অর্ণবের আগের ছড়া- সব পেয়েছির দেশ
(১)
এক ছিল জমিদার হাঁড়িনাথ রায়,
হেঁড়ে গলা ছেড়ে রোজ কালোয়াতি গায়।
যেতে যেতে পিসি শুনে
মার দিল গুনে গুনে,
জমিদার কেঁদে বলে, “বাঁচাও আমায়।”
(২)
তার ছিল কুক, নাম কালাচাঁদ সিং
খাবারে মেশাত বসে জাফরান, হিং
একদিন পায়েসেতে
হিং দিল আয়েশেতে,
জমিদার খেয়ে নাচে তিড়িংবিড়িং।
(৩)
হাসিরানিদেবী তিনি জমিদার-গিন্নি,
পুজো দিতে মেখেছেন আধ-টন সিন্নি।
জানালার ফাঁক গলে
‘আঁমি খাঁব’ এই বলে
পুরোটাই নিয়ে গেল এক শাকচুন্নি।
(৪)
তাঁর ছিল জ্যাঠা জানি ভয়নাথ সেন,
অনেক আগেই তিনি গত হয়েছেন।
সিন্নিটা শেষ দেখে
লাঠিখানা পাশে রেখে,
এখনও সে দুঃখেই বসে রয়েছেন।
(৫)
পুরোহিত কাঁপছিল সেইখানে তক্ষন,
দেখে ভূতে করছে যে প্রসাদ ভক্ষণ,
ঠকঠক করে
পৈতেটা ধরে,
রামনাম ভুলে বলে, “লক্ষ্মণ, লক্ষ্মণ।”
(৬)
একশো বয়সি তাঁর বিজ্ঞানী দাদু,
সাদা সাদা দাড়ি নিয়ে ঠিক যেন সাধু।
ঘোস্ট ক্যাচ বেসিন-এ
ভূত ধরে মেশিনে,
বলে হেসে, “হুঁ হুঁ বাবা, সাইন্সের জাদু।”
(৭)
ঠিক রাত একটায় পুকুরের পাড়ে,
ভূতেদের সভা বসে তাই চুপিসারে।
সকলেই করে ঠিক
ভেবে তারা দশদিক,
লোপাট করতে হবে মেশিনটারে।
(৮)
সেইমতো এক ভূত আঁধারেতে মিশে,
জমিদারবাড়ি ঢুকে বসে কার্নিশে।
বিজ্ঞানী ছিল শুয়ে,
নাক ডাকে, ফুর ফুঁয়ে!
লাইন ক্লিয়ার বুঝে ডাক দেয় শিসে।
(৯)
মেশিন তুলেই তারা চিল্লিয়ে ঘোর,
পালায় ফোটার আগে আলো ভোর ভোর।
ঘুম ভেঙে তুলে হাই
এইসব দেখে তাই,
বিজ্ঞানী কেঁদে বলে, “চোর চোর চোর!”
(১০)
শেষ পাওয়া সংবাদ অনুযায়ী বলি,
আহ্লাদে ভূতগুলো খেলে সব হোলি।
দেহ নেই ছায়া সব,
তবু করে উৎসব,
সাধে আর বলে লোকে, ‘এ যে ঘোর কলি’?
জয়ঢাকের ছড়া লাইব্রেরি এই লিংকে