গল্প-রাখী-অরিন্দম দেবনাথ-শীত ২০২১

 অরিন্দম দেবনাথ-এর সমস্ত লেখা

golporakhi

জলভরা বালতি হাতে তুলতে গিয়ে সন্ধ্যামাসির মনে হল খানিক আগে পা দিয়ে ঠেলে চাতালের পাশে জড়ো করে রাখা পাতার স্তূপটার মধ্যে কী যেন নড়ছে না? নির্জন কলপাড়ে থমকে দাঁড়ালেন উনি। সাপ নয়তো?

ভোররাতে খানিক ঝড়বৃষ্টি হয়ে গেছে। পুবদিকটা সবে লাল হতে শুরু করেছে।

রেল লাইনের ধারের বারোয়ারি কলের পাশে হঠাৎ কলোনির শান বাঁধানো কলপাড়ের ঠিক মাথার ওপর একটা জামগাছ। থোকা থোকা পাকা জামে ভর্তি হয়ে আছে গাছটা। গাছের থেকে টুপটুপিয়ে ঝরে পড়া টসটসে ফলগুলোর বেগুনি রঙে রাঙিয়ে আছে কলপাড়। এই গাছের ফলগুলো কষ কষ। সে কারণে কলোনির লোকজন এ-গাছের ফল খায় না। তাই পাখিরা এই গাছে নিশ্চিন্তে বাসা বেঁধেছে। শালিক, টিয়ার চিৎকার লেগেই থাকে দিনভর।

সবেমাত্র কলপাড় থেকে রাতের এঁটো বাসন মেজে উঠেছেন সন্ধ্যামাসি। অনেক দিনের অভ্যেস, সকালে কেউ কলপাড়ে যাবার আগে কলের চারধারটা খানিক জল ঢেলে পরিষ্কার করে, তারপর বাসন মেজে জামকাপড় ধুয়ে, এক বালতি খাওয়ার জল নিয়ে বাড়ি ফেরা। একটু পরেই ভিড় জমবে কলপাড়ে। তার আগে যতটা কাজ সেরে নেওয়া যায়। হাতের কাজ গুছিয়েই ছুটতে হবে  অন্যের বাড়ি রান্নার কাজে।

সামান্য সময় চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে একটু এগিয়ে ঝুঁকে হাত বাড়ালেন নড়তে থাকা পাতার দিকে। না, ভুল দেখেননি সন্ধ্যামাসি, পাতার স্তূপের ওপর পড়ে আছে একটি পাখির ছানা। হয়তো খানিক আগেই ডিম ফুটে বেরিয়েছে। তারপর ঝড়ের দাপটে ওপরের গাছ থেকে ছিটকে পড়েছে পাতার ওপর। না, মরেনি এখনও। তিরতির করে নড়ছে বুকের কাছটা। চোখের পর্দা এখনও খোলেনি। হলদে-লাল-বেগুনি ইঞ্চি খানেক শরীরে পালকের লেশমাত্র নেই। সন্ধ্যামাসি ওপরের দিকে তাকালেন। না, মা-পাখিটার কোনও দেখা নেই। হয়তো অন্য বাচ্চাগুলোকে ডানা মেলে আগলাচ্ছে। বাচ্চাটাকে ফেলে রাখলে খানিক বাদে হয় পিঁপড়ের দল, না-হলে কোনও সাপ বা কুকুর-বিড়ালে মুখে করে টেনে নিয়ে যাবে।

বাচ্চাটাকে হাতের তেলোতে শুইয়ে খানিক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলেন উনি। হাতের গরমে যেন খানিক আরাম পেল সদ্য প্রাণ পাওয়া জীবটা। নড়াচড়া বন্ধ করে হাতের তেলোয় ছেড়ে দিল শরীরটা। খানিক ঠোঁট কামড়ে চিন্তা করে দু-হাতের মুঠোয় একরত্তি মাংসের দলাটাকে আলতো করে জড়িয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দিলেন সন্ধ্যামাসি। ভরা জলের বালতি, বাসন আর জামাকাপড় পড়েই রইল কলপাড়ে।

“ওরে রমা, ওঠ। কলপাড় থেকে জলের বালতি আর সব জিনিসপত্র নিয়ে আয়।” বাড়ির দরজায় পৌঁছে হাঁক পাড়েন সন্ধ্যামাসি।

রমা সন্ধ্যামাসির মেয়ে। আগরপাড়ায় একটা গেঞ্জি কারখানায় কাজ করে। সকাল আটটায় বেরিয়ে ফেরে সেই রাত ন’টায়। আর ওঁর স্বামী রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করেন, অধিকাংশ দিন দুপুরে বাড়িতে ফিরে খেয়ে আবার কাজে চলে যান। সন্ধ্যামাসিও রান্নার কাজ সেরে ঘরে ফিরে আসেন দুপুর দুপুর।

ভেজানো দরজা খুলে বেরিয়ে আসেন সন্ধ্যামাসির স্বামী বাদল। “কিছু হল নাকি? কলপাড়ে পড়ে গেছিলে? কতবার করে বললাম ঝড়জলের সকাল, এখনও আলো ফোটেনি, একটু পরে যাও, শুনলে না!”

