টাইম মেশিন নিউগেট ক্যালেন্ডার টমাস ওয়েইন অনুঃ ইন্দ্রশেখর শীত ২০১৮

নিউগেট ক্যালেন্ডার আগের পর্বগুলো

 টমাস ওয়েইন

বিশ বছর বাদে, বিবেকের দংশনে সে নিজের নরহত্যার পাপ স্বীকার করে মৃত্যুদণ্ডকে বরণ করে নিয়েছিল। রানি এলিজাবেথের আমলে তার ফাঁসি হয়

টমাস ওয়েইনের জন্ম সাফোক-এর ইপ্‌স্‌উইচ-এ। যদ্দূর জানা যায়, পনেরো-ষোলো বছর পর্যন্ত সে সেখানেই বড়ো হয়েছিল। তারপর টমাস সমুদ্রে চলে যায় নাবিকের কাজ নিয়ে। এরপর বছর-আষ্টেক সমুদ্রে কাটিয়ে যখন সে শেষমেষ লন্ডনে এসে বাসা করল ততদিনে রাজ্যের বদস্বভাব তাকে জুড়ে বসেছে। হল্লাফুর্তি করে তার জীবন কাটে। বিলাসব্যসনে বেজায় লোভ। আর তার কড়ি জোটাবার জন্য হেন অপকর্ম নেই যা সে করতে নারাজ।

তবে যে কাজটা তার সবচেয়ে ভালো আসত তা হল লোকের বাড়িতে চুরি। ক্ষুরধার বুদ্ধি, তীক্ষ্ণ নজর আর সাফ হাতের কল্যানে অতএব দু’এক বছরের মধ্যেই সে চুরিশিল্পে লন্ডনের একজন অগ্রগণ্য শিল্পীর আসনে পৌঁছে গেল।

তবে ছোটোখাটো মানুষজনের বাড়িতে চুরি করে তার তৃপ্তি ছিল না। অতএব একবার সে খোদ মহারানি এলিজাবেথের হোয়াইট হল প্যালেসে হাত বাড়াল। পাহারাদারদের চোখে ধুলো দিয়ে সেখান থেকে সে-যাত্রা সে প্রায় চারশো পাউন্ড দামের বাসনকোশন চুরি করে হাওয়া হয়ে যায়।

তবে রানির বাড়ি চুরি তো আর সহজ কথা নয়! অতএব দেশের তাবড় আইনরক্ষকরা তার পেছনে লাগলেন। ধরা পড়ে গেল টমাস। এবারে তার ঠাঁই হল নিউগেট-এর জেল-এ।

তবে কপাল বেজায় ভালো ছিল তার। জেলে যাবার কিছুদিনের মধ্যেই মহারানি কী এক উপলক্ষে বন্দিদের ক্ষমাটমা করে দিয়েছিলেন। তার কল্যানে রাজদ্রোহ, নরহত্যা আর ওইজাতের কিছু ভয়ঙ্কর অপরাধের অপরাধীরা বাদে সবাই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায় সে-যাত্রা।

তবে জাত অপরাধীর স্বভাব ও-সব সাজাটাজা পেয়ে মোটেই পালটায় না। অতএব জেলের বাইরে এসেই ওয়েইন আবার তার পুরোনো পথ ধরল। আর ওই করেই , কিছুদিন বাদে এমন বিপদে সে পড়ল যে ভয় হল, ফের না জেলে গিয়ে ঢুকতে হয়।

উপায়ন্তর না দেখে ওয়েইন অতএব কিছুদিনের জন্য গা-ঢাকা দেবার রাস্তা দেখল। সালিসবেরির আর্ল-এর রান্নাঘরে বাসন ধোয়ার কাজে গিয়ে লাগল সে।

তবে কথায় বলে কয়লা ধুলো তার ময়লা যায় না। কাজেই এখানে এসেও কিছুদিনের মধ্যেই হাত সুড়সুড় করতে শুরু করে দিল ওয়েইনের। তবে রান্নাঘরের বাসন ধোবার চাকরের তো আর বাড়ির ভেতরে যাবার উপায় নেই!

