শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরো গল্প শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত লেখা
বাবলুর চা-দোকানের পাশে ট্যাক্সিটা গ্যারেজ করে সামনের বেঞ্চিতে এসে বসল বলহরি। রাত দশটায় বেরিয়েছিল। এখন সকাল ছ’টা। রাতের ট্রিপে ভালো রোজগার হয় বলে মাঝে মাঝে রাতে বের হয় ও। চা খেয়ে ঘরে যাওয়া যাবে’খন। সকালবেলা হালকা হাওয়া বইছিল। দোকানের পেছন দিকেই ছোটো একটা পুকুর। পুরোটা সবুজ পানায় ঢাকা। মিউনিসিপালিটির বদান্যতায় হাল ফ্যাশানের সিমেন্ট বাঁধানো নয়। পোকামাকড়, পাখি, গিরগিটি, পিঁপড়ে কিছুরই অভাব নেই। পাড় জুড়ে মাটি, গাছপালা, জলের জংলিগাছ মিলে বেশ একটা ভিজে ভিজে ভাব পুকুরের চারপাশে। এ-জায়গাটায় বসলে শরীর জুড়োনো একটা ব্যাপার হয়। মাঝেমধ্যে পুকুরে কেউ কেউ ছিপও ফেলে।
বেহালার বকুলতলাতে আগে অনেক পুকুর ছিল, এখন প্রায় সবই বোজানো হয়ে গেছে। এই এক-দু’খানা বেঁচে গেছে। ওই জলের দিকেই চেয়ে বসে ছিল বলহরি। ড্রাইভিং লাইসেন্সে লেখা হরিপদ দাস। পাড়ার লোকে হরি হরি ডাকতে ডাকতে কবে থেকে যে বলহরি হয়ে গেল!
হঠাৎই ওর নজরে পড়ল পাড়ের কাছে জলের মধ্যে সবজে রঙের কিছু একটা নড়ছে। প্রথমটায় ভেবেছিল মাছ। উঠে গিয়ে দেখে, নাহ্, একটা পাখির মতো লাগছে। বেচারা জলের মধ্যে একটা কাপড়ের টুকরোয় জড়িয়ে গিয়ে আর উঠতে পারছে না। বলহরি সাবধানে প্যান্ট গুটিয়ে পাড় ধরে জলের মধ্যে নেমে গেল। একটা শুকনো ডাল ভেঙে হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে ছেঁড়া কাপড়ের টুকরোটা টেনে আনতেই, পাখিটা হাতের নাগালে এসে গেল। ঠাকুর ভাসান হয়েছিল পুকুরে। প্রতিমার গায়ের সবুজ কাপড়ের একটা টুকরো পাখিটার মাথায় জড়িয়ে ছিল।
“আইব্বাস!” জড়ানো কাপড়টা সন্তর্পণে খুলে নিতেই বলহরির মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে এল। কারণ পাখিটার ঠোঁট। টিয়ার মতো বাঁকানো। কিন্তু টিয়ার চেয়ে বেশ বড়োই হবে। পাখিটার একেবারে ছানা-অবস্থা। ডানা ভিজে একশা। কাপড়ের টুকরোয় জড়িয়ে ভিজে ডানায় আর উড়ে যেতে পারেনি বেচারা। দু-হাতে আলতো করে ধরে বাবলুর দোকানের বেঞ্চে এসে বসল বলহরি।
“কী পাখি রে?” বাবলু জিজ্ঞেস করে।
“জানি না, একটা শুকনো ন্যাকড়া দে তো!”
বাবলু একটা আধময়লা ছেঁড়া গেঞ্জি এগিয়ে দেয়। বলহরি সেটা দিয়ে খুব সাবধানে পাখিটার গা মুছিয়ে দিতে থাকে। গা-টা সবুজ, টিয়ার মতোই, ঠোঁটটা খুব হালকা গোলাপি রঙের। শরীরের তুলনায় মাথাটা একটু বড়োই। চোখের কাছটায় সাদা একটা রঙের পট্টি। মাথার ওপরে একটুখানি লালের ছোপ। ডানার ধার বরাবরও লাল রঙ। পাখিটা ওর হাতের মধ্যে শান্ত হয়ে বসে। ছোটো ডানাদুটো এক-দু’বার ঝাপটে জল ঝরানোর চেষ্টা করল, কিন্তু উড়ে যাবার কোনও লক্ষণ নেই ওর মধ্যে। এত ছোটো পাখি এখানে এল কী করে? এমন পাখি তো বলহরি এখানে আগে দেখেনি। তবে কি মা-পাখি বাচ্চা সমেত উড়ে যাবার সময় এই পুঁচকেটা জলে পড়ে গেছিল? আহা রে!