“পরে শুনো, আগে এটার ব্যবস্থা করো দেখি। রমা, যা কলপাড় থেকে জামাকাপড় আর জলের বালতিটা নিয়ে আয় তাড়াতাড়ি।”

বন্ধ মুঠো স্বামীর দিকে এগিয়ে ধরেন সন্ধ্যামাসি। “এই দ্যাখো কী এনেছি!”

“এ-হে-হে, পেলে কোথায়? বাঁচবে, নাকি…”

“অলুক্ষুনে কথা বোলো না, এটাকে কোথায় রাখা যায় সেটা বলো।”

“ও মাগো, এ তো ছাল ছাড়ানো মুরগির মতো লাগছে। কী বিচ্ছিরি, নড়ছে না তো! মরে যায়নি তো?” মা-বাবার কথার মাঝে ফুট কাটে রমা।

“কথার কী ছিরি! কলপাড় থেকে জিনিসগুলো নিয়ে আয়।”

“খাঁচায় তো রাখা যাবে না। এক কাজ করো, ঘাস-পাতা দিয়ে একটা বাসামতো বানাই, তার মধ্যে শুইয়ে বরং…”

“তার আগে কিছু খাওয়ানো দরকার, কিন্তু খাওয়াব কী?” আকুল গলায় বলে ওঠেন সন্ধ্যামাসি। “পাখি-টাখি তো কোনোদিন পুষিনি। আচ্ছা, রতনরা টিয়াপাখি পোষে না? ওদের একবার জিজ্ঞেস করলে…”

“এত ভোরে ঘুম থেকে উঠেছে নাকি? তারপর সারারাত যা ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে, হয়তো চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছে সবাই। ডাকাডাকি করলে আবার…”

“তোমায় দিয়ে কিছু হবে না। তুমি বরং এটাকে ধর, আমিই যাচ্ছি।”

“না না, আমি ধরতে পারব না। হাত থেকে পড়ে-টরে গেলে… আমিই যাচ্ছি।” খানিক গজগজ করতে করতে ঘর থেকে বেরিয়ে যান বাদল।

***

“কী কুড়াইয়া আনছস রে সন্ধ্যা?” বাংলাদেশি টান এখনও পুরোপুরি ছাড়তে পারেনি রতনের মা বুলা।

“দ্যাখো না বুলাদি, এই পাখির বাচ্চাটা সকালে কলপাড়ে কুড়িয়ে পেলাম, পাতার ওপর পড়ে ছিল। কী পাখির বাচ্চা কে জানে। চোখও ফোটেনি, গায়ে একটাও পালক নেই…”

“দেখি, শালিকের বাচ্চা। মাটা চিল্লাইতাছিল না?”

“না দিদি, রাতের ঝড়েই বাসা থেকে পড়ে গেছে হবে।”

“হ, আরও বাচ্চা আছে বাসায়। ওই লেইগ্যা মায়টা আসে নাই, পাখার তলায় ওইগুলানরে আঁকড়াইয়া রাখছে। না হইলে ওইগুলাও বাসা থেইক্যা পইড়া মরত। ঠিকই করছে।”

“এখন কী করি দিদি?”

“এক কাম কর। ওষুধের ড্রপার আছে ঘরে? ড্রপারে কইরা একটু জল দে মুখে। ঘরে ছাতু আছে?”

“ড্রপার হয়তো আছে, ক’দিন আগে হোমিওপ্যাথি ডাক্তার ওষুধের সঙ্গে দিয়েছিল। কিন্তু ছাতু…”

রমা কলপাড় থেকে এক হাতে বালতিভর্তি জল, আর কোলে করে বাসন আর ধোয়া জামাকাপড়গুলো নিয়ে ঠিক তখনই ফিরে এসেছিল। সে বলল, “ছাতু আছে আমার ব্যাগে, টিফিনে খাই তো। বের করে দিচ্ছি। গুঁড়ো দুধও আছে, দেব?”

