গল্প চম্পকলাল অমর মিত্র শরৎ ২০১৬

golpochampaklal01 (Medium)

 চম্পকলাল খুব বুদ্ধিমান। তার বাবা তাই জানে।  বুদ্ধি করে করে সে এতোটা বড়ো হয়েছে। কতটা বড়ো? না সাড়ে পাঁচ ফুটের উপর উঁচু চম্পকলাল তার বাড়ির ভিতরে সব চেয়ে লম্বা। তার বয়স কত? এখন হয়ে গেছে অনেক, আগে ছিল অনেক কম। তার আগে ছিল আরো কম। আর এটাও ঠিক চম্পকলালের বয়স বেড়েও যাবে আরো ক’দিন পরে। ক’বছর পরে। তা হোক, তার মতো বুদ্ধিমান কে আছে ?

চম্পকলাল জানে সে খুব বুদ্ধি ধরে। তার মাও তাই বলে।  বাবা জানে কিন্তু কিছু বলে না। বাবা খুব গম্ভীর মানুষ। বাবার ব্যাবসা আছে চিৎপুরে। সে একটা ঝাড়াই মশলার আর গোখাদ্য, খৈল ভুষির দোকান। বাবা সেই দোকান নিয়ে ব্যস্ত। বাবা খোঁজও রাখে না চম্পক কত বুদ্ধি তার ঘটে ভরেছে এতদিনে। বাবা খোঁজ রাখে না চম্পক এক ক্লাসে দুবার করে থাকে। চম্পকের মা ইস্কুলে গিয়ে হেড স্যারকে ধরে ক্লাসে তুলেছে এই নাইন পর্যন্ত।

বাবা মাঝে মাঝে চম্পককে জিজ্ঞেস করে, “লেখাপড়া হচ্ছে তো ?”

“চম্পক ঘাড় কাত করে, “হচ্ছে।”

“কোন কেলাস?”

চম্পক বলে, টেন।

“টেনে উঠে গেলি, গেল হপ্তায় নাইন ছিল না ? ”

চম্পক বলে, “না উঠিনি তো উঠছি।”

“কোথায় উঠছিস ? ”

চম্পক বলে, “টেনে।”

বাবা অবাক। বাবার নাম চৌধুরীলাল দত্ত। ব্যবসায়ী হতে হলে অমন নাম হতে হয়। চাউডুরিলাল ডাট। নামেই অর্ধেক হয়ে গেছে। ওই চিৎপুরে এমন নাম আর কারো নেই। সবাই সমীহ করে। চাউডুরীজি চাউডুরীজি বলে হাত কচলায়। আর চৌধুরীলাল দত্ত হে হে করে হাসে, আরে বৈঠিয়ে, কেয়া চাহিয়ে।

চম্পকের বাবা ছেলের কথা শুনে বলে, “টেনে উঠছিস ? ”

“হাঁ সার।”

“আরে বাবাকে কেউ সার বলে ? ”

চম্পক বলে, “হাঁ সার।”

“কে বলে ? ”

        বলে অঙ্ক স্যারের ছেলে তপেন। সে ইস্কুলে বাবাকে স্যার বলতে বলতে বাড়িতেও তা বলতে আরম্ভ করেছে। আর তাতে কী হয়েছে চম্পকের মনে হয়েছে সেও তার বাবাকে স্যার বলতে পারে। স্যার থেকে সার। চম্পকের কথা শুনে চৌধুরীলাল দত্ত বোঝেন ছেলের বুদ্ধি আছে। চম্পকের মাকে বললেন তিনি কথাটা, “এ ছেলের হবে।”

“কী হবে?”  চম্পকের মা জিজ্ঞেস করে।

“দেখ কী হয়।”

