অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় সব লেখা একত্রে
প্রোবাইওটিক
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
প্রোবাইওটিক শব্দটির সঙ্গে সাধারণ মানুষ এখনো খুব বেশী পরিচিত হননি। তবে যারা মাইক্রোবাইওলজি এবং ইমিউনোলজি চর্চা করেন তাঁরা জানবেন। এই শব্দটি ১৯৬০ সালের পর থেকে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। গত শতকের একে বারে প্রথম দিকে নোবেলজয়ী রাশিয়ান বিজ্ঞানী Elie Metchnikoff সর্বপ্রথম (প্রোবাইওটিক শব্দটি ব্যবহার না করে) এর উপকারিতা সম্বন্ধে বিজ্ঞানীমহলকে সচেতন করেন। তিনি মত প্রকাশ করেন, ‘ইয়োগার্ট’ ব্যবহারের জন্য বুলগেরিয়ার চাষিরা দীর্ঘ দিন বাঁচেন।
প্রোবাইওটিক বলতে কী বোঝায়?
WHO-এর মতে ‘as living microorganisms, which when administered in adequate amount, confers a health benefit on the host.’ অর্থাৎ এদের জীবন্ত অবস্থায় দেহে প্রবিষ্ট করা হয় এবং এরা উপকারী।
এদের কাছ থেকে কী উপকার পাওয়া যায়?
১) এরা খাদ্য হজমে সাহায্য করে
২) ভিটামিন এবং অন্য উপকারী পদার্থ উৎপন্ন করে
৩) দেহের রোগ স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইমিউনিটি) বাড়ায় এবং
৪) রোগ সৃষ্টিকারী মাইক্রোবদের (প্যাথোজেন) হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।
প্রোবাইওটিক মাইক্রোবরা পেটের ভিতর বেশি সংখ্যায় থাকলে রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষতিকারক মাইক্রোবদের বংশ বৃদ্ধি করতে এবং বাসা বাঁধতে বাধা দেয়। সুতরাং প্যাথোজেনরা সহজে দেহের ক্ষতি করতে পারে না। তাহলে মনে প্রশ্ন জাগে এই প্রোবাইওটিকদের কি ভাবে আমরা পেতে পারি? উত্তর, খুব সহজেই আমরা পেতে পারি এবং হাজার হাজার বছর ধরে আমরা তা ব্যবহার করে আসছি না জেনে।
নিশ্চয় খুব অবাক লাগছে আমার কথায়। তাহলে বলি, আমরা টক দই খাই। এই টক দইয়ে রয়েছে অজস্র প্রোবাইওটিক ব্যাকটেরিয়া। প্রতিদিন বাড়িতে পাতা দই খেলে রোগবালাই অনেক কম হবে। টক দইয়ে ল্যাকটোব্যাসিলাস এবং স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া থাকে।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পর ভিটামিন খাবার কথা ডাক্তারবাবুরা বলেন। এখন ভিটামিনের বদলে প্রোবাইওটিক দেওয়া হচ্ছে। পেটের গোলমালে শিশুদেরও প্রোবাইওটিক খাওয়ানো হয়। যত দিন যাবে এর ব্যবহার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।