ছড়ার পাতা-শ্রাদ্ধশেষে-অমিতাভ প্রামাণিক-বর্ষা ২০১৬

 

chhoraamitava (Medium)

তেপান্তরের মাঠের পারে ভুশন্ডীর ঐ মাঠটাতে

ভূতের বাপের শ্রাদ্ধশেষে বসলো সবাই সাট্টাতে।

হঠাৎ দেখে, সামনে কে যায়!

বেহ্মদত্যি তাইতে বেজায়

রাগ করে মামদোর মাথাটা ফুলিয়ে দিলো গাঁট্টাতে।

বলল,তোদের একটারও কি মন রয়েছে টাস্কে? নো!

শ্রাদ্ধশেষে খেলতে বসে এদিক ওদিক চাস কেন?

এ রাস্তা কি তোদের বাবার?

কেউ যদি তার সঙ্গে খাবার

যায় নিয়ে,তুই দেখবি শুধু,এসব বদভ্যাস কেন?

কন্ধকাটা হেসেই আকুল,তার যেহেতু মস্তকই

নেই, মানে তার সূয্যিমামা ওঠেই না,তার অস্ত কী!

বললো,সে তার অন্দরে চাপ

পাচ্ছিল,কে সঙ্গে কেচাপ

যাচ্ছে নিয়ে! বেহ্মো বলে,তুললি নে ক্যান,সস তো কী!

এই যে মলো,পুড়িয়ে এলাম,ঢালবে আগুন ভস্মে কে?

ছাইগুলো সব অমনি খেতুম চাকুম চুকুম সস মেখে।

কী হচ্ছে বল চ্যায়রা রে তোর

মাংস ঢুকে হাড়ের ভেতর,

কেমন লাগে ছুঁড়লে গায়ে সর্ষে বা খসখস সেঁকে?

ব্রহ্মদৈত্য কন্ধকাটার গার্জিয়ান বা বস,তা না।

এসব শুনে বলল তাকে,সস তোলা খুব সস্তা না।

ভূত বটে,বাট নয় মাতাল ও

সস ঘন আর খুব আঠালো,

তুলতে গেলে লাগবে ভালো একজোড়া বেশ দস্তানা।

বেহ্মদত্যি বলল তাকে,এই বছরের পাক খাতে

বাজেটটা কম,টান পড়বেই জুস বানানোর দ্রাক্ষাতে।

বাড়ছে নোলা ওদের নাতির।

দরকার খুব মশলাপাতির,

শাকচুন্নি এই কথাটাই বলছিল তার সাক্ষাতে।

ওপাশ থেকে একানড়ে বলল,আমিই বঞ্চিত!

নিমের দাঁতন জুটছে না তাই ইউজ করি কঞ্চি তো।

খাদ্য মোটে এক থালা নি

চাল ডাল নুন তেল জ্বালানি

ঐ পুরনো কুয়োর ভিতর করছি রোজই সঞ্চিত।

দই না পেলে জমবে নাকো অস্ট্রেলিয়ান রায়তারা

এক মেছোভূত উঠলো বলে,বিরিয়ানিই খায় তারা।

বেহ্মদত্যি এসব বলার

মধ্যে ধরে জামার কলার

মারল আছাড়,বললো,যা ভাগ,মারিস নে আর পাঁয়তাড়া।

মামদো তাকায় চারপাশ,সে খুব হিসেবী,তীক্ষ্ণধি

লম্বা লম্বা পা ফেলে সে পেরিয়ে যায় ঠিক নদী

পেত্নীটাকে বলল ডেকে

দাঁড়িয়ে আছে ওই রোদে কে?

গিভিং লিটল ফুড উইল বি ট্রিটেড ম্যাজেস্টিক,নো,দি?

পেত্নী কী ছাই বুঝলো জানি, পড়ল সে এই চক্করে

নারীর স্বভাব অমনধারা, লেখাই আছে অক্ষরে।

শুকনো ধুলোয় সেদ্ধ এঁচড়

বাঁশের শিকড়, চাটনি কেঁচোর

থালায় করে সাজিয়ে নিয়ে নামিয়ে দিলো ঠক করে।

ওইটা ছিলো সেই মেছোভূত, বলল, খাব মাছ-ছাড়া

এইসব ছাইপাঁশ অখাদ্য, সব নিরিমিষ গাছ-চারা?

হেনস্থা এই দেখে জায়ার

বেহ্মদত্যি খচেই ফায়ার

শ্রাদ্ধবাড়ি এই অনাচার! বলল, শোন রে বাচ্চারা,

এমন করে অশ্রদ্ধা আর করিস নে কেউ শ্রাদ্ধকে।

শ্রাদ্ধ আছে,তাই খেতে পাই,নয়ত দিত খাদ্য কে?

চান করে এই সারা দোপর

ভিজিয়ে এলি কাপড় চোপড়

দে,মেলে দে,তারপরে বোস ডিনার খেতে হাত ধোকে।

ছবিঃ ইন্দ্রশেখর

জয়ঢাকের সব ছড়া একত্রে