অরিন্দম দেবনাথ এর সমস্ত লেখা
ঝলকে ওঠা অচেনা আলোকদ্যূতি, উধাও হয়ে অনেক বছর পর ফিরে আসা মানুষের বিন্দুমাত্র পরিবর্তনহীন চেহারা। উড়ন্ত অচেনা বস্তু ও এ-জনিত অসংখ্য ফটোগ্রাফ হোয়াই বাকুইকে বিশ্বের সেরা নথিভুক্ত প্যারানর্মাল সাইটের তকমা দিয়েছে। বিজ্ঞান এখনও এইসব ঘটনার উৎস ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়নি। এই বন অন্য সমান্তরাল জগৎ, অজানা মহাবিশ্বের একটি প্রবেশপথ নয় তো! উত্তরের অপেক্ষায় – জানিয়েছেন অরিন্দম দেবনাথ।
রোমানিয়ার দক্ষিণ সীমানার একটি ছোট্ট জঙ্গলের নাম হোইয়া-বাকুই (Hoia-Baciu)। হোয়াই-বাকুই একটি ভেড়া চড়িয়ের নাম, যে নাকি ওই জঙ্গলে ২০০ ভেড়ার পাল নিয়ে উধাও হয়ে গেছিল। না পাওয়া গেছিল কোনও ভেড়ার মৃতদেহ, না কোনও ভেড়পালকের।
না না, জঙ্গলটা এমন বড়ো কিছু নয় যে ২০০ ভেড়ার পাল নিয়ে কেউ হারিয়ে যাবে আর তার খোঁজ পাওয়া যাবে না। আর এই জঙ্গল মানে তো খানিক ঘন গাছপালা! বাঘ বা ওই জাতীয় কোনও বন্যপ্রাণীও ওই জঙ্গলে নেই যে চারণদার সহ ভেড়ার পাল খেয়ে ফেলবে রাতারাতি। তবে হ্যাঁ, নানাধরনের পাখি, পোকামাকড়, বিষাক্ত সাপ, ভালুক আর হরিণের দেখা পাওয়া যায় ওই জঙ্গল ও তার আশেপাশে। অনেক অনেক লোকের বিশ্বাস, বন্যপ্রাণী ছাড়াও ওই জঙ্গলে অশরীরীর বাস।
মাত্র তিন বর্গ-কিলোমিটার জায়গা নিয়ে জঙ্গলটা রোমানিয়ার ট্রান্সিলভানিয়ার (Transylvania) ক্লাজ নাপকা (Cluz-Napoka) শহরের কাছে। রাজধানী বুখারেস্টের পরে ক্লাজ নাপকা রোমানিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। পাহাড়ি অঞ্চল হলেও কোনও উঁচু পাহাড়ের উপস্থিতি নেই ধারেকাছে। অনেকটা সমতলই বলা চলে জায়গাটাকে। সোমেউল নদী জঙ্গলটার উত্তরের কাছে নাদাস নদীর সঙ্গে মিশেছে। জঙ্গলের পূর্বপ্রান্তের খানিক দূরে তায়েতুরা টারকুলুই উপত্যকা। একটা গাড়ি চলাচলের রাস্তা চলে গেছে উপত্যকার বুক চিরে। জঙ্গলের দক্ষিণদিকে বনগার উপত্যকা। ওকগাছের জঙ্গল উপত্যকা জুড়ে। জঙ্গলের কাছেই আছে একটি বড়ো প্রাকৃতিক লেক। এছাড়াও জঙ্গলের উত্তরে বেশ কয়েকটি সুস্বাদু মিষ্টি জলের ঝরনা আছে। বছরের অধিকাংশ সময় বরফে ঢাকা পড়ে থাকে এই জঙ্গল। বাকি সময় কাদা প্যাচপ্যাচে।
এই জঙ্গলের গাছগুলোর গড়ন অদ্ভুত ধরনের। বাঁকাচোরা গাছগুলো দেখলে বিশাল আকৃতির কঙ্কাল বলে ভুল হতে পারে। মনে হয় গাছগুলো হাত বাড়িয়ে ধরতে আসছে। ভয়ংকর নীরবতা জঙ্গলে গুমরে বেড়ায়। বাতাস থম মেরে থাকে এখানে। মনে হয় এই বুঝি কেউ এসে জাপটে ধরল। অথচ এই জঙ্গলটা বাদ দিলে অন্য কোথাও এইধরনের গড়নের গাছের অস্তিত্ব নেই। এই বিস্ময়কর