আলোর পানে প্রাণের চলা-আগের পর্ব
[এই দেশের বহুত্বের স্বর বহুধাবিস্তৃত। নানা ভাষা, ধর্ম, আচারের বে-নি-আ-স-হ-ক-লা’র মতো এই দেশের সঙ্গীতের বহতা ইতিহাসের ধারাও নানা বাঁকে বাঁকে নিজেকে পুনরাবিষ্কার করেছে। জয়ঢাকের এই প্রবন্ধমালায় আমরা সেই বিরাট শ্রুতির ধারার কয়েকজন পুরোধার জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত বয়ান করব]
দ্বিতীয় পর্ব
ওস্তাদ (বাবা) আলাউদ্দিন খান
ভারতীয় মার্গসঙ্গীতে মিঞা তানসেন এক উজ্জ্বল নাম। বিভিন্ন ধারার ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীতরসিক সবাই এই নামকে স্মরণ করেন পরম শ্রদ্ধাভরে। শোনা যায় তানসেনের বংশের এক সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ কাশেম আলী খাঁ আগরতলা রাজদরবারে সভাবাদক ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। সেসময় ত্রিপুরার জেলা শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কিছুদূরে শিবপুর গ্রামের এক অধিবাসী সবদর হোসেন খাঁ, গ্রামের লোক যাকে স্নেহভরে ডাকতো সদু খাঁ বলে, ওস্তাদ কাশেম খানের কাছে রীতিমতো গান্ডা বেঁধে তাঁর শিষ্যত্ব নেন। সদু খানের পরিবারের একটা বিরাট ঐতিহ্য ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে ইংরেজের শোষণের বিরূদ্ধে এক বিদ্রোহ দেখা দেয়, ইতিহাসে যা পরিচিত হয়ে আছে সন্ন্যাসী – ফকির বিদ্রোহ হিসেবে। এই বিদ্রোহের উজ্জ্বল মুখ ছিলেন এই বংশের এক পূর্বপুরুষ, সিরাজুদ্দিন খাঁ। সিরাজুদ্দিনের উত্তরপুরুষ সদু খান তাঁর গুরু কাশেম খাঁর কাছে নিষ্ঠাভরে সঙ্গীত শিখতে শুরু করেন। চলল তানসেন প্রবর্তিত সেনীয়া ঘরানায় ভারতীয় রাগমালায় বিভিন্ন স্বর আর শ্রুতি শিক্ষার পালা। এই সাঙ্গীতিক ঐতিহ্য এই বংশের সাথে আরো গভীরভাবে যোগ হয়েছে পরবর্তী অনেক প্রজন্মের মধ্যে দিয়ে। সদু খানের তৃতীয় সন্তান আলম বা আলাউদ্দিন। ছোটবেলা থেকেই নদীর কলতান, পাখীর ডাক শুনে উদাস হয়ে উঠতো কিশোর আলম। শিবপুরের আকাশ বাতাস বা সেখান থেকে কিছু দূরে গোকর্ণে তিতাস নদীর বয়ে চলার সুর তাঁকে আত্মহারা করে দেয়। দাদা আফতাবউদ্দিন, যিনি ফকির আফতাবউদ্দিন নামেই প্রসিদ্ধ ছিলেন, তিনিই আলমের প্রথম গুরু। তাঁর