এরপর আর ছেলের সঙ্গে বাবার কথা হয় না। চম্পক তার বুদ্ধি বাড়িয়ে যেতে থাকে। ইস্কুলে খেলার মাঠে পাড়ায় চম্পকের বুদ্ধি নিয়ে কথা হতে থাকে। সে নাকি তৈলাক্ত বাঁশের অঙ্ক মুখে মুখে করে দিচ্ছে ইদানীং। চৌবাচ্চায় জলের প্রবেশ আর নল দিয়ে জলের প্রস্থানের অঙ্ক চোখবুঁজে বলে দিতে পারে। পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, পরিমিতি তার খাতায় পড়তে পারে না, নকুলদানার মতো পেটে গিয়ে ফুস। বইয়ের পিছন পাতার উত্তরমালা দেখে প্রশ্নমালা শেষ করে ফেলে একদিনেই গোটা একটা। আর ইংরিজি সে নিজের ইচ্ছেমত লেখে। বাংলা ইতিহাস ভূগোল নিয়ে তার মাথাব্যথা কম। যেমন মনে হয় লিখে দেয়। আবার না লিখে ছবি এঁকেও রাখে। তবে একটা গুণ তার আছে, গল্প জানে কত! গল্প বলতে তার জুড়ি নেই। ক্লাসে কতবার সে বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলেছে বন্ধুদের, এমনকি স্যারদেরও। এমন প্রতিভাধর চম্পকলাল ডাট ক্লাস টেনে উঠবে বলে বহুদিন বসে আছে, কিন্তু হচ্ছে না। চেষ্টা করে যাচ্ছে।

তার বাবার আবার একদিন খেয়াল হল, বলল, “টেনে উঠলি?”

          “না সার।”

“কেন উঠতে কতদিন লাগবে?”

“হেড সার ইচ্ছে করলেই হয়ে যায়।”

“আমি ইস্কুলে যেতে পারব না, কিন্তু তোকে ব্যাবসায় নেব, টেনেটুনে টেনে না উঠলে কী করে টানি?”

চম্পকলাল বলল, “টানতে হবে না, আমিই চলে যাব।”

“পারবি?”

“ইয়েস সার।”      

“তো বসে বসে এই হিসেবের খাতা কমপ্লিট কর দেখি।”

লাল খেরোয় মোড়া একটা মস্ত হিসেবের খাতা চম্পকের কাছে দিয়ে তার বাবা চৌধুরীলাল ঘুমোতে গেল। চম্পকলাল সেই খাতা নিয়ে বসল। রাতের ভিতরেই হিসেব করে ফেলতে হবে। কত যোগ আর কত বিয়োগ। গুণ আছে, ভাগও আছে। খাতার মাথায় ওঁ মা লেখা। এই খাতা নিয়ে বাবা দোকানে যায় প্রত্যেকদিন। বাড়ি ফিরে হিসেব দ্যাখে, কলম চালায়। চম্পকলাল অবাক হয়ে দ্যাখে যোগ বিয়োগ গুন ভাগ, প্রশ্নমালা রয়েছে, উত্তরমালা নেই। সে যেমন মনে হল, নিজের অঙ্ক বইয়ের উত্তরমালা দেখে বসিয়ে দিতে লাগল। তারপর ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমোতে সে খুব ভালবাসে। 

পরদিন হিসেবের খাতা দেখে চৌধুরীলাল অবাক। এতদিন ধরে যা হয় নি, একবছরের হিসেব চম্পকলাল এক রাত্তিরে করে ফেলেছে। আর তারপর সেই হিসেবে চোখ রাখতেই তার মাথা বোঁ বোঁ করতে লাগল। কী অদ্ভুত সব জিনিস লিখে দিয়ে অকাতরে ঘুমোচ্ছে চম্পকলাল, কোনো হিসেবের সঙ্গে কোনো হিসেবের মিল নেই। ১৪২৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল গো-খাদ্যের দাম হলে, ১৫ কুইন্টালের দাম হয়েছে ৯৫ টাকা। লোকসান লোকসান লোকসান। হবে ২১৩৭৫ টাকা, হয়েছে ৯৫, মানে, ২১২৮০টাকা গঙ্গার জলে। ক্যালকুলেটর দিয়ে কষে ফেলল চৌধুরীজি।  চম্পকলাল গুণের পরিবর্তে ভাগ করেছে। আবার যেখানে ভাগ হবে, স্রেফ গুণ করে দিয়েছে। হিসেবের খাতা এলোমেলো করে দিয়ে চম্পকলাল ঘুমোচ্ছে। চৌধুরীলাল বলল, আর টেনে ওঠার দরকার নেই, এবার ওকে টেনে তোলো, আমার সঙ্গে ব্যাবসা শিখবে।