তাহলে কাজটা হবে কেমন করে? ভেবেচিন্তে একটা বুদ্ধি বের করল ওয়েইন। আর্ল-এর গিন্নির এক সহচরীর সঙ্গে বেশ একটু ভাবসাব জমাবার চেষ্টা শুরু করল সে। যদি ওই পথে বাড়ির ভেতরে ঢোকা যায়।

একটা ঠিকে চাকরের এহেন সাহস দেখে সহচরী তো হতবাক। বেজায় রেগে গিয়ে সে একদিন যা নয় তাই করে হেনস্থা করল ওয়েইনকে।

তাইতে ওয়েইনের মাথায় রক্ত চড়ে গেল। চুরিটুরির চিন্তা মাথা থেকে ঘুচে গেল তার। আগে এই অপমানের বদলা তাকে নিতেই হবে। এরপর একদিন রাত্রে আর্লের গিন্নি শুয়ে পড়তে তার সহচরী যেই না বাইরে পা দিয়েছে ওয়েইন কোত্থেকে এসে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে বেদম ঠ্যাঙানি দিয়ে দিল একচোট।

মার খেয়ে সহচরী তো শয্যাশায়ী হলেন। পরদিন আর্লের কানে ব্যাপারটা উঠতে তিনি সব শুনেটুনে রায় দিলেন, গাড়োয়ানকে দিয়ে আচ্ছা করে চাবকাও ব্যাটা শয়তানকে। সাজা কার্যকরী করা হল প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই। তারপর আর্ল ঘোষণা করলেন, একদিনের পিটুনিতে ওয়েইনের মত বজ্জাতের যথেষ্ট শিক্ষা হবে না। অতএব এরপর থেকে একমাস ধরে সপ্তাহে একবার করে ওয়েইনকে চাবকানো হবে খুঁটিতে বেঁধে।

ওয়েইনের অবশ্য এমন শাস্তি মেনে নিয়ে সে-বাড়িতে আর থাকবার ইচ্ছে ছিল না। অতএব সে পত্রপাঠ আর্লের বাড়ি থেকে পোঁটলাপুঁটুলি বেঁধে নিয়ে বিদেয় নেবে ঠিক করল।

তবে রাগটা সে পুষেই রেখেছিল মনের ভেতর। তাই যাবার আগে, যে গাড়োয়ান তাকে চাবকেছিল, তার বাক্স ভেঙে সেখানে জমা করা ন’পাউন্ড, হেড রাঁধুনির বাক্স ভেঙে পনেরো পাউন্ড, আর্লের একটা রুপোর থালা, আর সহচরীর ঘর থেকে তার সব ভালো ভালো জামাকাপড় সাফ করে নিয়ে গিয়েছিল।

সে-সময় ইংল্যাণ্ডের সরাইখানাগুলোতে অত পাহারার কড়াকড়ি ছিল না। ওয়েইন অতএব সেইখানেই তার নতুন পেশা শুরু করল। মাঝেমধ্যেই দড়ি, পাগড়িতে কুলি সেজে সে একেকটা সেরা সরাইখানায় হানা দেয়, তারপর সেখানে কোনো মুসাফিরের মোটাসোটা পুঁটুলি নজরে এলে সেইটেকে মাথায় চাপিয়ে দড়িদড়া দিয়ে বেঁধে নিয়ে সটান হাঁটা দেয়।

সরাইয়ের চাকরবাকরদের এতে সন্দেহ হত না। সবাই ভাবত, কুলি বোধায় কোনো মুসাফিরের মালপত্র মাথায় চাপিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে চলেছে। এইভাবে প্রায় দু’বছর সে বিনা ঝামেলায় তার ব্যাবসা চালিয়ে গেল। তদ্দিনে তার ঝুলিতে প্রায় দুশো পাউন্ড জমেছে।