পরিবেশের কারণেই এই জঙ্গলকে বিশ্বের সবচাইতে ভূতুড়ে জঙ্গল বলা হয়। অন্ধকারাচ্ছন্ন বনের পরিবেশ এখানে গজিয়ে ওঠা গল্পগুলোকে আরও রসালো করে তোলে। জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার গল্পগুলো শক্তপোক্ত হতে হতে জঙ্গলটা আরেক পরিচিতি পেয়েছে ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল অফ রোমানিয়া’। স্থানীয় কিংবদন্তি বলে, এই আঁকাবাঁকা গাছগুলোর মাঝে আত্মা তথা ভূত লুকিয়ে থাকে।বহু বছর আগে এই জঙ্গলে একটি পাঁচ বছরের মেয়ে হারিয়ে গেছিল। হারিয়ে যাবার ঠিক পাঁচ বছর পরে সে ফিরে এসেছিল একই পোশাকে। কোথায় ছিল সে বলতে পারেনি। অদ্ভুতভাবে তার শরীরে কোনও পরিবর্তন আসেনি। ঠিক পাঁচ বছরের শিশুর মতোই ছিল সে। পোশাক না ছিঁড়েছিল, না হয়েছিল ময়লা।
আরেকজন মহিলা পকেটে একটি পঞ্চদশ শতাব্দীর মুদ্রা নিয়ে জঙ্গলে গিয়ে উধাও হয়ে যান। তিনিও ফিরে এসেছিলেন অক্ষত অবস্থায়। তিনিও বলতে পারেননি কোথায় ছিলেন দীর্ঘদিন। পকেটের প্রাচীন মুদ্রাটিও ঠিকঠাকই ছিল তাঁর পকেটে।
রোমানিয়ান সেনাবাহিনী তাদের সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে অনেক সময় হোইয়া-বাকুই জঙ্গলকে ব্যবহার করে। রোমানিয়া সেনাবাহিনীর মাঝেও এ-জঙ্গল নিয়ে নানা কাহিনি প্রচলিত আছে।
এক রাতে প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে একদল সেনা জিপে করে এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পের দিকে যাচ্ছিল। জঙ্গল পথে তারা একজন বৃদ্ধের দেখা পায় এবং জানতে চায় এত রাতে কোথায় যাচ্ছেন। সেনাদলটি যেদিকে যাচ্ছিল, বৃদ্ধটিও সেদিকে যাবার কথাই বলেন। সেনারা তাঁকে জিপের পেছনে তুলে নেয় এগিয়ে দেবার জন্য। কিছুদূর যাবার পর জিপের সেনা আরোহীরা টের পায় বৃদ্ধ লোকটি পেছনের সিট থেকে বেমালুম উধাও হয়ে গেছে এতগুলো মানুষের চোখের সামনে থেকে। সেনারও বৃদ্ধকে খুঁজতে জঙ্গল তোলপাড় করে ফেলে, কিন্তু রহস্যময় বৃদ্ধ মানুষটি বা অন্য কোনও মানুষের উপস্থিতি সারা জঙ্গলের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
হোইয়া-বাকুই জঙ্গল নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে দীর্ঘকাল ধরে। অনেককাল আগে একদল চাষিকে এই জঙ্গলে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। আজও তাদের প্রেতাত্মা নাকি এই জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং জঙ্গলের সব অস্বাভাবিক কার্যালাপের জন্য আসলে এসব প্রেতাত্মারাই দায়ী। স্থানীয়দের বিশ্বাস, জঙ্গলে কেউ প্রবেশ করলেই প্রেতাত্মারা তার পিছু নেয়, এ-জঙ্গলে কোনও মানুষের উপস্থিতি পছন্দ করে না তারা। এই জঙ্গলে যাওয়া অনেক পর্যটকই তাঁদেরকে অনুসরণ করা হচ্ছে এমন অনুভূতির কথা বলেছেন। এঁদের অনেকেই বলেছেন যে জ্বলজ্বলে সবুজ চোখের প্রাণী বা অশরীরী কিছু তাঁদের ক্রমাগত আড়াল থেকে লক্ষ করতে থাকে।
