গল্প-সিন্দুক রহস্য-শান্তা মুখোপাধ্যায় -বর্ষা ২০২২

golposinduk rohosyo

গরমের ছুটি সদ্য পড়েছে। এই সময় পিকাই সকালবেলায় একটু বেশি ঘুমায়। সারাবছরই তো সকালবেলায় উঠে স্কুল যাওয়া। মাও বিশেষ কিছু বলে না এই সময় বেলা করে উঠলে। সেদিন পিকাইর ঘুম একটু বেলার দিকেই ভেঙেছিল। কিন্তু উঠতে ইচ্ছে করছিল না। তখনই শুনতে পেল বাবা মাকে বলছে, “ভাবছি সামনের শনি-রবি করে বুলিদির বাড়ি ঘুরে আসি সবাই মিলে। সেই কবে থেকে বলছে, যাওয়াই হয় না। সোমবারটা না-হয় ছুটি নিয়ে নেব।”

পিকাই মনে মনে বেজায় চটে, ধু-র-র, ভাল্লাগে না। গরমের ছুটিতে একটু বেলায় উঠে বেশ খানিকটা পড়ে মাকে খুশি করে দিতে পারলে পুরো দুপুরটা গেম খেলার পারমিশন পাওয়া যায়। তার বদলে সেই ধেদ্ধেড়ে গোবিন্দপুরে… না আছে কম্পিউটার, না আছে ইন্টারনেট! ‘ধুস’ বলে পিকাই আবার পাশ ফিরে শুল। মা ডাকতে লাগল, “পিকাই ওঠ, অনেক বেলা হয়েছে!”

পিকাই গভীর ঘুমে।

পিকাইর ভালো লাগুক আর না লাগুক, যাওয়া হচ্ছেই। মা সুটকেস গোছাতে গোছাতে বলল, “পিকাই, তোর খেলনা বা গল্পের বই কী নিবি, তোর রুকস্যাকে নিয়ে নিস। জামাকাপড় আমি সুটকেসে নিয়ে নিচ্ছি।”

ধুস, নিজের জিনিস গোছানো! কী নেবে পিকাই? গেম নিয়ে যাওয়া যাবে? ওখানে কম্পিউটার আছে? ইন্টারনেট? কী নেবে? সবে পিকাই বলে গেমিং-এর টুর্নামেন্টে যাচ্ছে… ইউটিউবে গেমিং-এর ভিডিও পোস্ট করেছে, কতজন লাইক দিচ্ছে… সব জলাঞ্জলি। ক্লাসে বন্ধুরা যে পিকাইকে আলাদা মর্যাদা দেয় সে তো পিকাই গেম খেলতে পারে বলেই! অবশ্য বাবা আবদার করলে গেম কিনে দেয় বলেও খেলতে পারে, এটা পিকাই মানে। পিকাই একদম দৌড়াতে পারে না। ক্রিকেট খেলতে গেলে দুটো বল করার পরই বন্ধুরা বসিয়ে দেয়। ফিল্ডিং খাটলে দৌড়ে-দৌড়েই চার রান নিয়ে নেবে ব্যাটসম্যান। ফুটবল খেলতে গেলে বন্ধুরা বলে, ‘এই, ওইদিকের গোলে বল ঢোকাতে হয়, জানিস তো?’ এইসব অপমান পিকাই ভুলতে পারে পরের পর গেম ক্র্যাক করে। লেভেলের পর লেভেল জিততে জিততে ওঠা, খেলার ভিডিও করে নিজস্ব চ্যানেলে আপলোড করে প্রশংসা পাওয়া… পিকাইকে গেমিং-এর নেশায় ফেলে দিয়েছে। মা মাঝে-মাঝেই আতঙ্কিত হয়ে চেঁচায়, ‘কিচ্ছু হবে না! লেখাপড়া গোল্লায় যাবে! শুধু কম্পিউটারের নেশা! শুধু গেম খেলা!’ কিন্তু পিকাই তো মনে মনে ঠিক করে ফেলেছে বড়ো হয়ে পিকাই গেম টেস্টিং-এর চাকরি করবে।

শনিবার ভোর ভোর রওনা হয়ে যায় পিকাইরা। হাওড়া স্টেশন থেকে কর্ডলাইন বর্ধমান লোকাল ধরে বর্ধমান। তারপর বাসে হাতিপোঁতা গ্রাম। ওইখানে বাবার পিসতুতো দিদির শ্বশুরবাড়ি। বাইপাসের ধারে বাসস্টপে নামিয়ে দিয়ে বাস তো চলে গেল। দুপুর রোদে লটবহর নিয়ে, বর্ধমানে কেনা সীতাভোগ মিহিদানার প্যাকেট নিয়ে ওরা যখন মাঠের রাস্তা ধরে এগোবে ভাবছে, তখনই হইহই করে চলে এল রিন্টু, টিন্টু, ওদের দাদু আর লোচনদা—ওদের মুনিষ। লোচনদা এসেই সব ব্যাগপত্তর হাতে নিতে নিতে বলল, “দ্যান দ্যান, আমারে দ্যান। কুট্টুম বল্লে কত্থা… এসসো রাজ্জাবাব্বু, এসসো।”

দাদুকে সবাই প্রণাম করল। দাদু বললেন, “পত্থে কষ্ট হয় নাই তো?”