“ঠিক আছে, তোমরা এদিকটা দ্যাখো, আমি কল থেকে জল নিয়ে এসে চৌবাচ্চাটা ভরে রাখি।” ফাঁকা জলের বালতিটা হাতে তুলে রওনা দেন সন্ধ্যামাসির স্বামী।

একটা ছোট্ট বাটিতে জলের সঙ্গে গুঁড়ো দুধ পাতলা করে গুলে পাখিটার ঠোঁটের সামনে কাঁপা কাঁপা হাতে নিয়ে যেতে রতনের মা ধমকে ওঠেন সন্ধ্যামাসিকে, “আরে হাত কাঁপে ক্যান, ভয় পাওনের কী আছে! আমারে দে, দেখাইয়া দেই ক্যামন কইরা খাওয়াবি।”

“এই দ্যাখ, মুখটা একটু উঁচা করবি, তারপর ফাঁকা ঠোঁটের মধ্যিখানে ড্রপারটা দিয়া এক ফোঁটা দুই ফোঁটা কইরা দুধ-ছাতুর জল দিবি।”

রতনের মার কথামতো কতগুলো পুরোনো কাপড়ের ওপর পাখিটাকে শুইয়ে একটা ঝুড়ি চাপা দিয়ে তার ওপর একটা একটা চাদর ঢাকা দিয়ে দিল সন্ধ্যামাসি। পাখিটাকে গরম রাখা দরকার।

“সন্ধ্যা একটা কথা কইয়া যাই, বাচ্চাটারে সাবধানে রাখবি। অখন খাঁচায় রাখতে পারবি না, গায়ে পালক গজাইলে তারপর খাঁচায় রাখিস। আর এখন খবর্দার খাঁচার বাইরে রাখবি না, ইঁদুর-বিড়াল-কুকুরে মুখে কইরা নিয়া যাইব। পশুপাখির বাঁধন খুব সাইঙ্ঘাতিক। নিজের পোলা-মাইয়ার থেইক্যা কম না। পুইস্যা দ্যাখ। বাঁইচ্যা যাইব। চিন্তা করিস না, আমি ব্যালার দিকে আইস্যা একবার দেইখ্যা যামু। তরা তো কাজে চইল্যা যাবি। ঘরের চাবিটা আমারে দিয়া যাইস, আমি আইস্যা খাওইয়া রাইখ্যা যামু। দরজা ভালো ‍কইরা বন্ধ রাখিস, ফাঁকফোকর দিয়া বেজি না ঢুইক্যা যায়, ঝুরির উপর ইট চাপা দিয়া যাইস।”

সন্ধ্যামাসি আর কাজে যাননি সেদিন। সারাদিন মা-হারা পাখির বাচ্চাটাকে আগলে বসে ছিলেন।

***

চারমাস হয়ে গেল। পূর্ণবয়স্ক রূপ না পেলেও পাখিটা অনেক বড়ো গেছে। সারাদিন খাঁচাবন্দি থাকলেও বাড়ির লোক ঘরে ঢুকলেই ওর চেঁচানো শুরু হয়ে যায়। খাঁচার দরজা খুলে দিলেই উড়ে এসে বসে ঘরের লোকের কাঁধের ওপর। তারপর শুরু হয়ে যায় কিচিরমিচির। যেন এতক্ষণ একলা থাকার অনুযোগ উগড়ে দেয়। ওর সঙ্গে কথা বললে থিতু হয় খানিক। ঘরের মধ্যেই উড়ে, একবার এখানে, একবার ওখানে গিয়ে বসে। অনেকবার ওকে খোলা আকাশে ছেড়ে দিয়েছেন সন্ধ্যামাসি, কিন্তু প্রতিবারই এক চক্কর লাগিয়ে ঘরে ফিরে এসে কাঁধে চেপে বসেছে। পরিবারের একজন হয়ে গেছে পাখিটা। ঘরে লোক থাকলে ওকে খাঁচায় বন্ধ করে রাখা হয় না। খাওয়ার সময় পাখিটাকে আলাদা করে প্লেটে ছাতুর ছোটো ছোটো গোল্লা আর ভাত দিলে দিব্যি সবার সঙ্গে খাবার খায় ও। খাওয়া হয়ে গেলে কারও কাঁধে চেপে বসে শুরু করে বকবক। কথা না বললে কানের পেছনে ঠোঁট দিয়ে হালকা ঠোক্কর মারতেই থাকে।

***

রাখীর দিন। সন্ধ্যামাসির মেয়ে রমা কারখানায় যাবার আগে পাখিটার পায়ে একটা চকচকে পাথর বসানো রাখী বেঁধে দিয়ে গেছে। ছোটো ভাইয়ের মতো সব আদর ওর জন্য বাঁধা। গতকাল পেট-শপ থেকে ঘাসের দানা কিনে এনেছিল ওর জন্য, রাখী স্পেশাল। কয়েকটা দানা নিজের হাতে খাইয়ে গেছে ‘সোনা’-কে। পেট-শপের লোকটা এসব বেশি না খাওয়াতে বলেছে। পোষা পাখি, ছাতু আর ভাত খেয়ে অভ্যস্ত, অন্য খাবার হজম নাও হতে পারে।

তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই দুপুরে রান্নার কাজ সেরে ফিরতে আজ খানিক দেরি হয়ে গেছে সন্ধ্যামাসির। দূর থেকে ঘরের দরজা খোলা দেখে বুঝলেন ওঁর স্বামী আগেই ঘরে এসে গেছেন। কতবার বলেছেন কলঘরে যাবার সময় ঘরের দরজাটা টেনে দিতে, খালি ভুলেই যায় লোকটা। নির্জন দুপুরে ছপছপ করে কলঘর থেকে মগ থেকে ঢালা জলের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল বেশ খানিক দূর থেকে।

“সোনা, সোনা… আমি এসে গেছি।” হাঁক পাড়তে পাড়তে ঘরে ঢুকেন সন্ধ্যামাসি।

গেল কোথায় পাখিটা! গলার আওয়াজ পেয়েও তো কোনও সাড়া নেই।

ঘর ফাঁকা, খাঁচার দরজা খোলা… উড়ে গেছে পাখি।

দুপুরে আর গলা দিয়ে ভাত নামেনি সন্ধ্যামাসির। ওঁর স্বামী খানিক সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করেছিলেন ‘বনের প্রাণী বনে চলে গেছে, কষ্ট তো আমারও হচ্ছে, খেয়ে নাও’ বলে। কিন্তু সন্ধ্যামাসির কান্নাভরা চোখের দিকে তাকিয়ে আর বেশি ঘাঁটাননি।

“রমা এলে কী বলব বলো দিকিনি!” কান্নাভেজা গলায় মাঝে মাঝেই বলে উঠছিলেন সন্ধ্যামাসি। “তুমি ওকে খাঁচা খুলে ঘরে একলা ছেড়ে দিয়ে গেছিলে কেন? কাউকে না পেয়েই ও নিশ্চয়ই ঘর থেকে বেরিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিল, আর চিনে ফিরে আসতে পারেনি।” সব দোষ স্বামীর ওপর চাপিয়ে খানিক দুঃখ ভুলতে চাইছিলেন উনি।

“বুঝব কী করে বলো। রোজই তো বাড়ি ফিরে ওকে খাঁচা থেকে বের করে দিতাম।”

ভোঁ করে বেজে ওঠে মেঘনা গেঞ্জি কারখানার সাইরেন। রমার আসার সময় হয়ে গেছে। চোখ মুছতে মুছতে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ান সন্ধ্যামাসি। ভাবতেই থাকেন কী বলবেন রমাকে।

কলঘরের বাইরে একটা বালতিতে জল রাখা থাকে। রমা এসে ওই বালতির জলে হাতমুখ ভালো করে ধুয়ে তবে ঘরে ঢোকে। দুপুরের বৃষ্টিতে উঠোনটা কাদা কাদা হয়ে আছে। তাই টুক করে সুইচটা টিপে বাইরের আলোটা জ্বালিয়ে দেন সন্ধ্যামাসির স্বামী বাদল। মেয়েটা না কাদায় আছাড় খেয়ে পড়ে।

মায়ের হাতে কাঁধের ব্যাগটা ধরিয়ে চোখের দিকে তাকিয়ে আঁতকে ওঠে রমা, “কী হয়েছে মা?”

“কিছু না, তুই হাত-পা ধুয়ে আয়।”

জলের বালতিটা টেনে পায়ে জল ঢালতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায় রমা। কালো হুলোটা বালতির পেছন থেকে লাফ মেড়ে মুখে ধরা কী একটা ফেলে প্রায় গায়ের ওপর দিয়ে ছিটকে বেরিয়ে যায়। ভয়ে চিৎকার করে ওঠে রমা।

বাল্বের লালচে আলোয় ঝুপসি অন্ধকারে ঝলসে ওঠে একটা আধখাওয়া পাখির হলদে পা। আর ঠিক তখনই উঠোনের কোণের কদমগাছটার ডাল থেকে ক্যাঁ ক্যাঁ করে ডাক ছেড়ে একটা পাখি উড়ে এসে বসে রমার কাঁধে। পাখিটার পায়ে বাঁধা রাখিটার ঝুটো পাথরগুলো আলো পড়ে চকচক করে ওঠে।

আনন্দে চিৎকার করে ওঠে রমা, “সোনা!”

অলঙ্করণ-শ্রীময়ী

জয়ঢাকের সমস্ত গল্প ও উপন্যাস

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s