।।৪।। কোপেনহেগেন
পাতা ঝরানো শেষ করে প্রকৃতি দেবী তুষারপাত শুরু করলেন। আর আমার অবস্থা আরো টাইট হল। প্রায় বেরোনো বন্ধ, একটানা ছিপছিপে বৃষ্টি কিংবা বরফ পড়ে চলেছে। এর মধ্যে কেই বা বের হতে চায়, বিশেষত আমার মতো একজন শীতকাতুরে প্রায় প্রৌঢ়া মহিলা!
দিনের পর দিন সূর্য উধাও, মেঘলা, ধোঁয়া ধোঁয়া আকাশ… সাংঘাতিক বিরক্ত হয়ে এতটাই ঝামেলা পাকিয়ে তুললাম, যে আশেপাশের মানুষজন বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ল। তারপর যখন দেখল, আমি ‘বাড়ি যাব’ রব তুলে প্যাঁটরা গোছানো শুরু করেছি, তখন ‘আরে, থামো থামো, চলো ঘুরে আসি।’ বলে তেনারা (এখানে একদল দেবর জুটে গেছে) কোপেনহেগেন যাবার এক সুন্দর প্রোগ্রাম রেডি করে ফেলল এবং যাওয়ার ব্যবস্থা হল এক দুর্দান্ত বিলাসবহুল ক্রুজে। আহা রে, ঝামেলা করলে কত্তো লাভ হয়! মা-মাসিদের শিক্ষা একেবারে বৃথা যায়নি গো। কোথাও বেড়াতে গিয়ে সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখলাম, বা ছবি তুললাম—সেসব তো আছেই। তবে এই ভ্রমণের পরতে পরতে যে মোচড়গুলো রয়েছে, সেগুলোই বেশি চিত্তাকর্ষক, অন্তত আমার কাছে।
শুক্রবার বেলা তিনটের সময় জাহাজ ছেড়ে শনিবার সকাল আটটায় কোপেনহেগেন, সারাদিন শহর চষে আবার রাত নয়টায় ফেরার তরী ধরা, রবিবার দুপুর নাগাদ অসলো পৌঁছানো—এই ছিল পুরো ট্যুরটা।
আগেরদিন রাত থেকে পেঁজা তুলোর মতো অবিরাম বরফ পড়া শুরু হল। সকালে ছেলের দল ওই বরফ মাথায় নিয়ে অফিসে গেল, সঙ্গে প্রায় ফাঁকা বড়ো বড়ো সুটকেস। আমরা গিন্নিরা নির্দিষ্ট সময় অফিসের সামনে দাঁড়াব, এই কথাই হয়ে রইল।
যথাসময়ে কর্তার অফিসের সামনে সবাই পৌঁছে গেছি। পায়ের নিচে ইঞ্চি ছয়েক বরফ, ভগবান উপর থেকেও ঢেলে যাচ্ছেন—এমতাবস্থায় সেথায় একজনই আসতে পারেনি, পদের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে উনি মিটিং করে চলেছেন—আমার চিরশত্রু কর্তাটি!
ইয়াং দল বলছে, ‘চলো, আমরা চলে যাই, দাদা ঠিক জাহাজঘাটায় পৌঁছে যাবে।’ আমি এ প্রস্তাবে অসম্মত হলাম। কে জানে বাবা, যদি শেষতক পৌঁছতে না পারে, তাহলে তো কেস কিচ্যাং হয়ে যাবে! সবাইকে পাঠিয়ে দিয়ে আমি অপেক্ষায় রইলাম। উনি যখন নামলেন, তখন আর কুড়ি মিনিট বাকি ক্রুজের বোর্ডিং শেষ হতে। নেমেই খ্যাঁক খ্যাঁক! ‘তুমি কী করছ এখানে? যাওনি কেন ওদের সাথে?’ বুঝলাম, ভালোবাসার কুনো দাম লাই, বেড়িয়ে ফিরেই যাহোক একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে। ট্যাক্সি বুক করতে গিয়ে দেখা গেল ওয়েটিং প্রায় দশ মিনিট। তাহলে আজ জাহাজ আর চাপা হল না, মোটামুটি নিশ্চিত হলাম।
হঠাৎ কানের কাছে শুনলাম, “মাত্র দুটো স্টপেজ তো এখান থেকে, যেতে পারবে না?”
