ভ্রমণ-বাঘের খোঁজে দুই জঙ্গলে-সন্দীপ মিত্র-বসন্ত ২০২৩

সন্দীপ মিত্রের আগের ভ্রমণ-ভয়ংকর সুন্দর মার্চিসন ফলস ন্যাশনাল পার্ক

bhromonbagh (8)

বনজঙ্গলে ঘোরার একটা আনন্দ আছে। পশুপাখি, গাছগাছালি দেখা তো বটেই, কিন্তু বনের মেঠো রাস্তায় খোলা জিপে ঘুরে ঘুরে বেড়ানোটাও কম মজার নয়। দেশের বাইরে নানা জঙ্গলে ঘুরে অনেক জীবজন্তু দেখলেও বাঘ দেখা তখনও পর্যন্ত কপালে হয়ে ওঠেনি। এ ব্যাপারে যাঁরা অভিজ্ঞ তাঁরা বললেন, জিম করবেট আর রণথম্ভোর—এই দু’জায়গাতে বাঘ দেখার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই ভারতে আমাদের প্রথম বনভ্রমণ জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কে।

উঠেছিলাম বনবিভাগের ঢিকালা টুরিস্ট কমপ্লেক্সে। বনের একেবারে গভীরে এই কমপ্লেক্সে রয়েছে কয়েকটা পুরোনো বাংলো আর কিছু নতুন দোতলা পর্যটক আবাস। থাকার ব্যবস্থা স্থান অনুযায়ী যথেষ্ট ভালো। চারদিক কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। কম্পাউন্ডের মধ্যে রয়েছে খাওয়ার রেস্তোরাঁ, ক্যান্টিন এবং একটা কাঠের ডেক যেখান থেকে দেখা যায় অনেকটা নীচে হরিণদের চারণভূমি, আর তার পরেই রামগঙ্গা নদী। অন্য পাড়ে রোদ পোহাচ্ছে কয়েকটা কুমির। ইচ্ছে করলে এই ডেকের উপর বসে চেনা-অচেনা পাখির ডাক শুনে আর হরিণ দেখে অনেক সময় কাটানো যায়।

bhromonbagh (2)

সকালে বনের প্রবেশপথ থেকে প্রায় তিরিশ মাইল ভিতরে ঢিকালায় আসার সময় ঘন গাছের ফাঁক দিয়ে সত্যিই আলোকের ঝরনাধারা এসে পড়েছিল ছায়াঢাকা বনপথে। এই পথে এক হাতির পালের সঙ্গে ব্রেকফাস্ট করার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। অবশ্য নিরাপদ দূরত্ব থেকে। এটা কিন্তু সাফারির মধ্যে ধরা হয় না। আর দেখেছিলাম প্রচুর বনমোরগ, বার্কিং ডিয়ার আর চিতল হরিণ।

বেলা দশটা থেকে দুটো পর্যন্ত জঙ্গলে যাওয়া নিষেধ। তাই আবার বিকেলে গেলাম জঙ্গলে। গাইড ছাড়া সাফারিতে যাওয়া নিষেধ। এবার ড্রাইভার সুলেমান ছাড়াও সঙ্গে রয়েছে গাইড রমেশ। গাইড আমাদের জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক সম্বন্ধে কিছু তথ্য দিল আর বলল যথাসম্ভব চুপ করে থাকতে, কারণ জঙ্গলে এসে পশুপাখি না দেখতে পাওয়ার প্রধান কারণ মানুষের আওয়াজ পেলে তারা লুকিয়ে পড়ে।

জিম করবেটের যে জোনে আমাদের ঘোরার অনুমতি ছিল সেখানে একটা প্রধান পথ ছাড়াও ছিল অনেক শাখা পথ গভীর জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। এরকম একটা পথের  মধ্যে একদম বিনা নোটিশে একটা কালো-হলুদ রেখা জঙ্গলের একদিক থেকে বেরিয়ে অন্যদিকে ঢুকে গেল, আমাকে ক্যামেরা ফোকাস করার কোনও সুযোগই না দিয়ে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও আর তাকে দেখা গেল না। গাইডের পরামর্শে এবার আমরা চললাম রামগঙ্গার দিকে।

পথ আর নদীর খাতের মধ্যবর্তী জায়গাটায় ল্যান্টানা গাছের ঝোপ, কিছু বড়ো বড়ো গাছ আর কোথাও কোথাও এক মানুষ সমান উঁচু ঘাসের ঝোপ—বাঘেদের নির্বিঘ্নে রোদ পোহানোর আদর্শ জায়গা। অনেকরকম জীবজন্তু আর পাখি দেখানোর পর সুলেমান এরকমই একটা জায়গায় ইঞ্জিন বন্ধ করে দিল। আরও কয়েকটা জিপ এসে দাঁড়াল আমাদের আশেপাশে। এরকম একটা জিপ ছিল আমাদের ঠিক সামনে, একটা টি-জংশনে, নদীর দিকে ক্যামেরা তাক করে।

bhromonbagh (7)

সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, এমন সময় একটা হনুমান গাছের মগডাল থেকে ডেকে উঠল আর একই সঙ্গে শুনতে পেলাম বার্কিং ডিয়ারের ভয়ার্ত ডাক। গাইড ফিসফিস করে বলল, ঘাসের জঙ্গলে বাঘের চলাফেরা শুরু হয়েছে। সম্ভবত আমাদের দিকেই আসছে। আর তার পরেই শুনলাম সেই ভয়ংকর ডাক। পরপর কয়েকবার। বাঘের গর্জন কানে যেতেই সমস্ত জঙ্গল যেন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। গাইড আর ড্রাইভারের আশ্বাস সত্ত্বেও খোলা জিপে বসে আমাদের যা অবস্থা! কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও বাঘের আর সাড়াশব্দ নেই। তাই আমাদের ড্রাইভার গাড়ি পিছিয়ে নেবার জন্য ইঞ্জিনে স্টার্ট দিল আর সঙ্গে-সঙ্গেই আমাদের সামনে দাঁড়ানো জিপের দুই যাত্রীর বকুনি আমাদের চালককে। ওঁরা বললেন যে বাঘটা সবে ঝোপের মধ্য থেকে মুখটা বার করেছে, তাঁরা ক্যামেরার শাটার টিপবেন, ঠিক সেই সময় ইঞ্জিন স্টার্ট করায় সে আবার বনের ভিতরে ঢুকে গেল। এটা ওঁরাই কেবল দেখেছেন, কারণ ওঁদের জিপটা ছিল একেবার টি-জংশনের উপর, আর তার পরেই আমরা।

bhromonbagh (1)

যাই হোক, কিছু করার ছিল না। তাই আমরা একটু অন্য রাস্তায় গিয়ে আবার নদীতীরের ঘাসের জঙ্গলের দিকে ক্যামেরা তাক করে বসে রইলাম। তবে সেদিন আমাদের ভাগ্য ছিল ভালো। কিছুক্ষণ পরে আবার শোনা গেল সেই ডাক, কিন্তু এবার একটু দূর থেকে। আর তার পরেই সেই দৃশ্য যার জন্য এত অপেক্ষা—ঘাসের জঙ্গল যেখানে একটু পাতলা হয়েছে, সেই জায়গা দিয়ে নদীর ধারে ধারে চলেছে বিশাল এক পুরুষ রয়াল বেঙ্গল। একজায়গায় দাঁড়িয়ে সে আবার তার এলাকা চিহ্নিত করল।

bhromonbagh (11)

আমার ক্যামেরায় তাকে বন্দি করলাম ঠিকই, কিন্তু জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কে অনেকেরই একেবারে সামনে থেকে বাঘ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আমাদের সে-সুযোগ হাতে এসেও এল না। তবে জঙ্গলে বাঘের খোঁজে ঘুরে বেড়ানো, খুব কাছ থেকে বাঘের ডাক শোনা আর ডাকতে ডাকতে বাঘটা আমরা যেখানে ছিলাম সেদিকেই এগিয়ে আসছিল—এই অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে করবেট সাহেবের বাঘ শিকারের কাহিনিগুলির চেয়ে কম রোমাঞ্চকর মনে হয়নি।

বহুদূর থেকে এক ঝলক দেখে বাঘ দেখার ও ছবি তোলার শখ মেটে না। তাই একটু সুযোগ হতেই পাড়ি আর-এক বিখ্যাত ব্যাঘ্রারণ্য—রাজস্থানের রণথম্ভোরে।

করবেট আর রণথম্ভোরের জঙ্গলের চরিত্র অন্যরকম। যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হওয়ায় করবেটে জঙ্গল খুব ঘন। তুলনায় রণথম্ভোরে বৃষ্টি হয় খুবই কম। ফলে এখানকার বনভূমি অনেকটাই রুক্ষ এবং পাতলা। করবেটের মতো রণথম্ভোরে শাল, শিশু, আমলকি, মহুয়া, বাঁশের জঙ্গল নেই। এখানে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ঢোক (Dhok) গাছ। এছাড়া রয়েছে বাবুল, বট, অশ্বত্থ, নিম, গর্জন এইসব গাছ।

bhromonbagh (9)

জিম করবেটে হাতি অজস্র। কিন্তু রণথম্ভোরে হাতি নেই। এখানে আছে শ্লথ ভাল্লুক, হায়েনা, লেপার্ড, নীলগাই, চিতল হরিণ, সম্বর ও চিংকারা। আর অবশ্যই রয়াল বেঙ্গল। লেকে রয়েছে বহু কুমির।