কাছে সঙ্গীত শিক্ষার হাতেখড়ি ভাটিয়ালী, মুর্শিদি প্রভৃতি বিভিন্ন গান শেখার মধ্যে দিয়ে, এছাড়া ছিল দোতারা। এই সুরের টান তাঁকে ঘরে থাকতে দিল না। জগৎ জুড়ে যেন সুরের আলোর পানে এক গভীর প্রাণের চলা বয়ে চলেছে। দাদার শিক্ষা বুকে নিয়ে সেই সাচ্চা সুরের সন্ধানে ঘরছাড়া হলেন আলাউদ্দিন খান। গুরু খুঁজতে খুঁজতে কলকাতার রাস্তায় কর্পোরেশনের কলের জল খেয়ে দিনের পর দিন কাটাতে হয়েছিল সেই অভুক্ত কিশোরকে। শেষে বিখ্যাত ধ্রুপদীয়া গোপালকৃষ্ণ ভট্টাচার্য বা নুলো গোপালের মধ্যে দিয়ে সেই সুরের গুরুর সন্ধান পেলেন তিনি। সাত বছর ধরে নুলো গোপালের কাছে চলল স্বরের সাধনা। ভারতীয় রাগ সঙ্গীতের ভেতরে এক অদেখা ঐশ্বর্যের সন্ধান পেলেন তিনি। কিন্তু গুরুর আকস্মিক মৃত্যুর পরে আবার সেই অস্থিরতা, নিজের ভেতরে আবার সেই আকুল করা ডাক শুনতে পাচ্ছিলেন তিনি। এই পর্বে অনেক গুরুর কাছে তালিম পেয়েছিলেন তিনি। শুধু ভারতীয় মার্গ সঙ্গীত নয় এমনকি পাশ্চাত্যের সঙ্গীতের নানা বাদনশৈলী তিনি শিখেছিলেন নিজের আগ্রহে। প্রথমে মিঃ লোবো বলে এক গোয়ানীজ বেহালা বাদকের কাছে গিয়ে পাশ্চাত্যমতে বেহালা বাজানো শিখতে শুরু করেন। লোবো সাহেব মুগ্ধ হয়ে গেছিলেন তাঁর এই ছাত্রের দ্রুত আত্মস্থ করার ক্ষমতা দেখে। বেহালা যন্ত্রটা আবার ভারতীয় রাগ সঙ্গীতের অনুষঙ্গে একটা নিজস্ব জায়গা নিয়ে নিয়েছে বহুদিন আগে থেকেই। সেই ভারতীয় পদ্ধতিতে বেহালা শেখার জন্য তিনি গেছিলেন সেসময়ের বিখ্যাত বেহালাবাদক শ্রীযুক্ত অমর দাশের কাছে। এমনকি তালবাদ্যে পরাঙ্গম হওয়ার জন্য মৃদঙ্গবাদক নন্দবাবুর কাছে পাখোয়াজ, মৃদঙ্গ চর্চা করেছিলেন আল্লাউদ্দিন। হাজারী ওস্তাদের কাছে গিয়ে শিখেছিলেন সানাই। শেষে স্বামী বিবেকানন্দের এক আত্মীয় অমৃতলাল ওরফে হাবু দত্তের কাছে ক্ল্যারিওনেট, ম্যান্ডোলিন, পিকোলো, ব্যাঞ্জো ইত্যাদি নানা দেশি এবং বিদেশি যন্ত্রে পারদর্শী হয়ে গিরিশ ঘোষের নাটকের দলে বাদক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। এর মধ্যেই আবার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদার বাড়িতে ওস্তাদ আহমদ আলী খাঁর কাছে চলেছে সঙ্গীতশিক্ষা। কিন্তু সুরের রাজ্যে আরো গভীর পথচলা যেন ছিল বাকী।
[সরোদে বাবা আলাউদ্দিন খানের বাজানো ‘বসন্ত্’ রাগ]
সেনীয়া ঘরের সাথে এই বংশের যে সম্পর্ক শুরু হয়েছিল সবদর হোসেন খানের মধ্যে দিয়ে সেই সুরের মন্দাকিনী আরো গভীর অলকানন্দার সাথে মেশার জন্য প্রয়োজন ছিল ওস্তাদ ওয়াজির খানের মতো এক রূদ্রপ্রয়াগের যিনি সেইসময় রামপুর স্টেটের সভাবাদক এবং খোদ রাজার সঙ্গীত গুরু ছিলেন। ওয়াজির খান সম্পর্কে ছিলেন ওস্তাদ কাশেম আলী