“একটা বিস্কুট দিস তো বাবলু!”
“দুটো দেব? পাখিটাকেও তো দেবে?”
“দে।” হাসল বলহরি। ও মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিল পাখিটাকে পুষবে। কতদিন পর! গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় এসে ওঠার আগে গ্রামের বাড়িতে পাখি পুষত ও। গাঢ় টানা টানা চোখের শালিক। খুব পোষ মেনে গিয়েছিল। খাঁচায় রাখত না ওকে। বলহরির হাতে খেত। হাত বাড়িয়ে দিলেই হাতে এসে বসত। অনেক দূরে নিয়ে ছেড়ে দিলেও ঠিক বাড়ি চিনে উড়ে উড়ে চলে আসত। এই পাখিটাও কি অমন পোষ মানবে? মনে মনে ভাবল বলহরি। কিন্তু এটা টিয়া নয়তো?
‘টিয়াপাখি খাঁচার ভেতরে খালি এ-ধার ও-ধার ঘোরে আর খাঁচার শিক কামড়ায় কেন জানিস? শিকলি-কাটা পাখি, ফাঁক খোঁজে, সুযোগ পেলেই উড়ে পালাবে বলে। সে তুই যতই খাওয়াস, যতই পোষ মানুক।’ বাবা বলেছিল।
“এই নাও চা।” বাবলুর কথায় ভাবনা কেটে গেল বলহরির।
পাখিটা কোলের কাছে চুপটি করে বসে। বিস্কুট গুঁড়ো করে দিয়েছিল। কুটকুট করে তাই খাচ্ছিল।
“কী পাখি, কে বলতে পারে বল তো?” বাবলুকে জিজ্ঞাসা করে বলহরি।
“কী জানি। তবে সুজনকে জিজ্ঞাসা করতে পারো, ও পাখি কেনাবেচা করে।”
“কোন সুজন?”
“চৌরাস্তার। রোগামতো, বেঁটে, দেখলেই চিনবে।”
***
বলহরির পাখিটার একটা ছোট্ট খাঁচা হয়েছে। ট্যাক্সিতে এখন তাকে নিয়েই বেরোয় বলহরি। ওর নাম দিয়েছে মন্টি। সামনের ইলেকট্রনিক মিটারের পাশটিতে দিব্যি বসে যায় খাঁচাটা। প্যাসেঞ্জাররা দেখে খুশিই হয়।
বাবলুর মাধ্যমে দিন দশেক বাদে সুজনের সঙ্গে যোগাযোগ হল বলহরির। সুজন নিজে বলতে পারেনি, বলেছিল রিমাউন্ট রোডে ইন্দ্রনাথ মুখার্জির বাড়ি নিয়ে যাবে। পোর্টের বড়ো চাকুরে। পাখি, মাছ, কুকুর এসব সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান ভদ্রলোকের। বাড়িতে নাকি অনেক পোষা পাখিও আছে। বই-টইও লিখেছেন। আগে থেকেই ঠিক করা ছিল রবিবার সকালে ট্যাক্সি নিয়ে চৌরাস্তায় চলে আসবে ও। সুজন থাকবে ওখানে।
কথামতো ন’টার মধ্যেই চলে এল বলহরি। সুজন দাঁড়িয়েই ছিল, উঠে পড়ল। রোববারের সকাল। রিমাউন্ট রোড, চৌরাস্তা থেকে মেরে কেটে মিনিট পনেরো। তারাতলা ব্রিজ পেরিয়ে একটু এগিয়েই বাঁহাতে ঢুকে পড়ল ওরা। ডানপাশে পোর্ট ট্রাস্টের কোয়ার্টারের পাঁচিল। এক, দুই, তিন নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে সুজনের কথামতো তিন নম্বর বিল্ডিংয়ের পাশে গাড়ি লাগাল বলহরি। তিনতলা কোয়ার্টার। একেক ফ্লোরে দুটো করে ফ্ল্যাট। মাঝখানে সিঁড়ি। তিনতলায় পৌঁছে ডানহাতি হলদে দরজার কলিং বেল বাজাতেই ভেতর থেকে একটা কুকুরের আওয়াজ শোনা গেল। এক ভদ্রলোক এসে দরজা খুললেন। খালি গা, সাদা পাজামা পরা। তামাটে রঙ। ছোটোখাটো চেহারা। চোখদুটো ঝকঝক করছে। বলহরি দেখল, ভদ্রলোকের পেছনে একটা অ্যালসেশিয়ান।
“ও সুজন! এসো।”
বলহরি ইতস্তত করছে দেখে ভদ্রলোক মুখ ফিরিয়ে গলা তুলে বললেন, “তোতা! ভুতোকে নিয়ে যাও।”
একটা বাচ্চা মেয়ে এসে কুকুরটাকে নিয়ে যেতে বলহরি ভেতরে পা রাখল। হাতে পাখির খাঁচা।
বিরাট কোয়ার্টার। পেল্লায় বসার ঘর। আর কী উঁচু সিলিং! একধারে প্রকাণ্ড একটা অ্যাকোরিয়াম। ঘর-লাগোয়া টানা বারান্দাটাও কম-সে-কম চল্লিশ ফুট। সেখানে পাঁচ ফুট উঁচু দু-দুটো খাঁচায় ছাই ছাই রঙের দুটো পাখি। ওদের ঠোঁটগুলোও টিয়ার মতো বাঁকানো।
ওগুলোও টিয়া? ভাবল বলহরি।
ওরা বসতে না বসতেই ইন্দ্রনাথবাবু বললেন, “সুজন, কোথায় পেলে ম্যাকাওটা?”
