শৈশব চুরি
সনত কুমার ঘোষ
কাকভোরে ঘুম ভাঙা, ঘুম চোখে টুথব্রাশ,
নাকে মুখে গিলে নেওয়া, তাড়া দেয় স্কুলবাস।
জাঙ্কফুড লাঞ্চবক্স, তাড়াতাড়ি জুতো জামা,
এভাবেই শুরু হয় ছোটোদের রোজনামা।
ওজনেতে বেঁকে যাওয়া, পিঠে ওঠে বড়ো ছালা,
দেখে তার হোম টাস্ক, ম্যাম দেয় কানমলা।
বাড়ি ফিরে রেস্ট নাই, আসে কত পিসি-কাকা,
কারও কাছে গান শেখা, কারও কাছে শুধু আঁকা।
তারপর লেখাপড়া, মাঠে যাওয়া হয় না,
মাঠে যাওয়া মা’র চোখে, অহেতুক বায়না।
মাঠে খেলে ছোটোলোক, নোংরা ও ন্যাস্টি
ছেলে গেলে বখে যাবে, মায়েদের দৃষ্টি।
সন্ধ্যার পর আসে গণিতের যদুস্যার,
ভুল হলে অঙ্কেতে বকাঝকা আর মার।
বাড়িতেই মার খাওয়া, বাবা কিছু বলে না,
ইংরেজি ম্যাম বলে, ছেলে কিছু লেখে না।
এক্সাম ফল পেলে বাবা-মা নয় খুশি,
নব্বই পেলে বলে, ওর ছেলে পাঁচ বেশি।
ফল দেখে বাবা-মায়, লেগে যায় দ্বন্দ্ব
মানুষ হতে হলে কার্টুন দেখা বন্ধ।
জেলখানা বাক্সবাড়ির নাই কোনও জানালা খোলা,
ছোটো সুখী পরিবারে নাই ঠাম্মাদিদা গল্পবলা।
সারাদিনই বন্দি থাকে রুটিনেরই কঠিন ফাঁদে,
মানুষ হওয়ার আতঙ্কেতে তার শৈশব নিত্য কাঁদে।
জয়ঢাকের ছড়া সংগ্রহ