মা, তোমায় আজ লিখছি চিঠি
আমি তোমার ছোট্ট দিঠি
আগে বলো কেমন আছ
আমি? হোস্টেলের এই চার দেওয়ালে—
মন্দ নয় ভালোই আছি।
পড়াশুনা চলছে ভালোই
চাপটা শুধু বড্ড বেশি।
মনে পড়ে মা, ছোটবেলায়
তোমার কোলে বসে
আতা গাছে তোতা পাখি পড়তাম।
আমি তো নয় পড়তে তুমিই
আমি শুধু শুনতাম।
মনে হত কোন অচিন বুলি
ঢুকছে কানের ভেতরে
শুনে শুনে তাই হয়েছে মুখস্থ
দিব্যি চিরতরে।
তোমায় ছাড়া আজ কোনও পড়া
থাকে না তো মনে,
হিউজ টাস্ক জমে আছে
কালকে দিতে হবে।
দুলে দুলে তাই পড়ছি এখন
রাত দেড়টা বাজে।
তোমায় আমি কথা দিয়ে
বলেছিলাম যেমন,
এইবারে মা সেমিস্টারে
পাইনি তেমন মার্কস।
দশ নম্বর কম পেয়েছি
আগের বারের থেকে।
মনে পড়ে মা
ছোটবেলায় তুমি পরীক্ষার হলে
ঢোকার আগে হাত রেখে বলতে মাথায়
পরীক্ষা ভালোই হবে, দিও ঠান্ডা মাথায়।
চলে যেতাম নিশ্চিন্তে পরীক্ষকদের ভিড়ে
এবেলা তো রাখোনি হাত মাথায়,
তাই যে রেজাল্ট বাজে।
জানো মা, তোমার পাঠানো শিউলি চারা
আমার থেকেও লম্বা হয়ে গেছে এই ক’দিনে
এখন সেটা রয়েছে হোস্টেলের বাগানে।
জানালা দিয়ে রাতে দেখি,
অজস্র ফুল ফুটেছে তাতে।
মনে পড়ে মা আমাদের বাগানেও
একটা শিউলি গাছ ছিল।
বাগান ভরে যেত শিউলি ফুলে
স্নান করে তুমি শোঁকাতে মাথার চুল
আমি তাতে গুঁজে দিতাম ছোট্ট শিউলি ফুল।
জানো এখন ইচ্ছা করে,
তোমার মাথায় ফুল গুঁজে দিই।
আসল ফুলে তো পারব না মা,
সে তো শুকিয়ে যাবে।
কাগজ দিয়ে বানিয়েছি এই
দিনের কাজের ফাঁকে।
তাই ক’টা মুঠি করে দিলাম তোমায়
ইতি, তোমার ছোট্ট সোনাই।