সদ্য প্রকাশিত বইটা হাতে নিয়ে বুক ভরে তার ঘ্রাণ নিলেন নিবারণ সান্যাল। আজই বইমেলায় বেরিয়েছে বইটা। এই নিয়ে নিবারণ সান্যালের ছাব্বিশ নম্বর বই প্রকাশিত হল। গর্বিত স্বরে তাই নিয়ে বেশ একপ্রস্থ ভাষণও দিয়ে এসেছেন আজ বইমেলার প্রাঙ্গণে। চটাপট চটাপট হালতালিতে অডিটোরিয়াম যখন ফেটে পড়ছে তখনও বুকটা বেশ কয়েক ইঞ্চি ফুলে উঠেছিল তাঁর। আর কে উদ্বোধন করলেন একবার দেখো! স্বয়ং মন্ত্রী অনিমেষ সাঁতরা। তারপর গোটা সন্ধেটা গেল নতুন বইয়ে সই করতে করতে। এখনও আঙুলের ডগাগুলো টনটন করছে।
রাত আটটা নাগাদ মেলা বন্ধ হওয়ার আগেই প্রকাশকের থেকে খবর পেলেন তাঁর নতুন বই প্রথমদিনই প্রায় দুশো কপি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আত্মদাম্ভিকতায় বুকটা আরও চওড়া হয়েছে তাতে। প্রশংসা আর স্তুতি শুনতে শুনতে রাত আরও কিছুটা বেড়ে গেল। তাঁর মতন শিশুসাহিত্যিক আজকের দিনে আর ক’জন আছে?
বাণীচক্র প্রকাশনার স্টল থেকে যখন বের হচ্ছেন, নজরে পড়ল একটি ছোটো ছেলে মাঠ পরিষ্কার করতে করতে এইদিকেই এগিয়ে আসছে। আলগা চোখে অলস দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে মেলার মূল ফটকে দিকে হাঁটতে শুরু করেছেন, এমন সময় ছেলেটি প্রায় তাঁর কাছে এসে পড়ল।
মাঠের এখানে ওখানে ছড়িয়ে থাকা কাগজ আর প্লাস্টিকের স্তূপ একজায়গায় জড়ো করছে ছেলেটি। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে নিবারণ সান্যাল সরে যেতে গিয়েও থেমে গেলেন। তার চোখ গিয়ে পড়ল ছেলেটির উপর। বয়স বড়োজোর দশ কি এগারো হবে। রোগা হাড়-জিরজিরে চেহারা। কিন্তু চোখ দুটি ভারি উজ্জ্বল। কিন্তু সেটা নিবারণ সান্যালের লক্ষ্য নয়। তাঁর চোখ গিয়ে আটকেছে ছেলেটির হাতে। সেই হাতে ধরা রয়েছে তাঁরই নতুন বইয়ের একটি কপি।
“অ্যাই শোন!” প্রায় চিৎকার করে উঠলেন নিবারণ সান্যাল।
“আজ্ঞে!” সচকিত হয়ে তাকালে ছেলেটি। “আমাকে বলছেন?”
“ইয়েস, ইউ।” আঙুল তুলে ইশারায় কাছে ডাকলেন নিবারণ সান্যাল।
ছেলেটি কাছে আসতেই ছোঁ মেরে তার হাত থেকে বইটা কেড়ে নিলেন তিনি।
“এই বইটা কোথায় পেলি?” আবার চিৎকার করে উঠলেন নিবারণ সান্যাল।
“আজ্ঞে! ওইদিকে, মাঠের ওদিকটায় পড়ে ছিল।”
“ঠিক বলছিস?” সন্দিগ্ধ চোখে তাকালেন নিবারণ সান্যাল। “নাকি সুযোগ বুঝে স্টলে ঢুকে টুক করে তুলে নিয়েছিস? ঠিক করে বল।” একনাগাড়ে কথাগুলো বলে হাঁপাতে লাগলেন তিনি।
“সত্যি বলছি! পড়েই ছিল মাটিতে।” ছেলেটি কাঁদো কাঁদো গলায় বলল।
“হুম, যা পালা। এটা আমি নিলাম।”
“কেন, আপনি নেবেন কেন?” মৃদু প্রতিবাদ করে ছেলেটি।
“কারণ এই বই আমার। আমি এর লেখক। একদিনে কত বিক্রি জানিস? যা যা, তোকে বলে লাভ নেই, পালা এখান থেকে।”
“দিন না, আমি পড়ব। কত সুন্দর ছবি।” মুগ্ধ লোলুপ দৃষ্টিতে ছেলেটি তাকায় নিবারণ সান্যালের হাতের দিকে।
“দাম জানিস? তিনশো টাকা। আমার বই কিনে পড়তে হয় বুঝলি? সবাই তাই পড়ে। যা পালা এখান থেকে।”
উলটোদিক থেকে আর কোনও উত্তরের অপেক্ষা না করে কাঁধে ঝোলানো ব্যাগটাতে বইটা ভরে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন নিবারণ সান্যাল। কাল এসে বাণীচক্রে দিয়ে দিলেই হবে।
রাত প্রায় দশটা বাজে। অন্যদিন এই সময় তিনি রাতের খাওয়া সেরে বিছানায় চলে যান। এখন তাঁর নিজের পড়াশুনা করার সময়। নিজেকে প্রতিনিয়ত আপডেটেড রাখতে হয় লেখার জন্য। নতুন বিষয় খুঁজে নিতে হয় তার মধ্যে থেকেই। আজ আর তা হবে বলে মনে হয় না। সারাদিন তো কম ধকল গেল না!
