রত্না চক্রবর্তীর আগের ছড়া- অভিমান
সেই মেয়েটা
তোমরাও চেনো তাকে,
এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়ায়,
তোমাদেরই আশেপাশে।
ফোকলা দাঁত আর কোঁচকানো কালো চুল
ফোলা ফোলা গালে টোল খাওয়া হাসি
কালো কুচকুচে চোখদুটি টুলটুল।
কখনো-বা ডুরে শাড়ি পরে
ঘোমটাটি টেনে গ্রাম্য বধূর বেশে
কলসি কাখেতে হেঁটে চলে যায় কাঁসাই নদীর দেশে।
সেই যে সেবার পুতুল-খোকার জন্মদিনে,
কত লোক এল গেল।
কুকুরছানা, বেড়ালছানারা
বাদ গেল না কেউ।
আরও কারা এসে ফিরে গিয়েছিল,
কতজন কে-বা জানে।
আজ যেন সব ঝাপসা হয়েছে, কিছুই পড়ে না মনে।
একবার সে যে কী কাণ্ডটাই হল
পাশের বাড়ির কমলির ছোটো মেয়ে পুতুলের সাথে
‘সেই মেয়েটা’র খোকার বিয়েটা হল,
ঢাকঢোল আর সানাই বাজল কত
আরও কত কী যে হল, কে-বা খোঁজ রাখে তার।
বার বার করে সেই দিনগুলো ফিরে আসে না তো আর
আজ সেই মেয়েটাই কালের প্রবাহে অথর্ব গৃহবধূ।
বসে বসে একলা ঘরের কোণে প্রদীপখানি জ্বেলে
হিজিবিজি কত কী যে ভাবে
রং চটে যাওয়া কত কী যে পড়ে মনে।
সেদিনের সেই পুতুল-খোকারা,
মানুষ হয়েছে আজ।
কত ব্যস্ততা দেশ ও বিদেশে,
ঘুরে বেড়ানোই কাজ।
বৃদ্ধার চোখ জলে ভরে ওঠে,
ভাবে বসে একা একা
এর চেয়ে ছিল ঢের বেশি ভালো
মাটির পুতুল-খোকা।
জয়ঢাকের ছড়া লাইব্রেরি এই লিংকে