বলা বাহুল্য সে-টাকা মেটাতে হয়েছিল সরাইদের অন্য কুলিদের, মাল হারাবার জরিমানা মিটিয়ে। ফলে আস্তে আস্তে তারা সতর্ক হচ্ছিল। প্রায় সব সরাইখানার কুলিদের এইভাবে চোখকান খুলে যাওয়ায় ওয়েইনের ব্যাবসায় ভাঁটা পড়ল। তাই এবারে অন্য রাস্তায় আয়রোজগারের পথ দেখবার কথা ভাবতে হচ্ছিল ওয়েইনকে।

একদিন বিকেলবেলা এক ব্যবসায়ীর বাড়ির পাশ দিয়ে যেতে যেতে সে শোনে বাড়ির কর্তা বের হতে হতে তার গিন্নিকে বলছে, সে ঘন্টা পাঁচছয় বাদে বাড়ি ফিরবে। শুনেই ওয়েইনের মাথায় একটা ফন্দি খেলে গেল। লোকটার পিছু নিয়ে সে যেখানে যাচ্ছিল সেই এলাকায় গিয়ে পৌঁছুল। তারপর কাছের এক পানশালায় ঢুকে লোকটার বাড়ির বর্ণনা দিয়ে সেই ব্যবসায়ীর বাড়ির লোকজনের নামধাম জেনে নিল।

তারপরের কাজটা তো সোজা। ওয়েইন সটান ব্যবসায়ীর বাড়িতে এসে বলে, মিস্টার অমুক ভয়ানক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন হঠাৎ বাঁচেন কি মরেন ঠিক নেই। সেখান থেকে তাঁর স্ত্রীকে ডেকে আনতে পাঠানো হয়েছে তাকে। 

শুনে তো ভদ্রলোকের স্ত্রী বিলাপ করতে করতে পথে বের হয়ে ওয়েইনের সঙ্গে ছুটলেন স্বামীর খোঁজে। কাজের মেয়েটাকে বলে গেলেন বাড়ির খেয়াল রাখতে। খানিক দূর গিয়ে ওয়েইন মহিলাকে একটা ঠিকানা দিয়ে বলল, “আপনি এইখানটা চলে যান। আমার একটা অন্য কাজ আছে। আমি চলি।”

এই বলে সে সটান ফিরে এল ব্যবসায়ীর বাড়িতে। মহিলার কাজের মেয়েটিকে ডেকে সে বলে, তার মালকিন খবর পাঠিয়েছেন, রাতে তাঁকে হয়ত স্বামীর কাছেই থাকতে হবে। ঘন্টাখানেকের ভেতর তিনি পারলে একবার বাড়িতে ঘুরে যাবেন। আর তিনি না আসতে পারলে সে যেন শুয়ে পড়ে।

বলতেবলতেই বড়ো বড়ো হাই তুলছিল ওয়েইন। যেন বেজায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে সে এত ঝঞ্ঝাট সামলে। দেখে কাজের মেয়েটার দয়া হল। বলে, “আপনি বরং রান্নাঘরে এসে খানিক জিরিয়ে নিন।”

ওয়েইনও তো তাই চাই। কাজের মেয়েকে বেজায় ধন্যবাদ-টাদ জানিয়ে সে চলল তার পিছু পিছু। তাকে রান্নাঘরে বসিয়ে কিছু খাবার এনে দেবার জন্য মেয়েটা যেই না পেছন ফেরা ওয়েইনও অমনি তার মাথায় এক ডান্ডার ঘা মেরে তাকে শুইয়ে দিল। তারপর তার হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে রেখে বাড়ির সব বাক্সপ্যাঁটরা ঘেঁটে শদুয়েক পাউন্ডের মালপিত্র হাতিয়ে নিয়ে সে হাওয়া।

এইভাবে প্রায় আট বছর ধরে্ মহাসুখে তার রাজপাট চালিয়ে গেল ওয়েইন।ইতিমধ্যে বিয়ে করেছে সে। চারটে ছেলেপুলেও হয়েছে। এরপর একদিন তার নজর পড়ল চিপসাইডের কাছে হানি লেন এর এক বুড়োর দিকে। ভদ্রলোক কাপড়চোপড়ের ব্যাবসা করে বেশ কিছু টাকাকড়ি জমিয়েছিলেন। বয়েস হতে ব্যাবসা ছেড়ে জমা টাকায় কর্তাগিন্নিতে মিলে সুখে অবসরজীবন কাটাচ্ছিলেন।

তা বেশ কয়েকদিন বারিটার ওপর নজরদারি চালাবার পর একদিন রাতে আঁটঘাট বেঁধে ওয়েইন গিয়ে ঢুকল তাঁদের বাড়িতে ডাকাতি করতে। তবে ডাকাতি শেষ করবার পর তার প্রাণে ভয় হল। ভদ্রলোক হয়ত নজরদারি করবার সময় তাকে দেখেছেন। যদি পুলিশে খবর দেন?