বাবা বলল, “না, না।”

মা তো কলকাতায় সালোয়ার কামিজ পরে। এখানে শাড়ি পরে এসেছে। তাতে আবার ঘোমটা দেবার ব্যর্থ চেষ্টা চালাতে লাগল।

বাড়িতে ঢুকে পিকাই অবাক হয়ে গেল। কী ঠান্ডা! মোটা মোটা দেওয়াল, উঁচু সিলিং… একতলার বসার ঘরটা কী ঠান্ডা! পিকাই শুধু-শুধুই এসি নেই বলে চিন্তিত হচ্ছিল। বুলাপিসি শরবত নিয়ে এলেন। পিছনে পিছনে মিষ্টির থালা নিয়ে পদ্মাকাকিমা। পদ্মাকাকিমা পিসেমশাইর ভাই দুলালকাকুর বৌ। রিন্টু পিসির ছেলে, আর টিন্টু কাকিমার ছেলে। ওরা দুজন পিঠোপিঠি আর দারুণ ভাব ওদের। রিন্টু সেভেনে আর টিন্টু সিক্সে পড়ে। পিকাই একটু গর্ব অনুভব করল ও এইটে পড়ে বলে।

প্রাথমিক আলাপচারিতা সারা হলে পিসি বললেন, “যাও, হাতমুখ ধুয়ে, ঘরের জামা-প্যান্ট পরে তোমরা তিনভাই ওপরের ঘরে চলে যাও।”

বাবা বৈঠকখানাতেই আরাম করে বসল। মা ভেতরে গেল পিসি-কাকিমার সঙ্গে।

দোতলার ঘরে ঢুকে পিকাই তো আত্মহারা! কম্পিউটার! পিকাই বলেই ফেলল, “তোদের কম্পিউটার আছে?”

রিন্টু বল, “কেন? গেরামে থাকি বলে ভেবেছিলি আমাদের কিছুই নাই, নাকি?”

পিকাই লজ্জা পেয়ে যায়।—“না না, তা নয়। আমি ভেবেছিলাম… ছাড় ওসব। তোরা গেম খেলিস?”

রিন্টু টিন্টুর দিকে তাকায়। তারপর ইশারায় কিছু একটা বোঝাপড়া হবার পর বলে, “কেন? খেললে কী হবে?”

পিকাই বলে, “আমি গেম এনেছি। তাহলে খেলতে পারব।”

এবার রিন্টু টিন্টু ‘ই-এ-এ-এ-এ’ করে চিৎকার দিয়ে ওঠে। তারপরই চুপিচুপি বলে, “বাবা-মাকে বলিস না। দিনে একঘণ্টা খেলার সময় বাঁধা। জানতে পারলে ঠ্যাঙাবে।”

তিনজন দরজা ভেজিয়ে ঘর অন্ধকার করে ডুবে যায় অ্যাসাসিন আর টেম্পলারদের দুনিয়ায়।

দুপুরে খাওয়ার সময় পিসেমশাই আর কাকুকে দেখতে পায় পিকাই। পিসেমশাইর মর্নিং স্কুল, তারপর দোকানে যান। পারিবারিক ওষুধের দোকান। কাকুও চাকরি আর ব্যাবসা দুটোই সামলান। এদিকে পিসি আর কাকিমা হাঁড়ি-হেঁশেল। হাঁড়ি-হেঁশেল যে কত বড়ো হতে পারে তার ধারণা তো পিকাইর ছিল না। কী বড়ো ভাতের হাঁড়ি! বাড়ির সবাই তো খাবেই, আর খাবে মুনিষ-বাগালরা। পিকাই শুনল মুনিষরা মাঠে কাজ করে, বাগালরা গোরু দেখাশোনা করে, হাতে হাতে নানা কাজ করে।

বড়োরা ডাইনিং টেবিলে খেতে বসল, আর পিকাইরা দালানে সার দিয়ে আসন পেতে বসে খেল। ভাত, বিউলির ডাল, আলুপোস্ত, মাছের ঝাল, আমের চাটনি আর দই। পিকাই খেয়াল করেছিল, কাকিমা মাছের ঝাল না বলে ঝালদা বলছিলেন। কে জানে কেন মাছের ঝাল দাদা স্ট্যাটাস পেল!

