বেশ কাছে চলে এসছে।

তারপরেই দেখি ভিজে বেড়াল হঠাৎ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, থুড়ি রয়্যাল হিমাচল টাইগার হয়ে উঠেছে! ভয়টয় ভুলে কাকু একলাফে র‌্যাফ্‌টের উল্টোদিকে পৌঁছে ঋতার লাইফজ্যাকেট-টা খামচে ধরেছে। সেই সঙ্গে টোনিকে হাঁকডাক। ব্যাপার বুঝে টোনিও একলাফে পৌঁছে গেছে। আমি এদিকে ভাবছি র‌্যাফ্‌ট্‌ উল্টে না যায়! সবাই একদিকে, শুধু ‘একা কুম্ভর’ মত আমিই এক দিকটা রক্ষা করছি!

দুজনে মিলে ঋতাকে টেনেটুনে তুলল। ওর অবস্থা বেশ কঠিন। মাথা থেকে পা পর্যন্ত জল ঝরছে। র‌্যাফটের মেঝেয় বসে হাঁফাচ্ছে। টানাটানিতে ওর বেল্ট ছিঁড়ে গেছে। তাই নিয়ে কাকুর সঙ্গে একচোট রাগারাগিও হয়ে গেলো। যাই হোক, র‌্যাপিড-এ পড়ার আগেই যে ওকে জল থেকে তোলা হয়েছে তাতেই সবাই নিশ্চিন্ত হলাম।

bhromonraftingurmi06 (Medium)অভিযান শেষ। টোনি , ঊর্মী, ঋতা আর ইতি

এর একটু পরেই আমরা রিসর্ট-এ পৌঁছে গেলাম। জামাকাপড় পাল্টে আর একটা ধাবায় ভাত-ডাল খেয়ে আবার তিনটে নাগাদ রওনা দিলাম মানালির উদ্দশ্যে। সেখানে পৌঁছেও অবশ্য অ্যাডভেঞ্চার কম হয়নি। তবে সেটা অন্য একটা গপ্পো।

কী? গপ্পোটা পড়ে বিপাশা নদীতে র‌্যাফটিং করার ইচ্ছে হচ্ছে কি? ওখানেই যাও কি অন্য কোথাও, আমাদেরই মত যেও কিন্তু একদিন, কোনও অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে।

লেবেল দেয়া ছবিগুলো লেখকের ক্যমেরায় তোলা। বাকিগুলো ইনটারনেট থেকে নেয়া

জয়ঢাকের ভ্রমণ লাইব্রেরি

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s