এলিয়ট আবু হোসেনের আগের বেড়ালছড়া-গাম্বিড়াল
হালুমবা ছিল বীরমার্জার গুণ্ডামি তার কাজ যে
বজরানিবাসী; এমন গুণ্ডা দুটি তো পাবে না রাজ্যে
গ্রেভসেন্ড হতে অক্সফোর্ড তক ঘোরাফেরা নিঃশঙ্ক
বেড়ালজগতে নাম ছিল তার টেমসের মহাতঙ্ক
ডাকুসর্দার, একদিনও তার কাটে না লড়াই ভিন্ন
গায়ে কতশত যুদ্ধের ক্ষত থাবায় কাদার চিহ্ন
একখানা কান উধাও, কারণ সহজেই যায় বোঝা
এক সবেধন কুটিল নয়ন দৃষ্টিটি নয় সোজা
রদারহিথের লোকজন তার শাসণের তাপে জর্জর
হ্যামারস্মিথ আর পুটনির লোক তার নামে কাঁপে থরথর
মুরগির ঘরে তালা দেয় তারা হাঁসগুলো রাখে সামলে
কে জানে কখন ফাঁক পেলে বুঝি হালুমবা পড়ে হামলে
আহারে বেচারা ক্যানারি সে ভয়ে ঝাপটায় ডানা খাঁচাতে
আদুরে কুকুর, হালুমবা এলে কে পারে তারেও বাঁচাতে
জাহাজের খোলে ধেড়ে ইঁদুরেরা ভাগে পেলে তার গন্ধ
কোনো মার্জার কাছে এলে তার কপাল বেজায় মন্দ
তবে এরা সব ছোটোখাটো, তার আসল মূর্তি অন্য
তোলা থাকে সেটা ভিনদেশি যত বেড়ালগুলোর জন্য
শ্যামদেশি এক মার্জার নাকি হরেছিল তার কর্ণ
তাই শ্যামদেশি মার্জার তার ভয়ে হয় গতবর্ণ
গ্রীষ্মরজনী, চাঁদভাসা রাত, শান্ত আকাশ তলে
রুপোলী আলোয় বজরাটি বাঁধা মোলাসে জেটির জলে
ময়ূরপংখী নৌকাটি যেন, দোলে জোয়ারের ঝোঁকে
হালুমবা তাই দেখে আনমনে, একটি ভাবুক চোখে
ডাকু সখা তার গ্রামবুচামুক নেইতো সেদিন বাড়ি
হ্যাম্পটন বেল রেস্তোরাঁতে সে ভেজাতে গিয়েছে দাড়ি
সেনাপতি বীর পতিতব্রুটাস সেও তো ছিল না ঘরে
পাড়ে সিংহের স্ট্যাচুর পেছনে আরামে শিকার ধরে
মাস্তুলে চেপে চাঁদের আলোয় হালুমবা দেখে চেয়ে
অস্থিভামিনী, বান্ধবী তার, হেঁটে যায় জেটি বেয়ে
সেনাদল তার ঘুমে অচেতন পিপেতে, বাংকে, ঘরে
তখনই হাজির শ্যাম মার্জার শামপান ডিঙা চড়ে
হালুমবা কিছু টেরটি পেল না কখন যে ধীরে ধীরে
নীল চোখে ভরা শাম্পানগুলো এল বজরাকে ঘিরে
ভালোবাসা ভরা গলাটিতে তার ওঠে ম্যাঁও ম্যাঁও গান
অস্থিভামিনী সঙ্গে ধরেছে মিষ্টি মিঞাঁও তান
বাঁকা নখ আর ছুরিহেন দাঁতে শ্যামদেশি সেনাদল
শব্দ না তুলে এল দুলে দুলে উঠল না কোলাহল
হালুমবা ঘিরে নিল পোজিশান, বেজায় জটিল পাক
মিঞাঁওওও(অ্যাটাক) ডেকে সেনাপতি গিলবার্ট দিল হাঁক
ওমনি সেনারা শাম্পান ছেড়ে মহালাফ মেরে উড়ে
চিনাবারুদের মত ছুটে এল গোটা বজরাটি জুড়ে
পিপেতে বাংকে ঘরে শুরু হল মার্জার অভিযান
উধাও হলেন অস্থিভামিনী বাঁচিয়ে আপন প্রাণ
হালুমবা ঘিরে যত সেনাদল তোলে যুদ্ধের সুর
ম্যাঁআও ম্যাঁআও রণসঙ্গীত ভেসে যায় বহুদূর
হাজারো রণের বীর সৈনিক আঁধার দেখল চোখে
ঘিরে ধরে তাকে নীলচোখ আর হাজারো থাবায় নখে
ঠেলে নিয়ে গেল ডেকের কিনারে শ্যামদেশী সেনাদল
লেজ ধরে তুলে ছুঁড়ে দিল ফেলে যেখানে অতল জল
খবর ছড়াল দাবানলহেন বাজে ঢাকঢোল শিঙে
নাচগান হল হেনলেতে আর উৎসব ওয়াপিং-এ
ব্রেন্টফোডে হল মার্জার ফেস্ট, গোটা ইঁদুরের রোল
ব্যাংককে দিল একদিন ছুটি, নাচাগান শোরগোল
টি এস এলিয়টের GROWLTIGER’S LAST STAND অবলম্বনে।
মূল গ্রন্থ Old Possum’s Book of Practical Cats