নবীনা, বোকা কিশোরীর মতো ঢক করে ঘাড় নাড়লাম। মুহূর্তের মধ্যে ভদ্রলোক আমার ডানহাতটা শক্ত করে ধরে বললেন, “চলো দৌড়াই।”
পাগলা বলে কী! কিছু বোঝার আগেই দেখলাম ছুটছি দুজনে। সেই ঝুরঝুরে বরফে পা ডুবে ডুবে যাচ্ছে। হে ঈশ্বর, বাঁচাও গো! লিগামেন্ট ছেঁড়া পা নিয়ে পড়লে আর দেখতে হবে না। এমনিতেই বন্ধুরা বলে, ধপাস ধপাস করে পড়ে যাওয়া নাকি আমার হবি।
তো দুজনে সিনেমার নায়ক-নায়িকার মতো চলেছি, আর নিজেই নিজেকে মনে মনে বলছি, ‘ক্যায়া সিন হ্যায় রে ভাই!’ আবার কখনো মনে হচ্ছে, বর গেলে বর পাওয়া যায় রে পাগলি, ঠ্যাং গেলে আর ঠ্যাং পাওয়া যায় না! নেহাত বিদেশ বলে কেউ ফিরেও তাকাল না। নিজের দেশ হলে পিছনে কুকুর তো দৌড়াতই, সিটি-টিটিও মেরে দিত জনগণ।
একেবারে নেক টু নেক চার মিনিট বাকি থাকতে গিয়ে পৌঁছলাম। আগে যারা পৌঁছে গিয়েছিল, তারা হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আহা! হ্যান্ডশেক করবে বলে গো, দৌড়ে এলাম যে।
পরক্ষণেই ভুল ভাঙল। ওরা নিজেদের পাসপোর্ট নেবে বলে হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে। এতজনের পাসপোর্ট আমার বর-বাবাজীর ব্যাগে। কোনো মানে হয়!
যাই হোক, পাসপোর্ট দেখিয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে ক্রুজে প্রবেশ করলাম। বারো তলার একটা ঝাঁ-চকচকে প্রমোদ তরণী—গোটা পাঁচেক রেস্তোরাঁ, সুইমিং পুল, দুটি নাইট ক্লাব, চারটি বার, পার্লার, বাচ্চাদের গেমস এরিয়া, সাউথ সিটির স্পেন্সার্স-এর সাইজের একটা ট্যাক্স ফ্রি শপিং এরিয়া, অনেকগুলো বেকারি… মোটমাট কথা কী নেই সেথায়! দেখেশুনে দিল তরর হয়ে গেল। ঠিক হল, আগেই ডেকে চলে যাই। এরপর অন্ধকার হয়ে যাবে আর প্রচণ্ড ঠান্ডা হাওয়ায় ডেকে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।
বারোতলার ডেকে গিয়ে মন ভরে গেল। উপর থেকে তুষারাবৃত অসলো সিটির কী রূপ! খানিক ঘোরাঘুরি আর ফোটোসেশন করে নীচে শপিং এরিয়ায় গেলাম। বাপ রে, কী ভিড়! ক্রুজের সমস্ত লোক বোধ হয় সেখানে পৌঁছে গেছে। বিশেষ করে হার্ড ড্রিঙ্কস কেনার জন্য গড়িয়াহাটের ভিড়। সমস্ত বিখ্যাত ব্র্যান্ড, ফরাসি পারফিউমের ম ম সুবাস, পোশাক, ব্যাগ, চকোলেট, সফট টয়েজ আর নানান লোভনীয় পণ্যের সম্ভার—এখো গুড়ে পিঁপড়ের পড়ার দশা। মানুষজনদের হাবভাব দেখেশুনে মনে একটু