গুনিয়া মিউনিসিপালিটি গার্লস হাই স্কুলের অফিস-ঘর তো বটেই, স্কুলের বাইরেও লোক থইথই করছে। দলে দলে লোক এসেই চলেছে। গুনিয়া থানার পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারের দল হিমসিম খাচ্ছে লোকের ভিড় সামলাতে। মিউনিসিপালিটি ও পুলিশ থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে অযথা ভিড় না জমাতে। কিন্তু জনতা শুনলে তো? ভূত দেখার সুযোগ কে ছাড়তে চায়!
কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ওবি ভ্যানের সামনে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে অনবরত বকে চলেছেন সঞ্চালক। সামনে যাকে পাচ্ছেন তাকেই ধরে ইন্টারভিউ করে যাচ্ছেন। সরাসরি টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচার হয়ে চলেছে ভূতের উপস্থিতি।
গুনিয়া মিউনিসিপালিটি গার্লস হাই স্কুলের অফিস-ঘরের যে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে এতদিন স্কুলের দীর্ঘদিনের কর্মী রহিম আলি কাজ করতেন, আজ রহিমবাবুর বেশ কয়েকদিনের অনুপস্থিতির পর সেই চেয়ারটা একটু সরিয়ে রেখে স্কুলের অন্য এক ক্লার্ক অলোক সেন নিজের চেয়ারে বসে কাজ করতে করতে লক্ষ করেন যে রহিম আলির চেয়ারটা সামনে-পেছনে একটু একটু করে দুলছে। ঠিক যেভাবে চেয়ারে বসে মৃদু দুলতে দুলতে কাজ করতেন রহিম আলি। অলোক খানিক দেখে ব্যাপারটা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রূপা মণ্ডলকে জানান। রূপা-দিদিমণি প্রথমে বিষয়টা উড়িয়ে দিলেও ততক্ষণে স্কুলে রটে গেছে অফিসের ভূতুড়ে চেয়ারের কথা। অন্যান্য দিদিমণি আর ছাত্রীরাও এসে দেখে গেছে যে চেয়ারটা নিজে নিজে দুলছে।
এই স্কুলের তিনতলায় ভূত আছে বলে অনেকদিন ধরেই রটনা আছে। স্কুলের দারোয়ান স্কুল ছুটির পর একটি বিশেষ ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে আসার পর খানিক বাদে দেখে সব দরজা-জানালা খোলা। মজার বিষয়, শুধু বর্ষাকালেই ভূত উপদ্রব করে এই ঘরটায়। আর অন্য একটি ঘরের লাইট-ফ্যান অফ করে দিলেও মাঝে-মধ্যেই দেখা যায় ওই ঘরের লাইট আপনা থেকে জ্বলছে আর নিভছে। কাঠমিস্ত্রি, ইলেক্ট্রিশিয়ান এসে দরজা-জানালা চেক করে বলে গেছে সব ঠিক আছে। স্কুল ছুটির পর কেউ একা তিনতলায় যায় না। এমনকি ওই দুটো ঘরে ছাত্রীরা বসতে ভয় পাওয়াতে দুটো ঘরে কোনও ক্লাস নেওয়া হয় না। তবে অনেক সময় মিটিং করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
রহিম আলি কিছুদিন আগে ছুটি নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন পদ্মা নদী পাড়ের ওঁর গ্রামে গেছেন। উনি যাবার দিন কয়েক পর প্রবল বন্যায় পদ্মার জলে ভেসে যায় ওই গ্রাম। অনেক লোক মারা গেছে জলের তোড়ে। বহু চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি রহিম আলির সাথে। ওঁর মোবাইল ফোন বন্ধ। স্কুলের সভাপতি বৈদ্যনাথ সাহা গতকালই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে বলেছিলেন কাউকে রহিম আলির গ্রামে পাঠানোর কথা। স্কুলের সবাই একবাক্যে সহমত হয়েছিলেন ওঁর প্রস্তাবে। আজ রাতেই রহিম আলির গ্রামে যাবার জন্য ফারাক্কার ট্রেন ধরার কথা ছিল অলোক সেনের। খানিক আগে রহিম আলির চেয়ার আপনা-আপনি দুলতে থাকায় সবাই ধরে নিয়েছে রহিম আলি মারা গেছেন। আর ওঁর অতৃপ্ত আত্মা এসে বসে দোল খাচ্ছে ওই চেয়ারে।