রাতে আর কিছু খাবেন না ঠিক করেই রেখেছিলেন। আর সেইজন্য রান্নার দিদিটিকে আসতেও বারণ করে দিয়েছেন। শুধু এক গ্লাস জল পান করে এবার শুয়ে পড়লেই হয়। কাল থেকে আবার নতুন লেখার প্লট খুঁজতে শুরু করবেন। সামনেই পুজো আসছে, কাজেই লেখার চাপ একটা রয়েছেই।
আলোটা নিভিয়ে খাটে উঠে পড়লেন তিনি। পিঠে কয়েকদিন থেকেই একটা ব্যথা অনুভব করছেন। শিরদাঁড়াটা বেশিক্ষণ টান করে রাখতে পারছেন না। শরীরটা বিছানায় পড়তেই ব্যথাটা যেন খট করে একবার নিজের উপস্থিতি জানান দিল। উফ্ করে অস্ফুটে একটা আওয়াজ মুখ থেকে বেরিয়ে আসতেই পাশে রাখা মোবাইলটা বেজে উঠল রবীন্দ্রসংগীতের সুরে।
এ অসময়ে আবার কে? একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোনটা তুললেন নিবারণ সান্যাল। অপরিচিত নাম্বার।
“নিবারণ সান্যাল বলছি।” গলার স্বর যতটা সম্ভব গম্ভীর করে বললেন তিনি।
“হ্যালো! মিস্টার সান্যাল?”
“বললাম তো! আপনি কে? এত রাতে কী দরকার?” নিবারণ সান্যালের গলায় স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ।
“আমার নাম কাজরী। আমি সল্টলেক থেকে বলছি।”
“কী ব্যাপার?”
“ইয়ে মানে, আমার ছেলে তুতুন আজই বইমেলা থেকে আপনার নতুন বইটা কিনেছে।”
“কিনতেই পারে। অনেকেই কিনেছে। তার জন্য এত রাতে ফোন করার মানে কী?”
“সরি! আসলে বইটা পরশু ওর স্কুল প্রজেক্টে জমা করতে হবে।”
“স্কুল প্রজেক্ট!” অবাক হলেন নিবারণ সান্যাল।
“হ্যাঁ, স্যার! প্রজেক্ট বাংলা লেখকের সই সমেত বই। সবাইকে কোনও না কোনও লেখকের সই সমেত বই স্কুলে জমা করতে হবে।”
“বুঝলাম। তা জমা করুক আপনার তুতুন।”
“কিন্তু সই নেই যে! মানে আপনার সই। আজ আপনি যখন বইগুলো সই করে পাশে রাখছিলেন তখন হয়তো কোনোভাবে আমার ছেলের বইটাতে সই মিস করেছেন। আমরাও অত খেয়াল করিনি। তুতুন তো বাংলা বই ঠিক পড়ে না। ও ইংলিশ কমিকস আর শর্ট স্টোরি বুক নিয়েই ব্যস্ত ছিল। ইংলিশ বইয়ের পোকা যাকে বলে।” ভদ্রমহিলা উচ্চ কণ্ঠে হেসে উঠলেন।
“বাংলা বই পড়ে না!” আরও অবাক হলেন নিবারণ সান্যাল।
“অনেকেই পড়ে না। বেশিরভাগই ঝোঁকের বশে কেনে, তারপর বাড়িতে এককোণে পড়ে থেকে ময়লা জমে। হয়তো বুক-কেসে বই দিয়ে সাজাতে কাজে লাগে। কিংবা এইসব ফালতু প্রজেক্টের জন্য। বাংলা বই কেন, লেখকের সই জোগাড় করো, তারপর স্কুলে দান করো। যত্তসব! তুতুনের বন্ধুদেরও একই ব্যাপার।” ভদ্রমহিলা এবার যেন একটু রেগে উঠলেন।
“আমায় কী করতে হবে?” হতাশ গলায় বললেন নিবারণ সান্যাল।
“কিছুই না স্যার। শুধু জানতে চাইছিলাম কাল কি আপনি আবার মেলায় থাকবেন? তাহলে বইটা নিয়ে গেলে একটু সই করে দিতেন। আমাদেরও কাল মেলায় যেতে হবে একবার। হ্যারি পটারের নতুন বইটার জন্য তুতুন যা বায়না ধরেছে, না দিলেই নয়।”