উফ, বাঁচা গেল। চম্পকলাল বাবার সঙ্গে ট্রামে চেপে চলল চিৎপুর। বাবা তাকে চিৎপুরে নামিয়ে গঙ্গায় নিয়ে গেল। একটা মুশকো মতো ল্যাঙট পরা পালোয়ান লোকের কাছে দিয়ে বলল, “গঙ্গায় ডুবিয়ে নিয়ে এস, ইস্কুলে যা শিখে এয়েছে তা গঙ্গামাটি ঘষে তুলে দাও।”

উফ, সে কী স্নান! মুশকো পালোয়ান তাকে হাত ধরে নিয়ে গেল গঙ্গার ঘাটে, স্নানের হাফপ্যান্ট পরিয়ে এই ডুবোয় আর সেই ডুবোয়,  “বল, ফির ইস্কুলে পড়বি? বল, টিনে উঠবি?”

জল খেতে খেতে চম্পকলাল বলে, “নেহি পালোয়ানজি নেহি।”

“নেহি বললে তো হোবে না, সিনান কর ভাল করে, সব ধুয়ে ফেললে তবে তোর বাবু নিবে।”

 চম্পকলাল গঙ্গার জলে তার ভুলভাল অঙ্ক, ইংলিশ, ইতিহাস, ভূগোল ধুয়ে একঘন্টা বাদে উঠল ঘাটের ধাপে। তখন পালোয়ান তাকে থাবড়াতে লাগল, “এইসা করেগা আর?”

“নেই নেই পালোয়ানজি নেই।”

“চোপ, ফির পানিতে ডুবাব আর তুলাব, এক হপ্তা যদি এইসা করি?”

“নেই পালোয়ানজি নেই। ”

“আর টিনে উঠবি?”

“কভি নেই।”

“কান ধর বেটা, পানিতে নেমে কান ধরে উঠ আর বস। ”

কী সব্বোনাশ! গঙ্গার ঘাটে কত লোক, সবাই তাকে দেখছে। সে বুক জলে দাঁড়িয়ে কান ধরে উঠ-বস মানে ডুবছে আর উঠছে। এমনি করে তার হিসেব তার মাথা থেকে ধুইয়ে পালোয়ান আবার তাকে ঘাটে তুলে বলল, “হামি ইস্কুল যাইনি, লেকিন সব হিসেব মনে মনে করে দিতে পারি, এই বল গঙ্গায় কিতনি পানি হায়।”

চম্পকলাল বলল, “ইতনি পানি।”

পালোয়ান তার ঘাড়ে রদ্দা বসিয়ে বলল, “বুড়বক আছিস, বোল ইখন জুয়ার না ভাটা?”

“আমি জানিনে।”

          “জানতে হবে, ফির তুকে নাহাব আমি।”

          “প্লিজ পালোয়ানজি।”

“প্লিজ কিয়া রে, বোল জুয়ারে কত পানি আসে আর ভাটায় কত পানি যায়।”

চম্পকলাল বলল, “অনেক পানি আসে আর অনেক পানি যায়।”

“তেরা মুন্ডু আর মেরা মাথা, পানিতে চুবাব আর তুলব।”

“না জি না।”

পালোয়ান বলল,  “তবে বোল আর করবি?”

চম্পকলাল বলল, “নেহি জি নেহি।”

“কী করবি না?”