দাদু বললেন, “বিকাল্লে সারা গ্রাম ঘুরিয়ে দেখাব্ব। দেখুক সবাই, কেমন রাজ্জা-নাত্তি এসেচ্ছে কলকাত্তা থেক্কে!”

বাড়ির পাশের নারকোল গাছের মাথার রোদে কমলা রঙ ধরতেই দাদু হাঁক পাড়েন, “কই গো দাদ্দুভাইরা, চল্ল! বেড়িয়ে আসসি!”

রিন্টু-টিন্টু-পিকাই দাদুর সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে। পিকাই ভেবেছিল গ্রাম মানে ফাঁকা ফাঁকা হবে। কোথায়! বেশ ঘন-ঘনই তো বাড়ি! আবার মাটির বাড়িও নয়, বেশিরভাগই পাকাবাড়ি। তবে পুকুর আছে অনেক। আর দু-পা হাঁটলেই মন্দির। দাদু বলছেন, “প্রণাম করো, মহামায়া দেব্বীর ত্থান।”

পিকাইর ঘাড় ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। পিকাই খেয়াল করেছে, দাদুর মুখের ভাষা বর্ধমানের নিজস্ব ভাষা।

গল্প বলতে বলতে গ্রামের শেষ প্রান্তে চলে এসে দাদু বললেন, “এই যে ক্ষেত দেখত্তে পাচ্ছ, সব আম্মাদের। আম্মার বাব্বা অন্নেক কষ্ট করে এসব করেচ্ছিলেন। সেকাল্লের বি. এ. পাস। কেমিস্ট্রি নিয়ে রিপন কল্লেজ থেক্কে পড়েচ্ছিলেন।” পিকাইর চোখে জিজ্ঞাসা পড়েই বললেন, “সেক্কালে কেমিস্ট্রি নিয়ে পড়ল্লেও বি. এ. ডিগ্রি দিত্ত দাদ্দুভাই। তারপ্পর তো আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঠিক করল্লেন, বেবসা করব্বেন। ওষুধের দোকান করলেন। শহরেও থাকত্তে চান্নি। গাঁয়ের মানুষের চিকিৎসা হয় না ওষুধের অভাব্বে। তাই নিজের গাঁয়ে এসেই ওষুধের দোকান করল্লেন। আমার ঠাকুর্দ্দার সামান্য জম্মিজম্মা ছিল্ল। সব বেচ্চে-বুচ্চে ওষুধের দোক্কান খুলল্লেন। তোম্মাদের কি বলব্ব দাদ্দুভাই, কিছুদিনের মধ্যেই বেবসা এত্ত ভাল্ল চলল যে জম্মি, বাড়ি, পুক্কুর—সম্পত্তির পর সম্পত্তি বাড়িয়ে চললেন। আম্মি তো ভাই শুধু দেখভালই করল্লাম সারাজ্জীবন। অবশ্য মাস্টারিটাও করেচ্ছি। ভালোবেসেই করেচ্ছি।”

শুনতে শুনতে পিকাইরা ফেরার পথ ধরে। গ্রামের ঘরে ঘরে শাঁখ বাজছে তখন।

রাত্রে খেতে বসে আবার গল্পের আসর। কাকিমা বললেন, “এদের সারাদিনের কাজ শুনেছ? শুধু গেম খেলা!”

পিকাই বলতে চায়, “না, আমরা গল্পের বইয়ের আলোচনাও করেছি। আমি শার্লক হোমস, রাসকিন বন্ড নিয়ে বলেছিলাম বলে ওরা উলতে আমাকে পদী পিসির বর্মী বাক্স শোনাল…” কিন্তু ততক্ষণে মা এমন কটমট করে তাকিয়েছে! পিকাই একদম চুপ করে যায়।

কাকু বলেন, “তা একদিন গেম খেলল তো খেলল! রোজ তো আর খেলছে না!”

পিসেমশাই বললেন, “গেম পেল কোথায় ওরা?”

পিসি বললেন, “পিকাই নিয়ে এসেছে। ওদের নিজেদেরও কি নেই?”

পিকাই মনে মনে বলল, ‘ওদের ছাই গেম আছে। আচ্ছা, বড়োরা গেম খেলার ব্যাপারটা এরকমভাবে নেয় কেন? সাংঘাতিক অপরাধ করেছে, এমন?’