ঘটনাটা যখন ঘটছিল তখন এক ছাত্রীর অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন অফিস-ঘরের বাইরে। উনি আপনা-আপনি চেয়ার দুলতে থাকার ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করে ফেসবুকে পোস্ট করে দিতেই বিপত্তি। সামান্য সময়ের মধ্যে ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে গেছে। আর লোকজন হামলে পড়েছে স্কুলে সত্যিকারের ভূত দেখবে বলে।
ঘটনাটা যে ভূতুড়ে নয়, এ-কথা জোর গলায় বলতে পারছেন না কেউ। বলবেনই-বা কী করে? নিজের চোখকে তো আর অবিশ্বাস করা যায় না! মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যান ও গুনিয়া থানার ওসি স্বয়ং এসে দেখে গেছেন ঘটনাটা। মিডিয়ার ক্যামেরা তেপায়ার ওপর চেয়ারের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় বিজ্ঞান মঞ্চের লোকেরা এসে উঁকি মেরে গেছে। কিন্তু রহিম আলির চেয়ারটা যে আপনা থেকে দুলছে, এটা নিয়ে কারও সংশয় নেই। ঘরে আরও বেশ কয়েকটা নতুন চেয়ার আছে, সেগুলোতে কিছু হচ্ছে না। শুধু রহিম আলির প্রিয় চেয়ারটাই খানিক পরপর কেঁপে উঠছে।
ভিড় ক্রমশই বেড়ে চলেছে। গুনিয়া স্টেশন থেকে এই স্কুলে আসার রিকশা ভাড়া তিন-চারগুণ হাঁকছে রিকশাচালকরা। স্কুলের সামনের চায়ের দোকানে চিনি ও দুধ ফুরিয়ে যেতে, দোকানদার চিনি ছাড়াই লিকার চা বেচে চলেছে। সবাইকে লুকিয়ে ওই একই চা পাতা ব্যবহার করছে বার বার। ঝালমুড়িওয়ালারা মুড়িতে দু-ফোঁটা সর্ষের তেল আর খানিক নুন ও কাঁচা লংকা মিশিয়ে কোনও চানাচুর-বাদাম ছাড়াই বিক্রি করছে মশলা মুড়ি বলে। শুধু আলুকাবলিওয়ালা রামু চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে ওর সব মাল শেষ হয়ে গেছে বলে। রামদাস দুধওয়ালা কালু ধোবার কালো মিশমিশে কড়াইটা ভুজুংভাজুং দিয়ে নিয়ে এসে তাতে লুচি ভেজে ছোলার ডালের সঙ্গে চারটে কুড়ি টাকা করে বিক্রি শুরু করেছে। জনতা ‘অনেক দাম, অনেক দাম’ বলেও দিব্যি খেতে শুরু করেছে। কয়েকজন অবশ্য লুচিতে সোডা-সাবানের গন্ধ বলে খানিক কুঁইমুঁই করছিল, কিন্তু ঘেমো শরীর নিয়ে রামদাস খিঁচিয়ে উঠতেই বিচ্ছিরি শরীর গুলিয়ে ওঠা ঘামের গন্ধের হাত থেকে বাঁচতে কোনোরকমে লুচি ছোলার ডাল গলা দিয়ে নামিয়ে টাকা দিয়ে কেটে পড়েছে।
স্থানীয় ক্লাব নবজ্যোতি সংঘ জনতাকে বিনি পয়সায় জল আর মিছরি খাওয়াচ্ছে। কোথা থেকে দুজন লোক এসে একগুচ্ছ গাছের শেকড় আর তাবিজ নিয়ে হাঁক পাড়ছে ভূত তাড়ানোর মোক্ষম দাওয়াই বলে। বিক্রিও হচ্ছে টুকটাক। এক গ্যাস বেলুনওয়ালা ভিড়ের গোঁতাগুঁতি বাঁচিয়ে রাস্তার পাশে গোটা কয়েক বেলুন ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তার একটা কোনোভাবে সুতো খুলে আকাশে উড়ে যেতেই রব উঠল—‘আরে, ভূতে বেলুন নিয়ে যাচ্ছে!’ কয়েকশো জোড়া চোখ আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল ভূত-বেলুন দেখবে বলে। মোবাইলে তোলা ভূতাঞ্চলের বিস্তর ছবি আর ভিডিওর ছড়াছড়ি ফেসবুকে। এমনকি স্কুলের ভেতর ঢুকতে না পারা একটি টিভি চ্যানেলের ভাষ্যকার এই বেলুনটার হঠাৎ আকাশে ওড়ার পেছনে রহিম আলির বিদেহী আত্মার কোনও যোগ আছে কি না এই তত্ত্বে মেতে চারজনের ইন্টারভিউ পর্যন্ত দেখিয়ে ফেলল।