ভাবনাটা মাথায় আসতে আর কোনো ঝুঁকি নিল না ওয়েইন। বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা বুড়োবুড়ির গলাদুটো কেটে দিল সে। তারপর চুরির প্রায় আড়াই হাজার পাউন্ড নিয়ে সটান বাড়ি ফিরে বউ আর চার বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে এলাকা ছেড়ে সটান ভার্জিনিয়ায় পালিয়ে গেল।

পরদিন বুড়োবুড়ি সারাদিন ঘর ছেড়ে বেরোয় না দেখে লোকজনের সন্দেহ হল। খবর গেল পুলিশে। কন্সটেবল এসে দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে বিছানায় রক্তে মাখামাখি হয়ে বুড়োবুড়ির লাশ পড়ে আছে।

শুরু হল তদন্ত। তাতে ফাঁদে পড়ল এক বুড়ো ভিখিরি। তার অপরাধ, তাকে প্রায়শই বাড়ির আশপাশে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে। খুনের আগের দিন বিকেলেও তাকে বাড়িটার বারান্দায় রাখা একটা বেঞ্চে বসে থাকতে দেখেছে লোকজন।

বুড়োকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হল। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হল নিউগেট কারাগারে। তারপর একদিন বিচারে তার ফাঁসির সাজা হল। সামান্য কিছু সন্দেহজনক আচরণ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আর কোনোও প্রমাণ ছিল না। তবু, সেই সন্দেহের ওপর ভিত্তি করেই তাকে চিপসাইডের সেই বাড়ির সামনে ফাঁসিকাঠ বসিয়ে তাতে ঝুলিয়ে দেয়া হল। হতভাগা বুড়ো মরার আগের মুহূর্ত অবধি প্রাণপণে চিৎকার করে গিয়েছিল, তার কোনো দোষ নেই এই দাবি জানিয়ে।কিন্তু কেউ তার সেই কথা কানে তোলেনি। তার মৃতদেহটাকে এরপর হলওয়েতে শেকলে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সেটাই সে-সময়ের প্রথা ছিল।

ওদিকে ভার্জিনিয়াতে গিয়ে ওয়েইন একেবারে ফুলেফেঁপে উঠেছিল। নিরীহ মানুষের রক্তমাখা টাকাকে ব্যবসায়ে খাটিয়ে তখন তার ধনসম্পত্তির অভাব নেই আর। সমাজে একজন মান্যগণ্য মানুষ হয়ে উঠেছে সে তখন। তবু তার প্রাণে সুখ ছিল না। বিশ বছর কেটে গেছে তার দেশ ছেড়ে পালাবার পর। বিশটা বছর নিজের দেশের মাটিকে ছোঁয়নি সে।

একদিন সে ঠিক করল, মরবার আগে শেষবারের মত একবার সে নিজের দেশের মাটিতে পা ছুঁইয়ে আসবে। এই ভেবে সে তার স্ত্রী ছেলেমেয়ে নাতিনাতনীদের কাছে বিদায় নিয়ে একা ইংল্যাণ্ডে ফিরে এল।

কিন্তু নিয়তি তার পিছু ছাড়েনি। বিশ বছর আগের সেই ভয়ানক পাপের স্মৃতি তার অবচেতনে তাকে কুরে কুরে খেত। সেই অপরাধের জমিতে ফিরে আসবার পর থেকে সে-স্মৃতি তার মনের ওপর গভীর ছায়া ফেলছিল তার নিজেরই অজ্ঞাতে।