চম্পকলাল বলল, “মালুম নেহি। ”

“বোল বোল, কেয়া মালুম নেহি, বোল। ”

শেষে চম্পকলাল বলল, “আর করব না সার, ছেড়ে দিন।”

সার শুনে পালোয়ানের মুখে কী হাসি। বলল, “ফির বোল।”

“ইয়েস স্যার।”

          “আবার বোল।”

“প্রেজেন্ট সার।”

“আহা হা হা, কেয়া বাত, বোল বোল।”

বেঁচে গেল চম্পকলাল। তাকে রিকশায় তুলে পালোয়ান নিয়ে এল চৌধুরীলালের দোকানে, এসে বলল, “সাফা হো গিয়া বাবু।”

       চৌধুরীলাল বলল, “এবার খাতা লেখ, ভুল হলে গঙ্গাস্নান। ”

চম্পকলাল দ্যাখে দোকানে কতজন আসে, কতজন কতরকম গল্প করে তার বাবার সঙ্গে। সে শুধু শুনেই যায়। প্রতিদিন বাবা তাকে নিয়ে আসে দোকানে, নিয়ে যায় বাড়িতে। মাঝে দুপুর যায়, বিকেল যায়। খেলার মাঠে ফুটবল লাফায়, ইস্কুলে ছুটির ঘন্টা পড়ে,  বিকেল গড়িয়ে যায়। বাবা চৌধুরীলাল স্যারের কোনো মায়া হয় না। তাকে খাতা লিখতে হয়ই। বড়ো বড়ো যোগ স্যার চৌধুরীলাল করে নেয় ক্যালকুলেটর দিয়ে। তাকে মাথা খাটিয়ে করতে হয়। কিন্তু তার যে ভাল লাগে না। একদম না। অঙ্ক কষতে তার চিরকালই ঘুম পায়। আর এখানে তো আরো। মস্ত দুপুরে খুব। কিন্তু পালোয়ানকে বলা আছে ঘুমলেই গঙ্গায় ডুবিয়ে আনতে। পালোয়ানের ওইটা ডিউটি। যে খরিদ্দার ধারে নিয়ে টাকা না দিয়ে লুকোচুরি খেলে, তাকে গঙ্গায় চুবোন তার ডিউটি।

একদিন কী হল সে আবার ভুল করল। যোগের জায়গায় গুণ। ইচ্ছে করে। বারবার ভুল করলে বাবা বিরক্ত হয়ে আবার তাকে ইস্কুলে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু খাতা দেখে আবার তাকে  পালোয়ানের হাতে তুলে দিল স্যার চৌধুরী। ঠুনঠুন রিকশায় চাপিয়ে পালোয়ান তাকে গঙ্গায় চুবিয়ে সাফা করতে নিয়ে গেল। তো চম্পক আচমকা পালোয়ানকে জিজ্ঞেস করে, “সার গড়ের মাঠ কাঁহা? ”

“আবার সার!” পালোয়ানের মুখ হাসিতে ভরে গেল, “বলল, উ কেয়া চিজ হ্যায়?”

“বহুত বড়ো মাঠ।”

“কিতনা বড়ো?”

“ব হু ৎ বহুৎ। বলে চম্পকলাল দুই হাত প্রসারিত করল।”

“কাঁহা হায় উ?”

চম্পকলাল বলল, “মালুম নেহি কাঁহা হায়।”

“কিঁউ?” পালোয়ান স্যার এমনি, কিঁউ বললে উত্তর দিতে হবেই।

তখন ঠুনঠুন রিকশাওয়ালা রিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, বলে, “হররোজ গঙ্গামাঈকি পাশ যাও বাবু, আজ মহাদেও কা পাশ চলো।”

পালোয়ান জিজ্ঞেস করল, “কাঁহা?”

“কিঁউ, উ গড়ের মাঠ, কিল্লা কি মাঠ।” রিকশাওয়ালা গামছায় গা মুছতে মুছতে বলল, “কিল্লা কি মাঠ নেহি দেখা পালোয়ানজি?”