১৯৬০ সালেই জীববিজ্ঞানী আলেকজান্দ্রু সিফট প্রথম এই জঙ্গলের ওপর একটি অজানা উড়ন্ত বস্তু দেখেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন। আর তার পরপরই এই মেয়েটি ও ভেড়া চারণদারের উধাও হয়ে যাবার ঘটনাগুলি ঘটে। ভূতুড়ে জঙ্গলের উপাধির সঙ্গে জড়িয়ে যায় ভিনগ্রহী মানুষের গল্পও।
১৯৬৮ সালে এই জঙ্গল আবার দুনিয়ার নজর কাড়ে যখন এমিল বার্নিয়া নামের একজন সামরিক প্রযুক্তিবিদ দাবি করেন যে তিনি ওই জঙ্গলের কাছের ফাঁকা জায়গায় একটি ইউ.এফ.ও ঘোরাফেরা করছে। তাঁর দাবির সপক্ষে তিনি ছবিও পেশ করেছিলেন। ইউ.এফ.ও দেখার দাবি করে এমিলের পাওয়ার বা হারানোর কিছু ছিল না। না, তিনি হারিয়েছিলেন। তাঁর চাকরিটি। সে-সময়কার সে-দেশের কমিউনিস্ট সরকার উন্মাদনা ছড়ানো ও নাশকতার ছক কষার দোহাই দিয়ে সামরিক প্রযুক্তিবিদকে বরখাস্ত করেছিলেন। এরপর সাতের দশকে একের পর এক ইউ.এফ.ও দেখা পাবার খবর আসতে থাকে।
এরপরে ওই জঙ্গলে যারাই গেছে, তারাই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে কতগুলো অদ্ভুত অনুভূতির কথা বলেছে। বমি বমি ভাব, শরীরে একটা অস্বস্তিকর উপলব্ধি, কেউ লুকিয়ে কারও ওপর নজরদারি করলে যেরকম একটা অনুভূতি হয় সেরকম উদ্বেগ। আর তার থেকেও বড়ো কথা, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিগুলো প্রায় কাজ করে না। অতি সাহসী দৌড়বাজরা জঙ্গলের মাঝে জগিং করতে গিয়ে ‘এক্টোপ্লাজম’ (Ectoplasm)-এর শিকার হয়েছেন। কেউ যেন তাঁদের সঙ্গে ইশারায় কথা বলার চেষ্টা করছে। ছায়া ছায়া অবয়ব নিয়ে কারা যেন জঙ্গলের গাছের আড়ালে লুকিয়ে। উত্তর রোমানিয়ার পোশাক পরা একজনকে জঙ্গলের মধ্যে এক ঝলকের জন্য অনেকেই দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। ভূতুড়ে জঙ্গলের পরিচিতি আরও শক্তপোক্ত হয়েছে।
এই জঙ্গলে ঢুকে খানিক পর বেরিয়ে আসার পর অনেকের শরীরে চামড়া পুড়ে যাওয়ার দাগ, ফুসকুড়ি লক্ষ করা গেছে। মাথাব্যথা আর প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে।
হোয়াই-বাকুই জঙ্গলের গাছগুলোও রহস্যে মোড়া। দুশো বছরের পুরোনো গাছগুলো দেখলে মনে হয় সব তরতাজা তরুণ গাছ। গাছগুলোতে প্রাচীনত্বের সেরকম কোনও আভাস নেই। খানিক শ্যাওলা জমে আছে মাত্র। বেশিরভাগ গাছের কাণ্ডই প্যাঁচানো বা অস্বাভাবিক আকারের। গুড়ি অন্যান্য গাছের মতো মাটি থেকে সোজা ওপরের দিকে না উঠে কিছুটা বেঁকে তারপর ওপরের দিকে উঠে গেছে। সবগুলি গাছ অদ্ভুতভাবে একইদিকে বাঁকা হয়ে আছে। বিশ্বের অন্য জঙ্গলের সঙ্গে কোনও মিল নেই এই জঙ্গলের।