পিসেমশাই বললেন, “সে তো ভেবে দেখতে গেলে গেম খেললে অসুবিধার কিছু নেই। মুশকিল হল নেশায় পড়ে গেলে। গ্রামে পরিবেশ এখন ভালো নয়, বুঝলে শ্যামল! গ্রামে সন্ধেবেলায় ক্লাবঘরে ছেলেরা যা করে… তাই আমাদের একটু ভয়।”

বাবা বলল, “হ্যাঁ, তাহলে ভয় তো হবেই। তবে কী জানেন, আমার মনে হয় দরজা-জানলা বন্ধ করে ভয়কে আটকানো যায় না। ধরুন, আজকের যুগে ওদের লেখাপড়া আর বাড়লে আপনি ইন্টারনেট দেবেন না তা তো হতে পারে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে ওরা কী করছে। আর সবচেয়ে বড়ো কথা, একটা রুচিবোধ তৈরি করে দেওয়া। সেটা দিলেই নেট থাকলেও ভয় পাবার কিছু নেই হয়তো। ধরুন, সিনেমা যখন প্রথম এসেছিল বা আমাদের ছোটবেলায় হিন্দি সিনেমা দেখলে সবাই ভাবত ছেলে বয়ে যাবে। তবু আপনি বা আমি সিনেমা তো দেখেছি, বলুন? উচ্ছন্নে তো যাইনি! তবে কম্পিউটারের সামনে বসে সারাদিন খেলা, অন্যকিছু না করে, এইটা আমার বরদাস্ত হয় না। ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটিও তো চাই! সেই দিকগুলোই আমাকে ভাবায়।”

এইজন্যই পিকাইর বাবাকে এত ভালো লাগে। বাবার কথার পরে আর কেউ কিছু বলল না। দাদু শুধু বললেন, “কাল ভোর ভোর উঠব্বে দাদ্দুভাইরা। মর্নিং ওয়াকে যাব।”

পিকাই, রিন্টু, টিন্টু ওপরের ঘরে শুতে যাবার আগে দাদুর ঘরে একবার গেল। দাদুর ঘরে একধারে ডাঁই করে আলু রাখা আছে। কোনায় প্যাঁকাটি পাঁজা করে দাঁড় করানো আছে। একটা বড়ো খাট। মশারি খাটের ছত্রির সঙ্গে তুলে রাখা আছে। দাদু শোবার সময় নামিয়ে নেবেন। একটা আলনা, একটা আলমারি আর একটা মস্ত লোহার সিন্দুক। সিন্দুক দেখেই পিকাইর চক্ষু চড়কগাছ! কোনোদিনও দেখেনি তো! দাদুকে জিজ্ঞেস করে, “দাদু, ওই সিন্দুকে কী আছে?”

দাদু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, “কী আছে জানি না দাদ্দুভাই! এইটা আমার বাব্বার সিন্দুক। বিলেতি কোম্পানির। কলকাত্তা থেক্কে কিনে এনেচ্ছিলেন। নম্বর মেলানো চাব্বি। নবের মতন আছে, ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নম্বরে নম্বর মিললে তব্বে খোল্লে।”

পিকাই অস্ফুটে বলল, “কম্বিনেশন লক।”

দাদু বললেন, “বাব্বা চলে যাব্বার সময় আম্মার হাত্তে একখানা কাগজ্জে সংকেত লিক্ষে দিয়ে গেছিল্লেন। বলেচ্ছিলেন, ‘আমার নাত্তিদের দিব্বি। ওরা ধাঁধাটা থেক্কে বার করব্বে চাব্বির নম্বর। গোপ্পন ধনসম্পদ সব ওই সিন্দুকেই রেক্ষে গেল্লাম।’ বলেই বাব্বা চোখ বুজেচ্ছিলেন। আমার দুই ছেল্লেকে দেখিয়েছি। কেউ পারেনি দাদ্দা। এখন আমার দাদ্দুভাইরা বড় হোক, সেই আশায় আচ্ছি।”

গুপ্তধন! পিকাইর চোখ বড়ো বড়ো হয়ে ওঠে। পিকাই একবার চেষ্টা করবে নাকি? গেমে তো অনেক পাজল সলভ করতে হয়। দাদুকে বলবে একবার? ভাবতে ভাবতে বলেই ফেলে, “দাদু, কাগজটা আমায় একবার দেখাবে?”

দাদু বলেন, “কাল সক্কালে দেব্ব, কেমন দাদ্দুভাই?”

পিকাই ঘাড় নেড়ে বেরিয়ে আসে।

রিন্টু, টিন্টু, পিকাই তিনজনেই প্রচণ্ড উত্তেজিত। গুপ্তধন আবিষ্কার করবে ওরা? রিন্টু বলল, “বুড়ো হয় মুড়ো গাছ… জানিস?”

ভাগ্যিস রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য দেখেছিল পিকাই। নইলে বাংলা বই তো পড়তেই চায় না! একবার পদী পিসির বর্মী বাক্স নিয়ে হেরেছিল, আবার হারতে হত। তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, জানি। বুড়ো হয় মুড়ো গাছ, হাত গোন ভাত পাঁচ, দিক পাও ঠিক ঠিক জবাবে…”

টিন্টু বলে, “আমাদের আর মাটি খুঁড়তে হবে না, বল? সিন্দুকটা তো দাদুর ঘরেই আছে!”