শান্তি অনুভব করলাম। যাক, সাহেবরাও তাহলে হাড়হাভাতে হয়। সারা সন্ধে আড্ডা মেরে, নানাবিধ খাদ্যসম্ভার, পানীয়র আলিঙ্গনে আবেশে কাটানো হল। ডিনার খাওয়ার আর ক্ষমতা নেই। শুয়ে পড়ার আগে সবাই চললাম নাইট ক্লাবে ঢুঁ মারতে। রাত আটটার পর থেকেই সাহেব-মেমরা দুর্দান্ত সব পার্টি-ওয়্যার পরে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সাধ হল এক চক্কর মেরে আসি, তারপর নিদ্রাদেবীর আরাধনায় মাতব।
ছোটোবেলায় বইয়ের পাতায় অবাক করা নিশীথ সূর্যের দেশে যে একদিন পাড়ি দিতে পারব, সেটা কে আর ভেবেছিল! তাই কয়েকমাস থাকার সুবাদে, নিজের মতো করে ঘুরেফিরে দেশটা আপন করে নিই।
নরওয়েতে প্রকৃতি অফুরান সৌন্দর্যর ডালি নিয়ে বসে আছে। দূষণমুক্ত প্রকৃতি আর নানান দ্রষ্টব্য নিয়ে সকলকে আহ্বান জানায় সে দেশ। দৈনন্দিন যাপনের মাঝে মাঝে বেরিয়ে এখানকার কিছু বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান দেখা হল। এমনিতেই এ দেশে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য অকৃপণ হাতে ঈশ্বর সাজিয়ে দিয়েছেন। উপরন্তু ঝুলিতে রয়েছে এক সুগৌরবান্বিত অতীত। ফলে ঘুরে দেখার জায়গার শেষ নেই।
ফ্রগনার পার্ক
কোনো এক রবিবার হু হু করা ঠান্ডার দিনে ঝকঝকে রোদ। শত্রুদার সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম ম্যাপকে সাথী করে। বাস-ট্রাম চড়ে হাজির হলাম ফ্রগনার পার্কে। গত দশকের প্রথমদিকে তৈরি এই পার্ক পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো স্কাল্পচার পার্ক। প্রায় ৮০ একর জায়গা জুড়ে ২১২টি ব্রোঞ্জ আর গ্রানাইটের তাক লাগানো ভাস্কর্য। মূলত মানবদেহের গঠন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, কিন্তু বড্ড নিঁখুত দেহ সৌষ্ঠব আর বিশাল আকার, চমকপ্রদ ভঙ্গিতে ভাস্কর্যগুলো তৈরি। বিশাল বাগান, ফুলের সমারোহ, পিকনিক এরিয়া—সবকিছুই যেন লার্জার দ্যান লাইফ। কিছু না করেই চুপচাপ বসে প্রকৃতি অথবা প্রিয়জনের সান্নিধ্য উপভোগ করা যায়।
একধারে একটা ছোট্ট জলের ঝোরা, ব্রুক বলতে যা বোঝায়, তাই—জল বয়ে যাচ্ছে কুলকুল শব্দে। এপার ওপার করার জন্য এর উপরে ছোট্ট লোহার সেতু। তার গায়ে দেখলাম অসংখ্য তালা লাগানো আছে। হরেকরকম, হরেক সাইজের হরেক রঙের। জানা গেল, ওখানে তালাবন্ধ করে রাখলে প্রেম স্থায়ী হয়—এই প্রচলিত মত-বিশ্বাসের জেরে এত তালা এখানে।