জঙ্গলের বেশিরভাগ ভৌতিক কার্যকলাপ জঙ্গলটার যে নির্দিষ্ট অংশে হয় বলে মনে করা হয় সে জায়গাটি একটি নিখুঁত বৃত্ত। এই অংশটিতে গাছ তো দূরের কথা, কোনও ঘাস বা গুল্মও জন্মায় না। অনেক গবেষণা হয়েছে এই একটি বিশেষ স্থানে গাছপালা না জন্মানোর কারণ খুঁজে পেতে। জায়গাটির মাটি পরীক্ষা করেও এমন কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি যা কোনও উদ্ভিদ জন্মানোর পরিপন্থী। ফলে আজও জঙ্গলের মাঝের এই গোলাকার স্থানটি জীববিজ্ঞানী, উদ্ভিদবিজ্ঞানীসহ সাধারণ মানুষের কাছে একটি রহস্য হয়ে আছে।
তবে বিজ্ঞানীরা হোইয়া-বাকুই জঙ্গলের নির্দিষ্ট অংশে অস্বাভাবিক মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কথা তাঁদের গবেষণায় উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি এখানকার চুম্বকীয় ক্ষেত্রেও অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করা যায় বলে তাঁরা উল্লেখ করেছেন। সাধারণ মানুষও এই জঙ্গলে প্রবেশের পর তাদের ঘড়িসহ ইলেক্ট্রনিক্স জিনিসের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক আচরণের কথা বলেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতিগুলো, যেগুলো জঙ্গলে প্রবেশের ঠিক আগেও ঠিকমতো কাজ করছিল, সেগুলোই জঙ্গলে প্রবেশের পর থেকে উলটোপালটা আচরণ শুরু করে। আবার জঙ্গলের বাইরে চলে আসার পরই তা আবার স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে শুরু করে। অস্বাভাবিক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বা চুম্বকীয় ক্ষেত্রের জন্য এমনটা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করে হলেও আজ পর্যন্ত এর কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তার মানে এই নয় যে জঙ্গলে কেউ যায় না। ছোট্ট জঙ্গলের ভেতরকার সার সার অস্বাভাবিক গড়নের গাছের মধ্য দিয়ে সাইকেল চালানো আর হাঁটার পথ বানানো হয়েছে। কাছের শহর ক্লাজ নাপকা থেকে গুটিকয়েক লোকজন কদাচিৎ আসেন সপ্তাহান্তে। তবে অধিকাংশ শহরবাসী এই জঙ্গলের ধারেকাছে ঘেঁষতে চান না। আর সাঁঝের আঁধার ঘনিয়ে এলে ওই জঙ্গলের দিকে পা-ই মাড়ান না কেউ।