খানের ভাগ্নে। অনেক সাধ্য সাধনার পর কিছুটা অনিচ্ছাতেই তিনি যুবক আলাউদ্দিনকে শেখাতে শুরু করেন। এর আগে নাকি ওয়াজির খানের কাছে সঙ্গীত শিক্ষার গভীর আগ্রহে বাবা আলাউদ্দিন তাঁর ঘোড়ার গাড়ির চাকার নীচে পর্যন্ত ঝাঁপিয়ে পড়তে গেছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই ওয়াজির খান বুঝতে পারেন যে মিঞা তানসেনের ঘরের সুরের ধারা নিজের গভীরে নিয়ে নেয়ার করার মতো গুণ তাঁর যে একমাত্র ছাত্রের মধ্যে আছে সে এই যুবক আলাউদ্দিন। এরপর থেকেই গুরু ওয়াজির খানের উজাড় করা শিক্ষায় তিনি ধ্রুপদ নির্ভর সেনীয়া ঘরের সাঙ্গীতিক বৈশিষ্ট্য আত্মস্থ করেন। মূলতঃ সরোদের মধ্যে দিয়েই চলেছিল এই শিক্ষা। কিন্তু শুধুমাত্র একজন বড়ো সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাসে এক দিকচিহ্ন নন তিনি। ওস্তাদ আলাউদ্দিন থেকে বাবা আলাউদ্দিনের উত্তরণ আর এক গভীর ইতিহাস। ১৯১৮ সালে দেশীয় রাজ্য মাইহার রাজদরবারে সঙ্গীত গুরুর আসন লাভ করেন তিনি। সেই সময় মাইহার এবং কাছাকাছি অঞ্চলে এক ভয়াল ভূমিকম্প হয় যা আশেপাশে অনেক গ্রামের অধিবাসীদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাঁদের হতভাগ্য অনাথ সন্তানদের দিকে চেয়ে এক গভীর মমতায় তাঁদের বুকে তুলে নেন বাবা আলাউদ্দিন আর তাঁর সাধনার যোগ্য দোসর স্ত্রী মদিনা বেগম যিনি শিষ্য-শিষ্যাদের কাছে ছিলেন স্বয়ং ‘মা’। ওই মাতৃপিতৃহারা শিশুদের বিভিন্ন বাদযন্ত্র শিখিয়ে বাবা তাঁদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন তাঁর সাধের ‘মাইহার ব্যান্ড’ যা প্রাচ্য পাশ্চাত্যের সঙ্গীতের মিলনে এক বিরাট পরীক্ষা ছিল সেই সময়। শুধু এই নতুন সুর খোঁজাই নয় এমনকি মাইহার ব্যান্ডের জন্য তিনি নানারকম নতুন বাদনযন্ত্র তৈরি করেছিলেন। সেতার-ব্যাঞ্জো, নলতরঙ্গ প্রভৃতি নতুন যন্ত্র ছিল এই পরীক্ষারই ফসল। সরোদ তাঁর মূল বাদন যন্ত্র হলেও বীণা, বেহালা, সুরশৃংগার, রবাব, চন্দ্রসারং, বাঁশী, পিকোলো, ব্যাঞ্জো, ক্ল্যারিওনেট, সানাই, কর্ণেট ছাড়াও বিভিন্ন তালবাদ্য যেমন পাখোয়াজ, মৃদঙ্গ, ঢোল, খোল, তবলা, নাকারা, টিকারা প্রভৃতি বাদনে তিনি পারঙ্গম ছিলেন। শিষ্যদের কাছ থেকে বাবার অসাধারণ কন্ঠেরও সাক্ষ্য পাওয়া যায়। বিভিন্ন বাদ্যের সুরের মধ্যে যে নিজস্ব মূর্চ্ছনা আছে তা নিয়ে তিনি গভীর নিরীক্ষা করেছিলেন। এ নিয়ে একটা বিখ্যাত ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে এখানে। ১৯৩০ সালে দক্ষিণ ভারতের এক প্রসিদ্ধ ঘট-বাদক মাইহারে আসেন। তিনি সেই আসরে অনেক ধরণের তালে তাঁর নিপুন বাদনশৈলীর পরিচয় দেন। তাঁর তালবাদ্য পরিবেশনের পর মহারাজের অনুরোধে ‘ঘট-বাদ্যম’ বাজিয়ে শোনান বাবা আলাউদ্দিন। অনেক কঠিন তাল আর লয়ে ছন্দের নানা কারুকার্য করে তিনি হতবাক করে দিয়েছিলেন সেই ঘটবাদক সহ উপস্থিত শ্রোতাদের।
বাবা ছিলেন বাহ্যত কঠোর কিন্তু ভেতরে আসলে এক শিশুর মতোই সরল। সঙ্গীত শিক্ষার সময় যেন শিষ্য শিষ্যাদের বিন্দুমাত্র শৈথিল্য না দেখা দেয় তাঁর প্রতি ওঁর ছিল কড়া নজর। আজ এই ধর্ম নিয়ে হানাহানির যুগে ভাবা যায় না কি উদার হৃদয়ে অন্য সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন তিনি, নিজে এক নিষ্ঠাবান মুসলমান হয়েও। মাইহার থেকে কিছুদূরে ত্রিকূট পাহাড়ের ওপর অবস্থিত শারদা দেবীর মন্দির (যা এক ‘সতী পীঠ’ বলে কথিত)। প্রায় ১০৬৩ সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় সেই মন্দিরে। বাবা আলাউদ্দিন প্রায় নিয়মিত যেতেন সেই মন্দিরে দেবীর আরাধনা করার জন্য।
[বেহালায় বাবার বাজানো কীর্তন]
পরিবার পরিজন আর অসংখ্য শিষ্যদের জন্য বাবার গভীর মমত্ববোধ ছিল সদা জাগরূক। অসংখ্য চিঠির ছত্রে ছত্রে তার আভাস ছড়িয়ে আছে। ইংলন্ডের ডেভনশায়ার থেকে ভাইকে লেখা তাঁর চিঠির অংশ বিশেষ উল্লেখ করা যেতে পারে এই প্রসঙ্গে যখন তিনি সেই সময় ভাইয়ের বালক পুত্র বাহাদুর খানের শিক্ষা নিয়ে তাঁর ভাবনা জানিয়েছিলেন যিনি ছিলেন বাবার বিশেষ স্নেহের পাত্র।
“ … শ্রীমান বাহাদুর হোসেনকে গান শিক্ষা দিও। আমি তার জন্য বই লেখা আরম্ভ করিয়াছি। লেখা শেষ হইলে পাঠাইব। পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গানও শিক্ষা দিবে। মারপিট করিবে না। তাদের খেলার সঙ্গে যেন লেখাপড়া ও সঙ্গীত সব চলে এই রকম শিক্ষা দিতে হইবে। …”
[ঋত্বিক ঘটক, হরিসাধন দাশগুপ্ত পরিচালিত তথ্যচিত্র বাবা]
বাবা আলাউদ্দিন সেনীয়া ঘরের সপ্তসুরের ধারাকে আরো সমৃদ্ধ করেছিলেন মাঁঝ-খাম্বাজ, দূর্গেশ্বরী, হেমন্ত, হেম – বেহাগ, প্রভাতকেলি সহ আরো অসংখ্য নতুন রাগের সৃষ্টি করে। এই ঐতিহ্য এখন সঙ্গীতের মাইহার-সেনিয়া ঘরানা বলে সারা পৃথিবীতে খ্যাত হয়ে আছে। যার সাক্ষর ছড়িয়ে আছে তিমিরবরণ ভট্টাচার্য, নিজের সন্তান আলি আকবর খান এবং অন্নপূর্ণা দেবী, ভ্রাতুষ্পুত্র বাহাদুর খান, রবিশঙ্কর, পান্নালাল