ছড়ার পাতা বিড়ালীর আশাভঙ্গ অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় বর্ষা ২০১৮

অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়

শুক্লপাটল বিল্লিবালা একফালি ঝিম রোদে
আলসেচালে চাটছে থাবা,বলছে, “ঝি, মাংস দে।
একটুখানি দিলেই হবে। হাড্ডি, মাছের মুড়ো,
আঁশ-পটকা,দুধের ডেগের কানায় সরের গুঁড়ো,
ফিনফিনে লাল কানকোগুলো,দিতেই পারো তা-ও”
তর্জমা এই সমস্তটার বিল্লিভাষায়, মিঁ-আও।
মি-আঁও মুখে বললো বটে,দেখেও নিল, আড়ে
বড়দাভাইয়ের এলশেসিয়ান কোত্থেকে ডাক ছাড়ে।
মাংস তখন নিচ্ছে মেক আপ,মাখছে মালাই গাত্রে
চিকেনের ডাকবাংলো হবে, আসবে জামাই রাত্রে।
সাতসকালেই দুধ এনেছে পাড়ার বিধু গয়লা,
কালো গরুর দুধের সরে ডেগের কানা ছয়লাপ।
রান্নাঘরের বাইরে চাতাল, ছাই দিয়ে কই কোটে,
চানুর মা,আর গজর গজর মুখেতে খৈ ফোটে।
কাজ বেড়েছে সাত সকালে মাজতে হল ডেকচি।
বিল্লি যদি মানুষ হত,মরতো উঠে হেঁচকি।

দোষের মধ্যে আজ সকালে ডেগের ঢাকনা তুলে
ঘন দুধের চাঁছি পেয়েই মুখ দিয়েছে ভুলে।
তক্কে তক্কে ছিল কাছেই, এলসেশিয়ান কেলো।
বাজ ডাকবার মতন হেঁকে, অমনি ধেয়ে এলো।
সবাই তাকে হ্যাংলা বলে,বড্ড নোলা নাকি
ভাতের পাতে একটু কেবল রাখতো মেজকাকি।
আজ বারোদিন,মেজকাকী গেছে বাপের ঘর 
বিল্লিবালার নিত্যি পেটে শুখা নদীর চর।
বিল্লি উঠে আড়মোড়া দেয়,রোদের মায়া ছেড়ে, 
“যায় কি বলা কখন কেলো আসবে হঠাৎ তেড়ে।
সদর থেকে ভিতর বাড়ি,হেঁসেল, খিড়কি-পুকুর,
রোঁদে আছে নচ্ছার ওই বড়দাভাইয়ের কুকুর।
কী আর হবে, দিনের শেষে জুটবে এঁটোকাটা,
আপাতত ললাটলিখন  পাঁচিল ধরে হাঁটা।
আজকে যজ্ঞিবাড়ি,হরিমটর আমার তাও।”
বিল্লিভাষায় বললে সাঁটে,একটি মাত্র মিঁ-আও।

 জয়ঢাকের ছড়া লাইব্রেরি

1 thought on “ছড়ার পাতা বিড়ালীর আশাভঙ্গ অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় বর্ষা ২০১৮

  1. বিল্লীবালার জন্যে খুব খারাপ লাগছে। মেজকাকীর ভালো হোক আর তাড়াতাড়ি ফিরে আসুক

    Like

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s