“আসুন কাল। আমি বাণীচক্রের স্টলেই থাকব বিকেলে।”
“অনেক ধন্যবাদ স্যার। কাল তবে দেখা হচ্ছে।”
কাজরীর কথার কোনও উত্তর না দিয়েই ফোনটা কেটে দিলেন নিবারণ সান্যাল।
রাতে ভালো ঘুম হয়নি তাঁর। বেশ ছটফটই করেছেন বিছানায়। বাংলা বই এখনকার বাচ্চারা কেউ পড়ে না! ঝোঁকের বশে কিনে এক কোনায় ফেলে রাখে! বুক-কেসে বই দিয়ে সাজাতে কাজে লাগে! স্কুল প্রজেক্টের কাজে লাগায়! সারারাত কাজরীর এই কথাগুলোই ঘুরে ফিরে এসেছে মনে। মাঝে মাঝেই উঠে বসেছেন। জল খেয়ে আবার শুয়েছেন। আবার সেই এক চিন্তা।
বিকেলে বেশ একটু আগেই বইমেলায় পৌঁছলেন নিবারণ সান্যাল। বাণীচক্রের কর্ণধার শঙ্করপ্রসাদ সেনগুপ্ত এক গাল হেসে তাঁকে অভ্যর্থনা করলেন। অন্যদিন হলে নিবারণ সান্যাল হাত নেড়ে হাসির প্রত্যুত্তর দিয়ে এগিয়ে যেতেন। আজ তাঁর মন ভালো নেই। তিনি ধপ করে চেয়ারে বসে পাঞ্জাবির পকেট থেকে রুমালটা বের করে কপালের আলগা ঘাম মুছতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
“কী ব্যাপার, সান্যালমশাই! শরীর-টরির ঠিক আছে তো?”
“আজ কাটতি কেমন?” কোনোরকম ভূমিকা না করেই জানতে চাইলেন নিবারণ সান্যাল।
“ভালোই তো। গোটা কুড়ি গেছে আরও। বই আপনার হিট মশাই।”
“কেউ পড়ে?” এক বুক হতাশা নিয়ে প্রশ্নটা করলেন নিবারণ সান্যাল।
“মানে?”
“এত যে লিখলাম।”
“না পড়লে এত বিক্রি কেন হবে?” শঙ্করপ্রসাদ মুচকি হেসে বললেন।
“সবাই কি পড়ে? না ঘর সাজাতে কেনে?”
“আপনি ছাড়ুন তো মশাই! লোকে কিনছে, আমার টাকা আমি পাচ্ছি, আপনার টাকা আপনি। কে পড়ল কে পড়ল না তা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।” পাশে রাখা চায়ের কাপটা তুলে সশব্দে চুমুক দিলেন শঙ্করপ্রসাদ।
বিকেল গড়াবার আগেই তুতুন তার মায়ের হাত ধরে হাজির হল স্টলে। কাজরীই সামনে এসে নিজের পরিচয় দিলেন। অন্য সময় শিশুসাহিত্যিক নিবারণ সান্যালের মন ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে দেখলেই আনন্দে নেচে ওঠে। এরাই তাঁর লক্ষ্মী। আজ তুতুনকে দেখেও তিনি যেন খুশি হতে পারছেন না। তুতুনের হাতে নতুন কেনা হ্যারি পটার জ্বলজ্বল করছে।
কাজরী হাতে ধরা নিবারণ সান্যালের নতুন বইটা এগিয়ে দিয়ে বললেন, “কী যে জ্বালাতন না স্যার! সারাবছরই যতসব উটকো প্রজেক্ট দিয়ে দিয়ে আমাদের অতিষ্ঠ করে মারছে। বাচ্চাগুলোর আর কী? যত ঝক্কি তো পোহাতে হয় আমাদের বাবা-মাদের। তা না হলে টাকা খরচ করে এইসব বাংলা বই কিনে…” মাঝপথে থেমে গেলেন কাজরী।
হাত বাড়িয়ে বইটা নিয়ে নিঃশব্দে সই করলেন নিবারণ সান্যাল। তুতুন তখনও সদ্য কেনা ইংরাজি বইগুলো উলটেপালটে দেখছে।
“ধন্যবাদ, স্যার।” বইটা ফেরত নিয়ে কাজরী বললেন।
“হুম।” একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন নিবারণ সান্যাল।