রণথম্ভোরের সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন সওয়াই মাধোপুর। দিল্লি থেকে ভোরের ট্রেনে উঠে বেলা এগারোটা নাগাদ সেখানে নেমে আধঘণ্টার মধ্যে আমাদের হোটেলে পৌঁছে গেলাম। দুপুরের সাফারি অনলাইনে বুক করা ছিল। বেলা আড়াইটেয় আমাদের হোটেল থেকে ক্যান্টারে উঠে বিভিন্ন হোটেল থেকে অন্যান্য পর্যটকদের তুলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢুকে পড়লাম রণথম্ভোরের জঙ্গলে।

ক্যান্টার একটা খোলা ট্রাকের মতো, কুড়িজন বসতে পারে। আমার সন্দেহ ছিল এত বড়ো একটা গাড়ির আওয়াজে কোনও জন্তুজানোয়ার দেখা দেবে কি না। আমার সে সন্দেহ অমূলক প্রমাণিত হয়েছিল। এখানকার বন্যপ্রাণী জিপসি ও ক্যান্টার দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু দেখলাম মানুষের গলার আওয়াজ হরিণ, নীলগাই, হনুমান আর ময়ুর ছাড়া আর কোনও জানোয়ার পছন্দ করে না। তাই জন্তুজানোয়ার দেখতে গেলে চুপ করে থাকতে হবে।

রণথম্ভোরের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আয়তন প্রায় চারশো বর্গ কিলোমিটার, যদিও পুরো জাতীয় উদ্যানটির আয়তন এর দ্বিগুণেরও বেশি। পর্যটনের জন্য এর অতি সামান্য অংশই খোলা আছে এবং তাও দশটি জোনে ভাগ করা। প্রথম পাঁচটা জোনেই নাকি সাধারণত বাঘের দর্শন মেলে। আমাদের দুপুরের সাফারি ছিল এক নম্বর জোনে। গাইড প্রথমেই জানিয়ে দিলেন, “বাঘ দেখতে পাওয়া ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। আমরা চেষ্টার ত্রুটি রাখব না, কিন্তু আপনারা বাঘ ছাড়াও অন্য অনেক প্রাণী দেখতে পাবেন। বনের সৌন্দর্য উপভোগ করুন।”

সত্যিই আমাদের ভাগ্যে রয়াল বেঙ্গলের দর্শন ছিল না এদিন। তাই তিন ঘণ্টা বিস্তর ঘোরাঘুরি করেও সেই দুপুরে আমদের বা অন্যান্য ক্যান্টার বা জিপসিতে যাঁরা ছিলেন ওই জোনে, কারোরই ব্যাঘ্র-দর্শন হয়নি। মনের দুঃখ চেপে হরিণ, সম্বর, নীলগাই, হনুমান, কুমির আর পাখির ছবি তুলে গেলাম। পাশ দিয়ে কোনও ক্যান্টার বা জিপসি গেলেই আমরা প্রশ্ন করছিলাম—“দেখেছেন নাকি?”

আমাদের রসিক গাইড বলল, “মুখ দেখে বুঝতে পারছেন না, এরা সব ভোটে হারা পার্টি!”

মাঝে মাঝে গাড়ি থামিয়ে গাইড শোনার চেষ্টা করছিল কোনও হরিণ, হনুমান বা ময়ূরের সাবধান-বার্তা, যা বড়ো শেয়ালের উপস্থিতির নিশ্চিত প্রমাণ। কিন্তু সব চেষ্টা বিফল করে তিনি প্রচ্ছন্নই রইলেন।

সাফারির সময় শেষ হওয়ার পরে যখন আমরা বন থেকে বেরিয়ে আসছি তখন জানা গেল চার নম্বর জোনে দুটো বাঘ একটা সম্বর মেরেছে এবং বহু পর্যটক তাদের দেখার বিরল সুযোগ পেয়েছে। আমরা ভগ্ন মনোরথ হয়েই হোটেলে ফিরলাম। সান্ত্বনা এই যে পরদিন ভোরের সাফারি বাকি আছে এবং সেটা হবে দু-নম্বর জোনে। কাজেই মোবাইলে ভোর পাঁচটায় অ্যালার্ম দিয়ে শুয়ে পড়লাম। সকাল ছ’টায় বের হতে হবে।