সে ছায়া প্রকাশ্যে এল একদিন, চিপসাইডেরই রাস্তায়। বেশ ক’দিন ইংল্যাণ্ডে কাটিয়ে ভার্জিনিয়ায় ফেরবার সময় হয়েছে তখন তার। ছেলেপুলেদের জন্য কিছু উপহার কিনে নিচ্ছে সে তখন। এই সময় একদিন চিপসাইডের এক স্যাকরার দোকানে কয়েকটা প্লেট কিনতে গিয়েছিল সে। দরাদরি চলছে, এমন সময় রাস্তায় হঠাৎ একটা শোরগোল উঠল। দেনার দায়ে গ্রেফতার হওয়া এক ভদ্রলোক সেপাইদের হাত ছাড়িয়ে ছুট দিয়েছেন, আর সেপাইরা রে রে করে তেড়ে যাচ্ছে তাঁকে। তেড়ে যাচ্ছে রাস্তার শতেক লোকজনও।

ব্যাপার দেখে আর দশজন মানুষের সঙ্গে রাস্তায় ছুটে বেরিয়েই হঠাৎ ওয়েইনের মাথাটা যেন ঘুরে উঠল একটু। ছুটতেছুটতেই তার মনে হচ্ছিল, যেন অতীত জীবনের একটা অধ্যায়ই যেন ফের খুলে যাচ্ছে তার সামনে। সেই চিপসাইড! সেই অসহায় বুড়োবুড়ি…

যেন কিচ্ছু বদলায়নি! বিশ বছর আগে এমনি করেই রাস্তায় মানুষের তাড়া খেয়ে সে ছুটত। আজও তেমনি ছুটছে সে… ঐ ভদ্রলোককে নয়…তাকেই তাড়া করে আসছে যেন উন্মত্ত জনতা। তাড়া করে আসছে বিশ বছর আগের এক রাতে দুজন নিরীহ মানুষের প্রাণ নেবার সাজা দিতে…

তার পেছন থেকে ক্রমাগত আওয়াজ উঠছিল, “ধর …ধর…”

হঠাৎ কী যে হয়ে গেল ওয়েইনের, রাস্তার মাঝখানে স্থানু হয়ে গেল সে। তারপর চিৎকার করে উঠল, “আমি…আমিই সেই লোক।”

“তুমি সেই লোক! কোন লোক!” তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে যাওয়া মানুষজন প্রশ্ন করে উঠল।

“আ-আমি এই লোক, বিশ বছর আগে…এই চিপসাইডের হানি লেন-এ দুই বুড়োবুড়ির প্রাণ নিয়েছিলাম। আমার জন্যেকজন নিরীহ মানুষ ফাঁসির দড়িতে ঝুলেছিল। আমি…”

স্বীকরোক্তির পর বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। চিপসাইডের হানি লেন-এর সেই বাড়ির সামনে ফের দাঁড় করানো হয়েছিল ফাঁসিকাঠ। এইবার, বিশ বছর বাদে সেই ফাঁসিকাঠ থেকে ঝুলেছিল প্রকৃত অপরাধীর শরীর।

যে পাপের টাকায় সে তার সুখের সংসার পেতেছিল সেই টাকাও আর তার স্ত্রী-সন্তানরা ভোগ করতে পারেনি। ওয়েইনের মৃত্যুদণ্ডের খবর পেয়ে তার স্ত্রী উন্মাদ হয়ে মারা যান। তার দুই ছেলে ভার্জিনিয়ায় এক ডাকাতির মামলায় গ্রেফিতার হয়ে ফাঁসিকাঠে প্রাণ দেয়। তার বিস্তর ভূসম্পত্তি, তার তুলোর ক্ষেত এই সবকিছুই রানির নামে বাজেয়াপ্ত করা হয়।তার বংশধরেরা অবশেষে পথে পথে ভিক্ষা করে জীবন ধারণ করত।

সঙ্গের ছবিটি চিপসাইড স্ট্রিটের একটি ফাঁসির দৃশ্য

জয়ঢাকের টাইম মেশিন সব লেখা একত্রে

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s