ভ্রমণ ডারবানের গল্প-রেলরঙ্গ দীপক গোস্বামী বর্ষা ২০১৭

জয়ঢাকের ভ্রমণ লাইব্রেরি 

(ডারবান ঘুরে এসে দীপক গোস্বামীর গালগল্প আর ANNE MARIE NZIOKI এবং ঋতুপর্ণ গোস্বামীর ছবি)

১।  ডারবান ভারত মহাসাগরের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের রাজধানী এবং ওই দেশের সবচেয়ে বড়ো ও ব্যস্ততম বন্দর। ওদেশে জোহানেসবার্গ আর কেপ টাউনের পরে এটাই সবচেয়ে জনাকীর্ণ শহর। যদিও আমাদের মতো কলকাতা বা মফস্বলবাসীদের চোখে একটু নির্জনই মনে হয়। কারণ কলকাতার তুলনায় জনসংখ্যা কুড়ি লক্ষেরও বেশি কম।

২।   পুরোনো যা কিছুর ওপরে স্থানীয় অধিবাসীদের আকর্ষণ আছে– স্টিম ইঞ্জিন তার মধ্যে অন্যতম।

৩।    তাই  UMGENI STEAM  RAILWAY নামে একটা স্বেছাসেবী সংস্থা প্রতিমাসের শেষ রবিবার একটা বাতিল হয়ে যাওয়া রেল লাইনে ডারবানের CLOOF থেকে INCHANGA পর্যন্ত দু’বার স্টিম ইঞ্জিনের ট্রেন চালায়। একটা সকালে অন্যটা বিকালে।

৪।   এটাকে ওরা আদর করে INCHANGA  CHOO  CHOO  TRIP  বলে।  ওদের কাছে  CHOO CHOO বাংলা ‘কু ঝিক ঝিক’-এর প্রতিশব্দ। এটা কম্পার্টমেন্টের ভেতরের চেহারা।  কোচগুলো বেশিরভাগই ১৯৩০ এর কাছাকাছি সময়ে তৈরি– ১৯০৮-এর কোচও আছে। আর সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এখনও বেশ ভালই আছে।

৫।   কোচগুলো CUBICLE-এ ভাগ করা। অনেক CUBICLE-এই যাত্রীদের ওঠানামার জন্য আলাদা দরজা আছে। এ ভাবে কোচে প্রায় গোটা দশেক দরজা।

৬।    CHOO CHOO  ট্রেনের বারান্দা ।.

৭।   কোচগুলো টানার জন্য কয়েকটি ইঞ্জিন আছে। তারমধ্যে WESLEY খুব পুরনো স্টিম ইঞ্জিন। ইঞ্জিনটা ১৯৩৮ সালে জার্মানিতে তৈরি হয়। গত এক বছর ধরে সে অসুস্থ ছিল। কোনও কাজ করতে পারে নি। এক বছর পরে ২৯ জানুয়ারি তার প্রথম সফর। 

৮।   সে সফরে আমরাও ছিলাম। রেললাইনের দুপাশে বাচ্চারা কী অসীম আনন্দে WESLEY-কে স্বাগত জানাচ্ছিল, না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।

৯। ট্রেন থেকে দু’ধারের পাহাড়ি দৃশ্য অসাধারণ। তা সে GILLITIS-ই হোক…

১০।   বা  HILLCREST

১১।   কিংবা BOTHA’S HILL, যাকে VALLEY OF THOUSAND HILLS-ও বলে।

১২। KLOOF থেকে  GILLITIS,  HILLCREST,  BOTHA’S HILL,  DRUMMOND  স্টেশন পার হয়ে এটা INCHANGA  স্টেশন। অন্য স্টেশনগুলোতে এখন ট্রেন দাঁড়ায় না।  সব মিলিয়ে মাঝের দুরত্ত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। পথে ৫২ মিটার লম্বা একটা ছোট টানেলও আছে– নাম DRUMMOND TUNNEL.

১৩।   CHOO  CHOO  TRAIN  INCHANGA পর্যন্তই যায়। এখানে এক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপর আবার ফেরা।

১৪। কেবলমাত্র ওই দিন যাত্রীদের জন্য একটা ছোট হাট বসে স্টেশনের ধারে। ওরা বলে INCHANGA COMMUNITY CRAFT MARKET.   আশপাশের গ্রামের লোকেরা তাদের নিজের হাতে তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করেন এখানে।

১৫। ঘোরাঘুরিতে ক্লান্ত হলে মুক্ত পরিবেশে খাবারের দোকানও অনেক।

১৬।   এক ঘন্টার বিরতিতে ছোটোরা ইচ্ছা করলে ঘোড়ায়ও চড়ে নিতে পারে।

১৭।   আর কেউ একটু WESLEY-তে বসতে চাইলে তার সাধও অপূর্ণ থাকে না।

১৮।   INCHANGA স্টেশনেই মডেল দিয়ে তৈরি করা একটা রেল-মিউজিয়াম আছে। বাতিল হয়ে যাওয়া রেল লাইনের অনেক পুরোনো ইতিহাস জানা যায় এখানে।

১৯। দিনের শেষে ফেরার পথে কোচগুলো যে লাইনে দাঁড়ায় সেখানে কোনও প্ল্যাটফর্ম পাওয়া যায় না। অগত্যা অস্থায়ী সিঁড়ি দিয়েই ট্রেনে ওঠা…

২০।   …এবং অবশেষে সাদা ধোঁয়ার দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে WESLEY-র ফিরে আসা।

জয়ঢাকের ভ্রমণ লাইব্রেরি 

 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s