চেয়ারটা কিন্তু দুলেই চলেছে। খানিক আগে পাঁচ মিনিটের জন্য একবার বিদ্যুৎ চলে গেছিল। সে-সময় চেয়ারের দোলা বন্ধ ছিল। এই দেখে স্কুলের সব দিদিমণি, ছাত্রী ও কর্মচারীরা নিশ্চিন্ত হয়ে গেল, এ রহিম আলির ভূত ছাড়া কিছু হতে পারে না। কারণ, রহিম আলি বিদ্যুৎ চলে গেলে নিজের চেয়ার ছেড়ে অফিসের বাইরে গিয়ে দাঁড়াতেন। সে-সময় ওঁর চেয়ারের দোলাও বন্ধ থাকত।
ভূতের খবর রাজ্যের শিক্ষা সচিবের কাছে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ফোনে উত্তর দিতে দিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রূপা মণ্ডলের অবস্থা সঙ্গিন। দুলন্ত চেয়ারের ভিডিও ও স্টিল ছবি বিশ্লেষণ করেও বিশেষজ্ঞরা চেয়ারের ভূতুড়ে আচরণের কারণ খুঁজে পাননি।
স্থানীয় প্রশাসন মালদহ থানাকে ধরে রহিম আলির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। অন্তত এটা জানা জরুরি যে ওঁর পরলৌকিক কাজ ঠিকমতো হয়েছে কি না। পরলৌকিক ক্রিয়ায় ত্রুটি থাকলে অশান্ত আত্মা তার লৌকিক জগতে থেকে উৎপাত করেই যাবে বলে নিদান দিয়েছেন স্থানীয় মাজারের মৌলবি।
গুনিয়া থানার ওসি সাহস করে চেয়ারের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ঘটনাটা ভালো করে দেখে চেয়ারের দুলুনি অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন। তবে উনি যতক্ষণ চেয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ততক্ষণ চেয়ারের দুলুনি বন্ধ ছিল। ভূতেরাও পুলিশকে ভয় পায় কি না এই নিয়ে তর্কবিতর্ক চলতে থাকল।
স্কুলের বাইরে থাকা জনগণের মধ্যে নানা গুজব ঘুরছে। চেয়ারের সামনের একটি টেবিলে খোলা লেজারের পাতা নাকি একবার খুলছে একবার বন্ধ হচ্ছে। সেই লেজার, যাতে প্রতিদিন রহিম আলি নানবিধ হিসেব লিখতেন।
স্থানীয় বিধায়ক খানিক আগে পৌঁছে নিজের চোখে চেয়ারের দোলা দেখে স্থির সিদ্ধান্তে এসেছেন, এ ভূতের কাণ্ড। ওঁর গুরুদেবের সঙ্গে কথা বলে যজ্ঞের আয়োজন করতে হুকুম দিয়েছেন উনি। গুরুদেবের নির্দেশমতো দ্রুত স্কুলের ভেতর থেকে জনতাকে সরাতে লেগে গেছে পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারের দল। কর্তৃপক্ষ আগেই স্কুল ছুটি দিয়ে মেয়েদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। শুধু টেলিভিশন ক্রুদের ভেতরে থাকার অনুমতি দিয়েছেন গুরুদেব। আফটার অল গুরুদেবকে জনগণের সামনে তুলে ধরাটা বিধায়কের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
বেলা দুটো নাগাদ যজ্ঞের আয়োজন সম্পন্ন হয়ে গেল। গুরুদেব গরদের লাল ধুতি পরে, কপালে লাল সিঁদুরের টিপ লাগিয়ে খালি গায়ে যজ্ঞের আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে। চন্দন কাঠের অনেক দাম তাই যজ্ঞের জন্য শ্মশান থেকে আম কাঠ নিয়ে আসা হয়েছে। স্থানীয় দোকান থেকে যতগুলো ঘিয়ের বোতল ছিল তুলে আনা হয়েছে। স্কুলের বারান্দায় যজ্ঞ হচ্ছে। সদ্য রঙ করা দেওয়ালে ধোঁয়ার ছোপ পড়তে শুরু করেছে। দেয়ালের হাল দেখে বড়দি রূপা খানিক বিড়বিড় করে উঠলেন, “যজ্ঞটা মাঠে করলে কী হত, আবার কবে রঙ করাতে পারব!”