বাগানের ঠিক মাঝখানে মোনোলিথ। গগনচুম্বী এক পিলার, গ্রানাইটের। অসংখ্য খোদাই করা মানবদেহ যেন একে অপরকে আঁকড়ে ধরে আকাশ ছুঁয়ে ফেলতে চাইছে। বিস্মিত হবার মতোই সবকিছু।
দ্য রয়াল প্যালেস
একদিন কী করি কী করি মন নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। গন্তব্য, ন্যাশনাল থিয়েটার। নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি, একদল জাপানি (বোঝাই যাচ্ছে ট্যুরিস্ট) গুটগুট করে চলেছে। কী ভেবে তাদের পিছু নিলাম। ওমা, এক মোড় ঘুরতেই চোখের সামনে এক রাজপ্রাসাদ! দারুণ চাকচিক্যময় কিছু নয়, কিন্তু ভাবগম্ভীর আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়। দেখলাম, এ দেশের কোনো কিছুই লাউড নয়। পরিমিতি বোধ আর আচরণ, নম্রতা আর সফিস্টিকেশন এদের মজ্জাগত। ১৮২৫ সালে শুরু হয়ে ১৮৪৯ সালে এই প্রাসাদটি শেষ হয়। শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালে টিকিট কেটে, গাইডের তত্ত্বাবধানে প্যালেসের ভিতরে ঢোকা যায়। সময়টা হল জুন থেকে লেট আগস্ট। শীতকাল হওয়ার দরুন ভিতরে ঘোরা হল না। তবে সে আফসোস পুরিয়ে গেল আধঘণ্টা ধরে রয়াল গার্ড চেঞ্জ সেরেমনি দেখে। ব্যান্ডের তালে তালে মার্চপাস্ট খুবই মনোগ্রাহী অনুষ্ঠান।
সনসভান লেক
অসলো সিটি থেকে সামান্যই দূরত্বে সনসভান লেক।
রৌদ্রোজ্জ্বল দিন। সকাল ন’টায় মোবাইলে তাপমাত্রা সূচক দেখাচ্ছে, মাইনাস দশ। সেন্ট্রালি হিটার চলে ঘরে, তাই কিছু মালুম পাই না। তাও ধড়াচুড়ো পরে বের হলাম। বাস যেখানে হাইওয়ের উপরে নামিয়ে দিল, সেখান থেকে ট্রেন ধরতে হয়। হাইওয়েতে রাস্তা পার হবার নিয়ম নেই, তাই পাহাড়ি রাস্তায় চড়াই উৎরাই পেরিয়ে একটা সুন্দর ওভার ফুট ব্রিজ টপকে চললাম ট্রেন ধরতে। স্টেশনটা একটু উঁচুতে, মানে চড়াই ভাঙতে হবে কিছুটা।
যেতে যেতেই দেখছি প্ল্যাটফর্মে মেট্রো এসে দাঁড়াল। আমার থেকে ট্রেনের দূরত্ব মেরেকেটে ৫০ মিটার হবে, কিন্তু তাও ওইটুকু পথ যেন আমার চলার ক্ষমতা নেই। এত কষ্ট হচ্ছে নিঃশ্বাস নিতে, যে হার্টটা ফেটেই যাবে মনে হচ্ছে। বর-বাবাজী ট্রেনে উঠে গেছেন আর, ‘এসো তাড়াতাড়ি’ বলে চেঁচাচ্ছেন। কারণ, পরের ট্রেন আসবে একঘণ্টা বাদে। শেষমুহূর্তে ট্রেনে পা দিলাম দেহের সর্বশক্তি জড়ো করে। আহ্, শান্তি!
