ছড়ার পাতা-বিশ্বমোহন-অমিতাভ প্রামাণিক

chhorabiswamohan (Medium)

জানিস নাকি তোদের পাড়ার বিশ্বমোহন ভট্ট’র

বাড়ির সবাই এমন কেন উগ্রপন্থী কট্টর?

কোথাও কিছু নেই,হঠাৎই আমায় ডেকে কালকে

প্রশ্ন করেন,এখান থেকে নাক বরাবর সালকে

যাওয়ার পথে ঠিক ক’খানা হলুদ রঙের বাঁশবন

পড়বে পথে? ভাইরে,শুনে কাঁদব নাকি হাসব?

ছাড়বে না তো,পাকড়ে আমায় করেই যাবে কোশ্চেন

আমায় বলে,আপনি এখন কোন দোকানে বসছেন!

ভুজুং ভাজুং দেওয়ার ফাঁকে যেই দেখেছি ফটকে

আসছে,ওকে ধরিয়ে দিয়ে তাই পড়েছি সটকে।

 

কদিন আগেই দুপুরবেলা বিশ্ববাবুর ভায়রা

আমায় বলে,বলতো কেন মঙ্গলে নেই পায়রা?

মার্সে গিয়ে উড়িয়ে দিলে আর্থে নাকি শান্তি

আসতো নেমে বৃষ্টি হয়ে,এসব কি তুই জানতি?

ঠিক সেদিনই সন্ধ্যেবেলা ঐ বাড়িরই নাতনী

বললো,জানো কোন গ্রহে হয় সকাল সাদা,রাত নীল?

সেই গ্রহটায় বৃষ্টি কেবল রাত্তিরে হয় ইলশে-

গুঁড়ির মতন,জল পড়ে না,যা-ই পড়ে সব নীল সে!

সকাল হলেই সব মুছে যায়,সমস্ত রং ফর্সা।

ওইখানে কেউ সাধ করে যায়?কেউ পাবে বল ভরসা?

 

ওর বাবাটাও এই তো সেদিন,তখন বোধ হয় বৈকাল,

মাঝ রাস্তায় চ্যাঁচাচ্ছিলো কখন পেরেস্ত্রৈকা

গান্ধীবাদে মিশিয়ে দিলে আসবে প্রবল বিপ্লব।

নইলে নাকি বিশ্বজুড়ে লেবার দামী,চিপ ল’!

বিশ্ববাবুর ভাইপোটা তো আরেক আপদ,বুঝলি?

দাঁতের মাজন লাগায়,হলে দাদ হাজা বা খুজলি।

আমায় দেখেই আসবে ছুটে,বলবে,দাদা শুনছেন,

বুঝিয়ে দেবেন তফাৎ কীসে উচ্চ এবং উঞ্ছে?

তার যে দিদি ঘোষপাড়াতে যায় পড়াতে অঙ্ক

বলল,জানেন রেশম্মিয়া কার সুরে গায়,পঙ্কজ?

এসব আজব প্রশ্নগুলো ওদের মাথায় হরদম

ঘুরছে,যেমন মুদির দোকান বানায় তাদের ফর্দ।

পেটের মধ্যে গুড়গুড়ালে ঠিক ক’কেজি সন্দেশ

নিষেধ খাওয়া এই নিয়ে সেই বাড়ির সবাই ধন্দে।

রামমোহনের দাদুর মেসো কক্ষনো কি রাত্রে

চট্টগ্রামে পড়তে যেত ব্রহ্মপুত্র সাঁতরে?

জোয়ার এলে গান গাওয়া ঠিক? বাজরা রুটির চাইতে

মকদ্দমা লড়াই বেটার খুড়তুতো ভাই-ভাইতে?

সন্ধ্যেবেলায় খায় না কেন সবাই খেজুররস-চা?

বিশ শো এমন প্রশ্ন নিয়েই বিশ্বমোহন ভশ্চায!

জয়ঢাকের সব ছড়া একত্রে এইখানে

ছবিঃ ইন্দ্রশেখর