সুরঢাক আগের পর্বগুলো
আমাদের যখন ভারতীয়(উত্তর) উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের দশটি ঠাটের সিলসিলা চলছিল, তখন এক জয়ঢাকির ইচ্ছে হয়েছিল গাউতি রাগ নিয়ে আলোচনার। গতবার আমাদের ঠাট পর্ব শেষ হওয়ায় এবার একটু বেলাইনে গিয়ে হোক তাহলে গাউতি।
খমাজ ঠাটের (নি স্বরটি ছাড়া বাকী স্বরগুলি শুদ্ধ) এই রাগটি বেশ আকর্ষক হলেও তেমন প্রচলিত বা সেই অর্থে মূল ধারার রাগ নয়। হয়ত একটু সঙ্কীর্ণ রাগ বলেই কারণ গাউতির পরিবেশনায় আশেপাশের বেশ কিছু রাগ কে এড়িয়ে চলতে একটু মুন্সিয়ানা দরকার। কেউ কেউ রাগটিকে ভীম রাগ ও বলেন। তবে ভীম রাগে উত্তরাঙ্গে (অর্থাত চড়ার সা থেকে আরও চড়ার স্বরস্হানে) বিবাদী স্বর হিসেবে কোমল গা লাগানো হয়। এই ভীম রাগ বা গাউতি আবার কাফী ঠাটের ভীম রাগের সাথে গুলিয়ে ফেললে চলবে না৷ কাফী ঠাটের ভীম রাগে গাউতির মত একই স্বর ব্যবহার হলেও মুখ্য অঙ্গ হল-
আর খমাজ ঠাটের গাউতি বা ভীম রাগের মুখ্য অঙ্গ –
খমাজ ঠাটের রাগ হলেও গাউতিতে খমাজের রাগাঙ্গ, বিশেষ করে ‘ধ-ম-গ’ এই স্বরসঙ্গতি এড়িয়ে চলতে হবে। কলাবতী বা জনসম্মোহিনী রাগে গাউতির বিশেষত্ব বহনকারী স্বরসঙ্গতি ব্যবহার করা হয় না।
বাদী স্বর – সা
সম্বাদী স্বর – প
রস – মধুর, শৃঙ্গার, ভক্তি
সময় – তৃতীয় প্রহর (দুপুর ১২ -৩)
জাতি -ঔড়ব-সম্পূর্ণ
চলন – বক্র
গাউতি রাগের ছায়া আছে এরকম কয়েকটি জনপ্রিয় গান -জীবন মে পিয়ে তের সাথ রহে (গুঞ্জ উঠি সেহনাই), বাত মেরি শুনিয়ে তো জরা (কুছ না কহো ছায়াছবির), এক সাথী ঔর ভি থা (এল ও সি কারগিল)।
ইউটিউব লিঙ্ক –
এর প্রথম অংশে ত্রিতাল গৎ, কয়েকটি এগারো মাত্রার তান আর রাগের চলন DAW সফ্টওয়্যার এ বাজিয়ে দেখানো আছে। ষোল মাত্রার চলনগুলি (ইউটিউব ভিডিওটির মোটামুটি দ্বিতীয় মিনিট থেকে) অভ্যাস করলে রাগের রূপটি পরিষ্কার হবে।