ঘোষ, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, সরণ রানী সহ আরো অসংখ্য ছাত্রছাত্রীদের বাদন শৈলী বা বাজের মধ্যে দিয়ে যে কলাবন্তেরা নিজেরাই ভারতীয় সঙ্গীতের এক এক অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্র। বাবা আলাউদ্দিনের উজ্জ্বল সাঙ্গীতিক প্রতিভাকে সুরের ভুবন স্বীকৃতি দিয়েছিল করজোড়ে। ১৯৩৫ সালে বিশ্ববিখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণের সময় ইংল্যান্ডের রানী ‘সুরসম্র্রাট’ উপাধি দেন ওঁকে। এই প্রসঙ্গে ঠিক ওই বছরেই ছোটভাই আয়েত আলী খানকে লেখা একটা চিঠির অংশ তুলে দেয়ায় লোভ সামলানো যাচ্ছে না।
“… মে মাসের পাঁচ (৫) তারিখে প্যারিস ও আমেরিকার কয়েকটি মেয়ে দিন তিনটার সময় বাজনা শুনিতে আসিয়াছিল হোটেলে। তাঁহারা এখানকার নর্তকী ও গায়িকা। প্রথমে আমি ভাবিয়াছিলাম তাঁহারা কি আমার বাজনা পছন্দ করিবে? আমি অবহেলার ভাব লইয়া ‘মুলতানী’ বাজাইতে আরম্ভ করি। বিলম্বিতের পাঁচ-সাতখানা তান বাজাইবার পর তাঁহাদের দিকে চাহিয়া দেখি সকলের চোখ হইতে জল পড়িতেছে। তখনই আমার চৈতন্য হইল আমি কি অন্যায় করিতেছি, তারপর মন দৃঢ় করিয়া এক ঘণ্টা ‘মুলতানী’ শুনাইলাম। যতক্ষণ বাজাইয়াছিলাম ততক্ষণ তাঁহাদের চোখের জল পড়া বন্ধ হয় নাই। তারপর ‘ভিমপলাশ্রী’ ও ‘পিলু’ বাজাইয়া প্রায় তিন ঘণ্টা পর বাজনা শেষ করি। তাঁহাদের কান্না তখনও বন্ধ হয় নাই। বুঝিলাম তাহারাই সত্যিকারের সমঝদার – সঙ্গীতের পরম ভক্ত। যাইবার সময় গুরুজনকে যেইভাবে ভক্তি করে সেইরূপ করিয়া বলিয়া গেলঃ ‘আমাদের মৃতদেহে প্রাণ দান করিলেন। জীবনে কখনও ভুলিব না। দয়া করিয়া আর একদিন শুনাইবেন’।
ভালোবাসা নিও।
ইতি
তোমার দাদা আলাউদ্দিন।”
এই চিঠি প্রমান করে সুরের জগতে এই পৃথিবীর সত্যিকারের কুটুম্বিতার কথা। প্রকৃত সাধক বাবা আলাউদ্দিন খান যার সন্ধান পেয়েছিলেন অন্তরের গভীর থেকে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সাম্মানিক রাষ্ট্রীয় খেতাব পদ্মভূষণ ছাড়াও পদ্মবিভূষণ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশীকোত্তমসহ দিল্লি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি লাভ করেন সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি। ১৯৭২ সালে তাঁকে হারিয়েছি আমরা। কিন্তু ওই বিরাট সঙ্গীত বৃক্ষের ছায়া যেন আজও সঙ্গীতসাধক, সঙ্গীতপ্রেমী সবারই সপ্তসুরের আশ্রয় হয়ে পথ নির্দেশ করে যাচ্ছে।
চলবে
গ্রাফিক্স্- ইন্দ্রশেখর