জাদুবিদ্যা বা প্রেতাত্মা নিয়ে কাজ করেন এমন অনেকেই এ জঙ্গলে গেছেন। হাঙ্গেরি, জার্মানি, ফ্রান্স, আমেরিকাসহ নানা দেশ থেকে বিভিন্ন গবেষক ও বিজ্ঞানী এই জঙ্গলে এসে অনুসন্ধান চালিয়েছেন এখানকার রহস্যময় ঘটনাগুলিকে বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা করার জন্য। কিন্তু এখানে অনুসন্ধানে আসা বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সাধারণ পর্যটকদের অনেকেই মুখোমুখি হয়েছেন ব্যাখ্যাহীন ভয়ংকর সব অভিজ্ঞতার। অনেকেই সেগুলিকে তাদের ছবি বা ভিডিওতে বন্দি করার চেষ্টা করেছেন। একইভাবে অনেকে আবার এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন যেখানে ভিডিও বা ছবি তোলার সময় হয়তো খালি চোখে কোনও অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি, কিন্তু যখন পরবর্তীতে ছবিগুলো বের করেছেন বা ভিডিওগুলো দেখতে গিয়েছেন সেখানে অদ্ভুত অবয়বের উপস্থিতি ফুটে উঠেছে।
অ্যালেক্স নামের এক পর্যটন গাইড বেশ কয়েকবার রাত কাটিয়েছেন এই জঙ্গলে। কিন্তু যখনই পর্যটকরা রাতে থাকতে চেয়েছেন এই জঙ্গলে, তখনই খারাপ আবহাওয়া বা অন্য কোনও বাহানায় রাতে নিয়ে যেতে চাননি এই জঙ্গলে। প্রথমবার অ্যালেক্স এই জঙ্গলে এক বন্ধুকে নিয়ে তাঁবুতে থেকেছিলেন। রাতে এক গা হিম করা শব্দে ঘুম ভেঙে যায় ওঁদের। মনে হয় কোনও ঘোড়া বা হরিণ চিৎকার করছে। তাঁবুর দরজা খুলে মুখ বাড়িয়ে টর্চ জ্বালাতেই থেমে যায় শব্দটা। খানিক পর আবার শব্দ হতে তাঁবুর বাইরে মুখ বার করতেই একটা বাদুড় আছড়ে পড়ে মুখে। যেন কেউ নিঃশব্দে ইশারায় বলে ওঠে, ‘বাঁচতে চাস তো বাইরে কী হচ্ছে জানতে চাস না।’
বিশ্বের বহু নামকরা পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেল এই জঙ্গল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে বিবিসি-র মতো চ্যানেলও আছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে এক জাপানি তথ্যচিত্র প্রস্তুতকারক মারিয়াস বেশ কয়েকবার এই জঙ্গল ঘুরে একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছিলেন। ২ কোটির বেশি মানুষ সেই তথ্যচিত্র দেখেছে। যদিও অস্বাভাবিক কিছুর দেখা পাননি মারিয়াস, কিন্তু তথ্যচিত্রের মধ্যে ফুটে উঠেছিল জঙ্গলের গা-ছমছমে উপস্থিতি।
নথিভুক্ত করা এইসব অদ্ভুত ঘটনা, জঙ্গলের মধ্যে রহস্যময় উড়ন্ত গোলক, ঝলকে ওঠা অচেনা আলোকদুত্যি, গাছের ফাঁক দিয়ে উঁকি মাড়া ছায়া ছায়া অবয়ব ও এ-জনিত অসংখ্য ফটোগ্রাফ হোইয়া-বাকুইকে বিশ্বের সেরা নথিভুক্ত প্যারানর্মাল সাইটের তকমা দিয়েছে। বিজ্ঞান এখনও এইসব ঘটনার উৎস ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়নি। এই বন অন্য সমান্তরাল জগৎ, অজানা মহাবিশ্বের একটি প্রবেশপথ নয় তো! উত্তরের অপেক্ষায়।
ছবি – সংগৃহীত
জঙ্গল সংক্রান্ত এক তথ্যচিত্রের ইউটিউব লিঙ্ক
বিচিত্র দুনিয়া সমস্ত লেখা একত্রে