শীতের সকাল ছ’টায় একটু অন্ধকার। ঠিক সময়ে আমাদের দ্বিতীয় সাফারি শুরু হল। ধীরে ধীরে দিনের আলো ফুটল আর বনের বাসিন্দারা তাদের প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছে দেখলাম। এবার গাইড বদলে গেছে, সহযাত্রীরাও নতুন। তাঁরা তো একটা ময়ূর বা কিছু চিতল হরিণ দেখলেই বলছেন, ‘গাড়ি থামাও।’ আর ফটাফট সেলফি তুলছেন ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করার জন্য। গাইডবাবাজিও থেকে-থেকেই হেঁকে উঠছেন ‘পিকক, স্পটেড ডিয়ার, মঙ্কি’ বলে, আর ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিচ্ছে সেলফি বাহিনীকে সুযোগ দেওয়ার জন্য।

গাইডের এরকম করার কারণ ছিল। কোনো-কোনো লেট লতিফ যাত্রীকে তোলার জন্য আমাদের ক্যান্টারের অনেক সময় নষ্ট হয়। অন্য কিছু যাত্রী তাই নিয়ে গাইডের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু অম্লমিশ্রিত মধুর বাক্য প্রয়োগ করেন। তাতেই তাঁর মেজাজ যায় বিগড়ে আর সেজন্যই আমাদের উপর এই প্রতিশোধ।

শেষ পর্যন্ত আমি উঠে গিয়ে গাইডকে ফিসফিস করে বললাম যে ময়ূর আর হরিণ অনেক দেখেছি, আর রাগ না করে সে যেন আমাদের আসল জিনিস দেখানোর চেষ্টা করে। তার প্রশ্ন—“কুছ বোনাস মিলেগা?”

হ্যাঁ বলা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু কোথায় বাঘ!

আমাদের এবং অন্যান্য গাড়িগুলোও হন্যে হয়ে সম্ভব-অসম্ভব সব জায়গায়—বিশেষ করে জলাগুলোর আশেপাশে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে ফেরার পথ ধরল। আমরাও হতাশ হয়ে চুপ করে বসে। এমনি সময় হঠাৎ শোনা গেল হনুমানের ‘কল’ আর ময়ূরের সাবধানী ডাক। বোঝা গেল কাছাকাছি কোথাও বাঘের চলাফেরা শুরু হয়েছে। আরও কয়েকটা জিপসি ও ক্যান্টার আমাদের আশেপাশে দাঁড়িয়ে গেল। সবাই চুপ করে করে দু-দিকের ঝোপঝাড়ের দিকে তাকিয়ে। একটা হরিণ দেখি ঘাস খাওয়া বন্ধ করে কান খাড়া করে আমাদের কনভয়ের দিকে তাকিয়ে।

যে পথ দিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম তার ডান পাশে কিছু গাছপালা, আর তারপরেই একটা অগভীর পাহাড়ি ঝরনা বয়ে চলেছে। আমাদের ড্রাইভার ও গাইড প্রায় একসঙ্গে বলে উঠল, “ডাহিনে দেখিয়ে।”

আমি বসে ছিলাম ডানদিকেই। গাছের ফাঁক দিয়ে দেখি মাত্র কয়েক হাত দূরে বিশাল এক রয়াল বেঙ্গল জলের উপর পেট ডুবিয়ে বসে চকচক করে জল খাচ্ছে আর চোখ তুলে আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। তার বিশাল মাথাটা যেন আমার লেন্সে ধরা দেওয়ারই অপেক্ষায়। হলুদের উপর কালো ডোরা, বিশাল চেহারা আর অদ্ভুত সুন্দর সবুজ-হলুদ চোখ। আফ্রিকায় সিংহ দেখেছি। কিন্তু এই রয়াল বেঙ্গলের মতো সৌষ্ঠব তার নয়। আমার মতে রয়াল বেঙ্গল টাইগারই বনের রাজা হওয়ার যোগ্য।

bhromonbagh (5)

এরপর আমি আর ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডার থেকে চোখ সরাইনি। ড্রাইভার গাড়িটা একটু সামনে পিছনে করে আমাদের দেখার সুযোগ করে দিচ্ছিল আর আমি শাটার টিপে চলেছিলাম। কী উঠছে, আদৌ উঠছে কি না এসব ভাবার সময় ছিল না। বোধহয় মিনিট সাতেক পরে মহারাজ উঠে দাঁড়ালেন এবং ধীরে ধীরে বনের গভীরে চলে গেলেন। পরে জেনেছিলাম, বনবিভাগের খাতায় এই পুরুষ বাঘটির পরিচয় টি-১০১।

ফেরার পথে আমাদের মুখে সত্যিই শক্ত পরীক্ষায় পাশ করার আনন্দ। অন্য গাড়ির যাত্রীরা বাঘ দেখেছি কি না জিজ্ঞাসা করলেই সমস্বরে সবাই বলছিলাম, “হ্যাঁ, দেখেছি।”

হোটেলে নামাবার সময় গাইড কিন্তু বোনাসের কথাটা মনে করিয়ে দিতে ভোলেনি।

ভ্রমণ সব লেখা একত্রে

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s