যুদ্ধে যাবেন রাজামশাই
তাই নিয়ে মাতামাতি…
আন রে তূণীর, আন তলোয়ার,
আন শত ঘোড়া, হাতি!
কোথায় বা হাতি, কোথায় বা ঘোড়া–
আস্তাবল তো ফাঁকা
রাজার কেবল রাজপোশাকেই
দীনতা যায় না ঢাকা।
তাও তো পোশাকে তাপ্পিই মারা
জরিটা যাচ্ছে খুলে
শেষ ক-বছর বেতন পাননি;
দরজি গেছেন ভুলে।
রানিমাও তাঁর সূচটা পান না
সুতোও আসে না ঘরে
রাজার পোশাকে তাপ্পি তাহলে
ঘুচবে কেমন করে!
না ঘুচলে নাই ঘুচুক বাপু–
তাও তো রাজা খুশিই
‘রাজ্যে আমার হাজার দুঃখি,
আমিও দুঃখ পুষি’!
রাজা খান না পোলাও কোর্মা
তাঁর পছন্দ চিঁড়ে
মসনদ ছেড়ে সোজা হাঁটা দেন
মিলেমিশে যান ভিড়ে।
চাঁদের আলোতে বসে যান গিয়ে
ঝিল-পুকুরের পাড়ে
দু’খানা কবিতা লিখেটিখে নিয়ে
ঘরে যান চুপিসাড়ে।
জ্যোৎস্নাতে তাঁর ঘর ভেসে যায়
লেখার পাতাটি ওড়ে
দেখে মিটিমিটি হাসেন রানিমা
দাঁড়িয়ে ঘরের দোরে।
তাঁর মনেতেও আজ ভারি সুখ
সারাটা বিকেল ধরে
গোলাপ তুলেছেন এগারো হাজার
চুবড়ি ভর্তি করে।
গোলাপে কী কাজ! শেষটায় কিনা
মালা গাঁথবেন তিনি?
আরে নারে না না– সে কিছু নয়;
হাসেন সৌদামিনী।
যুদ্ধে যাবেন রাজামশাই
কিন্তু তিনি তো কবি!
ঢাল-তলোয়ারে তাকে কি মানায়–
(ভেবে) দিশেহারা ভৈরবী।
শেষটায় তিনি পেয়েছেন খুঁজে
অস্ত্র এগারো হাজার–
যুদ্ধে যাবেন ; লাল গোলাপেই
তূণীর ভর্তি রাজার।