পরদিন ভোরবেলা তিনজন দাদুর সঙ্গে মর্নিং ওয়াকে যায়। বাড়ি ফিরতেই পিকাই ছটফট করতে থাকে সেই কাগজটার জন্য। দাদুর কাছে গিয়ে বলে, “দাদু, সেই কাগজটা?”

দাদু বলেন, “হ্যাঁ, দাদ্দুভাই, দিচ্ছি।”

দাদু বার করে দেন লাল হয়ে যাওয়া চার চৌকো একটা কাগজ। ভাঁজ খুলে পিকাই দেখে ইংরেজিতে লেখা আছে, ‘স্কোর’। আবার একটা বিস্ময়চিহ্ন দেওয়া আছে পিছনে, সামনে একটা ‘Σ’ চিহ্ন। যা বাব্বা! এই-ই সংকেত! কী বেরোবে এখান থেকে? দাদু তো কাগজটা হাতছাড়া করবেন না। পিকাই নিজেই নিজের ছোট্ট নোট বুকে হুবহু কপি করে নেয় সংকেতটা।

সকালে লুচি, আলু-ছেঁচকি খেতে মন নেই পিকাইর। রিন্টু, টিন্টু গেম খেলার জন্য ডেকেছিল, তাও ইচ্ছে করেনি পিকাইর। পিকাই শুধু ভেবে চলেছে কী হতে পারে! শুধু লেখাটার মধ্যে কী যেন একটা অসঙ্গতি আছে। পিকাই ধরতে পারছে না। কাকিমা মাছভাজার প্লেট নিয়ে হাজির। বলেন, “কী শুনছি? তুমি নাকি গোয়েন্দাগিরি করছ? আমায় অ্যাসিস্ট্যান্ট নেবে নাকি?”

রিন্টু-টিন্টু মাছভাজার প্লেটটা পুরোটাই পিকাইর দিকে ঠেলে দেয়। পিকাইর এখন বেশি প্রোটিনের দরকার না!

পিকাই খেতে খেতে বলে, “দেখি, এরকম হয় কি না।” বলে খাতা পেন নিয়ে বসে। S=19, c=3, O=15, R=18, E=5।

রিন্টু লাফিয়ে ওঠে—“কী করে করলি?”

পিকাই বলে, “অ্যালফাবেটের পজিশন অনুযায়ী লিখলাম। ‘Σ’ মানে তো সামেশন।”

টিন্টু বলে, “কী?”

পিকাই বলে, “যোগফল।”

“ও আচ্ছা, যোগ করে দেখি!” রিন্টু উৎসাহী হয়ে বলে। “60 হচ্ছে তো! দেখব চেষ্টা করে?”

পিকাই কিছু বলার আগেই রিন্টু-টিন্টু ছুটে দাদুর কাছে চলে যায়। 60 দিয়ে কিচ্ছু হয় না। পিকাই বলল, “ছুটে গেলি যে? পেছনে একটা এক্সক্লামেশন আছে না? ওটার কী হবে?”

টিন্টু বলে, “কী মেশন বললি?”

“উহ্‌, ওই ‘!’ চিহ্নটা! তোদের বাংলায় কী বলে আমি জানি না।”

অন্যসময় হলে টিন্টু ছেড়ে দিত না, ‘তোদের বাংলা মানে?’

খাদ্য-বেল পড়ে যায়।

খাওয়ার ঘরে পিসি, কাকিমা ওদের অবস্থা দেখে খুব মজা করেন। কাকু বলেন, “তোরা পারলে তোদের হাজার টাকা প্রাইজ দেব।”

প্রাইজটা বড়ো নয়, এখন প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে গেছে পিকাইর কাছে। কিন্তু হচ্ছে না।

দুপুরে বিরসবদনে বাবার কাছে বসে পিকাই। বাবা জড়িয়ে ধরে বলে, “সলভ করতে পারছিস না তো? ওটা কোনও ফ্যাক্টরই নয়!”