কাজরী আর তুতুন চলে যেতেই তিনি উঠে দাঁড়ালেন। আজ মনটা বড়োই অশান্ত। তাঁর এত কষ্ট, এত পড়াশুনা করে লেখা, লেখার কাজে এত বাইরে বাইরে ঘোরা সবই যেন মিথ্যা বলে মনে হচ্ছে। সব বৃথা।
“চললেন নাকি?” তাঁরই একটি বইয়ের ক্যাশ মেমো লিখতে লিখতে আড়চোখে তাকিয়ে বললেন শঙ্করপ্রসাদ সেনগুপ্ত।
“হ্যাঁ, আজ যাই। বাকি ক’টা দিন আর আসব না।”
“পুজোর লেখার চাপ তো! বুঝতে পারছি মশাই। ঠিক আছে, আসুন তবে।”
মেলা শেষ হয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ। মাঠ ঘিরে থাকা বইয়ের স্টলগুলো বন্ধ হতে শুরু করেছে একে একে। সাফাইকর্মীরা মাঠ পরিষ্কার করছে তাড়াতাড়ি। হালকা ধুলোর ঝড় উঠছে ঝাঁটার ধাক্কায়। তাদের মধ্যে একটি ছোটো ছেলেও রয়েছে। সে কাজ করার থেকে মাঠে ইতস্তত ছড়িয়ে পড়ে থাকা বিভিন্ন প্রকাশকের বইয়ের সূচিপত্র ও বিজ্ঞাপনগুলিই তুলে তুলে দেখছে অবাক চোখে।
ছেলেটি আর একটু কাছে আসতেই অন্ধকার ভেদ করে নিবারণ সান্যাল বেরিয়ে এলেন বাইরে। ছেলেটি তাঁকে দেখে চিনতে পেরেছে। ভয়ে ভয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে সে বলল, “আজ আর কোনও বই নেই বাবু। কালও ছিল না। ওটা মাঠেই পেয়েছিলাম, সত্যি বলছি। আমি কিছু করিনি।” তার গলার স্বর কাঁদো কাঁদো হয়ে এল এবার।
আঙুল তুলে তাকে থামতে বললেন নিবারণ সান্যাল। ছেলেটা তাঁর নাগালের মধ্যে চলে এসেছে ততক্ষণে। তিনি খপ করে ছেলেটির একটি হাত চেপে ধরলেন। “তোর নাম কী রে?”
“আজ্ঞে, নেতাই।”
“আমাকে চিনিস?”
“না, বাবু। আমি বাবার সঙ্গে আসি মাঠ পরিষ্কার করতে। আর কিছু জানি না। সত্যি বলছি।” তারপর যেন কিছু মনে পড়ল এমনভাবে বলল, “ও হ্যাঁ, আপনি কালকের বইটা লিখেছেন যেন! তাই না?”
“তুই পড়বি?” নিবারণ সান্যালের চোখ জ্বলে উঠল।
“অনেক দাম যে! আপনি কাল বললেন না? আমার বাবা অত টাকা কোথায় পাবে?”
“দাম লাগবে না। শুধু পড়বি। রাজি?”
নেতাইয়ের দু-চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। “আমি পড়ব?”
“হুম, পড়বি। আমার আরও অনেক বই আছে। সব তোকে দেব। তুই পড়ে বলবি আমি কেমন লিখি।”
নেতাই উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকে। মাথা নীচু করে কী যেন ভাবে।
“কী হল রে?”
“আমার বাবা যে গরিব। আমি কাজ না করলে আমাদের চলবে কী করে। বাবা কি একা পারবে?”
“সেও আমি বুঝে নেব। তুই শুধু রাজি কি না বল।”
“রাজি।” চওড়া হাসি হেসে বলল নেতাই।
“তাহলে আয়।”
কালকের বইটা তাঁর ঝোলার মধ্যেই ছিল। সেটা বের করে নেতাইয়ের হাতে দিলেন নিবারণ সান্যাল। বুকটা এখন অনেক হালকা লাগছে তাঁর। নেতাইয়ের হাত ধরে আবার অন্ধকারেই মিশে গেলেন নিবারণ সান্যাল। নতুন সূর্যোদয়ের আগে এই অন্ধকারটা বড়োই দরকার।
অলঙ্করণ-সায়ন মজুমদার
জয়ঢাকের সমস্ত গল্প ও উপন্যাস