না, পালোয়ানজি এই গঙ্গা আর চিৎপুর ছেড়ে কোথাও যায় নি কখনো। তাকে হাওড়া স্টেশন থেকেই ধরে এনেছিল চৌধুরীলাল। তারপর থেকে সে চৌধুরীলালের দোকানের প্রহরী। বুক চিতিয়ে বসে থাকে। খুব প্রভুভক্ত আর হনুমানজির ভক্ত। সকালে উঠে মুগুর ভাজে আর গঙ্গাস্নানে পুণ্য করে। এখন সরকার চাউডুরীবাবুর আউলাদকে মানুষ করছে। সে কিছুই দ্যাখে নি কলকাতার। কালীঘাট মন্দিরেও যায় নি। তার প্রভু চাউডুরীবাবু বলেছে নিয়ে যাবে। কিন্তু এখন তার মনে গড়ের মাঠ, কিল্লা কি মাঠ দেখার সাধ জেগে উঠল। এই চম্পক বেটাকে কত দলাইমলাই করবে, কত চুবাবে পানির ভিতর। চম্পক বলছে, তার একদম ভাল লাগে না অঙ্ক, তাই যেমন ইচ্ছে উত্তর বসিয়ে দেয়।

golpochampaklal02 (Medium)

তবে কী ভাল লাগে তার? খেলতে আর গল্প শুনতে, আর গল্প বলতে। শুনে পালোয়ানের চোখে জল এসে গেল। আরে তারও যে তাই। খেলতে আর মুগুর ভাজতে আর কাহানি শুনতে, ভূত প্রেত, দত্যি দানো, রামজি, হনুমানজি, রাবণ ভি তার ভাল লাগে, রাবণ মেঘনাদ এইসবও তার ভাল লাগে, জটায়ু পঞ্ছি ভি ভাল লাগে, লছমন, সুপরনখা……সব।

“তবে গল্প বলো।”

“চ বাবু চ, কিলার মাঠে কাহানি হবে,” রিকশাওয়ালা বলল, “কিতনা দিন চলে গয়ি, হনুমানজি, রাবনজি, রামজির কাহানি শুনা নেহি।”

তারপর কী হল? মস্ত গড়ের মাঠ দেখে পালোয়ানজির চোখে জল এসে গেল, “উ বাপুরে, কিলাকি মাঠ দিখে যা বাপু হামার, সাত গাঁও সমান এক মাঠ।”

রিকশাওয়ালা তাকে সান্ত্বনা  দিতে লাগল, “আরে বেটা রো মাত। ”

চম্পকলাল বলল, “কাঁদে না সার কাঁদে না পালোয়ানজি। ”

পালোয়ানজি বলল, “তবে কাহানি বোল।”

চম্পকলাল বলতে লাগল। আর রিকশাওয়ালা ও পালোয়ানজি শুনতে লাগল। চম্পকলাল এই গল্প বলতে লাগল, তা শুনতে শুনতে তারা চোখের জল ফেলতে লাগল, “ইস, তোর বাবা কেমন আদমি আছে, পানিতে চুবায়, মেথমেটিক করবি না, কাহানি করবি, বোল বোল, তারপর কী হলো বোল।”

      মাথায় মস্ত আকাশ, বেলা পড়ে আসছে। কতদূর মাঠ, কতদূর সেই কেল্লা, তারা চিত হয়ে শুয়ে পড়ে সবুজ ঘাসের ভিতর। গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে পালোয়ানজি আর রিকশাওয়ালা। তারপরে চম্পকও।  তার বাবা তখন সেই উল্টোপালটা হয়ে যাওয়া খেরোর খাতা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। সব হিসেবে গোল করে দিয়েছে চম্পক, জলে চুবিয়েও সাফ হয় নি। ওকে আর আনবে না এখানে। বরং আবার ইস্কুলে গিয়ে গল্প শুনাক।

           ছবিঃ শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য্য

অমর মিত্রের আরো একটা অসাধারণ গল্প-দলমা মশায়