‘ফ্যাক্টর’ কথাটা পিকাইর মাথায় হাতুড়ির ঘা মারে। হয়েছে হয়েছে করতে করতে দুদ্দাড় করে ওপরে উঠে আসে পিকাই। নোট খাতাটা বার করে। 60 হয়েছে যোগফল। 60 ফ্যাক্টোরিয়াল হলে অনেক বড়ো নাম্বার হবে। অত বড়ো তো হবে না। তাহলে 60-র ডিজিটগুলো আবার যোগ করে দেখি। ভাবল পিকাই। মানে 6, 6 ফ্যাক্টোরিয়াল! মানে 6x5x4x3x2x1=720।

পিকাই ছুটতে ছুটতে দাদুর ঘরে আসে।—“দাদু, 720 দিয়ে দ্যাখো না কী হয়।”

দাদু ঘুমাচ্ছিলেন। ধড়মড় করে উঠে বসে অনেক চেষ্টা করলেন, হল না। পিকাই শুকনো মুখে ফিরে গেল।

সবাই ধরেই নিয়েছে পিকাই পারবে না। ঠারেঠোরে সান্ত্বনা দিচ্ছে। এটাই অসহ্য লাগছে পিকাইর। পিকাই তো ‘স্কোর’ নিয়ে ভাবল অনেকটা। কিন্তু ‘স্কোর’ লেখাটা কেমন অস্বাভাবিক লাগছে পিকাইর। আবার খাতা খুলল। কোনখানটা? এই তো! হঠাৎ হঠাৎ ক্যাপিটাল লেটার দেওয়া কেন? S ক্যাপিট্যাল, c স্মল, O ক্যাপিট্যাল, R ক্যাপিট্যাল আর e স্মল। কোনও ছন্দ নেই। ক্যাপিট্যাল-স্মল অল্টারনেটিভলি হচ্ছে, তাও নয়! তবে?

রাত্রের খাওয়াদাওয়াও হয়ে গেল। কাকিমা খুব ভালো রান্না করেন। আজ পরোটা, আলুভাজা, ডিম-কষা আর রাবড়ি ছিল। কিন্তু পিকাইর মনে হচ্ছে, কী হবে রাবড়ি খেয়ে?

রাত্রে পিকাই, রিন্টু, টিন্টু খাটে শুচ্ছে, নীচে মাদুরে পিসি। পিসি সব কাজ সেরে অনেক রাতে শুতে আসেন। পিকাই তখনও জেগে। কী একটা মনে মনে হচ্ছে, কিন্তু বুঝতে পারছে না পিকাই।

ভোররাত্রে টিন্টুর চিৎকারে ঘুম ভাঙল পিকাইর। টিন্টু চেঁচাচ্ছে, “নিউরোমড! নিউরোমড!”

আরে ওকে ‘প্রে’ গেমটার কথা বলেছিলাম, মিউট্যান্টগুলো যে কোন জিনিস হয়ে পড়ে থাকে, সুযোগ পেলেই আক্রমণ করে, সেই গেমটা! ও ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখছে। ভাবতে-ভাবতেই মাথায় বিদ্যুৎ খেলে যায় পিকাইর। আরে, এত সহজ ব্যাপারটা ওর মাথায় আসেনি! বুড়োদাদু তো কেমিস্ট্রিরই লোক ছিলেন!

ছুটতে ছুটতে বাবার কাছে যায় পিকাই। বাবার মোবাইলটা লাগবে। নেট ডেটা তো বাবার আছেই। নেটে দেখতে হবে। ছুট্টে বাবার পাশ থেকে মোবাইলটা নিয়ে আসে পিকাই। দ্রুত সার্চ দেয়। তারপর ছোটে দাদুর কাছে।

সবে নিমগাছটাতে লাফিয়ে লাফিয়ে দোয়েল ডাকছে তখন। দাদু দাঁতন করছেন। দাঁতন করে দাদু বললেন, “কী ভাই? সক্কাল, সক্কাল? চল্ল, আগে চ্চা খাই।”

দাদু জমিয়ে চা করলেন। তারপর চা খেতে খেতে বললেন, “বলো।”

পিকাই বলল, “দাদু, 5 মানে 120 আসছে। কিন্তু কম্বিনেশনে তো চারটে ডিজিট দিতে হবে! পেরেও পারছি না!”

দাদু হাসলেন।—“আচ্ছা, যদ্দি সামনের ডিজিটটা শূন্য দিই?”

দাদু চেষ্টা করলেন। 0120 চিচিং ফাঁক! খুলে গেছে! এবার নিশ্চয়ই দাদু দেখাবেন সেই আলিবাবার ধনভাণ্ডার! কিন্তু দাদু বললেন, “থাক, খুলেচ্ছে যক্ষন, তোমাক্কে কী বলে বাহব্বা দেব্ব, দাদুভাই? কিন্তু এটা সব্বার সামনে খুলত্তে হব্বে।”

দাদু অপেক্ষা করতে থাকেন কখন সবাই ঘুম থেকে উঠবে।

পিকাই বাইরের বারান্দায় বসে আছে। সারা বাড়ি খবর চাউর হয়ে গেছে। সিন্দুক খোলা গেছে। পিকাই পেরেছে। রিন্টু-টিন্টু উৎসাহে পাশ ঘেঁষে বসে বলছে, “এই, কী করে পারলি বল?”