চোঁ-চাঁ করে ছয় কামরার ট্রেন পাহাড়ের গা বেয়ে উঠতে লাগল। সমতল থেকে সনসভান স্টেশনের উচ্চতা ৬৫০ ফিট। আর দূরত্ব ৯ কিলোমিটারের মতো। মাত্র পনেরো মিনিটেই সেখানে পৌঁছে গেলাম।
একটা জিনিস স্বীকার করতেই হবে, অসলোতে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম ভীষণ ভালো।
প্ল্যাটফর্মে নামার পরে দেখলাম, পিলপিল করছে লোক! তাদের গতি সব একমুখী—প্রায় সকলের কাছেই স্কি করার সরঞ্জাম। প্রবাদ আছে, নরওয়েজিয়ানরা জন্মাবার পর থেকেই স্কি করতে শিখে যায়।
ধাবমান জনতার প্রবাহে গা ভাসালাম। আর ভেসে ভেসেই পৌঁছে গেলাম এক তুষার সরোবরের তীরে। সাড়ে তিন কিলোমিটার এরিয়া জুড়ে থাকা এই লেকটি তখন সম্পূর্ণভাবে বরফের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এক অপার্থিব, অবিস্মরণীয় দৃশ্য! যতদূর নজর যায় নীলাভ বরফ, হিমশীতল আর স্ফটিকের মতো কঠিন ও ঝলমলে এবং দৃষ্টি বিভ্রমকারীও। সানগ্লাস পরা অবস্থাতেও চোখ ঝলসে যাচ্ছে। বাইরের তাপমাত্রা তখন, মাইনাস বারো। আমার মনে হল এই জন্ম সার্থক।
চারপাশে ছোটো ছোটো ছেলমেয়েদের নিয়ে বাবা-মায়েরা খেলছেন, প্রচুর মানুষ স্কি করছেন সেই জমে যাওয়া লেকের উপর। আর একটু দূরে দেখলাম একজন ড্রেস খুলে রেডি হচ্ছেন বরফের মাঝে খুঁজে পাওয়া কিছুটা জলে চান করবেন বলে। মাইনাস বারো ডিগ্রিতে চান করার জন্য রেডি! কতরকমের পাগল যে হয় দুনিয়ায়, ঘর থেকে না বের হলে ভাবা যায় না।
জানা গেল, সামারে এখানে পিকনিক, ক্যাম্প হয়। আর হয় সাইকেল রেস আর দৌড়ানোর প্রতিযোগিতা। এই লেকটা উইন্টার অলিম্পিকের একটা ভেন্যুও বটে।
একটু ঘোরার পরেই ওই ঠান্ডায় দাঁতকপাটি লেগে যাওয়ার জোগাড়, আমরা দৌড় দিলাম গরম কফির সন্ধানে।
তবে বিদেশের বিশেষত্বই আলাদা। প্রচণ্ডরকম বরফ, সুদীর্ঘ বনভূমি, প্রকৃতির অকৃপণ সৌন্দর্যের মাঝে অসংখ্য বায়ো- টয়লেট বসানো মানুষের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়। সেটাই দেশ-প্রধানদের কাছে মুখ্য।
শীতে এখানে দুপুর আড়াইটের পর থেকেই অন্ধকার নামতে শুরু করে। তাই কফি পান করে মানে মানে ঘরের পানে রওনা দিলাম।
হোলমেনকোলেন-এর স্কি টাওয়ার
এই স্কি টাওয়ারটি দেখতে যাবার জন্য স্থানীয় বন্ধুরা অনেকবার বলেছিলেন। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো এবং উচ্চতম স্কি টাওয়ারটি ১৮৯২ সালে তৈরি হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে বহুবার। ১৯৫২ সাল থেকে এ জায়গাকে উইন্টার অলিম্পিকের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
খুব সুন্দর একটা স্কি মিউজিয়াম আছে উনিশশো শতক থেকে সভ্যতা আর সম্মানের ইতিহাস সাজিয়ে নিয়ে। স্লেজ, নানাধরনের চামড়ার পোশাক, হাতিয়ার, শ্বেত ভাল্লুক আর নেকড়ের চামড়া—সেগুলোও মিউজিয়ামে রাখা।
কতগুলো মেমেন্টো সংগ্রহ করে তিনতলার রেস্তোরাঁয় খেতে গেলাম। স্কি টাওয়ারের উপর থেকে অসলো শহর আর সাদা হতে থাকা আবছা ফিয়র্ডগুলো দেখে একটা স্বপ্নের জগৎ মনে হচ্ছিল।