স্কুল বিল্ডিংয়ের সামনে বিশাল খেলার মাঠের এক কোনায় বোগেনভেলিয়ার ঝোপের মাঝে এক কুকুর পরিবার ক’দিন হল আস্তানা গেড়েছে। স্কুলের মেয়েদের ছুড়ে দেওয়া খাবার খেয়ে দিব্যি নধর হয়ে উঠছে দিনদিন। হাঁকডাক বিশেষ করে না। বরং লেজ নেড়ে আহ্লাদ দেখায় সারাদিন। রূপা বড়দি একবার ভেবেছিলেন কুকুর পরিবারটাকে স্কুলের চৌহদ্দি থেকে বের করে দেবেন, কিন্তু ওঁকে দেখে কুকুরগুলো এমনভাবে লেজ নাড়ে আর কুঁইকুঁই করতে থাকে যে কুকুরগুলোকে তাড়িয়ে দেবার বদলে বিস্কুট খাইয়ে দেন। মায়ার বাঁধন বড়ো সাংঘাতিক।
এহেন সারমেয়র দল স্কুলের বিল্ডিং থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখেই ঘৌ ঘৌ করে মাঠময় ছুটে বেড়াতেই গর্জে উঠল জনতা। রসাতল টিভির ক্যামেরা কুকুরগুলোকে ফোকাস করতেই সঞ্চালক উত্তেজিত হয়ে কমেন্টারি শুরু করে দিল—“আছে আছে, ভূত আছে! মানুষ যা না দেখতে পায়, কুকুর তার থেকে অনেক বেশি…”
একজন পাশ থেকে চাপা গলায় বলে ওঠে, “দেখতে নয়, দেখতে নয়, গন্ধ পায় বলুন।”
সঞ্চালক নিমেষে ভুল শুধরে নিয়ে বলে চলে, “কুকুর আর তার বাচ্চারা যেভাবে মাঠজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তাতে মনে হয় শুধু রহিম আলির আত্মা নয়, আরও অপার্থিব শরীরের উপস্থিতি আছে স্কুল চত্বরে। আমরা জেনেছি, এই স্কুলের তিনতলার দুটি ঘরে মাঝে মাঝে অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। বন্ধ ঘরে আচমকা লাইট জ্বলে ওঠে আবার নিভে যায়। বন্ধ দরজা আপনা থেকে খুলে যায়। ইলেক্ট্রিশিয়ান, প্লাম্বার মানে কাঠমিস্ত্রি কেউই কোনও খুঁত খুঁজে পায়নি ইলেকট্রিক কানেকশন বা দরজা-জানালাতে। ছাত্রী ও শিক্ষকরা ভয় পান বলে সেই দুটো ঘর বন্ধ থাকে। আমরা খানিক পরেই সেই দুটো ঘর আপনাদের দেখাতে চেষ্টা করব।”
এদিকে যখন যাগযজ্ঞ চলছে, তখন স্কুলের পেছনের দরজা দিয়ে এক ব্যক্তি হন্তদন্ত হয়ে সবার অগোচরে ঢুকে পড়লেন স্কুলের ভেতরে। পাজামা-পাঞ্জাবি পরা লোকটার কাঁধে একটা ঢাউস ব্যাগ ঝুলছে। স্কুলের ভেতর এত লোক আর টিভি ক্যমেরার ভিড় দেখে চমকে গেলেন মানুষটা। তারপর ভিড়ের ফাঁক গলে অফিস-ঘরের একপাশে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে ঘরে একসঙ্গে দুটো ফ্যান চলতে দেখে বিরক্তিতে একবার এ-পাশ আরেকবার ও-পাশে ঘুরে ঘুরে হাওয়া ছড়াতে থাকা বড়ো প্যাডেস্টাল ফ্যানটাকে বন্ধ করে দিতেই থেমে গেল দুলতে থাকা চেয়ারটি। চেয়ারটা টেনে একটা টেবিলের পাশে নিয়ে চেয়ারের ক্ষয়ে যাওয়া একটি পায়ার তলায় একটা ছোটো কাঠের টুকরো গুঁজে চেয়ারে বসে টেবিলের ড্রয়ার খুলে একটা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন লোকটি। উফ্, ফোনটি নিতে ভুলে যাওয়ায় স্কুলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই রাখতে পারেননি অপচয় পছন্দ না করা লোকটা।
দুটো টিকটিকি অফিস-ঘরের সুইচ বোর্ডের ওপর লড়াই শুরু করেছে। আলোগুলো একবার জ্বলছে আর একবার নিভছে।
“টিকটিকিগুলোর খুব বাড় বেড়েছে। ঘরে রসুনের কোয়া ছড়াতে হবে দেখছি।” স্বগতোক্তি করে উঠলেন রহিম আলি।
অলঙ্করণ- মৌসুমী রায়