পিকাই বলল, “সিম্পল। ওই ক্যাপিট্যাল লেটারগুলোই তো মজা! আসলে বুড়োদাদু Sc মানে স্ক্যান্ডিয়াম, O মানে অক্সিজেন, Re মানে রেনিয়াম লিখেছিলেন। কেমিস্ট্রির লোক ছিলেন তো! পিরিয়ডিক টেবলের থেকে ওদের অ্যাটমিক নাম্বারগুলো নিলাম। সামনে Σ ছিল তো, তাই সামেশন করলাম। Sc এর 21, O এর 8 Re এর 75, টোটাল কত হল? 104। আবার ডিজিটগুলো সাম করলাম, হল 5 এবার 5 ফ্যাক্টোরিয়াল। ফ্যাক্টোরিয়াল জানিস? মানে যে সংখ্যাটা, তার আগের সবগুলো সংখ্যা এক অবধি গুণ করে যেতে হবে। 5 মানে 5x4x3x2x1। তাহলে 120। কিন্তু এটা তিনটে ডিজিট তো। কম্বিনেশন নাম্বারে তো চারটে ডিজিট লাগবে। দাদু তাই 0 দিয়ে শুরু করলেন। ওতেই খুলে গেল।”

টিন্টু রিন্টুকে জিজ্ঞেস করল, “কীসব টেবিল বলছে রে? ডাইনিং টেবিলের মতো? আর এত ইংরাজি বলছে কেন?”

রিন্টু বলে, “না না, পিরিয়ডিক টেবিল একটা চার্টের মতো। সুভাষদার কোচিংয়ে টাঙানো আছে, দেখিসনি? আমাদের তো ক্লাস টেনে লাগে এসব। ওদের ইংলিশ মিডিয়ামে বোধহয় আগেই শিখিয়ে দিয়েছে।”

পিকাই বলে, “তোরা কী এত ফিসফিস করছিস রে?”

রিন্টু বলে, “না, টিন্টু ওই অত অ্যাটম-ট্যাটম জানে না তো!”

রিন্টুও তেমন জানে না। ওই ভাসা ভাসা মতন একটু। পিকাইদের তো ক্লাস সিক্স থেকেই আলাদা করে কেমিস্ট্রি পড়তে হয়। একটু ধারণা হয়েছে। পিকাই বলে, “সাবস্ট্যান্সের মানে ওই পদার্থের সবচেয়ে ছোটো অংশটা অ্যাটম। এই অ্যাটমের মধ্যে আবার নিউক্লিয়াসে প্রোটন আর নিউট্রন থাকে; নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন থাকে। অ্যাটমটার যতগুলো প্রোটন আছে তার সংখ্যাই অ্যাটমিক নাম্বার। আর এটা দিয়েই পদার্থের সমস্ত ক্যারেক্টারিসটিকস মানে ওই ধর্ম আর কী, ঠিক হয়ে যায়। পিরিয়ডিক টেবলে এই অ্যাটমিক নাম্বার অনুযায়ী প্রত্যেকের বসার জায়গা আছে। সেখান থেকেই ওদের ভ্যালেন্সি, প্রপার্টি, রি-অ্যাকশন সব বলে দেওয়া যায়। তাই পিরিয়ডিক টেবল খুব ইম্পর্ট্যান্ট।”

টিন্টুর মুখ দেখে মনে হল না খুব ভরসা পেয়েছে, কিন্তু ওরা দুজনেই হাততালি দিয়ে উঠল। ততক্ষণে সবাই জমা হয়েছে দাদুর ঘরে। দাদু গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন, “আমার বাব্বার সিন্দুক আজ দাদ্দুভাই শ্রীমান রুদ্রাক্ষ চক্রবর্ত্তীর বুদ্ধিতে খোল্লা গেচ্ছে। আমি তাকে বাহব্বা দিই। আর আম্মার ছেল্লেদের, বৌম্মাদের, নাত্তিদের সামন্নে সিন্দুক খুলচ্ছি।”

দাদু সিন্দুক খুললেন। সবার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল, “যাহ্‌, ফাঁকা তো!”