“ইয়ে, মানে পাড়ার পুকুরে ছানাটা পড়ে ছিল। ওটার কী নাম সেটা জানতেই আসা।” বলহরি বলে, “আপনি তো জিজ্ঞাসা না করতেই বলে দিলেন। ইয়ে মা… কী যেন?”
“ম্যাকাও।” হেসে বললেন ইন্দ্রনাথবাবু, “দাঁড়াও, আসছি।”
ভদ্রলোক উঠে ভেতরে গেলেন আর মিনিট খানেকের মধ্যেই ফিরে এলেন। বলহরি অবাক হয়ে দেখল, ওর কাঁধে একটা ইয়াব্বড়ো লম্বা লেজওলা পাখি বসে। কী সুন্দর দেখতে! নীল ডানা। পিঠের দিকটা আকাশি নীল, পেটের দিকে উজ্জ্বল হলদে। চোখের দু-পাশে সাদা রঙের চওড়া পটি আর চোখ ঘিরে কালো আঁকাবাঁকা দাগ যেন কেউ যত্ন করে এঁকে দিয়েছে। মাথার ওপরটা সবুজ।
“এই হল ম্যাকাও। এগুলো বিদেশি পাখি, দক্ষিণ আমেরিকার।”
মন্টিও বড়ো হলে এমন হবে? বলহরি মনে মনে ভাবল।
বড়ো পাখিটা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখছিল মন্টিকে।
“কী খাওয়াও পাখিটাকে?” ইন্দ্রনাথ জিজ্ঞাসা করলেন।
“গমদানা, ফল-টল যা পাই।” বলহরি জবাব দেয়।
“হুঁ। দেখছ তো এর লেজ কতো বড়ো। একে কিন্তু বড়ো খাঁচায় রাখতে হবে। ওর লেজ নইলে মুড়ে যাবে। আর ছোটো ছোটো গাছের ডাল টুকরো করে দেবে। ওরা চিবোতে ভালোবাসে।”
ভদ্রলোক দরজা অবধি এলেন ওরা যাবার সময়। পাখিটা তখনও কাঁধেই বসে ছিল। দরজা বন্ধ করার সময় ভেতর থেকে কুকুরটা বেরিয়ে এসেছিল। বলহরি স্পষ্ট শুনল পাখিটার গলা, “তোতা! তোতা! ভুতোকে নিয়ে যাও।”
***
অতএব পাখিটা বলহরির কাছেই রয়ে গেল। একবার ভেবেছিল বলহরি গ্রামের বাড়িতে রেখে আসবে, কিন্তু মায়া পড়ে গিয়েছিল। মা-ছাড়া ছানা। এখন ওই ওর বাপ-মা। গ্রামের বাড়িতে মা একলা কীভাবেই-বা দেখাশোনা করবে? দাদা-বৌদি আছে বটে, কিন্তু তারা জমিজিরেত চাষবাস দেখবে, না পাখির দেখভাল করবে! তার চেয়ে ও যেমন পারে তেমনটাই করবে ভেবে মন্টিকে নিজের কাছেই রেখে দিয়েছে।
দেখতে দেখতে বছর ঘুরে গেল। পাখিটা এখন বেশ বড়ো হয়েছে। সুন্দর সবুজ ঝোলা লেজখানা। একটা দুটো কথাও শিখেছে। যেমন ‘মন্টি’, ‘গরম’, ‘আহ্-হা’ এইসব। বলহরি শেখায়নি, নিজে-নিজেই বলে এসব, ওর কথা শুনে শুনে। রায়বাহাদুর রোডে একবার ওর এক দূরসম্পর্কের মাসির বাড়িতে গিয়েছিল বলহরি। মাসির দোতলা বাড়ির বাইরের বারান্দায় একটা সাদা কাকাতুয়া রাখা থাকত। নীচ থেকে দরজায় কড়া নাড়াতে পাখিটা ডেকে উঠে ছিল, “কে রে?”