সবাই এ-ওর মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। দাদু ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বার করে আনলেন একটা ছোটো চন্দন কাঠের বাক্স। বাক্স খুলতেই বেরিয়ে এল একটা চিঠি।

শ্রী শ্রী গুরুসহায়

স্নেহের বংশধরগণ,

যখন এই সিন্দুক খোলা হইবে তখন আমি আর ইহলোকে থাকিব না। তোমরা, আমার পরম প্রিয় বংশধরগণ থাকিবে। তোমাদিগের কাছে আমার আবেদন এই যে, সর্ব্বদা সততার সহিত জীবন-জীবিকা নির্বাহ করিবে ও একত্রে থাকিয়া আমার সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণ করিবে। আমি অতি সামান্য অবস্থা হইতে ঔষধের ব্যবসা করিয়া লাভবান হইয়াছিলাম। আমার অর্জিত সম্পত্তি ভূ-সম্পত্তি ক্রয়ে ও দোকানের শ্রীবৃদ্ধিতে ব্যয় করিয়াছিলাম। আমার এক পুত্র ও এক কন্যা। কন্যাকে আমি তার বিবাহেই প্রাপ্য যৌতুক দিয়া দিয়াছি। আমার পুত্রের দুই পুত্রের মুখ আমি দর্শন করিয়াছি। তৎপরবর্ত্তী প্রজন্মের কথা আমি জানি না। আমি শুধু এই কথা বলিতে পারি যে সততা ও একতাই সম্পদ।

আমার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই সম্পদ আমি অর্পণ করিলাম। স্নেহাশীর্বাদ জানিবে।

ইতি

আঃ গুরুচরণ চট্টোপাধ্যায়

দাদু চিঠিটা পড়ার পর সবাই একদম চুপ। টিন্টু শুধু ফিসফিস করে বলল, “শেষে ওই আঃ-টা কী রে?”

কাকু ফিসফিস করে বললেন, “কিচ্ছু শিখছিস না! ওটার মানে আশীর্বাদক।”

পায়রার ডিমের মত মুক্তো পাওয়া না যাওয়ার দুঃখ নিয়েই যে-যার কাজে লেগে পড়ল। পিকাই তো হিরো হয়ে গেল। কাকু পিকাইর জন্য এক হাঁড়ি রসগোল্লা নিয়ে এলেন। পিসি একটা রুপোর কলম বার করে পিকাইর হাতে দিয়ে বললেন, “অনেক লেখাপড়া কর বাবা, এত বুদ্ধি!”

মা বাক্স-টাক্স গোছাতে লাগল।

সবই তো হল, কিন্তু পিকাইর মনের মধ্যে কেমন যেন মনে হচ্ছে পুরো ব্যাপারটায় কী যেন একটা গোলমাল আছে। আচ্ছা, দাদু সেরকম উত্তেজিত হলেন না তো! ভাবতে ভাবতে পিকাই কাকুকে জিজ্ঞাসা করল, “আচ্ছা, বুড়োদাদু কোন সালে মারা গেছিলেন?”

কাকু একটু চিন্তা করে বললেন, “উনিশশো আটাত্তর।”

পিকাই আবার দাদুর ঘরে গেল। দাদুকে বলল, “দাদু, আমায় আর একবার ওই সংকেতের কাগজটা দেখাবে?”

দাদু আলমারি খুলে বার করে দিলেন সেই ভাঁজ করা কাগজটা। হাতে নিয়ে উলটে দেখেই পিকাইর মুখে ‘ধরে ফেলেছি’ গোছের হাসি ফুটে উঠল। কাগজটা আসলে উনিশশো বিরানব্বই সালের ডায়েরির ছেঁড়া পাতা। পিকাই বলল, “দাদু, উনিশশো বিরানব্বইতে বুড়োদাদু কী করে সংকেত দিলেন?”

দাদু কাঁচুমাচু হয়ে বললেন, “চুপ দাদ্দুভাই, চুপ। লক্ষ্মীটি, কাউক্কে বলো ন্না। ভাইয়ে ভাইয়ে ভিনু হয়ে যাব্বে  বলছিল… তাত্তে সম্পত্তি থাকে? বল্ল? তাই আমি এরকম প্ল্যান করেচ্ছিলাম।”

পিকাই ভাবে, যা বাব্বা, পিসেমশাই, কাকু আলাদা হয়ে যাবেন? রিন্টু আর টিন্টুও? সেটা খুব বিচ্ছিরি হবে। ও আচ্ছা, আর তাই দাদু সলভ হয়ে গেছে জেনেও ওরকম নির্বিকার ছিলেন।

পিকাই দাদুকে আশ্বস্ত করে যে সে কাউকে বলবে না।

পরের দিন সকালে সবাইকে প্রণাম করে পিকাইরা যখন বেরোবে, তখন দেখল এরই মধ্যে দাদু বুড়োদাদুর চিঠিটা ফ্রেমে বাঁধিয়ে বৈঠকখানা ঘরে টাঙিয়ে দিয়েছেন। দাদু ‘সততা ও একতাই সম্পদ’ কথাগুলোতে সোনালি কলম বুলিয়ে দিয়েছেন। হাতিপোঁতা গ্রামের একান্নবর্তী পরিবারের বৈঠকখানায় সকালের আলোয় জ্বলজ্বল করতে লাগল, ‘সততা ও একতাই সম্পদ।’

জয়ঢাকের সমস্ত গল্প ও উপন্যাস

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s