বলহরি মজা করতে বলেছিল, “তোর বাবা!”
পাখিটা পালটা বলে উঠেছিল, “কে রে শালা!”
বলহরির মুখে আর কথা জোগায়নি। মাসিকে হেসে বলেছিল, তোমার পাখি খারাপ কথা বলেছে আমায়। মাসি চোখ কুঁচকে জিজ্ঞাসা করেছিল, “তার আগে তুইও নিশ্চয় কিছু বলেছিলি?”
বলহরি একগাল হেসে বলেছিল, “হ্যাঁ, বাপ তুলেছিলাম।”
মন্টির সামনে তাই কখনও খারাপ কথা বলে না বলহরি। খুব সতর্ক থাকে।
এ-পাড়ার শিবনাথ চক্রবর্তী একবার পাখিটা বেচে দেবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন—‘পঁচিশ দিচ্ছি। দিয়ে দাও ওটা।’
বলহরি হেসেছে। উত্তর দেয়নি। শিবনাথও হাল ছাড়েননি। যাওয়া-আসার পথে দেখা হলেই ঘাড় উঁচিয়ে চোখ তুলে জিজ্ঞাসা করে। বলহরি প্রত্যেকবারই এড়িয়ে যায়। সুজন শুনে বলেছিল, “কত বলেছে?”
“পঁচিশ।”
“পঁচিশ হাজার?” ভ্রূ কুঁচকে সুজন বলে, “ও-পাখির দাম আমি খোঁজ নিয়েছি।”
“কত?”
“কম-সে-কম আশি থেকে এক লাখ।”
বলহরি হাঁ হয়ে গেল শুনে। যদিও মন্টিকে বেচে দেবার কথা ভাবতেই পারে না ও। মন্টি আর শুধু পাখিটা নেই, সে এখন ওর খুব কাছের একজন।
***
শেষরক্ষা হল না। মন্টি সঙ্গে থাকে বলে রাতে আর ট্যাক্সি চালায় না বলহরি। সন্ধে-সন্ধেই ফিরে আসে বাড়ি। সেদিন এসে মন্টিকে খাটে বসিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে সবে চায়ের জল চাপিয়েছে, দরজায় টোকা। দরজা খুলতেই দেখল জনা চারেক লোক দাঁড়িয়ে।
“আপনারা?”
“আমরা ফরেস্টের লোক।”
“কী ব্যাপার?”
“বন্যপ্রাণী আইনে আপনি দুষ্প্রাপ্য পাখি বাড়িতে রাখতে পারেন না। আমরা ওটা নিতে এসেছি।”
“কিন্তু, মানে, ও-পাখি তো…”
“দেখুন ওটা আপনি না দিয়ে দিলে আমাদের থানা-পুলিশ করতে হবে।”
বলহরি বুঝতে পারল সবই, কিন্তু ওর মুখে কথা জোগাল না। লোকগুলোও অপরিচিত। থানা-পুলিশ মানে সে ভালোই বোঝে। কলকাতা শহরে ট্যাক্সি চালায় সে। ট্যাঁকের জোরও তত নেই। অগত্যা…
মন্টির পায়ে একটা সরু লম্বা চেন বেঁধে নিয়ে গেল ওরা। বলহরির চোখ ফেটে জল আসছিল। লোকগুলো চলে যেতে সে ধপ করে বিছানায় বসে পড়ল। অ্যালুমিনিয়াম বাটিতে চায়ের জল শুকিয়ে গিয়েছিল। গ্যাস বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়ল ও। বুকের ভেতরটা কেমন যেন করতে লাগল। সারারাত দু-চোখের পাতা এক করতে পারল না বলহরি।
সারাদিনের ক্লান্তিতে রাত শেষ হয়ে আসার মুখে চোখটা লেগে এল শেষমেশ। আধঘণ্টাও হয়নি, দরজায় একটা ঠুকঠুক শব্দ, আর খুব গম্ভীর গলায় নীচু স্বরে ‘হরি! হরি!’ ডাক শুনে ধড়মড় করে উঠে বসল বলহরি। দরজায় আবার ঠুকঠুক। ও উঠে গিয়ে তাড়াতাড়ি দরজাটা খুলল। বাইরে সবে আলো ফুটছিল। দরজার ঠিক গোড়াতে সবুজ ডানার লেজঝোলা পাখিটা বসে। রুপোরঙা চেনের সামান্য একটু অংশ, পা থেকে ঝুলছে। মন্টি ফিরে এসেছে।
গল্প-উপন্যাসের লাইব্রেরি এইখানে